নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Every logic we put together to get the clear concept

মাশুক খান

যা আছি তা নিয়ে সুখী, ভান নেওয়া অপ্রয়োজনীয়। ভালোলাগে জোৎস্নায় রাস্তায় হাটাহাটি, শীতের সকাল আর বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা। নিজের ভুল স্বীকারে আপত্তি নেই কিন্তু অনুতপ্ত নই।

মাশুক খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প :: সোডিয়াম লাইট

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১২

"সোডিয়াম লাইট"
লেখক :: মাশুক খান
এক.
টি টিট, টি টিট, টি টিট। তীক্ষ্ণ শব্দে এলার্ম ক্লোক বেজে চলছে। অর্থাৎ এখন সকাল সাড়ে সাতটা। ঘড়ির দিকে হাত এগিয়ে নিলাম আর ঘুম ঘুম চোখে কয়েকবার চেষ্টার পর ঘড়ি শান্ত হলো। আজ অফিস নেই তাই আরো ঘন্টা দুই ঘুমানো যেতে পারে আর আমার মনে হয় সেটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাছাড়া আমি ঘুমকাতুরে মানুষ, পৃথিবীর সবকিছু শুধু ঘুমের জন্যই সেক্রিফাইস করতে পারি। দ্বিতীয় দফায় যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন ঘুম মহাশয় তুঙ্গে ওঠার যোগাড় আর এজন্য দায়ী হচ্ছে নাহিদ। আমার বন্ধু, কলিগ, আরো অনেক কিছুই। এক ফ্লাটে গত ছয়মাস দুজন ভাড়া থাকছি আর একসাথে প্রায় দেড় বছর। আজ তো নাহিদেরও অফডে তাহলে কি কারনে বিরক্ত করছে ? সম্ভবত ব্রেকফাস্টের জন্য। বাসার কাছাকাছি একটা রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন নাস্তা করি, দেরী করলে খাবার নাও পাওয়া যেতে পারে। বুয়া রাখার ঝামেলায় আমি বা নাহিদ কেউই যেতে ইচ্ছুক ছিলাম না। কারন ঢাকা শহরের বুয়াগুলো বজ্জাত আর চোরা স্বভাবের। বাসার কাছাকাছি রেস্টুরেন্টের সাথে মাস হিসাবে ডিল করা আছে। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার, সব ঝামেলা থেকে একসাথে মুক্ত। নাহিদের দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করতেই ও আবার ধাক্কাধাক্কি শুরু করলো। মনে হয় ও পণ করে নিয়েছে আমাকে আজ ঘুমাতে দিবেনা।
"ওই শালা ওঠ, বাসা দেখতে হবে। ভুলে গেছোস ?"
"পারবো না, তুই যা"
"বললেই হলো নাকি ! বাড়িওয়ালা বাসা ছাড়ার শেষ নোটিশ দিছে ভুলছোস নাকি ?"
"তোর কারনেই হইছে" চোখ বন্ধ করেই জবাবে বললাম। কথাটা ভুল না। নাহিদ একটু ক্যারেক্টার লেস টাইপের। ছয় মাসে এই ফ্লাটে কমপক্ষে আঠারোজন মেয়ে নিয়ে এসেছে এবং একেকদিন একজনকে এভাবে প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসেছিলো। ওর গার্লফ্রেন্ডের যন্ত্রণাতে আমি নিজেই অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম সেখানে বাড়িওয়ালার কি দোষ ! একটা মেয়ে ওর খালাতো বোন, অন্যটা আমার মামাতো বোন, আরেকটা ওর ভাগ্নি এভাবে কতদিন বাড়িওয়ালাকে বোকা বানানো সম্ভব ? আর এসব কর্মকান্ডের ফলাফল বাসা ছাড়ার ফাইনাল নোটিশ। "তুই গিয়ে বাসা খোঁজ। আমি পারবো না"
"দেখ ভাই এমন করিস না। ওঠনা ভাই... ওই ফাহিম ওঠ না ভাই..."
চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকালাম। ঘন্টার কাটা সময় দেখাচ্ছে দশটা। সময়টা খেয়াল করার পর উঠে বসলাম আর মোবাইল খুঁজে লাগলাম। বিবাহিত মানুষ ঘুম থেকে উঠে বউকে খুঁজে আর অবিবাহিতরা খুঁজে মোবাইল। ইহা ব্যাচেলরদের জন্য চিরন্তন সত্য। ফ্রেশ হয়ে দ্রুত নাস্তা পাঠ চুকিয়ে ফ্লাট থেকে বেড়িয়ে আসলাম। বাড়ির দিকে ঘুরে তাকানোর পর নিজের অজান্তেই খেয়াল করলাম দোতলার বারান্দায় দাড়ানো মেয়েটিকে। বাড়িওয়ালার ছোট মেয়ে, নাম সম্ভবত লাবনী। বাড়িওয়ালা যদিও আমাদের বাসা থেকে বের করে দিচ্ছে, তারপরও মাঝেমধ্যে কথাবার্তায় মনে হয় আমাকে জামাই হিসাবে তার বেশ পছন্দ। আমার ধারনা সম্ভবত তিনি জেনেছেন আমাদের ফ্লাটের মেয়েগুলো নাহিদের কাছে আসে। তাছাড়া অপছন্দ করার মত ছেলেও নই আমি। ভালো বংশ পরিচয়, শিক্ষা আর ভালো চাকরি কোনটারই অভাব নেই আমার। যদিও আমি বলবোনা, আমি ধোয়া তুলসী পাতা অথবা আমার চারিত্রিক দিক খুব ভালো। তবে আমি নাহিদের মত অতটা খারাপও নই। জীবন প্রেম করছি দুইবার তবে সেঁকা খেয়েছি তিনবার। এক মেয়ের কাছে ডবল সেঁকা খাওয়ার পর প্রেম ভালোবাসার প্রতি ত্যক্তবিরক্ত। এরপর গত চার বছর সেদিকে আর পা বাড়াইনি। আপাতত মাথায় প্রথম চিন্তা, বিয়েটা সেরে ফেলা কিন্তু কোন অদ্ভুত কারনে বাবা মা বুঝছে না যে ছেলে বয়স হয়েছে। আমার বয়সটাও একবার কম না, ঊনত্রিশ বছর। সবমিলিয়ে অনিচ্ছাকৃত ব্যাচেলর লাইফ পালন করতে হচ্ছে। আর জবের কারনে পরিবারকে রাজশাহী রেখে ঢাকায় বাস বসবাস করছি। প্রথম দিকে কিছুদিন মেসে থেকে ছিলাম। তবে কিছুদিন সেখানে বসবাসের পর বুঝলাম, না আমার এভাবে থাকা সম্ভব না। বিদেশে পরিবেশে ছয় বছর কাটানোর পর স্বাভাবিকভাবেই মেসে বসবাস আমার জন্য কঠিন ছিলো। তবে উপায় ছিলোনা, তাই কিছুটা বাধ্য হয়ে সেখানে এক মাস কাঠাই আর এক মাস কাঠানোর পর আমার কলিগ নাহিদের সাথে একটা ফ্লাটের ব্যবস্থা করি। আসলে ঠিক করে বললে, ফ্লাটের ব্যবস্থা নাহিদ করেছিলো আর আমার অসুবিধা দেখে একসাথে থাকার অফার দিয়েছিলো। ও অফার করার পর ফ্লাট না দেখেই আমি রাজি হয়ে যাই কারন আমার কেন যেন এই মেস লাইফটা অসহ্য মনে হচ্ছিলো। যদিও সেখানকার মানুষ খুব আন্তরিক ছিলো যেটা আজকাল খুব অভাব। ফিনল্যান্ডে যখন পড়াশোনা করতাম তখন এই জিনিসটার সবথেকে বেশি অভাব দেখেছিলাম। আসলে বাঙ্গালীরা জন্মগতভাবে আন্তরিক হওয়ার গুন অর্জন করে যেটা অন্য জাতিদের মাঝে ততটা দেখা যায়না। বিদেশে অন্যসব বিষয়ে শান্তি ছিলো তাই সবদিক বিবেচনা করে সেখানকার কোন এক এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে জয়েন করার ইচ্ছে পোষন করতাম। কারন দেশে একে তো সেলারি স্কেল কম, তার উপর যথাযথ সুবিধার অভাব। কিন্তু বাধ সাধলো পরিবার। তাদের ভাষ্যমতে আমাদের পরিবারের টাকাপয়সা কম বানায়নি সুতরাং আমার বাহিরে জব করার কোন প্রয়োজন নেই। দরকার হলে আমি দেশে বসে মুরগীর মত ডিমে তা দিবো তারপরও বাহিরে জব করা চলবে না। তাদের তীব্র আপত্তির মুখে প্রায় বাধ্য হয়েই চলে আসলাম দেশে। তবে জয়েন করলাম ঢাকা, যদিও রাজশাহীর কোন এয়ারলাইন্সে জব নিতে পারতাম কিন্তু ইচ্ছে ছিলোনা। আবার স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া দরকার ছিলো। এত বড় হয়েছি তারপরও তারা সবসময়ই খবরদারি করে। আমার পার্সোনাল কোন বিষয়ের অস্তিত্ব তাদের নেই। বিদেশে থাকতেও কম করতো না, আর সেখানে বাসায় থাকলো তো কপালে শনি, মঙ্গল, বুধ, সব ঝাপিয়ে পরবে। তাই ইচ্ছে করেই ঢাকায় আসলাম। অন্তত নিজের মত কিছুদিন মুক্ত বাতাসে আবার থাকতে চাই। অবশ্য পারিবারিক এত ঝামেলা হতো না, যদি আমার কোন ভাইবোন থাকতো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে শুধু নিজের পরিবার না, নানা দাদার বংশের মধ্যেকার একমাত্র ছেলে আমি। তাই বাবা মায়ের পাশাপাশি দাদা-দাদী, নানা-নানী সবার ভালোবাসার যন্ত্রণাই সহ্য করতে হয়। আর সে যন্ত্রণা দিয়ে আমি মুক্ত থাকতো চাইবো এটা স্বাভাবিক। তো ঢাকার শাহ জালাল এরায়পোর্টের একটা বেসরকারি এয়ারলাইন্সে জব নিলাম আর সেখানে পরিচয় হলো নাহিদের সাথে। আমার থেকে বছর তিনেক বড় হবে সে। চীন থেকে পড়াশোনা করে এসেছে নাহিদ তবে জব নিয়েছে নিজের দেশেই। আমার মতো ওর কোন সমস্যা আছে এটা ভাবলে অবশ্য ভুল হবে। নাহিদের বিদেশে বসবাসের ক্ষেত্রে মারাত্মক এলার্জি আছে। তাই নিজের দেশেই থিতু হতে চায় ও। তবে আজীবন অবিবাহিত থেকে। ওর ক্ষেত্রে চিরকুমার শব্দ ব্যবহারে আমার আপত্তি রয়েছে।
তো মেস লাইফ থেকে মুক্তি নিয়ে আসলাম একটা আবাসিক এলাকায়। নাহিদ এই জায়গায় কিভাবে বাসা যোগাড় করেছে সেটা এখনো আমার কাছে রহস্য। কারন আমার জানামতে এই এলাকায় কোথাও ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হয়না। তেমন করে কখনো প্রসঙ্গ ওঠেনি, তাই ওকে এই বিষয়টা নিয়ে জিজ্ঞাসাও করা হয়নি। ফ্লাটে আসার পর নাহিদের চরিত্র আস্তে আস্তে আমার কাছে পরিষ্কার হতে শুরু করলো, সাথে সাথে দুজন সম্পর্কটা আপনি থেকে তুমি আর তুমি থেকে তুইতে রুপান্তরিত হলো। আর এই মেয়েলী কারনে চার মাসের মাথায় প্রথম বাসা ছাড়তে বাধ্য হলাম আমরা। তবে সেবার কোন ঝামেলা ছাড়াই আরেকটা বাসা জোগাড় করে ফেললো নাহিদ এবং দুমাসের মাথায় পূর্বের কারনে আবার বিতাড়িত হলাম আমরা। আর কয়েকটা বাসা পরিবর্তনের পর বর্তমান বাসায় থিতু হলাম এবং ছয় মাসের মাথায় বিতাড়িত। নিজের বাইকে ছোটখাটো কিছু সমস্যা তাই নাহিদের বাইকে চড়ে চলে আসলাম শ্যামলী। এখানে নাকি একটা বাসা আছে যেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। সঠিকভাবে বললে নাহিদের জন্য ভালো হবে, কারন বাড়িওয়ালা নাকি এখানে থাকে না। মাসে একবার আসে বাড়িওয়ালা আর ভাড়া নিয়ে চলে যায়। আর যদি একথা সত্য হয়, তাহলে নাহিদের ওইসব কাজ করতে সুবিধা হবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। হয়তো এক্ষেত্রে কেয়ারটেকারকে ও কিছু ঘুষ দিয়ে ঠান্ডা করবে।
তবে কোথায় যেন শুনেছিলাম, যে অভাগা যেদিকে যায় সাগরও সেদিকে শুকিয়ে যায়। আমাদের অবস্থা হচ্ছে সেরকম। আধা ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও কেয়ারটেকারকে খুঁজে পাওয়া গেলনা এবং পরে জানতে পারলাম যে কেয়ারটেকার তার গ্রামের বাড়িতে এবং কবে ফিরবে সেটা কেউ জানে না। যখন ফিরে আসার প্রস্তুত নিচ্ছিলাম তখন নাহিদ খেয়াল করলো কাছাকাছি একটা বাড়িতে "টু লেট" ঝুলানো রয়েছে। কিছু না ভেবেই নাহিদকে বললাম যে বাসাটিতে ঘুরে দেখতে। বাড়িতে প্রবেশের পর বাড়ির মাালিককে সহজেই পেলাম আর বাসা দেখনোর কথা বলার পর তিনি তিনতলার একটা ফ্লাট দেখালো। তিনরুমের একটা বাসা। দুইটা বিশাল বড়বড় মাষ্টার বেড, আর বাড়ির পিছনে বিশাল ফাঁকা এরিয়া দেখে আমার পছন্দ হয়ে গেল। টাকা পয়সা নিয়ে কথা বলার জন্য বাড়িওয়ালা তার ফ্লাটে নিয়ে গেলেন আমাদের। এক ফাঁকে বাড়িওয়ালার নামটা জেনে নিয়েছি। পঞ্চাশোর্ধ্ব লোকটার নাম করিমউল্লাহ। তার পরিবার বলতে দুই মেয়ে আর স্ত্রী।
"তো আপনারা কি করেন ?" আমার উদ্যেশ্যে কথাটা ছুড়ে দিলো লোকটি। আমি প্রতিবারই দেখেছি সব বাড়িওয়ালা আমার সাথে কথা বলে। নাহিদ এ নিয়ে বলেছিলো যে আমার চেহারায় নাকি ইনোসেন্ট ভাবটা খুব প্রকট। তাই আমার উপরই মানুষের আস্থা বেশি। তবে এ নিয়ে আমি বেশ অসন্তুষ্ট কারন আমার কপালে কেউ জুটছে না। বাড়িওয়ালারা হয়তো তার মেয়ের জন্য আমাকে চয়েস করবে কিন্তু তাদের তাদের মেয়ে পছন্দ করবে নাহিদকে।
"আঙ্কেল আমরা দুজনই একটা বেসরকারী এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করছি"
"ভালো ভালো, খুব ভালো। তো কে কে থাকবে ?"
"আমি আর আমার বন্ধু ফাহিম" আমার হয়ে জবাবে বললো নাহিদ।
"ও আচ্ছা। আপনারা বিবাহিত ?"
"জ্বি না" এবার আমিই জবাব দিলাম এবং সাথে সাথে অনুভব করলাম কথাটা শোনার পর লোকটা প্রতিক্রিয়া কি হবে।
"ও আচ্ছা। তবে বাবারা আমি তো ব্যাচেলর ভাড়া দেই না।"
"আঙ্কেল আপনিও তো একসময় ব্যাচেলরই ছিলেন" কমন ডায়লগ ঝেড়ে দিলো নাহিদ। এই কথা ও প্রায়শই বলে।
"সেটা যখন ছিলো তখন ভিন্ন কথা ছিলো। আমার অবিবাহিত দুই মেয়ে আছে এই একটা কারনেই ভাড়া দিবোনা এমনটাও না। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি ভালো না, তোমাদের বয়সী ছেলেরা আজকাল জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিচ্ছে। কি যেন আইএস না এসএস নাম সংগঠনটার নাম।"
"আঙ্কেল আমরা চাকুরীজীবী মানুষ। এই যে আমাদের কার্ড দেখেন।" নিজের কার্ড করিমউল্লাহের দিকে এগিয়ে দিলাম। তবে সেদিকে তার কোন আগ্রহ নেই দেখে বাধ্য হয়ে নিজের কার্ডটা আবার নিজের পকেটে চালান করলাম। এ মুহুর্তে লোকটাকে কীট কীট মনে হচ্ছে আমার, প্রচন্ড রাগ লাগছে। বিশাল একটা টাক করিমউল্লাহের। তার মাথা তেলি চকচক না করলেও শরীরটা বেশ তেল চকচকে। মনে হচ্ছে লোকটা শরীরের তেল মাখে। ভদ্রলোক মাথায় তেল দেয় আর চোর দেয় সমস্ত শরীরে। এ মূহুর্তে করিমউল্লাহকে চোর থেকে ভালো কিছু মনে হচ্ছেনা। আরো কয়েক মিনিট কথা বলার পর বুঝলাম যে লোকটা আমাদের কোনভাবেই ভাড়া দিবে না তাই বেরিয়ে আসলাম বাড়িটা থেকে।
"নাহিদ, আর সময় নষ্ট করার কোন মানে হয়না। চল বাসায় ফিরে যাই। দুই তিনদিন পর কেয়ারটেকার ফিরে আসলে আরেকবার এসে খোঁজ নিবো।" ঘুম ঘুম ভাব বেড়ে যাচ্ছিলো তাই নাহিদকে সরাসরি বাসায় যাওয়ার প্রস্তাব করলাম।
"আচ্ছা, চল। তবে ইচ্ছে করছে না।"
"কেন ইচ্ছে করবে না ? তোর যে কোন একটা গার্লফ্রেন্ডে আসতে বল তাহলেই করবে।"
"সেটা হচ্ছেনা আর দোস্ত। ওরা কিভাবে যেন জেনে গিয়েছে আমার চরিত্রের কথা। সব কয়টা একসাথে লাফি মারছে আমাকে।"
"আচ্ছা সমস্যা নেই" সান্ত্বনা দেওয়ার সুরে বললাম আমি। এটা নতুন কিছু না। ওর সাথে দেড় বছর থাকার সুবিধার্থে বেশ কয়েকবার ঘটতে দেখেছি আমি। "আরেকটা খুঁজে নে তাহলে"
"না, একাজ আর করবো না অনেক পাপ করছি" চেহারায় অসহায় ভাব এনে বললো নাহিদ। তবে আমি পাত্তা দিলাম না। কারন ওর চরিত্র কেমন এটা আমার যথেষ্ঠ জানা হয়েছে। ও যদি আজ মরেও যায় তাহলে হয়তো পাশের কবরের কোন মেয়েকে ডাক দিয়ে বলবে, হাই সুইটহার্ট কেমন আছো ? কেমন যাচ্ছে দিনকাল !
"এক কাজ কর বিয়ে করে ফেলা। আর কতদিন এভাবে ?"
"পাগল নাকি?" চেহারায় সিরিয়াস একটা ভাব নিয়ে এসে বললো নাহিদ, "কহেন কবি কালিদাস মাইয়া মানুষ মানেই দিবে বাঁশ। আর বিয়া করলে পার্মানেন্টলি বাঁশ। আমি এ জনমে বিয়ে করবো না, তুইও করিস না।"
কোন জবাব দিলাম না। বিয়ের কথা বললে নাহিদ সবসময়ই এই একই কথা বলে। যদিও জানিনা ওর এই মনোভাব হওয়ার পিছনের কারনটা। তবে আমার ধারনা অতীতে ও বড় কোন ধরনের সেঁকা খেয়েছিলো। চুপচাপ করে কুড়িল ফ্লাইওভারের দিকে বাইক চালিয়ে যাচ্ছি এমন সময় খেয়াল করলাম একটা প্রাইভেট কার আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। কি করবো সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক সেকেন্ড দেরী করে ফেললাম। তারপর সব অন্ধকার।

(চলবে)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪০

প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল। ধন্যবাদ

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৪

মাশুক খান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.