নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাসুদুল করিম অরিয়ন সভাপতি ও উদ্যোক্তামুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস সংরক্ষণ কমিটি, বাংলাদেশ।

মোঃ মাসুদুল করিম অরিয়ন

President and entrepreneur at Muktijoddhar Itihas Songrokkhon Committee Bangladesh

মোঃ মাসুদুল করিম অরিয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল বজলুল করিম

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:২৬

মোড়ল বজলুল করিমমুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস সংরক্ষণ কমিটি, বাংলাদেশ।

পরিচিতি
নাম মোড়ল বজলুল করিম
পিতার নাম মৃতঃ মোকাম্মেল হক
মাতার নাম মৃতঃ নূরজাহান বেগম
স্ত্রীর নাম রাবিয়া খাতুন
মোবাইল 01813-731357/01726-279155
গ্রাম আড়পাড়া
ইউনিয়ন বারুইপাড়া
উপজেলা বাগেরহাট সদর
জেলা বাগেরহাট
বিভাগ খুলনা

অন্যান্য তথ্য
মুক্তিবার্তা নং : ০৪০৩০১০৫৯৭ (লাল বই)
ভারতীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট নং : ৪৪৭৭৭
বাংলাদেশ গেজেট নং : ৩৩০ তাং ২৩/০৫/২০০৫ ইং
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রালয়ের সনদ নং : ম-৮১৮৪৯( তাং-২০/১১/২০০৫ইং)
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান কি না? : yes

সন্তানদের নাম ও বয়স
নাম বয়স শিক্ষাগত যোগ্যতা
আফরোজা পারভীন লাকী ৪২ বছর এইচ, এস, সি পাশ
মোঃ মাসুদুল করিম অরিয়ন (উদ্যোক্তা ও সভাপতি- মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস সংরক্ষণ কমিটি ) ৩৭ বছর বি এস সি পাশ

যুদ্ধের ইতিহাস
১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ রেস কোর্স ময়দানে বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষন শোনার পর মনে মনে নিয়েছিলাম যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা। তার পর আরো বিশ্বাস হয়ে গেল ২৫শে মার্চ কাল রাত্র। ২৫ মার্চ কাল রাত্রে অহায় বাঙ্গালীর উপর বিরতীহন পাক সেনাদের গুলিবর্শন , তান্ডব লিা, জ্বালাও পোড়াও লুটপাট হত্যা তাই আমরা আর ঘরে থাতে পারলাম না। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সংগঠিত হতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আমরা অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আমরা মরহুম সুলায়মান মোড়ল, শেখ রুহুল আমিন, বারাশীয়া(ফকিরহাট) গ্রামের ইষ্ট বেঙ্গল রেজিঃ নায়েক আঃ কাদের , আমি নিজে ও আমার ছোট ভাই নূজ্জোমান (তখন তার বয়স ছিল ১৫/১৬ বছর, সে ছিল আমাদের দলের সবচেয়ে ছোট), ফকির আজমল, মোঃ আজিজুল হক, আহম্মদ শেখ, নূর ইসলাম শেখ, আফজাল মোড়ল এবং পারকুরশাইল গ্রামের শেখ ইশারত আলী, শেখ নজরুল ইসলাম, শহীদ শেখ হোসেন আলী, শহীদ মোড়ল, অহীদ শেখ, ইশারত শেখ মোট ১৬ জন আমাদের গ্রাম হইতে কে কেহ দুপুরের খাবার খেয়ে হে না খেয়েই যুদ্ধের উদ্দেশ্যে গ্রামের উত্তর দিকে বিলের তির দিয়ে মরহুম আঃ আজিজ মোড়লের খোলা বাচাড়ী নৌকায় করে হানাদার মুক্ত এলাকা দিগংগা বারুইগাতী হইয়া সারুলিয়া রাজপাট আমাদের এক আত্মীয় মোঃ হাসেম মিয়া বাড়ীতে রাত্র যাপন করি। ভোর রাতে পায় হাটিয়া চুনখোলা যাইয়া নৌকা যোগে যশোর জেলার আড়পাড়া বরইচারা হইয়া কালিবাবু রোড ( সি এন্ড বি) পার হইয়া দিনের বেলায় একটা আখ খেতে দিন যাপন করি। রাত্রে বাগদা বডারের কাছেই রাত্র যাপন করি। মাদারতলা নামক একটা বাজার পাই কিন্তু কোন বসতি দোকান ছিল না। পরের দিন সকালে বাগদা বডার পার হয়ে বাস যোগে বশিরহাট ক্যাম্প এ নাম লিখাইয়া ভ্যাবলা ক্যাম্পে অবস্থান করি। স্ব-সস্ত্র ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্যে আমাদের মধ্যে হতে ৩ জন ১) মরহুম সুলাইমান মোড়ল, ২) আফজাল মোড়ল ৩) শহীদ মোড়ল বিহার বীরভূম ট্রেনিং সেন্টারে যায়। পরে ওরা অন্য দলের সহিত ট্রেনিং শেষ করে বাগেরহাটের কান্দাপাড়ার আমজাদ মিঞায় সাথে আসে। আমরা বাকি সবাই টেট্রা ক্যাম্পে অবস্থান করি। ৭/৮ দিন থাকার পর বিহার চাকুলিয়া স্ব-সস্ত্র ট্রেনিং এর উদ্দেশ্যে রওনা হই। একই সংগে আমাদের ইউনিয়নের বাকপুরা গ্রামের শেখ লেয়াকত আলী , শেখ বেয়াজ উদ্দিন ছিল। এবং মোঃ আতিয়ার জোমাদ্দার, মোশারাফ জোমাদ্দার , নওয়াব আলী খা সহ আরো অন্যান্য ইউনিয়নের বীর মুক্তি সেনারা আমাদের সাথে ছিল। পূর্বেই আমাদের গ্রামের আহম্মদ শেখ এবং নূর ইসলাম শেখ কিছু জিনিস পত্র কেনার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পের বাহিরে আসে এবং পরবর্তীতে আর ক্যাম্পে ফিরে যায় নাই। পরে বাকী সবাই স্ব-সস্ত্র ট্রেনিং নেয়ার জন্য ট্রেন যোগে চাকুলিয়ায় পৌছাই। এক মাস ট্রেনিং এর মধ্যে প্রতিটা ইভেন্ট এ আমি প্রতিযোগীতায় অত্যান্ত দক্ষতার সহিত পাশ করি ও প্রথম স্থান অধিকার করি। রাইফেল সুটিং এ ১১টা উইংস ছিল এবং সেই উইংস গুলিতে সব প্রতিযোগী ট্রেনার দের মধ্যে আমি প্রথম স্থান লাভ করি। ২য় হয় বাকপুরা গ্রামের শেখ লেয়াকত আলী। ট্রেনিং শেষ করে বেগুনদিয়া ক্যাম্পে আসি। ওখানে মেজর এম এ জলিল ( ৯নং সেক্টর কমান্ডার) এর কাছে রিপোর্ট করার পর দুই-তিন দিন সেখানে থাকি। পরে জনাব ক্যাপ্টেন তাইজুল ইসলাম সাহেবের নেতৃত্বে ৯নং সেক্টরের অধিনে সর্ব বৃহৎ অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া শতাধীক মুক্তিসেনা বাগেরহাট শহরের উত্তর অঞ্চলে প্রধান ঘাটি করার উদ্দেশ্যে বড় ২টি বাস যোগে বাগদা বডার পার হওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথের মধ্যে আমাদের একটি বাস দূর্ঘটনায় সেটির মধ্যে আমি নিজে ও আমার ছোট ভাই সহ আরো অনেকেই ছিলাম। সেখানে আমরা অনেকেই আহত হই। বাসটি বিকল হয়ে গেলে পাশে থাকা ইন্ডিয়ান আর্মিদের ঘাটিতে সংবাদ পৌছানোর সংগে সংগেই তাদের গাড়ী নিয়ে এসে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আমাদের অন্য গাড়ীটি সহ বাগদা বডার পার করে দেয় । আমাদের দলের ভিতর থেকে ৩জন খুব গুরুতর আহত হওয়ার কারনে ঐ আর্মি ক্যাম্প হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় থেকে যায় এবং তাদের অস্ত্র আমরা নিয়ে আসি। আমরা বডার পার হইয়া নিরাপদ এলাকা দিয়া খুব সতর্কতার সহিত সোর্সের মাধ্যমে দিনে সুন্দরবন এবং রাত্রে খুলনা জেলার তেরখাদা থানার এলাকা হইয়া শন্তষপুর হাইস্কুলে এসে ঘাটি করি যাহা বাগেরহাট থানার অর্ন্তগত। এবং সেখানে থেকে বিভিন্ন এলাকার পাক বাহিনীর সংগে যুদ্ধ করি। প্রতিটা যুদ্ধে আমি অংশ গ্রহন করি। নাজিরপুর থানার রঘুনাথপুর ক্যাম্পে আক্রমন করা কালিন সময়ে আমাদের সঙ্গী শেখ হোসেন আলী সহ ২ জন শঞীদ হন। গোটাপাড়া, পানিঘাট, চিরুলিয়া বিষ্ণুপুর, বাবুরহাট, বয়া সিংগা নামক এলাকায় পাক বাহিনীদের সহিত বিভিন্ন সময়ে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। তাহাছারা প্রতিনিয়ত চিত্রা নদীর এ-পার ওপার পাকবাহিনী এবং রাজাকারদের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ লেগেই ছিল। এর ভিতর আমার স্বরনীয় গোটাপাড়া ও বাবুরহাট যুদ্ধে হানাদার বাহিনীদের পরাস্ত্র করিয়া ওদের অনেকের লাশ নদী হতে উদ্ধার করি ও সাথে যুদ্ধকালীন সময়ে অনেক অস্ত্র ও গোলা বারুদ উদ্ধার করি। আমরা যুদ্ধকালীন সময়ে নিজ এলাকায় না থাকার কারনে ঐ সময়ে রাজাকার ও হানাদার বাহিনীরা আমাদের পরিবারের অনেক ক্ষতি সাধন করেছে। রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার রজব আলীর লালন কৃত রাজাকাররা আমাদের বাড়ী ঘর লুট-পাট ও জালাও পোড়াও করেছে। এভাবে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে ৭/৮ মাস ব্যাপী যুদ্ধ হওয়ার পর এক পর্যায়ে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকার যুদ্ধে হানাদার বাহিনীরা পর্যাক্রমে পরাজিত হতে থাকে এবং ১৬ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী ঢাকায় আত্মসমর্পন করলেও আমরা বাগেরহাট শহর মুক্তকরন অভিযান অব্যহত রাখি এবং রাজাকার বাহিনীর প্রধান ফকির রজ্জব আলী তার দলবল সহ পালাইয়া যায় এবং ১৭ই ডিসেম্বর আমরা বাগেরহাট শহর দখল করি এবং বিজয় পতাকা উত্তোলন করি। আমরা বাগেরহাট এ ক্যাপ্টেন তাইজুল ইসলাম এর নিকট আমাদের সকল অস্ত্র জমা দিয়ে শ্যালেশিয়া ক্যাম্পে থাকি ( নূরোল আমিন হাইস্কিুলে) উল্লেখ্য ম্যালেশিয়া ক্যাম্প থাকা কালীন আমি বি,এইস,এম পদে নিযুক্ত হয়ে দায়ীত্ব পালন করি। পরে ক্যাম্প বিলুপ্ত হবার পর লেখা পড়ার উদ্দেশ্যে আমি বাড়ীতে চলে আসি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.