নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"নিশ্চয়ই তিনি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষনবী।\" - সূরা আহযাব : ৪০

NurunNabi

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

NurunNabi › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্নের উত্তর : ঈসা (আ.) আবার আসলে মুহাম্মদ (সা.) শেষনবী থাকেন কিভাবে?

২৭ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৮

ঈসা (আ.) আবার আসলে তখন শেষনবী কে হচ্ছেন? অনলাইনে অধিকাংশ কাদিয়ানী এই প্রশ্নের আড়ালে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নবুওয়ত দাবীর বৈধতা খোঁজার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করারও খুব চেষ্টা করে। অথচ প্রশ্নটির উত্তর খুবই সহজ, একটু মগজটা খাটালেই হয়!

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে কাদিয়ানীদের বিক্ষিপ্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর দেব।

তাদের প্রশ্ন, নবীউল্লাহ হযরত ঈসা (আ.)-এর আগমনের বিষয়ে যারা বিশ্বাস রাখে, তারা একই সাথে খাতামান্নাবীঈন (সা.)-কে কিভাবে ‘শেষনবী’ মনে করে? এভাবে আপনাদের বিশ্বাস পরস্পর বিরোধী নয় কি?

উত্তর হচ্ছে, তাহলে তো মির্যা কাদিয়ানীও নবুওয়তের দাবী করতে পারেনা। অথচ তার অনুসারীরা ঈসা (আ.)-এর আগমনী বিশ্বাসের ভিত্তিতেই মির্যা কাদিয়ানীর ‘নবী’ দাবী মেনে নেয়! যদিও বা তাদের কেউই নবী দাবীদার মির্যা কাদিয়ানীর উম্মত হতে চায় না। আহা! এ কি অদ্ভুত ধরণের নবী আর কি অদ্ভুত অনুসারী!

এবার সরল উত্তরে আসি, ঈসা (আ.) এমন একজন নবী যিনি পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার আসার অনেক আগেই নবুওয়ত লাভ করেছেন। ফলে তার আবার আসাতে নবুওয়তের দরজায় কোনো রকম ধাক্কা লাগবেনা। হ্যাঁ, তিনি আবার আসার পর যদি তার পূর্বের নবুওয়ত রিনিউ(!) করার দরকার হত, শুধুমাত্র তখনি খতমে নবুওয়তের সীল ভেঙ্গে অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রয়োজন হত! মূলত এইজন্যই ঈসা (আ.)-এর দ্বিতীয়বারের আগমন দ্বারা হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণী ‘আমিই শেষনবী’ (انا خاتم النبيين)-এর উপর কোনো প্রশ্ন উঠবেনা। শায়খ ইবনুল আরাবী (রহ.)-ও একই কথা লিখে গেছেন স্বীয় 'ফতুহাতে মাক্কিয়া' (খ-২/পৃ-৩) কিতাবে। যেমন তিনি লিখেন, ونبوة عيسى عليه السلام ثابتة له محققة فهذا نبي ورسول قد ظهر بعده صلى الله عليه وسلم وهو الصادق في قوله إنه لا نبي بعده অর্থাৎ "পক্ষান্তরে নবুওয়তে ঈসা স্থির ও বহাল থাকবে। যেহেতু তিনি-ও একজন নবী ও রাসূল ছিলেন। তাঁর পরেই হযরত (সা.)-এর আবির্ভাব ঘটেছিল। যিনি স্বীয় বাণী : إنه لا نبي بعده (অর্থাৎ নিশ্চয়ই তাঁর পরে আর কোনো নবী নেই) বাণীতে একজন সত্যবাদী।" একদম পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, শায়খ ইবনে আরাবীও কথিত 'রূপক ঈসা'র আগমনী কনসেপ্টে বিশ্বাসী ছিলেন না, বরং সেই ঈসা ইবনে মরিয়মের-ই পুনঃ আগমনে বিশ্বাসী ছিলেন যিনি ইতিপূর্বে নবী ও রাসূল ছিলেন আর তাঁর পরেই আবির্ভূত হন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আহা! এরপরেও কাদিয়ানীরা এই সহজ বিষয়টা ঘোলাটে করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেই করবে!

যাইহোক, এরপর তারা প্রশ্ন করে, সত্যি সত্যিই যদি বনী ইসরাইলের নবী ঈসা (আ.) শেষে আসেন তবে জন্মের দিক দিয়ে শেষনবী না হলেও মৃত্যুর দিক দিয়ে ঈসা (আ.)-ই শেষনবী হন, তাই নয় কি?

উত্তর– মৃত্যুর দিক দিয়েও ঈসা (আ.) শেষনবী হন না। কেননা ঈসা (আ.) মৃত্যুর আগে নিজের প্রাপ্ত নবুওয়তকে রি-নিউ বা নবায়ন করবেন না। যদি করতেন তখনি এই দাবী সঠিক ছিল। সত্য বলতে, কাদিয়ানীদের প্রশ্নগুলোই বলে দেয় যে, তারা ধর্মজ্ঞানে কতটা অজ্ঞ!

তারা আবার প্রশ্ন করে যে, তার মানে তিনি পুনরায় এসে নবী হিসেবে মরবেন না?

উত্তর – ঈসা (আ.) পুনরায় এসে পূর্ববর্তী একজন নবী হিসেবে মরবেন, তবে পুনরায় আগমনের পর তিনি যেহেতু নবুওয়তের দায়িত্বে থাকবেন না, স্রেফ উম্মত হিসেবে থাকবেন সেহেতু তাঁর মৃত্যুটা একই সাথে ‘উম্মতি’ হিসেবেও হবে। বলে রাখা জরুরি যে, আমরা মুসলিম উম্মাহা বরং ‘খতমে নবুওয়ত’-এর সে অর্থই নিয়ে থাকি যে অর্থ নিয়েছেন বিশিষ্ট যুগ ইমাম আবুল কাশেম মাহমুদ ইবনে উমর আল যামাখশারী (রহ.) [মৃত. ১১৪৩ হিজরী]। তিনি “শেষনবী” এর সংজ্ঞায় লিখে গেছেন, “যাকে সবার শেষে নবী বানানো হয় তিনিই শেষনবী”। পক্ষান্তরে ঈসা (আ.) হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের আগ থেকেই নবী ছিলেন (قلت: معنى كونه آخر الأنبياء أنه لا ينبأ أحد بعده، وعيسى مما نبئ قبله، وحين ينزل، ينزل عاملاً على شريعة محمد مصلياً إلى قبلته كأنه بعض أمته)। (তাফসীরে কাশশাফ ৩/৫৪৫, সূরা আহযাব আয়াত নং ৪০ দ্রষ্টব্য)।

তারা আর কোনো প্রশ্ন খোঁজে না পেয়ে শেষে একদম ফালতু একটা প্রশ্ন করে যে, তাহলে কি ঈসা (আ.)-এর নবুওয়ত তখন বাতিল হয়ে যাবে বলতে চান?

উত্তরে বলতে চাই, ঈসা (আ.)-এর পুনঃ আগমনে তাঁর নবুওয়ত "বাতিল" হয়ে যাবে, এটা তো মুসলমানদের বিশ্বাস নয়। মুসলমানদের বিশ্বাস তো হল, নবুওয়তে মুহাম্মদীর যুগে যদি আগেকার কোনো নবীও ইহজগতে থাকত তাহলে তিনিও নবুওয়তের দায়িত্বমুক্ত হয়ে স্রেফ উম্মতে মুহাম্মদী বলে গণ্য হয়ে যেতেন। নিচের সহীহ হাদীস সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। যেমন, আল্লাহর রাসূল (সা.) একটা হাদীসে বলেছেন, لو كان أخى موسى حيا ما وسعه إلا اتباعي . أخرجه أحمد অর্থাৎ যদি আমার ভ্রাতা মূসাও জীবিত থাকত তাহলে তার জন্য আমার আনুগত্য ছাড়া কোনো উপায় ছিলনা। (মুসনাদে আহমদ ৩/৩৮৭, হাদীসের মান, হাসান)। এখন আপনি কি রাসূল (সা.)-এর উপরেও একই প্রশ্ন উঠাবেন যে, তাহলে কি মূসা (আ.)-এর নবুওয়ত সে সময় বাতিল হয়ে যাবে? নাউযুবিল্লাহ। আপনাদের উচিত, মির্যার নবুওয়ত দাবীর বৈধতা খোঁজার আগে নিজেদের ঈমানের পরিণতি নিয়ে চিন্তা করা। এবার প্রশ্নোত্তরে আসা যাক,

বাকি লিখাটি পড়তে ক্লিক করুন

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
শিক্ষাবিদ ও গবেষক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.