নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মারুফ হোসেন

Tsundoku

মারুফ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকটি মিথোলজিক্যাল প্রাণী

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৮

মিথোলোজি এক মজার বিষয়। গত সপ্তাহে ওয়েন কোলফারের আর্টেমিস ফাউল সিরিজের প্রথম বই পড়তে গিয়ে মজার মজার কয়েকটি মিথোলজিক্যাল প্রাণীর ব্যাপারে জানতে পেরেছি। ওগুলো থেকে কয়েকটি প্রাণী সম্পর্কে অল্পস্বল্প দুয়েকটা কথা লিখতে ইচ্ছে হলো।


লেপ্রিকন
আইরিশ রূপকথার একটি প্রাণী লেপ্রিকন। ধরে নেয়া হয় যে এরা ছোট ছোট দাঁড়িওয়ালা, তবে মানুষের মতো দেখতে, উচ্চতায় ২-৩ ফুট। পরনে থাকে কোট আর মাথায় হ্যাট। দুষ্টামি করেই কাটে এদের দিন। আর যখন দুষ্টামি করে না, তখন জুতা বানানো আর মেরামতির কাজে ব্যস্ত থাকে। যদি কোনও মানুষের হাতে ধরা পরে, তাহলে সেই মানুষের তিনটা ইচ্ছা পূরণ করার বিনিময়ে নিজের স্বাধীনতা কিনে নেয়। এরা আইরিশ মিউযিক এবং আয়ারল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী নাচ প্রচণ্ড পছন্দ করে। টিনের বাঁশি, বেহালা, বাউরান, এমনকি আইরিশ হার্প বাজাতেও ওস্তাদ এই প্রাণীরা।
লেপ্রিকনরা সাধারণত একা একা থাকতেই ভালবাসে। আইরিশ রূপকথা অনুসারে, যখন কোনও রংধনু আকাশে দেখা যায়, তখন এরা সেই রংধনুর প্রান্তে চলে যায়। নিজের সোনা লুকিয়ে রাখে সেখানে। তাই আদিকালে আয়ারল্যান্ডের মানুষ রংধনু দেখতে পেলেই, তার শেষ প্রান্ত খোঁজার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ত।
কেউ কেউ লেপ্রিকনদের আয়ারল্যান্ডের নেটিভ বাসিন্দা মনে করে।


এলফ
এলফ-দেরকে আমরা পেয়েছি জার্মান রূপকথার মাধ্যমে। যাবতীয় পৌরাণিক বা কাল্পনিক প্রাণিদের মধ্যে সম্ভবত এলফরাই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। সেই শেকস্পিয়ারের আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নানা সাহিত্যে এদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
প্রি-ক্রিশ্চান মিথলজি, নর্স ও জার্মান লোকজনের মতে, এলফরা এক ধরনের ডেমিগড(আধা-দেবতা)। এলফদের রাজ্য আলফহেইমের অধিপতি ভ্যানির দেবতা ফ্রেয়ার।
সূচালো কান, সুন্দর চেহারা আর দীর্ঘজীবন অন্যান্য রূপকথার প্রাণিদের থেকে এদেরকে আলাদা করেছে। নানা দেশের রূপকথা এদেরকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানোয় এবং নিজেদের মাঝে ঢুকিয়ে নেয়ায়, এদের ক্ষমতা আর পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারে নানা মত রয়েছে।


গবলিন
গবলিনরা সম্ভবত রূপকথার প্রাণীগুলোর মাঝে সবচাইতে ভয়ানক। সাধারণত এদেরকে শয়তান প্রানি হিসেবেই নানা গল্পে দেখা যায়, যারা মানুষের ক্ষতি করতেই বেশি আগ্রহি। সেই সাথে তারা লোভী আর কাপুরুষ হিসেবেও পরিচিত।
বনের প্রানিদের সাথে, বিশেষ করে নেকড়ের সাথে গবলিনদের একটা আলাদা স¤পর্ক আছে বলে ধারনা করা হয়। নেকড়েরা যেমন গবলিনদের প্রতি বিশ্বস্ত, তেমনি গবলিনরাও নেকড়েদের প্রতি বিশ্বস্ত।
গবলিন ছাড়াও এদেরকে হবগবলিন, বোগার্ট, ওর্ক, বোগল, হোবার্ট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়।



গ্রেমলিন
দানবীয় বা শয়তান প্রকৃতির প্রানিদের মাঝে, সবচেয়ে কম বয়সী হলো গ্রেমলিন। এদের উৎপত্তি আমেরিকায়। মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতি ও ইঞ্জিনের আশেপাশে পাওয়া যায় এদেরকে।
সাধারণত, যন্ত্রপাতিতে গোলমাল করার মাধ্যমে মানুষকে বিরক্ত করে এরা। এই যেমন, ধারালো যন্ত্র ভোঁতা করে দেয়া, আঙুলে ভুল করে হাতুড়ির বাড়ি দেয়ানো, টায়ারের হাওয়া বের করে দেয়া ইত্যাদি।



সেন্টর
বুক, মাথা আর দেহ মানুষের, অথচ ঘোড়ার মতো চার পা আর এক দেহ-এই হলো সেন্টর। রূপকথা এই প্রাণীরা আকারে বিশাল। গ্রীক পুরাণ থেকে এদের উৎপত্তি।
তীরন্দাজ হিসেবে সেন্টরদের তুলনা নেই। আর সবচেয়ে নামকরা সেন্টর হলো কিরণ বা কাইরন। একই সাথে তারা সময়ের সবচেয়ে জ্ঞানী শিক্ষক ও দক্ষতম তীরন্দাজ।


ট্রল
স্ক্যান্ডেনেভিয়া, বিশেষত নরওয়ের গল্পগাথায় ট্রলদের সদর্প উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। ধরে নেয়া হয়, ট্রলরা কম বুদ্ধি সম্পন্ন একটা বিশেষ প্রজাতি। আকারে আট ফুট বা তারও বেশি এই প্রাণীরা অসম্ভব শক্তিশালী এবং সর্বভুক। এমনকি মানুষেও এদের অরুচি নেই।
এরপর নানা দেশের রূপকথায় নানাভাবে ট্রলদেরকে তুলে ধরা হয়েছে। তবে কম বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া আর অস্বাভাবিক শক্তিধর হওয়াটা সব জায়গাতেই আছে। সেই সাথে আছে বড় বড় দাঁত এবং শব্দ ও আলোর প্রতি তীব্র স্পর্শকাতরতা।



স্প্রাইট
বিভিন্ন আকার আর বিভিন্ন রঙের স্প্রাইটদের মাঝে একটা মিল অবশ্যই থাকবে, আর তা হলো চকচকে পাখা। আকারে পোকামাকড়ের মতো ক্ষুদ্র হওয়াটাও অসম্ভব না, তেমন অসম্ভব না প্রায় একফুট লম্বা হওয়াটাও।
সাধারণত, ঘন বনের মাঝে বাস করে স্প্রাইটরা। কেউ কেউ গাছের উঁচু ডালে, আবার কেউ কেউ বাস করে নদী বা ঝর্ণার ঠিক পাশে।
দল বেঁধে চলাচল করে স্প্রাইটরা, আমুদে প্রকৃতির হলেও তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তোলা খুব সহজ। আবার যত তাড়াতাড়ি খেপে যায় তারা, তত তাড়াতাড়িই ভুলে যায় সবকিছু। এদের মনোযোগ ধরে রাখতে হলে, মুহূর্মুহূ পরিবর্তন আর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে হয়। আবার বেশি জটিল চ্যালেঞ্জ হলে আগ্রহও হারিয়ে বসতে পারে তারা।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

স_লামিসা বলেছেন: বেশ মজার পোস্ট।


ভালো লাগলো জেনে।


:)

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩৫

মারুফ হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। ছবি আরো বেশি দিলে ভালো হতো।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৩

মারুফ হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭

তানভীর আকন্দ বলেছেন: এ নিয়ে হোর্হে লুইস বোর্হেসের একটা বই ছিল, Book of Imaginary Beings. আমাদের এখানে এরকম কোনও বই নেই, আফসোস....

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৩

মারুফ হোসেন বলেছেন: আমাদের এখানে এসব নিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই-ই বলতে গেলে! :(

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:২৯

তানভীর আকন্দ বলেছেন: করলেই হয়, আমাদের রূপকথাগুলি নিয়ে, সুকুমারের ছড়াগুলির কথাও মনে পড়তেছে...

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:০৮

মারুফ হোসেন বলেছেন: সেই ডেডিকেশনই তো নাই কারও। আবার কারও যদি ছিটেফোঁটা ডেডিকেশন কিংবা আগ্রহ থাকেও সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতায় মাঠেই মারা যায়।

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

তানভীর আকন্দ বলেছেন: সে একটা সমস্যা, নিজ উদ্যোগেই করতে হবে। সুযোগ সুবিধার চিন্তা করে লাভ নাই....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.