নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাস ডাকাতি

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:২৭

অতি সম্প্রতি দেশে বাস ডাকাতির একটা ঘটনা খুব ভাইরাল হয়েছে।
এই পয়েন্টে আসার আগে বাস ডাকাতি কিভাবে হয়, সেটা একটু বলি।
প্রথমটা হচ্ছে সাধারণ যাত্রীর ছদ্মবেশে ডাকাত বাসে ঢুকে পড়ে। তারপরে যখনই দেখে সবাই অসতর্ক হয়ে পড়েছে, ওরা তখন অস্ত্র বের করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে ডাকাতি করে নির্দিষ্ট গন্তব্যের কাছে এসে পালিয়ে যায়। ঘটনা ঘটাতে খুব বেশি সময় ওরা নষ্ট করেনা। ডাকাতেরও ধরা খাবার ভয় থাকে।
আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে পথের মধ্যে ব্যারিকেড তৈরী করে (গাছ ফেলে বা গাড়ি দিয়ে) বাস থামিয়ে বাসে উঠে এসে ডাকাতি শুরু করে।
দুইটা ক্ষেত্রেই ডাকাতরা স্থানীয় হয়ে থাকে। সিলেটের ডাকাত চিটাগং বা রাজশাহীতে গিয়ে ডাকাতি করবে না। শিকারের জন্য সে নিজের পরিচিত এলাকা বেছে নেয়। পালানোর সময়ে যেন সে জানে কোথায় কোন পথে পালাতে হবে। এইটা দুনিয়াব্যাপী ক্রিমিনাল সাইকোলজি। যদি ক্রিমিনাল অপরিচিত কোথাও ক্রাইম করতে যায়, তাহলে আগে থেকেই জায়গাটা রেকি করে পরিচিত করে ফেলে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওরা নিশ্চিন্ত থাকে যে পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ ওদের বাধা দিতে আসবে না। মানে পুলিশের সাথে সেটিং থাকবে। এমন কখনই হবেনা যে রাস্তায় পুলিশি টহল চলবে আর ওরা বেরিক্যাড দিবে। ওরা আগে নিশ্চিত হবে যে পুলিশ দূরদূরান্ত পর্যন্ত নেই অথবা থাকলেও ঐ সময়টা নিষ্ক্রিয় থাকবে। দুঃখজনক সত্য হচ্ছে পুলিশের মাঝেও ওদের লিংক থাকে।
তারপরে ধরেন random কোন বাসেও ওরা ডাকাতি করবে না। জামাকাপড় ডাকাতি করে ওদের লাভ কি? ওরা আগে থেকেই জানবে কোন না কোন যাত্রী মোটা অংকের ক্যাশ বা গয়না বা দামি কিছু নিয়ে উঠছে। মানে আপনারই পরিচিতদের কেউ ডাকাত দলকে খবর দিবে আপনি লাখ খানেক টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ যখন তদন্ত শুরু করে, এই পয়েন্ট ধরেই শুরু করে। "আপনার পরিচিত কে কে জানতো যে আপনি এত টাকা নিয়ে বাসে যাচ্ছেন?" - এর উত্তরের সূত্র ধরেই ডাকাত দলকে ধরা সম্ভব।
আমরা যখন রাতের বাসে সোহাগ বা গ্রিনলাইনে ঢাকা/সিলেট যেতাম, তখন মনে আছে বাস কর্তৃপক্ষ ভিডিও ক্যামেরায় সব যাত্রীর চেহারা রেকর্ড করে রাখতো। তারপরে রাস্তার মাঝখানে কোথাও আবারও একই কাজ করতো। যাত্রীদের মধ্যে কেউ ডাকাত থাকলে চেহারা রেকর্ডেড হয়ে থাকতো। এতে পুলিশি তদন্ত অনেক সহজ হয়ে যেত। এখন কি এই কাজটা করা হয়?
নন-এসি বাসে এমনটা করা হতো কিনা মনে নেই। এই প্র্যাকটিস সব বাসের ক্ষেত্রেই করা উচিত।
অনেক বাসের ড্রাইভার রাস্তার মাঝ থেকেই random যাত্রী তুলে থাকে। খালি সিটে বসতে দেয়, কিছু পয়সা ওদের পকেটেও যায়। কিন্তু এইটা খুবই রিস্কি কাজ। এইসব যাত্রীদের যেহেতু কোন রেকর্ড থাকে না (টিকেট না কেনায় বা কাউন্টার থেকে না উঠায় ক্যামেরায় ছবি নেই), কাজেই এদের পক্ষে ডাকাতি করা সবচেয়ে সহজ।
নিশ্চিত থাকেন, ডাকাত যদি স্মার্ট হয়ে থাকে, তাহলে ঘটনা ঘটানোর আগে ডাকাত এই বাসে একই রুটে কয়েকবার যাতায়াত করেছে। ওরও রিহার্স্যালের প্রয়োজন হয়। সেও জানে বাস কোথায় থামে, কতক্ষণের জন্য থামে। ওর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে কতক্ষন সময় নিবে, ইত্যাদি।
একটা ব্যাপার সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকে বলে "চল্লিশ-পঞ্চাশ জন যাত্রী মিলে মাত্র দুই চারজন ডাকাতকে কিছু করতে পারেনা?"
এগুলি ফালতু পকপক। এরা কি জীবনেও বাসে চড়েনি? সিটে বসা যাত্রীদের কি নড়াচড়ার জায়গা থাকে যে এখানে সবাই অক্ষয়কুমার বা জ্যাকি চ্যান হয়ে সশস্ত্র ডাকাতদের পিটাবে? নড়লেই গুলি চালায় বা দা দিয়ে কোপায়। কারোর কিছুই করার থাকেনা। সিনেমা আর বাস্তব এক না, এইটা সবার বুঝা উচিত।

ডাকাতি বন্ধের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে রাস্তায় নিয়মিত পুলিশি/মিলিটারি টহলের ব্যবস্থা করা। ওদের গাড়ি দেখলেই ডাকাতদের কলিজা শুকিয়ে যাবার কথা। ডাকাতি প্ল্যান তখন আপনাতেই বাতিল হয়ে যায়।
নির্দিষ্ট বিরতি পরপর পুলিশি চেকপোস্টের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সাদা পোশাকে পুলিশ সাধারণ যাত্রী ছদ্মবেশে বাসে চেপে যাতায়াত করলেও ডাকাতি কমে যাবে। ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ তখন সরাসরি অ্যাকশন নিতে পারবে।
মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ডিটেক্ট করে যাত্রীদের বাসে তোলা বাধ্যতামূলক করতে হবে। যেকোন Sharp object, যা ধারালো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়, এমন কোন কিছু নিয়েই বাসে পরিবহন করা যাবেনা। নেইল কাটার হোক, বা আম কাটার ছুরি। এই ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করলেই ডাকাতি বন্ধ হয়ে যাবে। ডাকাততো আর খালি হাতে ডাকাতি করবে না।
একবার দরজা বন্ধ হয়ে গেলে বিরতির আগে না খোলা। আর বিরতি শেষে আবার মেটাল ডিটেক্টর, ক্যামেরা ইত্যাদি স্ক্যানিংয়ের মধ্যদিয়ে যাত্রীদের আবারও বাসে তোলা।

যাত্রীদের, বাস মালিকদের, পুলিশের সবার এক হয়ে কাজ করতে হবে। এছাড়া উপায় নেই।
এবং সবচেয়ে বড় কথা, ধরা পড়া ডাকাতদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক যেন হয়। সশস্ত্র ডাকাতির জন্য ইসলামী শাস্তি হচ্ছে "মৃত্যুদন্ড। নাহয় শূলবিদ্ধ করা। নাহয় ডান হাত ও বাম পা, কিংবা বাম হাত ও ডান পা কোণাকুণিভাবে কেটে দেয়া। নাহয় দেশান্তর।"
আমাদের হৃদয়ে মায়া ভালবাসা বেশি, তাই ডাকাতদের জেল জরিমানা দিয়ে আমরা ছেড়ে দেই।
কিন্তু এমন যেন না হয় যে ধরা পড়া ডাকাত জামিন দিয়ে ছাড়া পেয়ে বাইরের আলো বাতাস খেয়ে বেড়াবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটাই হচ্ছে।
শাস্তি কঠিন না হলে সাধারণ মানুষও চিন্তা করবে, পেশা হিসেবে ডাকাতি খুব একটা খারাপ পেশা না। একটু পরিশ্রম করলেই আলহামদুলিল্লাহ, "অল্প পুঁজি, বেশি রুজি!"

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

অপু তানভীর বলেছেন: ইউনিক বাসে আমি যতবার চলাচল করেছি ততবারে ওরা বাস ছাড়ার আগে শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত সবার ভিডিও করে রাখতো। তাহলে চেনা যায় যে কে ডাকাতি করছে। এই সিস্টেমটা সব বাসে করে না কেন কে জানে?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৫১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সামান্য কিছু পয়সা বাঁচানোর জন্য করেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.