নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাসির জগতে পৃথিবী লজ্জিত আর দুঃখের জগতে আমি লজ্জিত ।

মারুফ ৪০২

আমি স্বাধীনচেতা মানুষ রাখঢাক কম ,হাসতে ভালো লাগে হাসাইতে আরো মজা পাই । জীবনের লক্ষ্য আজো অস্পষ্ট ।

মারুফ ৪০২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথা বলবনা, বললে আমার পিঠের চামড়া থাকবেনা :প্রেক্ষিত ঢাবির ৯৪ তম জন্মদিন।

০১ লা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২৮

আমার চিন্তা-চেতনায় সম্ভবত উন্নত মানের কোন এলার্জি আছে, তা না হলে কেনো আমি আর দশ জনের মত এভারেজ ভাবতে পারিনা। কথাটা কম বলেছি না বেশি বলেছি সেটা বোঝা যাবে একটু পরে।

আজ ঢাবির ৯৪ তম জন্মদিন, একটা মানুষ এই বয়সে একেবারে থুরথুরে বুড়ো আর একটা বিশ্ববিদ্যালয় এই বয়সে শিশু কিংবা কিশোর (অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ,আল আজহার কিংবা আমার নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স হিসাব করলেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে) তার সামনে এখনও অনেক পথ বাকি, দেয়ার সবেমাত্র শুরু সামনে সে শুধু দিবে আর দিবে। আজ যে ভাষায় লিখছি,যে ভাষায় কথা বলছি সেটার সিংহভাগ অবদান এই আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ক্রিকেটে আজ কাউকে বাংলাওয়াশ করলে যে লাল সবুজের ১৬ কোটি মানুষের আত্মা সদৃশ একটা পতাকা নিয়ে আমরা দৌঁড়ায় সেটাও এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দান। আমার প্রাণ পুরুষ জাতির জনকের মত নেতাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দান, তবে এখন কেন জানি মনে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের উপর অভিমান করেছে, হৃদয় উজাড় করে এখন সে আর দান করেনা, দান করতে চায়না ।

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন উদযাপন মানে তাকে শুধু ওইলিং এন্ড পাম্পিং করে বিশাল বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা নয় বরং তার অতীত ইতিহাসের সাথে বর্তমান চরিত্রের একটা যোগসুত্র টানাই আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত,সেখানে থাকবে এই চিন্তা, কিভাবে তার অতীত গৌরব ফিরিয়ে দেয়া যায় অথবা তার চেয়ে আরও ভালো কিছু করা যায়।

এখন বলি অন্যকথা,প্রতিবছর বিসিএসের মাধ্যমে যতজন বাংলাদেশ সরকারকে সেবা করার সুযোগ পান তার সিংহভাগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্তান, অনেকে বলেন সেটার গানিতিক হিসাব মোট ক্যাডার সংখ্যার ৫০ কিংবা ৬০ ভাগ, আচ্ছা এখন যদি বলি বাংলাদেশ যে বিশ্বে দুর্নীতির সূচকে বারবার সামনের দিকে আসন পায় তার জন্য ৫০ কিংবা ৬০ ভাগ অবদানই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, যেহেতু আমাদের বড় ভাইয়েরা, বোনেরা ওইসব বড় বড় পদে সমাসীন হয়েছেন যেখান থেকে দুর্নীতির সূত্রপাত হয়, সেটা মানতে আমাদের সবার বেশ কষ্ট হবে অনেকের হয়ত বুক ফেটে যাবে, আবেগে আটখান হয়ে অনেকেই আমাকে খুন করতে উদ্ধত হবেন তার পরও এটাই সত্য। ৯৪ বছরে আমার প্রাণের এই বিশ্ব-বিদ্যালয়টি নৈতিক চরিত্রের শ্রেষ্ঠগুণ সম্পন্ন মানুষ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে সে কথা মানতে হবে এবং তার জন্মদিনের আলোচনায় এই ব্যাপারটি নিয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশ্বমানের জায়গা সুতরাং সেখানে গোলাম আজমের মত কুখ্যাত দেশদ্রোহী মানুষও জন্ম নিতে পারে আবার জাতির জনকের মত মহান নেতাও জন্মাতে পারে সেটা সত্য তবে গড় হিসাবে ভালোরাই বেশি জন্মাবে বা ভালোর দলটাই ভারী হবে সেটাই স্বতঃসিদ্ধ অথচ ঢাবির চেহারা আজ তা বলেনা।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম হয়েছিল ঠিক যে কারনে, সেটি হল এমন, এই ভূভাগের মুসলিমরা যেন শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে না থাকে, যেহেতু তখন কলকাতায় একটা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছিল, নবাব সলিমুল্লাহ নিজে মুসলিম ছিলেন আর তাই তিনি মুসলিমদের কল্যানে এখানে ৬০০ একর জমি দান করেছিলেন, দয়া করে ব্যাপারটিকে সাম্প্রদায়িকতার দৃষ্টিতে বিবেচনা করবেন না, সে সময়ের পরিস্থিতিই ছিল এমন, ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দুরা চেয়েছিল নবাব সিরাজের পতন হোক, তাতে মুসলিম শাসনের অবসান হবে, সে সময়ে হিন্দুদের আসনে মুসলিমরা থাকলে তারাও একই কাজ, একই চিন্তা করত, নবাবের পতনও হয়েছিল, তাই পরে তারা ইংরেজদের গোলামি করে বড় বড় পদে বসেছিলেনও বটে, যার ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে মত কিংবা বিরোধীতা করেছিলেন সে সময়ের জগত জোড়া বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, তিনি আমার প্রাণের স্পন্দন আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মক্কা বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়েছিলেন। যাহোক, আজ যখন দেখি মুসলমানদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ কোরান,হাদিস জানার কারনে সোজা বাংলায় মাদ্রাসায় পড়ার কারনে একটা মুসলিম ছাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেও তার পছন্দের সাবজেক্টে ভর্তি হতে ব্যর্থ হন তখনই আমার মনে হয় নবাব সলিমুল্লাহ আপনার স্বপ্ন মাটি হয়েছে, সরি,সরি,সরি আপনাকে আমরা হাজার সরি বলছি। এই ব্যাপারটিও জন্মদিনের অালোচনায় আজ আনতে হবে, ভাবতে হবে সবাইকে।

প্রাচ্যের সেই অক্সফোর্ড আজ যেন এক ধরনের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, ডিপার্টমেন্টে ভালো অবস্থান করতে হলে টিচারদের পা ধরে থাকতে হয়, আর টিচার হতে গেলে রাজনীতিবিদদের পা ধরে থাকতে হয়, সেই অক্সফোর্ডে আজ মেধার মূল্যায়ন কোথায় গেল? এ পা ধরাধরির শেষই বা কোথায় কে জানে? ঢাবির জন্মদিনের আলোচনায় আজ তাকে শুধু অহেতুক পাম দিলেই হবেনা, এই ব্যাপারগুলোরও যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে।

আজ আমার ক্যাম্পাস বড় বড় আকাশ চুম্বী বিল্ডিংয়ে ছেয়ে গেছে, বিশাল তোরন নির্মান করেছি আমরা অথচ বিশ্বের প্রথম একশ কেউ কেউ বলছেন পাঁচশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমার এই আবেগের নামটি মাইক্রোসকোপ যন্ত্র দিয়েও খুজে পাওয়া যায়না, আজ তাহলে হলটা কি?

সুতরাং আজ আমরা সবাই কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে সমস্মরে বারংবার বলতে চাই আমার প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেয়া হোক, আজ মিয়ানমারের মত একটা অসভ্য দেশ যখন আমার বিজিবিকে অত্যাচার করে অন্যায়ভাবে আটকে রাখে তখন আমরা বলি হে ঢাবি তুমি আবারও হুংকার ছাড়ো, তোমার বুকে প্রথম ওড়া আ.স.ম আব্দুর রবের হাতের সেই লাল সবুজের পতাকা এবার তুমি আমার হাতে তুলে দাও, জ্বালিয়ে,পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়ে আসি মিয়ানমারী বর্মি অসভ্যদের, আমাকে আজ তুমি সেই শক্তি দাও, সাহস দাও যা দিয়ে আমি শত্রুর বুক ঝাজরা করে দেব যেমনটা তোমার নেতৃত্বে দিয়েছিলাম পাকিস্তানকে।

জয় ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়, দীর্ঘজীবী হও, শেষদিবসের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দোর্দন্ডপ্রতাপে টিকে থাকো, শাসন কর সারা বিশ্বকে তোমার নিজের মত করে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.