![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবদুল্লাহ-আল-মাসুমব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং নির্বাহীওয়ার্ল্ড টিভি লিমিটেড৩১ পুরারনা পল্টন।০১৭১৬ ০৮৯ ০৮৯.
ঘরের দেয়ালগুলোকে কাঁপিয়ে দিয়ে প্রচন্ড শব্দে কিছুক্ষণ পরপর ছুটে যায় নানারঙা এয়ারক্রাফট।
মনে হয়- আকাশের একুরিয়ামে ভেসে বেড়ানো নানা রঙা সামুদ্রিক মাছ।
কখনো মনে হয় ইট কাঠ পাথর পিঠে নিয়ে যাচ্ছে একটি দশা সই ট্রাক।
বারান্দাটা খোলা। বাতাস ঢোকে ডাকাতের মতো। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মশার নানা গোত্র ।
একটা চার পকেটের শর্ট প্যান্ট পড়ে এক কাপ গরমা গরম চা খেতে খেতে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে বিশাল একটা লেক টগবগ করে তাকিয়ে থাকে।
যেনো এক যৌবনা রাক্ষুসি তরুনী।
কামনায় দগদগে হয়ে আছে।
একটু নিরালায় পেলেই ঝাপিয়ে পড়বে দু'ঠোটের আগুন নিয়ে।
বিভূতিভুষন বেঁচে থাকলে ঝিঝি পোকা আর ডাহুকের ডাক , কোলা ব্যাঙের সারগাম থেকে আলাদা করতে পারতো স্বাচ্চন্দ্যে ।
ঝিঝি পোকার বিরতীহীন লাইভ কনসার্টকে আড়াল করে একটু আগেও ছুটে গেল একটি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স।
হয়তো এই ফ্লাইটেই উঠেছেন আজ দম । থাইল্যান্ডের একজন বায়ার।
সিংগাপুর ট্রানজিশন। সোজা থাইল্যান্ড।
ওকে বিদায় করে আমি কিছুটা নি:শ্বাস ছাড়ছি তিনদিন পর।
হঠাৎ করে মাথার ভেতর ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর ছবিটি নড়া চড়া করতে লাগলো ।
কোন প্রসঙ্গে ঢুকে পড়লো , জানি না।
মানুষের মস্তিষ্ত এক আজব কারখান।
একটা গান লিখলে কেমন হয়-
মানুষের মন যেনো এক
আজব কারখানা-
জানলাম আমি আকাশ পাতাল
তাকে আমার হইলো না জানা।
না, ভালো না। ফালতু।
মমতাজকে দিয়ে ফোক গানের সুরে গাওয়ালে হয়তো জনপ্রিয় হবে।
জনপ্রিয়তা আর তৃপ্তি এক ব্যপার নয়।
কবির তৃপ্তি না থাকলে , গীতিকবিতায় প্রাণ খোলে না।
ইউক্রেণের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।অনেক চেষ্টা করেছিলেন মসনদ ধরে রাখার। পারেন নাই।
বিক্ষোভ বিরোধী আইন করে বিক্ষোভ ঠেকাতে চেয়েছেন।
আহা , আইন করে কি আবেগ, অনুরাগ, ক্ষোভ, দুঃখ এগুলোকে কি আইন দিয়ে বিনাশ করা যায় ?>.
বোকা প্রধানমন্ত্রীদের একজন এই ব্যটা।
আমি তখনই বুঝেছিলাম , বিক্ষোভ বিরোধী আইন করে আরো তাড়াতাড়ি নিজ ক্ষমতা ছাড়ার ব্যবস্থঅ করলেন তিনি।
মানুষের সমস্যা হলো। একটা জটিলতা পাকিয়ে গেলে, কি করলে কী হবে,আগে বোঝে না ,
পরে বোঝে। যখন বোঝে , তখন আর সময় থাকে না।
ও হ্যা, মনে পড়েছে। ইউক্রেনের এই বেকুব প্রধানমন্ত্রীর কথা আমার মনে পড়েছে, নিউজের ফুটেজ দেখে। ঘরে টিভি চলছে। আনমনে সংবাদ দেখছিলাম ফাঁকে ফাঁকে।
ইন্টারনেটে আইনের কড়া শাসন চালাতে যাচ্ছে তুরষ্ক। সরকারের দূর্নীতির কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ায
সরকার বাহাদূর রাগ করেছেন। পত্রিকা , টিভি চ্যানেল , রেডিও সব নিজ আয়ত্বে নিয়ে এসে
এখন ইন্টানেট নিজ মুষ্টিতে নিয়ে আসবার চেষ্টা করছেন।
ভালো । চিন্তাটা ভালো। ফলাফল ভালো কী না , অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বোঝা যাবে।
টিভি টা বন্ধ করে দিলাম। শান্তি। অনেকক্ষণ চলাতে শব্দদূষনের মতো লাগছিলো।
তা ওপর কিছু নতুন টিভি চ্যানেলের ব্রডকাষ্টিং উন্ঞ্জিনিয়ার মাষ্টার ভলিওম ব্যলেন্স করতে ভুলে যায়। তাই বারবার সাউন্ড নিজ থেকেই ওঠানামা করে।
আকাশের তারাগুলো আজ ঝকঝকে নয়। মনে হয় প্লাষ্টিকের ভেতরে রাখা ডায়মন্ড দেখছি।
শুকতারা কোনটা ?
ধ্রুব তারা কখন দেখা যায় >?
স্মুতিরা যেনো ধ্রুবতারার মতো। অক্ষয়।অবিনাশী।
আর ছেড়ে আসা অতীতের দিনগুলো যেনো ধুমকেতু।
ফুস করে উড়ে গেলো হঠাত করে।
চমক রেখে গেলো।
কিন্তু, বুঝে ওঠার আগেই হারিয়ে গেলো।
মায়াভরা ধুলেঅমাখা সোনারোদে ঢাকা অবাক রঙিণ শৈশব।
সেই অবুঝ ভালো লাগা আর সবুঝের ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে সবারই কিছু গল্প থাকে ।
মিষ্টি গল্প। দুষ্ট গল্প। গোপন গল্প।
চোখের সামনে একটা লাটিম ঝিম ধরে অনেকক্ষন ধরে ঘোরে। ভুগোল স্যার গতকাল বললেস, পৃথিবীটা গোল। মনে হয় লাটিমের মতো গোল ! হাতের তালুতে শিরে শির একটা অনুভূতি।
একটা লাল মোরগ কক ককককক কক করে দিলো এক বিশাল উড়াল ।
হঠাত একদিন ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা। আজম এসেছে। চাকু , সেভলন , তুলা এইসব নিয়ে। আমি লাটিম খেলছিলাম। ঘটনা টের পেয়ে.. আমি বাড়ীর পেছনের আম গাছের ডালে পাতার আড়ালে লূকিয়ে গেলাম । ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা । বাচ্চা মানুষ আমি। বিপদে পড়লে যে আল্লার সাহায্য চাইতে হয় - তা জানি।
গাছের পাতার আড়াল থেকে সবাইকে পেরেশানি দেখছি। আমাকে খঁুজছে।
আমি এদিকে দীর্ঘ মোনাজাতে। হে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাকে রক্ষা করো এই চাকু ওয়ালা লোকটার হাত থেকে।
চিকন ঘাম বেরিয়ে গিয়েছিলো মাথা থেকে। তখন তো আর জানতাম না, কীভাবে কি হয় !
।আমাকে সবাই ধরে বেঁধে পুরুষ মুসলমান হবার জন্য খুঁজতে লাগলো।
মশার কামড়ে অস্থির হয়ে ঘুম ভেঙেছিলো সন্ধ্যার পর। শুনি পাশের মসজিদের ইমাম সাহেবের কন্ঠ ভেসে আসছে। আমি তখনও টিনের চালে পাতার আড়ালে লুকিয়ে। ভুতের ভয় ও মনে কিন্তু কম না। এমন সময় মনে হলো কিছু একটা পায়ের ওপর দিয়ে বেয়ে চলে যাচ্ছে। আমার শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেলো। সাপ !!! ওফফফফফফফফফফফ !!
এখনো মনে হলে গা শিউরে ওঠে।
এদিকে সবাই অস্থির। কিছুদিন হলো আমাদের গ্রামে ছেলে ধরার উতপাত।
গত সপআহেও একজন হারিয়ে গিয়েছে। এই গ্রামের নয়। পাশের গ্রামের।
একবার আমি আর আমার ছোট বোন অবশ্য ছেলে ধরার পাল্লায় পড়েছি । আমাদের নিয়ে গিয়েছিলো। অনেক দূরে। সেটা আবার আরেক গল্প। পরে বলবো।
গাছ বেয়ে তাড়াহুরো করে নামতে গিয়ে হাতের তালু ছিড়ে গিয়েছিলো কয়েক জায়গায়। বাসায় ফিরে পড়লাম এক হৈ হৈ কান্ডের ভেতর। কে কী বলছিলো আমার মনে নেই ।
বাবা তেড়ে এসে দু ' গালে মনের ঝাল মিটিয়ে যে দুখানা থাপ্পর দিয়েছিলো, দাদু এসে আটকে ছিলো
বাবাকে। নইলে সেদিন আমার বারোটা বাজিয়ে তেরোটা ঝুলিয়ে দিতো আমার পিতৃদেব।
আমিই ছিলাম মূলত তার পৃথিবী। আমাকে হারিয়ে ফেলে পাগল হয়ে গিয়েছিলো বোধ হয়।
বাইরে ঝিঝি পোকার একটা ডাক। আমি আধঘন্টা ঝি জি দেখেছি চোখ মেলেও। বাড়ীতে জমে গিয়েছিলো দু তিন শ' মানুষ। চড়টা যে মোটামুটি শক্ত ছিলো, বা মোহাম্মদ আলি ক্লে টাইপের থাপ্পড় ছিলো- অনেক বড় হবার পর তা আবিষ্কার করেছি। কারন- পরদিন আমার শরীরে ভাত ফুটানো ঝড়। বাঁচবি কি চ*াচ ! মরবি কি মর ! জ্বর কি সাপের ভয়ে না থাপ্পড়ের জোড়ে - সেটা এখনও আবিস্খার করতে পারি নাই। এমনও হতে পারে - ডাবল ভিটামিন কাজ করেছিলো বেশ ভালো। হা হা।
©somewhere in net ltd.