নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপেল ডু

আপেল ডু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ প্রভাব; সূচনা অংশ ও প্রথম অধ্যায়

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪২

আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভগে পড়ি। দেশখ্যাত অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান যিনি আনু মোহাম্মদ নামে ব্যাপক পরিচিত, তিনি আমার বিভাগের শিক্ষক। তার তত্ত্বাবধানে আমাদের প্রতিটি ব্যাচ তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন মাঠ পর্যায়ের গবেষণাসহ একটি এ্যাসাইনমেন্ট করে থাকি। সাধারণত আমরা নিজেদের পছন্দের বিষয়ের উপরই কাজ করতে পারি যদিনা অন্য কোন গ্রুপ একই বিষয় নির্ধারণ করে থাকে। তেমনি আমি যে গ্রুপে ছিলাম তার নাম "গ্রুপ একাত্তর", আর আর আমাদের বিষয় ছিল “বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ প্রভাব।
আমাদের গ্রুপে আমরা মোট সাতজন ছিলাম; দিনাজপুরের জেনিফার ও মোহনা, রাজবাড়ির তন্বী, গোপালগঞ্জের হিরা, নরসিংদীর ইমরান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইসরাইল আর আমি কুড়িগ্রাম থেকে আপেল। আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দিনাজপুর শহরে ঊঠেছিলাম আমাদের প্রিয় বান্ধবী জেনিফার রহমান এর বাসায়। ৩-৪দিন একটানা কাজকর্ম করে, তারপর ঢাকায় এসে আবার ইন্টারনেট আর বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে আমরা সাজিয়েছি আমাদের এ্যাসাইনমেন্ট।
রাতজাগা পরিশ্রম আর, কাঠফাটা রোদ পার করে চূড়ান্ত এ্যাসাইনমেন্ট হাতে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি।
আমাদের ঐ পরিশ্রমের ফসল পেতে আমাদের যে কষ্ট হয়েছে তার চেয়ে কাজ শেষে সুখ পেয়েছিলাম অনেক বেশি।
সংরক্ষণ আর সকলের সহজেই হাতের কাছে আমাদের এই কার্যক্রম পৌছে দেওয়ার স্বার্থে আমি আমাদের পুরো কাজ আমার ব্যক্তিগত এই ব্লগে পর্যায়ক্রমে পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এতে যদি কখনও কেউ উপকৃত হয় তাহলে আমিসহ আমার গ্রুপের সবাই গর্ববোধ করব।
এই সময়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার বন্ধুভাবাপন্ন মানুষ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আনু স্যার, সম্মানিত বিশেষজ্ঞগণ আর খনি এলাকায় আমাদের নিয়ে কাঠফাটা রোদে ঘুরে বেড়ানো বাবু ভাই আর সানি ভাই এর প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানালে আসলে অন্যায় হবে, তাদের স্বরণ করছি।

একনজরে-
প্রথম অধ্যায়ঃ ভূমিকা
 কয়লা
 কয়লা নিয়ে গবেষণার কারণ
 বাংলাদেশে কয়লার অবস্থা
 “বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ প্রভাব” বিষয় নির্বাচনের কারণ
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ কয়লা উত্তোলন পদ্ধতি ও বড়পুকুরিয়া
 কয়লা উত্তোলনের বিভিন্ন পদ্ধতি
 গবেষণা এলাকা
 বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌগলিক অবস্থান ও ইতিহাস
 বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
তৃতীয় অধ্যায়ঃ কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের প্রভাব
 পরিবেশগত প্রভাব
 জনজীবনের উপর প্রভাব
 সামাজিক প্রভাব
 অর্থনৈতিক প্রভাব
 সারসংক্ষেপ

চতুর্থ অধ্যায়ঃ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব
 বিশুদ্ধ পানির অভাব
 পানিস্তর নিম্নমুখী
 বিদ্যুতের চরম সংকট
 চর্মরোগের প্রকোপ
 জলজ সম্পদ ধ্বংস
 উড়ন্ত ছাই সমস্যা
 কর্মসংস্থানের বৈষম্য
 তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব

পঞ্চম অধ্যায়ঃ সরকারের পদক্ষেপ, বাস্তবায়িত সত্য ও আন্দোলন
 সরকারের আশ্বাসসমূহ
 বাস্তবায়িত সত্য
 ফুলবাড়ী আন্দোলন

ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ একক ব্যক্তি সমীক্ষা
 একক ব্যক্তি সমীক্ষা

সপ্তম অধ্যায়ঃ উন্মুক্ত কয়লা খনির সরকারি পরিকল্পনা ও সম্ভব্য বিপদ
 জাতীয় পরিসরে প্রচারণা
 স্থানীয় তৎপরতা
 উন্মুক্ত খননের লাভ-ক্ষতি

অষ্টম অধ্যায়ঃ উন্মুক্ত খনির আন্তর্জাতিক তুলনা
 জার্মানির সাথে বাংলাদেশের পার্থক্য
 অস্ট্রেলিয়ার উন্মুক্ত খননের অভিজ্ঞতা
 কলম্বিয়ার উন্মুক্ত খননের অভিজ্ঞতা
 ভারতের সাথে বাংলাদেশের তফাৎ
 সার্বিক পর্যালোচনা

নবম অধ্যায়ঃ বিশেষজ্ঞদের মতামত
 বিশেষজ্ঞদের মতামত

দশম অধ্যায়ঃ শেষ কথা
 আমাদের কথা
 উপসংহার

প্রথম অধ্যায়ঃ ভূমিকা
কয়লা
কয়লা হচ্ছে এক বিশেষ ধরণের দাহ্য পদার্থ যা কালো বা বাদামী রংয়ের হয়ে থাকে। মাটির নিচে যে স্থানে কয়লা থাকে তাকে সাধারণত কয়লা বেড বা কয়লা স্তর বলে। জানা যায়,কয়লা শক্তিসম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটা বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদনের জন্য জ্বালানো হয়। এটা শিল্প কারখানায়ও ব্যবহার করা হয়,যেমন,ধাতু পরিশোধন। বিশ্বব্যাপী এই বিদ্যুতের যুগে কয়লা হচ্ছে একটি অন্যতম শক্তির উৎস।



১৯৮৩ সাল থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কয়লা উৎপাদনকারী দেশ চীন যা মোট কয়লার ৪৯.৫৫% উৎপাদন করে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র,ভারত,রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ কয়লা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

কয়লা নিয়ে গবেষণার কারণ
প্রাকৃতিক গ্যাসের পর কয়লাই হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিকল্প জ্বালানি ভাণ্ডার,তাতে সন্দেহ নেই। জ্বালানি শক্তির অপর নাম বিশ্বশক্তি। বিশ্বে সমৃদ্ধ জাতি হতে হলে জ্বালানি নিরাপত্তার বিকল্প নেই। মধ্যপ্রাচ্যে চরম অশান্তির মূল কারণ খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস,যার নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মূলত ইরাক,ইরান-ইরাক ও আফগান যুদ্ধ। লিবিয়া ও মিসরে সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন,মধ্য এশিয়ার কাস্পিয়ান অঞ্চলে চলমান অস্থিরতা এসব কিছুর পেছনে আসলে জ্বালানির নিরাপদ সরবরাহের বিষয়টি সরাসরি জড়িত। বিশ্বে মোট ব্যবহৃত জ্বালানির ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ মেটানো হয় কয়লার মাধ্যমে এবং বিশ্বে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ উৎপাদন হয় কয়লা থেকে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জ্বালানি সংকট নিরসনে কয়লার ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই আমরা “কয়লা” সম্পর্কিত বিষয়কেই গবেষণার জন্য নির্বাচন করি।

কার্যপদ্ধতি
• সরাসরি মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ।
• বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা।
• সংবাদপত্র, ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কয়লা এর সাথে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ ও সমন্বয়।

বাংলাদেশে কয়লার অবস্থা
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জ্বালানি সংকট নিরসনে কয়লার ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৫৯-২০১৪ পর্যন্ত দেশে শনাক্তকৃত কয়লা-বেসিনের সংখ্যা ১৩টি,যার সবই উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর,বগুড়া জেলার ভূগর্ভে অবস্থিত। দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়া,ফুলবাড়ী ও দীঘিপাড়া, রংপুর জেলার খালাসপীর এবং জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ মিলে মোট পাঁচটি কয়লা-বেসিনে এ পর্যন্ত নির্ণীত কয়লার পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৩০০ মিলিয়ন টন,যার তাপ উৎপাদন ক্ষমতা ৯১ টিসিএফ গ্যাস ব্যবহারের সমান। অর্থাৎ বাংলাদেশে বর্তমানে মজুদ প্রাকৃতিক গ্যাসের (১৫ টিসিএফ) প্রায় ছয় গুণ চাহিদা কয়লা থেকে মেটানো সম্ভব হবে। এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত পাঁচটি কয়লা-বেসিনের একটা গড় হিসাব এটি। এছাড়া শনাক্তকৃত আরও আটটি কয়লাবেসিন যেমন—দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ, বুড়িরডোবা,শিমনগর ও ডাঙ্গাপাড়া বেসিন,রংপুর জেলার ওসমানপুর ও বদরগঞ্জ বেসিন, নাটোরের সিংড়া বেসিন এবং বগুড়ার কুচমা বেসিন তো রয়েছেই। সব মিলে এটা পরিষ্কার যে, আমরা যদি কয়লার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি,তাহলে দেশের জ্বালানি সংকটের উত্তরণ ঘটিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।

“বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ প্রভাব” বিষয় নির্বাচনের কারণ
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশের একটি বহুল আলোচিত বিষয়। সংবাদপত্র, টেলিভিশন আর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সময় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র,এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা,শ্রমিক আন্দোলন,এলাকাবাসীর বাধা আর ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়িতে এশিয়া এনার্জি কোম্পানির সাথে সরকারের উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের চুক্তির বিরুদ্ধে লাখ জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ সংগ্রামে শহীদ তরিকুল,সালেকিন ও আমিনুল সম্পর্কে জানতে পারি।



এছাড়াও ইদানীংকালে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন প্রকল্প ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। এতে আমাদের ঐ বিষয়য়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়,আর আমরা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আমাদের বিষয়টি নির্বাচন করি।
গবেষণার এলাকা
কয়লার জন্য প্রসিদ্ধ দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা। যদিও বড়পুকুরিয়া পার্বতীপুর উপজেলায় অবস্থিত কিন্তু সকল কার্যক্রম ফুলবাড়ী দিয়েই হয়ে থাকে।



পার্বতীপুর উপজেলাধীন ৯নং হামিদপুর ইউনিয়ন একটি সুবিশাল জায়গার মধ্যে অবস্থিত। উপজেলা থেকে দক্ষিণ দিকে ৯নং হামিদপুর ইউনিয়ন টি অবস্থিত।



হামিদপুর ইউনিয়ন

উত্তর দিকে ৪নং পলাশবাড়ী ইউনিয়ন,পূর্ব দিকে ১০ নং হরিরাম পুর ইউনিয়ন,পশ্চিমে ৮নং হাবড়া ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ দিকে ফুলবাড়ী উপজেলা। এই ইউনিয়নে অবস্থিত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এবং তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৮

দুর্বার ফখরুল বলেছেন: বাকি অংশটুকূ পড়তে চাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.