নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মারুফ হোসেন

Tsundoku

মারুফ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুনের ছক [অনুবাদ গল্প]

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৭

পিটার ক্যালনের হাতে একটা ম্যাগাজিন। ম্যাগাজিনটা সে এমনভাবে মুখের সামনে ধরে রেখেছে, যেন গভীর মনোযোগে পড়ছে। কিন্তু আসলে কিছুক্ষণ পর-পর তেরছা চোখে তাকাচ্ছে বউয়ের দিকে। মেয়েটা ওর দিকে তাকানোর সাথে সাথেই আবার চোখ নামিয়ে নিচ্ছে ম্যাগাজিনের পাতায়।
গত কয়েক মাসের চাপা উত্তেজনা, গোপন প্রতীক্ষার অবসান ঘটছে অবশেষে। অনেকটা ফাঁকা মাথায় ভাবছে পিটার, নিজের স্ত্রীকে খুন করতে যাচ্ছে কেন সে। বড় ধরনের কোন অপরাধ মিরা করেনি। আট বছরের বিবাহিত জীবনে গুরুতর কোন ঝগড়াঝাঁটিও হয়নি ওদের মাঝে।
ছোট এক-রুমের অ্যাপার্টমেণ্টের এক কোণে বসে থাকা মিরার ওপর চোখ পড়ল পিটার ক্যালনের। সঙ্গে সঙ্গে ঘৃণা ও বিতৃষ্ণার অনুভূতিটা ফিরে এল। ব্যাপারটার শুরু ছ’মাস আগে। তখন অবশ্য ব্যাপারটা কেবলমাত্র ভাবনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। একজন মানুষ নির্ভয়ে কীভাবে তার স্ত্রীকে খুন করতে পারে? কীভাবে খুন করলে ধরা পড়ার ন্যূনতম সম্ভাবনাও থাকবে না? এই ভাবনার পুরোটা সময় সে সম্পূর্ণ অপরিচিতের দৃষ্টিতে দেখেছে তার স্ত্রীকে। দেখতে গিয়ে লক্ষ করেছে, এই আট বছর পুরোপুরি বদলে দিয়েছে মিরাকে।
আট বছরে অনেক মুটিয়ে গেছে মিরা, চর্বি জমেছে চিবুকের নিচে। কিন্তু এই দীর্ঘ পৌনে এক যুগে একটা জিনিস বদলায়নি—ওর পারিপাট্যহীনতা। অথচ একসময় ওর এই অগোছালো স্বভাবই ভীষণ আকর্ষণ করত পিটারকে।
পিটার ক্যালন খুব পরিচ্ছন্ন ও গোছানো স্বভাবের মানুষ। সবসময় নিভাঁজ, পরিষ্কার কাপড় পরে সে। বাথরুমের তাকে রেযর সবসময় যথাস্থানে থাকে, একটুও নড়চড় হয় না।
অথচ মিরা—নিঃসন্তান হওয়া সত্ত্বেও—ঘর-গেরস্থালীর কাজ ঠিকমত সামলে রাখতে পারে না। নিয়মিত গোসল করে না, রান্নাঘরটাও নোংরা করে রাখে, এমনকী বিছানাও গোছায় না নিয়মিত। একসঙ্গে আট বছর কাটানোর পর এখন আর স্ত্রীকে সহ্য করতে পারছে না পিটার।
বিপত্নীক হওয়ার চিন্তাটা বেশ আকর্ষণীয়। ধাঁধা সমাধান করার নেশা আছে পিটার ক্যালনের। শব্দজট, সাংকেতিক লিপির সমাধান করতে খুব পছন্দ করে সে। ছ’মাস ধরে খুনটা এক জটিল ধাঁধা হয়ে দেখা দিয়েছে ওর কাছে।
অবশেষে...মাসখানেক আগে, পছন্দসই একটা উত্তর খুঁজে পেয়েছে সে ধাঁধাটার।
বউয়ের দিকে তাকাল পিটার। একগোছা বাদামি চুলের গোছা এসে পড়েছে মিরার গালের ওপর। পায়ের ওপর পা তুলে বসেছে ও। জুতো পরা এক পা দোলাচ্ছে। একটা উপন্যাস পড়ছে মিরা। এক পৃষ্ঠা পড়া শেষ করে যখন নতুন পাতা উল্টাবে, ডান হাতের আঙুলে থুতু মাখিয়ে পরের পাতায় যাচ্ছে। দেখে ঘৃণায় গা রি-রি করে উঠল পিটারের। বহু আগেই মিরার ছোঁয়া বই পড়া বাদ দিয়েছে সে।
কিছুদিন ধরে সে রাস্তার ও অফিসের অল্পবয়েসী মেয়েদের মনোযোগ দিয়ে দেখছে। যৌবনের পারিপাট্য আছে ওদের মধ্যে।
বইটা হাত থেকে নামিয়ে রাখল মিরা। স্বামীর উদ্দেশে হাসল। তারপর এগিয়ে গেল কিচেনের দিকে। জগ থেকে এক গ্লাস পানি ঢেলে নিতে শুনল ওকে পিটার। তারপর ঢক-ঢক করে পানি পান করার বিচ্ছিরি শব্দটা এসে ঢুকল কানে। পিটার জানে, এখন আবার ডান উল্টো পিঠ মুখ মুছতে মুছতে ঘরে ঢুকবে ও। তা-ই হলো।
পিটার কখনও মুখের ওপর বলতেও পারবে না, ‘মিরা, আমাদের একঘেয়ে বিবাহিত জীবন নিয়ে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’ বেচারি মিরা। নিজেকে সামলাতে পারবে না ও। না, তালাক দিয়ে কোন লাভ হবে না। এতে বরং জটিলতা আরও বাড়বে। খুনই সবচেয়ে সহজ উপায়। কোন ঝুট-ঝামেলা নেই। সে যে স্ত্রীকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে, মরার সময় জানতেও পারবে না মিরা। ট্রানযিস্টর রেডিওটা ছেড়ে দিয়ে আবার পড়তে শুরু করল।
‘দুটো স্টেশন একসাথে চলছে,’ চেষ্টা করেও বিরক্তি চাপতে পারল না পিটার।
কান পেতে কিছুক্ষণ শুনল মিরা। ‘কিন্তু একটা স্টেশনের শব্দ তো প্রায় যায় না প্রায়।’
রেগেমেগে উঠে গেল পিটার। নব ঘুরিয়ে ঠিক করল ট্রানযিস্টরের ডায়াল। কোন কাজই ঠিকমত করতে পারে না ওর বউ। হাঁটাচলাও করে গদাইলশকরি চালে। যেন দুনিয়া জাহান্নামে গেলেও কোন তাড়া নেই।
বেশিরভাগ খুনই করা হয় তাড়াহুড়ো করে। মোটিভও থাকে পানির মত পরিষ্কার। পিটার মিরাকে খুন করলে, বন্ধু-বান্ধবরা কোন মোটিভই খুঁজে পাবে না। বন্ধু-বান্ধবরা ওদেরকে আদর্শ দ¤পতি মনে করে।
আবার দীর্ঘ সময় নিয়ে, বেশি চিন্তা-ভাবনা করে খুন করতে গেলে, খুনি সবকিছু ঘোঁট পাকিয়ে ফেলে।
তাই খুনের পরিকল্পনাটা হতে হবে নিখুঁত। পিটার ক্যালন নিখুঁত মানুষ—তাই সে নিজেও সব কাজ নিখুঁতভাবে সারতে চায়।
আবার বউয়ের দিকে তাকাল সে। বইটা উরুর ওপর চলে গেছে। মিরার মাথাটা সামান্য কাত হয়ে রয়েছে, ঘুমোচ্ছে মুখ হাঁ করে। সশব্দে নিঃশ্বাস নিচ্ছে খোলা মুখ দিয়ে। ওদের বাড়িতে এটাই প্রতি রাতের রুটিন। বিছানায় যাবার আগে বউকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে পিটার। এখন আর ভান ধরার প্রয়োজন নেই তার। নিশ্চিন্তে, সরোষে চেয়ে থাকতে পারে ঘুমন্ত স্ত্রীর দিকে।
মনস্থির করে ফেলল সে। বিপত্নীক হয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল পিটার ক্যালন।

শুক্রবারে মিরাকে দিয়ে নোটটা লিখিয়ে নিল সে।
ডেস্কে বসে ছিল পিটার, আঁকিবুঁকি কাটছিল খাতায়। বিরক্তি প্রকাশ করার জন্য ঘোঁত-ঘোঁত শব্দ করছে কিছুক্ষণ পর-পর। হিজিবিজি যা লিখছে, একটু পর-পরই সেই কাগজটা দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে দিচ্ছে ময়লার ঝুড়িতে। সমস্যা কী, জানতে চাইল মিরা।
‘কিছু না, কিছু না,’ অধৈর্য গলায় বলল সে।
অনেকক্ষণ ধরে যা খুশি লিখে চলল সে। তারপর বিরক্ত গলায় বলল, ‘ধুত্তোর!’ কাগজটা দুমড়ে-মুচড়ে আবার ফেলে দিল ময়লার ঝুড়ি।
‘কী সমস্যা, ডার্লিং?’ জানতে চাইল মিরা।
‘তুমি বোধহয় সাহায্য করতে পারবে। একটা গ্যারেজ মালিকের কাছে চিঠি লিখছি। হিসেবে গোলমাল লাগিয়েছে লোকটা। বার-বার বলার পরও ঠিকমত হিসেব রাখেনি। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে লোকটার সঙ্গে। তার কাছে একটা চিঠি লিখব বলে ঠিক করেছি। কিন্তু কী যে লিখব, ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। লেখা আর চিন্তা করা—দুটো কাজ একসঙ্গে হচ্ছে না! কী লিখতে হবে, আমি মুখে মুখে বলে দেই, আর তুমি যদি লিখে দাও। খুব ভাল হয় তাহলে।’
‘নিশ্চয়ই লিখব, ডার্লিং। দাও, খাতা-কলম দাও,’ বলল মিরা।
মিরার নোটপ্যাড থেকে নতুন একটা পৃষ্ঠা বের করে, ওর হাতে ফাউণ্টেন পেন ধরিয়ে দিল পিটার। ছোট্ট ডেস্কটার সামনে বসে পড়ল ও।
‘কার কাছে লিখব?’
‘ওর নাম লিখতে হবে না এখন। পরে বসিয়ে দেব আমি। দাঁড়াও প্রথম অনুচ্ছেদটা কী হবে, বলি। “তুমি জানো, সবকিছু ঠিক করতে চেষ্টার কোন ত্রুটি করিনি আমি। কিন্তু কোন চেষ্টাই কাজে এল না।” এবার নতুন অনুচ্ছেদ লেখো। “দয়া করে এ-কাজ করার জন্যে আমার ওপর রাগ কোরো না। আমি নিশ্চিত, এর জন্যে ভবিষ্যতে তুমি খুশিই হবে।” হ্যাঁ, এটুকু লিখলেই হবে।
স্ত্রীর কাঁধের ওপর দিয়ে উঁকি মারল সে। ওর গোটা গোটা হাতের লেখা চিঠিটা পড়ল। লাইনগুলো বরাবরের মতই উপরের দিকে একটুখানি বেঁকে গেছে।
‘কলমটা পছন্দ হয়েছে?’ স্বাভাবিক স্বরে জিজ্ঞেস করল সে। টের পেল, ঠাণ্ডা ঘাম জমেছে পাঁজরে।
‘তুমি তো জানোই-ভারী নিব পছন্দ আমার।’
‘পাতলা নিব ব্যবহার করতে করতে অভ্যেস হয়ে গেছে আমার। ঠিক আছে। এবার, এখানে তোমার নাম স্বাক্ষর করো। আমিও এভাবে করব।’
বাধ্য মেয়ের মত ও লিখল: ‘মিরা’। নামের শেষাংশটুকু লেখার আগেই ওর হাত থেকে কলমটা নিয়ে নিল পিটার। ‘এক মিনিট। কলমের নিবে বোধহয় একটু বেশি চাপ দিয়ে ফেলছ।’ কলমটা ল্যাম্পলাইটের নিচে নিয়ে কিছুক্ষণ উল্টে-পাল্টে দেখল সে। ‘একটু উঠে বসো তো, সোনা। আমি একবার লিখে দেখি।’
ডেস্কের সামনে বসে পড়ে আরেক তা কাগজ নিল সে।
‘ঠিকই আছে। ধন্যবাদ, সোনা। চিঠিটা কপি করে লোকটার কাছে পাঠিয়ে দেব।’
‘স্বাগতম,’ হাসিমুখ বলল মিরা। দীর্ঘ কয়েক মিনিট ওর মুখের দিকে তাকানোর ঝুঁকি নিল না পিটার। যখন মুখ তুলল, ততক্ষণে আবার উপন্যাসে ডুবে গেছে। একটুও সন্দেহ করেনি। কোন সন্দেহের অবকাশ রাখা যাবে না। কাজেই এক ক্লায়েণ্টের নাম ব্যবহার করে চিঠিটা আবার লিখল সে। তারপর ওটা দেখাল বউকে। মতামত দিতে বলল। মিরা বলল, ঠিকই আছে।
ও ঘুমানোর পর লেখাটা আবার পড়ল পিটার। আঙুলের ছাপের সমস্যা দূর করা যাবে। ওকে কেবল নিশ্চিত করতে হবে, সে-ই যেন নোটটা সবার আগে পায়।
তুমি জানো, সবকিছু ঠিক করতে চেষ্টার কোন ত্রুটি করিনি আমি। কিন্তু কোন চেষ্টাই কাজে এল না।
দয়া করে এই কাজ করার জন্যে আমার ওপর রাগ কোরো না। আমি নিশ্চিত, এর জন্যে ভবিষ্যতে তুমি খুশিই হবে।
-মিরা


লেখাগুলো একটু বেখাপ্পা, তবে অর্থ বুঝে নিতে সমস্যা হবে না কারও। চিঠিটা লেখা হয়েছে মিরার নিজস্ব মনোগ্রাম দেয়া ধূসর নোটপ্যাডে। কাগজটা নিজের ব্যবসায়িক কাগজপত্রের সাথে ঢুকিয়ে রাখল পিটার। জানে, বউ কখনও এসবে হাত দেবে না। এবার মাথা থেকে এই দুশ্চিন্তার বোঝার নামানোর জন্যে একটু হাঁটতে বেরোতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু কাজটা বোধহয় ঠিক হবে না, কারণ ওটা ওর প্ল্যানে নেই।
তাই হাঁটার চিন্তা বাদ দিয়ে অর্ধ-সমাপ্ত একটা ধাঁধার সমাধান করতে বসে গেল। পনেরো মিনিটের মধ্যে ধাঁধার মধ্যে ডুবে গেল সে। সব দুশ্চিন্তা উধাও হয়ে গেছে মাথা থেকে।
মাঝরাত হয়ে গেল ধাঁধাটার সমাধান বের করতে করতে। একটা খামে পুরল সমাধানটা। তারপর যে-ঠিকানায় পাঠাবে, সেটা লিখল খামের ওপরে। মিরা আপনাআপনিই জেগে গেছে। হাই তুলে, নিদ্রাতুর চোখে হাসল স্বামীর দিকে চেয়ে। মেয়েটা ওকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে! ক্ষণিকের জন্যে দুর্বল হয়ে গেল পিটারের মনটা। হাতের খামের কথা ভাবল সে। এই ধাঁধাটার প্রথম পুরস্কার পঞ্চাশ হাজার ডলার। পঞ্চাশ হাজার ডলার দিয়ে জীবনটা আরেকটু সহনীয় করা যাবে। এমনকী আরেকটু সহনীয় মনে হবে মিরাকেও। টাকা দিয়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বাধীনতা কিনে নেয়া যায়।
কিন্তু পিটার ক্যালন জানে, ছোট ছোট অনেক পুরস্কার জিতলেও, এত বড় পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা খুবই কম। নেই বললেই চলে।
স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে ফিরতি হাসি দিল সে। তারপর শুতে গেল।

শনিবারে ঘণ্টাখানেক একলা কাটানোর সময় পেয়ে গেল সে অ্যাপার্টমেণ্টে। ওদের অ্যাপার্টমেণ্টটা দালানের পেছনদিকে, নিচতলায়। জানালার পাশেই বেশ কয়েকটা সিডার গাছ। গাছগুলোর শাখা-প্রশাখা নেমে এসেছে ওদের অ্যাপার্টমেণ্টের জানালা পর্যন্ত। ফলে জানালাগুলো সবসময়ই আধো-আলোছায়াতে থাকে। আধো-অন্ধকার পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ক্লযিট থেকে বড়শির সুতো বের করল সে। দশ ফুট সুতো কেটে নিল ওখান থেকে। শেষ মাথায় একটা ফাঁস বানাল ফস্কা-গেরো দিয়ে। জানালাগুলোতে তারের জালি দিয়ে স্থায়ী পর্দা লাগানো। ওগুলোকে ভেতর থেকে খোলা-বন্ধ করা যায় কেবল। পিটারের প্রতিটা পদক্ষেপ সুপরিকল্পিত। ছোট্ট গ্যাস স্টোভের হ্যাণ্ডেলগুলো নিচের দিকে। একেবারে জায়গামত। হ্যাণ্ডেলটা ডানে ঘুরিয়ে স্টোভ চালু করতে হয়—পিটারের জন্যে খুব সুবিধে হয়েছে। একটা হ্যাণ্ডেলে ফাঁস গলিয়ে দিয়ে, শক্ত করে এঁটে দিল ওটা। তারপর সুতোর ওপর মাথাটা জানালার কাছে নিয়ে গেল। তারের জালির ফাঁক দিয়ে বাইরে বের করে দিল সুতোর খানিকটা অংশ। কয়েক ইঞ্চি ফাঁক হয়ে আছে এখন জানালাটা। তারপর স্ক্রুড্রাইভার হাতে বাইরে বেরোল পিটার। পুরো বিল্ডিং ঘিরে একটা চক্কর মেরে চলে এল জানালার পাশে। ভাবখানা এমন যে নষ্ট হয়ে যাওয়া জানালা মেরামত করতে হবে। জানালার নিচেই পেয়ে গেল সুতোর শেষ মাথাটা। ওটা ধরে ধীরে ধীরে টানতে লাগল সে। প্রথমে কিছুটা বাধা দিলেও, খানিক বাদে স্টোভের হ্যাণ্ডেল থেকে ফাঁস খুলে গেল। সুতোটা টেনে বের করে আনল পিটার তারের জালির ফাঁক দিয়ে। যা ভেবেছিল—সামান্য ঘোরাঘুরি করতেই ভেতর থেকে লেগে গেল জানালার হুড়কো।
দ্রুত পায়ে বাসায় ঢুকল সে। ঢুকেই দেখে গ্যাসের গন্ধে ভরে গেছে রান্নাঘরটা। স্টোভের হ্যাণ্ডেল তাহলে খোলা গেছে।
চারটে চুল্লি আছে স্টোভে। বড়শির সুতো কেটে নিয়ে আরও তিনটে ফাঁস বানাল পিটার। চার চুল্লির হ্যাণ্ডেলে চারটে ফাঁস পরিয়ে, সুতোর শেষ মাথা জানালার জালির ফাঁক দিয়ে করে করে টান মারলেই খুলে যাবে হ্যাণ্ডেলগুলো। সুতো চারটেও সুর-সুর করে বেরিয়ে যাবে বাইরে। সুতোর ফাঁস চারটে যত্ন করে ক্লযিটে তুলে রাখল পিটার ক্যালন।
মিরা বাইরে দেখে ফিরে দেখে, নতুন একটা ধাঁধার সমাধানে ব্যস্ত ওর স্বামী।
শনিবার চলে গেল। রোববারে একটু বিশ্রাম নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের কাজে নেমে পড়ল সে। মিরা ভীষণ ঘুমকাতুরে মানুষ। দিনে দশ-এগারো ঘণ্টা না ঘুমোলে ওর চলে না। পিটার সিদ্ধান্ত নিল, ওকে কিছুতেই ঘুমোতে দেয়া যাবে না।
সোমবার রাতে বউকে নিয়ে সিনেমা দেখতে নিয়ে গেল সে। বাসায় ফেরার পর অনেকক্ষণ ধরে সিনেমা নিয়ে গল্প করল। বউয়ের উপর্যুপরি হাই তোলা আর দীর্ঘশ্বাস ফেলাকে পাত্তাই দিল না। শুতে গেল রাত আড়াইটায়। সকাল সাতটায় অ্যালার্ম দিয়ে রাখল পিটার। ঠিক সাতটায় ঘুম থেকে ডেকে তুলল মিরাকে। মঙ্গলবার দিনের বেলায় চারবার চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ফোনে কথা বলল সে অনেকক্ষণ করে। প্রতিবারই বউয়ের ঘুম ভাঙিয়ে দিল। সেদিন রাতে মিরাকে নিয়ে বাইরে খেতে গেল সে। খেয়ে-দেয়ে বাসায় ফিরে, সিনেমা দেখতে বসল। কড়া নজর রাখল পিটার ওর ওপর। যখনই একটু ঝিমাতে শুরু করল, তখনই ওকে জাগিয়ে দিল সে। তারপর সিনেমাটার কিছু অংশ বারকয়েক দেখাল। সিনেমা দেখা শেষ হলে নানা বাহানায় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলল ফোনে।
বিছানায় গেল ওরা মাঝরাতে। বাতি নিভিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইল পিটার। কিন্তু খানিক বাদেই মিরাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলল, ভীষণ অসুস্থ লাগছে ওর। স্বামীকে ভীষণ ভালবাসে মিরা। কাজেই ওর চিন্তায় সারারাত ঘুমই হলো না বেচারির। বুধবার সকালে অফিসে ফোন করল পিটার। জানিয়ে দিল, তার শরীরটা ভাল নয়, তাই অফিসে যেতে পারবে না। সারাদিনে কিছুক্ষণ পর-পরই বউকে ডেকে ওর পাশে বসে থাকতে বলল সে। ঘুমে ঢুলু-ঢুলু চোখে সারাদিন ওর পাশে বসে থাকল মিরা।
উত্তেজনা চেপে রাখতে কষ্ট হচ্ছে পিটার ক্যালনের। বিকেল পাঁচটায় বিছানা থেকে উঠে ঘোষণা করল সুস্থ বোধ করছে এখন। বলল, ভীষণ খিদে পেয়েছে। কয়েক পদের খাবার রান্না করে খাওয়াল ওকে মিরা।
সন্ধ্যা সাতটায়, বাসনকোসন ধোয়া-মোছা শেষ করে উইং চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়ল মিরা।
‘মিরা!’ চড়া গলায় বউকে ডাকল পিটার। ‘মিরা!’
সাড়া দিল না ও। নিখুঁত প্রস্তুতি স¤পন্ন। এবার চূড়ান্ত নাটক মঞ্চস্থ হবার পালা। নাটকটা মঞ্চস্থ করবার জন্যে অবশ্য কোন শক্তিই খরচ করতে হচ্ছে না পিটারকে। এরইমাঝে আধমরা হয়ে গেছে মিরা। কিচেনের জানালাটা কয়েক ইঞ্চি ফাঁক করল পিটার। সুতোর ফাঁস চারটে বের করল ক্লযিট থেকে। তারপর স্টোভের চুল্লির হ্যাণ্ডেলগুলোতে গলিয়ে দিল ফাঁসগুলো। সাবধান রইল, যাতে হ্যাণ্ডেলে আঙুলের ছাপ না পড়ে। নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে মিরা।
সুতোর শেষ মাথাগুলো তারের জালি গলিয়ে বাইরে বের করে দিল। আধো আলোছায়াতে সুতোগুলো দেখতে পাবে না মিরা। পকেট থেকে অ্যাপার্টেমেণ্টের চাবি বের করে ডেস্কের ওপর রেখে দিল পিটার। তারপর মিরাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয়া চিরকুটখানা বের করে ওটাও রাখল ডেস্কের ওপর। অ্যাশট্রে দিয়ে চাপা দিল কাগজটা। ঘরের চাবি নিজের কাছে রাখা যাবে না। কাগজটাও এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন খুব সহজেই যে-কারও চোখে পড়ে। চিঠিটা পুলিস বা অন্য কেউ খুঁজে পেলে সবচেয়ে সুবিধে হয়। তাহলে ব্যাপারটা সামলানো ওর জন্যে সহজ হবে।
রঙ্গমঞ্চ প্রস্তুত। উঁচু স্বরে বউকে ডাকল সে। ওকে কাঁধে হাত রেখে ঝাঁকি দিল।
‘মিরা!’
মুচকি হাসি ফুটে উঠল মিরার ঠোঁটে। ‘ডার্লিং, ভীষণ ক্লান্ত লাগছে আমার। এখন উঠতে পারব না। ক্লান্তিতে মরেই যাব।’
শেষের কথাটা শুনে চমকে উঠল পিটার। তারপর ব্যঙ্গের হাসি ফুটে উঠল ওর ঠোঁটের কোণে।
‘ডার্লিং, আজ অফিসে যেতে পারিনি বলে ভীষণ খারাপ লাগছে। বেনিংগারের ড্রাগস্টোরে যাচ্ছি একটু। ওরা আমাদের ক্লায়েণ্ট। ওদের সঙ্গে ছোট্ট একটা কাজ সেরে আসছি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিরব।’
‘আমি তাহলে শুতে গেলাম।’
‘না, না, এখন শুয়ে পোড়ো না। সবে সাতটা বাজে। এখন ঘুমালে রাতে আর ঘুম হবে না।’
‘ঠিক আছে তাহলে, তুমি আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করব,’ ঘুম-জড়ানো গলায় বলল মিরা।
দরজা খুলল সে। তারপর পিছু ফিরে বলল, ‘আসছি, ডার্লিং।’
হাই তুলল মিরা। ‘বাই, পিটার।’
দরজা লাগিয়ে দিল সে। পিছনে তালা লেগে যাওয়ার ক্লিক শব্দ শুনতে পেল। পুরো পরিকল্পনার সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়টার এ-ই শুরু। পিটারদের অ্যাপার্টমেণ্ট বিল্ডিংটা নির্জন একটা রাস্তার পাশে। কারও চোখে পড়েনি, সে-ব্যাপারে নিশ্চিত হবার পর ত্রস্ত পায়ে চলে এল একসারি সিডার গাছের পাশে। লিভিং রুমের জানালা দিয়ে ভেতরে উঁকি মারল অতি সন্তর্পণে। মিরা যে উইং চেয়ারটায় বসে রয়েছে, সেটা চোখে পড়ল। চেয়ারের হাতলে স্ত্রীর হাত দেখতে পেল সে। নড়াচড়া করছে না। ঘরের প্রতিটা জিনিস ¯পষ্ট দেখা যাচ্ছে এখান থেকে।
রান্নাঘরের জানালার পাশে চলে এল পিটার। চারটে সুতোই তারের জালি গলে বাইরে বেরিয়ে রয়েছে। সুতো চারটে ধরে ধীরে-সুস্থে টানতে শুরু করল সে। সহসা চারটে সুতোই হ্যাণ্ডেল থেকে খুলে চলে এল ওর হাতে। খানিক পর জানালাটা লেগে গেল। বিল্ডিঙের কোনায় চলে এল পিটার। নির্জন সাইডওয়াকের এমাথা-ওমাথা একবার দেখে নিয়ে দক্ষিণ দিকে হাঁটা ধরল। বেনিংগারের ড্রাগস্টোরে যাবে।
বেনিংগারদের ছোট ভাইটা বসেছে কাউণ্টারে। পিটারকে দেখে হাসি দিল ছেলেটা। জবাবে আড়ষ্ট হাসি দিল সে-ও। মাথার ভেতরে গ্যাস বের হওয়ার হিস্-হিস্ শব্দ ঘুরপাক খাচ্ছে কেবল। কপাল ভাল, গ্যাস স্টোভটা সস্তা। তাই এত সহজে চুল্লির হ্যাণ্ডেল খুলতে পেরেছে।
‘এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। ভাবলাম নতুন রেজিস্টার টেপটা কেমন কাজ করছে দেখে যাই।’
‘ভালই কাজ করছে, মি. ক্যালন। প্রথম হপ্তায় একটু ধীরে কাজ করছিল। তবে এখন সব ঠিকঠাক। নতুন কয়েকটা শব্দজটের বই এসেছে দু’দিন আগে।’
‘তাই নাকি? খুব ভাল।’ র‌্যাক থেকে নতুন আসা বইগুলো তুলে নিল সে। তারপর ওগুলো কাউণ্টারের ওপর রেখে একটা টুলে বসে পড়ল। ‘একটা বিয়ার দাও, প্লিয।’
‘এখনই দিচ্ছি।’ গ্লাসে পানি আর বিয়ার ঢালল বেনিংগার। পানি ঢালার সময় কেমন যেন গ্যাস বেরোবার মত হিস্-হিস্ শব্দ করে উঠল। ‘মিসেস কেমন আছেন?’
‘কী? ওহ্, মিরা! ভালই আছে। তোমার এখানে বসে কিছুক্ষণ শব্দজট মেলালে কিছু মনে করবে না তো?’
‘কিছু মনে করার প্রশ্নই ওঠে না, মি. ক্যালন।’
বিভিন্ন শহর আর রাজ্যের নাম দিয়ে বানানো একটা শব্দজট তুলে নিল পিটার। চট করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নিল একবার পকেট থেকে পেন্সিল বের করতে করতে। আটটা দশ। ধাঁধা মিলাতে শুরু করল সে। ক্রিসমাসের শহর। খুব সহজ—বেথেলহেম, পেনসিলভ্যানিয়া। দশ নম্বর নামটা ওকে ঝামেলায় ফেলে দিল। ছ’টা অক্ষর। ওটার সমাধানও পেয়ে গেল। ধাঁধায় ডুবে গেল পিটার। কিন্তু মন থেকে চাপা উত্তেজনা আর দুশ্চিন্তাটা দূর করতে পারল না।
কী হচ্ছে এখন বাসায়? গ্যাসের গন্ধে জেগে যায়নি তো মিরা?
ধাঁধার সমাধান করে ঘড়ির দিকে তাকাল পিটার। ন’টা পনেরো। যতটা ভেবেছিল তারচেয়ে বেশি সময় লেগেছে।
‘শেষ?’ জানতে চাইল বেনিংগার।
‘হ্যাঁ।’
বেনিংগার হাসল। ‘ধাঁধা মিলানোর জন্যেই আপনার জন্ম। আমার দেয়া একটা ধাঁধার সমাধান করে একবার যে পঞ্চাশ ডলারের সরকারি বণ্ড পুরস্কার পেয়েছিলেন মনে আছে?’
‘নিশ্চয়ই, মনে আছে। এবার বাড়ি যাই। মিরাকে নিয়ে ইদানীং বেশ চিন্তা হচ্ছে। কেমন যেন হতাশ আর মনমরা হয়ে পড়েছে ও।’
‘এই বিচ্ছিরি আবহাওয়ার কারণে নিশ্চয়ই। যাক গে, শুভরাত্রি, মি. ক্যালন।’
ড্রাগস্টোর থেকে বেরিয়ে এল পিটার। সবকিছু ভালমতই সামলেছে। নিখুঁতভাবে ঘটছে সবকিছু।
হঠাৎ টের পেল, অস্বাভাবিক দ্রুত হাঁটছে সে। সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে দিল হাঁটার গতি। রাতের হিম বাতাস ঝাপটা মারছে চোখে-মুখে। তাজা বাতাস। তাজা, প্রাণদায়ী বাতাস। খটখট শব্দ তুলে ফুটপাতের ওপর দিয়ে হাঁটছে পিটার ক্যালন। এক দম্পতি ওকে পাশ কাটিয়ে গেল। ওদেরকে বিল্ডিঙেই থাকে তারা—মুখচেনা। কপাল ভাল, অ্যালিবাই পাওয়া গেল।
‘গুড ইভনিং,’ খুশি খুশি গলায় বলল সে।
‘হ্যালো, ক্যালন,’ জবাব দিল পুরুষটি। খুব ভাল। পিটার তো জানতও না যে লোকটা ওর নাম জানে।
বিল্ডিঙের সদর দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ল ও। লম্বা করিডর পেরিয়ে এল, এলিভেটর পেরিয়ে, কোণ ঘুরে চলে এল নিজের অ্যাপার্টমেণ্টের সামনে। লম্বা একটা দম নিয়ে টোকা দিল দরজায়। তারপর উচ্চস্বরে চেঁচাতে লাগল, ‘মিরা! মিরা! দরজা খোলো। আমি চাবি নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।’
ঠিক তখনই গ্যাসের ক্ষীণ গন্ধটা নাকে এল। নিশ্চিত হবার জন্যে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল সে। তারপর দড়াম দড়াম করে ঘুষি মারতে লাগল দরজায়। ‘মিরা!’ গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠল। জানে, আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই অন্যান্য অ্যাপার্টমেণ্টের দরজাগুলো খুলে যাবে। ‘মিরা!’
অসহায়ভাবে দরজার নব ধরে কিছুক্ষণ মোচড়ামুচড়ি করল সে। লাথি মারল দরজার গোড়ায়। মৃতা স্ত্রীর নাম ধরে ডাকাডাকি করল। আচমকা মনে হলো, দরজাটা যেন আলগা হয়ে ওর হাতে চলে এসেছে। পিটারের বুকে-মুখে প্রচণ্ড ধাক্কা মারল খুলে আসা দরজাটা। দরজার পিছু পিছু এল উত্তপ্ত, নীলচে আগুনের লেলিহান শিখা। ভারী দরজাটা বুকের ওপরে নিয়ে করিডরের বিপরীত পাশের দেয়ালের ওপর আছড়ে পড়ল পিটার ক্যালন...

মেয়েটা খুব মুষড়ে পড়েছে। তাছাড়া ওর চেহারাটা দেখতে কিছুটা তাঁর মেয়ের মত। তাই খুব কোমল ব্যবহার করছেন ওর সঙ্গে পুলিস লেফট্যানেণ্ট।
‘ব্যাপারটা তো তোমার জানার কোন উপায় ছিল না,’ সান্ত¡না দিতে দিতে বললেন তিনি।
‘ব্যাপারটা কী করে ঘটল, কিচ্ছু বুঝতে পারছি না আমি।’
ভারী কাঁধ-জোড়া ঝাঁকালেন লেফট্যানেণ্ট। ‘অ্যাপার্টমেণ্টের ভেতরে গ্যাসের ঘনত্ব অস্বাভাবিকরকম বেড়ে গিয়েছিল। তাই ফোন বেজে উঠতেই ওটার শব্দে ক্ল্যাপারটা (এক ধরনের বৈদ্যুতিক সুইচ, যা কোন শব্দ হলেই কার্যকর হয়ে ওঠে) সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে আগুন জ্বলে উঠল ওঠে ভেতরে। তাই তুমি ফোন করার পর সংযোগ পাবার সঙ্গে সঙ্গেই লাইন ডেড হয়ে গেল। যাই হোক, এসব তো তোমার জানার কোন উপায় ছিল না।’
মেয়েটির চোখে আহত হরিণীর দৃষ্টি। ‘আ...আমি নিজে জোর করে ফোনটা করেছিলাম। অন্য একটা মেয়ে ফোন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওকে করতে না দিয়ে আমিই করি ফোনটা। ভেবেছিলাম, কাউকে পঞ্চাশ হাজার ডলার পুরস্কার জেতার খবর দেয়ার ব্যাপারটা দারুণ রোমাঞ্চকর একটা ঘটনা হবে।’
স¯্নেেহ মেয়েটার কাঁধে আলতো চাপড় মারলেন লেফট্যানেণ্ট। তাঁর বাহুতে মুখ লুকাল মেয়েটা। ‘তোমার কোন দোষ নেই,’ বললেন তিনি।
কাছেই শব্দ করে উঠল একটা টেলিগ্রাম মেশিন, লম্বা কাগজ বেরোতে শুরু করল ওটা থেকে। ঘুরে দাঁড়ালেন লেফটেন্যাণ্ট, দৃঢ় পায়ে বেরিয়ে এলেন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের অফিস থেকে

মূল: জন ডি. ম্যাকডোনাল্ড
রূপান্তর: মারুফ হোসেন

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ভাল লাগল। কিছু টাইপো রয়ে গেছে। আপনার অনুবাদের হাত ভাল। লিখতে থাকুন।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: অনুবাদ ভালোই হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.