নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন বইপোকা। লেখালেখির অভ্যাস কখনওই ছিলনা। কিন্তু একটা বই পড়ার পর সেটার ভাল লাগা মন্দ লাগা মানুষকে জানাতে ইচ্ছে করত। সাহস করে একদিন লিখে ফেলললাম একটা বইয়ের রিভিউ। পাঠকের অনেক প্রসংসাও পেলাম। সেখান থেকেই আমার লেখালেখি শুরু। কেউ কেউ বলতো, আপনি রিভি

মাসুম আহমেদ আদি

আমি আসলে একজন বইপোকা। লেখালেখির অভ্যাস কখনওই ছিলনা। কিন্তু একটা বই পড়ার পর সেটার ভাল লাগা মন্দ লাগা মানুষকে জানাতে ইচ্ছে করত। সাহস করে একদিন লিখে ফেলললাম একটা বইয়ের রিভিউ। পাঠকের অনেক প্রসংসাও পেলাম। সেখান থেকেই আমার লেখালেখি শুরু। কেউ কেউ বলতো, আপনি রিভিউয়ে কাহিনীর এত সুন্দর বর্ণনা করেন ইচ্ছে করে মূল বই থেকে আপনার লেখা রিভিউটাই বার বার পড়ি। এরকম মন্তব্য হয়তো আমার শুভাকাঙ্খিরা আমাকে খুশি করার জন্য করতো। কিন্তু আমি লেখালেখির সাহস পেয়েছি এসব মন্তব্য থেকেই।

মাসুম আহমেদ আদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার পাগলী মা

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

আমি যখন হুমায়ূন আহমেদের বই নিয়ে বসি, আমার মা তখন অন্যসব কাজ বাদ দিয়ে প্রস্তুত হয়ে থাকে আমি কখন কোন খাবারের কথা বলব আর সেটা তিনি বানাবেন। আমার মা এতদিনে বুঝে গিয়েছেন, আমি যখনি হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ি তখনি কিছু না কিছু খেতে চাইব। বই পড়তে পড়তে সামনে আসলো ডিমের সালুন এর বর্ণনা, তখনি ডিমের সালুন খেতে ইচ্ছে করে আমার। হুমায়ূন স্যার এত সুন্দর করে সাধারণ একটা খাবারের বর্ণনা করেন যে, তখনি সেটা খেতে ইচ্ছে করে। কখনওবা ইলিশ মাছ দিয়ে খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করে, আবার কখনও বাসি পোলাও খেতে ইচ্ছে করে।

হিমুর বই পড়ে একদিন মাকে বললাম বাসি পোলাও খাবো শুকনা মরিচ ভাজা দিয়ে। এখন এই মুহূর্তে তিনি বাসি পোলাও কই পাবেন? টাটকা পোলাও হলেও না হয় তখন করে দিতে পারতেন। কিন্তু বাসি পোলাও? আমার পাগলী মা তখন আশেপাশের প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজ করতে লাগলেন কেউ আগেরদিন পোলাও রান্না করেছিল কিনা। কোথাও পেলেন না। মায়ের মনে কষ্ট থেকে গেল। আমার কিন্তু পরে আর মনেই নেই সে কথা।

একদিন মা আমাকে একটা বই উপহার দিলেন। হিমুর বই। সে আসে ধীরে। এই বইয়েও হিমু মাজেদা খালার বাসায় গিয়ে বাসি পোলাও খায়। আমার মা ঐ অংশটুকু পড়ে রেখেছিলেন। আমিও যথারীতি পড়তে পড়তে বললাম, মা, বাসি পোলাও খাব। আর যায় কোথায়? মা তো এই কথার জন্যই প্রস্তুত ছিল। সাথে সাথে আমার সামনে গরম করা বাসি পোলাও, শুকনা মরিচ ভাজা, ডিম ভাজা আর একটু ঘি দিয়ে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব। বলার সাথে সাথেই কোত্থেকে এগুলো জোগাড় করল?

ছোটবোনের কাছে সব শুনলাম। এর আগে যেদিন বাসি পোলাও খেতে চেয়েছিলাম, সেদিন খাওয়াতে না পেরে মা অনেক মনোকষ্টে ছিলেন। তারপর থেকে তক্কেতক্কে ছিলেন কিভাবে আমাকে বাসি পোলাও খাওয়াবেন। ছোটবোনের কাছে আইডিয়া চাইলেন। ও বলল, হিমুর বইয়ে বাসি পোলাও এর কথা আছে। ভাইয়াকে একটা হিমুর বই কিনে দাও। আমার পাগলী মা বইয়ের দোকানে গিয়ে বললেন " ভাই, একটা হিমুর বই দেন তো, যেটাতে বাসি পোলাও খাওয়ার কথা লেখা আছে"। দোকানদার প্রথমে মায়ের কথা শুনে হতভম্ব হলেও পরবর্তীতে তার মুখ থেকে সব শুনে সাহায্য করল। এমন পাগলী মায়ের সন্তান হতে পেরে আমি গর্বিত। পৃথিবীর সব "পাগলী মা" ভালো থাকুক।
মাকে নিয়ে আমি বেশিক্ষণ লিখতে পারিনা, চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। বাকিটা আরেকদিন লিখব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫

রানা আমান বলেছেন: খুবই সুন্দর লিখেছেন । অনেক ধন্যবাদ সুন্দর এই লেখাটির জন্য ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪২

মাসুম আহমেদ আদি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.