নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"মাঝে মাঝে শীতকেও অনুভব করতে হয়, না হলে শীতের পরের উষ্ণতা যে কতটা আরামদায়ক সেটা বোঝা যায় না।।\" \"দৃশ্যের বাইরেও এমন কিছু অদৃশ্য শক্তি থাকে যার জন্য একজন মানুষও অপরিচিত থেকে অতি আপন হতে পারে, হতে পারে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ।।\"

মায়ের ভালবাসা

বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া উচিত । মানুষের কষ্টকে নিজের ভেতর অনেক বেশি অনুভব করি । মা, মাটি, মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালবাসি । নিয়মের বাইরে কোনকিছু না করে যার যার অবস্থান থেকে তার তার দায়িত্ব ভালভাবে পালন করলেই আমাদের দেশ উন্নত হয়ে যাবে । Facebook: https://www.facebook.com/ah.cse.pu

মায়ের ভালবাসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার পল্লী প্রকৃতি

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৯



সেদিন গিয়েছিলাম অশান্ত আমাতে কিছুটা শান্তি আনতে, সবুজের সমারোহে ভরা আমার পল্লী মায়ের কাছে । আমি ভালবাসা খুঁজেছি বাংলা মায়ের প্রত্যেক পরতে, পরতে । বিন্দু পরিমান মানসিক প্রশান্তির জন্য স্থির আমাকে করে রেখেছি অস্থির ।

আমি ছুটে গিয়েছি বাংলা মায়ের সৌন্দার্যকে বৃদ্ধি করা ঢালু দুই পাড়ের ওই নদীর কাছে । সেখানে দেখেছি, নদী চাইনি তবুও জোয়ার ভাটার খেলা । সুন্দর ওই ঢেউয়ের সৃষ্টি না দেখলেও আমি শেষ দেখেছি । ও সৌন্দার্য ছড়াতে কূলে এসেও আছড়ে পড়েছে । জীবনের চরম বাস্তবতা আসলে অল্প কিছু করে সব জায়গাতেই লুকিয়ে থাকে যদি সেটাকে অনুধাবন করা যায় । আমি দেখেছি, জলন্ত সূর্যের রশ্মি যখন সরাসরি মধ্য ঢেউয়ের উপরাংশে পড়েছে তখন এক এক কোণে ও এক এক রকম । মনে হয়েছে নদী আমাকে দেখেই ওর সৌন্দার্য ছড়িয়ে দিয়েছে, যেখানে ছিল না কোন প্রতিহিংসা, ছিল না বিন্দু পরিমান আক্ষেপ ।

আমি একান্তই ওই পল্লী প্রকৃতির কেন্দ্রবিন্দুর আঁচলের নিচে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছি, সেটা আমায় বুঝিয়েছে জীবনের অর্থ, কত কিছু থেকে নিজেকে ঠকিয়েছি । বাংলা মা আমার তুমি তো তুমিই । তোমার উপরে আর কিছু হতে পারে না । প্রকৃতির বুকে তুমিই শ্রেষ্ঠ । আমি দেখেছি অনেকের কাছে অনেক বড় হয়ে গেলেও বাংলার ওই শ্রেষ্ঠ সন্তান সন্ধায় বাড়ি ফেরার আগে আমায় জিজ্ঞাসা করেছে আমার জন্য কি নিয়ে সে বাসায় ফিরবে । সব কিছুর বাইরে আমার প্রাধান্য সবার উপরে রেখেছে ওই পল্লী জননী ।

আমি দেখেছি পল্লীর ওই নিস্তব্দ রজনী । যখন চারিদিকে উত্তপ্ত শীত তখন তারাগুলো মিটমিট করে জ্বলছে, চাঁদ পৃথিবীকে আলোকিত করেছে জ্যোৎনা ছড়িয়ে । ব্যস্ত পৃথিবী তখন আবছা আলোতে নিজেকে অন্য রুপে সাজিয়েছে । যেখানে একান্তই নিঃস্বার্থ, চাঁদের ছিলনা কিছু পাওয়ার আশা । দূর থেকে ভেসে আসা কোন শব্দ শ্রবণও ছিল এক নতুন আবেশের ।

আমি ছুটে গিয়েছি সেদিন বিভিন্ন রঙয়ে রঙ্গিন পৃথিবীর মাঝে এক সাদা সাম্রাজ্যের কাছে, যেখানে ঝিরিঝিরি বাতাসে কাশফুলগুলো আনন্দের ছন্দে ঢলে ঢলে নৃত্যে মেতে ছিল । হাজারো কাশফুলের পাশে বয়ে চলা ছোট্ট নালা, দুইয়ে মিলিয়ে যেন নয়নাভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টি করছিল । সুখের বাইরে থাকা মানুষগুলোও এখানে এসে মুগ্ধ হবে এরকমই একটা থমথমে পরিবেশে অবাক বিস্ময়ে আমি নিজেকে প্রকৃতির সাথে বিলিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি ।

আমি দেখেছি দিগন্ত বিস্তৃত ওই ফসলের মাঠে সবুজ, সোনালী ধানের চারা রোপণের সময় কৃষকের মাঝে একতার এক নির্মল পরিচয় । মাথায় গাঁট বাধা ওই ব্যস্ত কৃষকেরা যখন মাটিতে পা ডুবিয়ে একই সুরে প্রকৃতির গান শুরু করেছিল তখন নিজেকে আসলেই ধন্য মনে হচ্ছিল । নিরবতা নেমে আসা অন্ধকারে যখন পশ্চিমের বিল থেকে মাছ ধরা জেলের হাঁক-ডাক সাথে প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছিল তখন অন্য রকম এক অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছিল ।

পড়ন্ত সূর্যের আলোতে বাংলার মাঠভরা সরিষা এতটা সুন্দর হতে পারে আমার জানা ছিল না । আমি দেখেছি মৌমাছিরা সরিষা ফুলের উপর বসে মধু সংগ্রহ করে ঝাকে ঝাকে উড়ে গিয়েছে । প্রাণহীন জীবন্ত কাউকে দেখেছি দিগন্ত বিস্তৃত ওই ফসলের মাঠকে পাহারা দিতে । পড়ন্ত সূর্যের চকচকে রশ্মি, হলুদ ওই সরিষা ফুলের মিলনমেলা, গোধূলিতে অন্ধকার নেমে আসা ওই বাগানের গাছগুলো, সবকিছু মিলিয়ে এক চাঞ্চাল্যকর মুহূর্তের সৃষ্টির করছিল । দেখে মনে হয়েছিল তুমি আসলেই অনন্ত, চিরযৌবনা ।

আমি উপস্থিত হয়েছি পল্লীর গভীর নিশিতে ওই কুরআনের পাখিদের মাঝে সাধারন মানুষের ভিড়ে । রাতের ওই নিরব প্রকৃতি দেখে মনে হয়েছিল প্রতিটি সৃষ্টি নিরবে নুইয়ে সেই মহান সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমান দিচ্ছিল আনন্দে চিত্তে । দেখেছি সেই উৎসবমুখর পরিবেশ যেটা পল্লীর বাইরে হলেও, প্রকৃত স্বাদ ওই পল্লীতেই পাওয়া যায় কারন এই সময়টাতে প্রতিটা ঘরেই তৃতীয় একটা পার্বণের সৃষ্টি হয় এবং তাতে সবাই সুখানুভব করে ।

শুনেছি ঘুমন্ত অবস্থায় টপটপ করা ফোঁটায় পরিণত হওয়া শিশিরের শব্দ । আমি দেখেছি সকালের রোদে চিকচিক করা শিশিরযুক্ত দূর্বাঘাস । পায়েল পরা রূপসী বাংলার রূপসী রমনী আলতা পায়ে যখন শিশির ছুঁয়েছে তখন পল্লীর এক অসাধারন বৈচিত্র ফুটে উঠেছে যেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না ।

তোমাতে ফিরলেই যে মনে পড়ে যায় নির্ঘুম আমি, রাত্রি পার করা তোমার মাঝের সেই রাতগুলোর কথা, যেইগুলো শুধুই ছিল আনন্দে ভরপুর । তোমার প্রতিটা কণা দিয়েই যে নতুন নতুন সাহিত্য রচনা করা সম্ভব । প্রতিটা পল্লী সন্তানই তোমার কাছে ঋণী । তোমার কাছে ফিরেছিলাম বন্দু পরিমাণ শান্তির জন্য, পেয়েছি মনভরা অনাবিল প্রশান্তি । তবে তোমার বৈচিত্র্যে ভরা রূপের মাধুর্যতা এবার একটু বেশিই মুগ্ধ করেছে । আমি ধন্য কারন আমি তোমার মাঝেই জন্মেছি ।

তুমিতো সৌন্দার্যের এক মহাসমুদ্র । তোমার প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না কখনও । তোমার টানে যে বারে বারেই, তোমার মাঝে ফিরতে চাই মন । তোমাতে মুগ্ধ আমি, বিমোহিত তোমার সৌন্দার্যে ওগো আমার বাংলার প্রকৃতি । তোমার বাইরেও মানুষ এখন সূখের সন্ধান পায়, তবে সেটা অবশ্যই ক্ষণস্থায়ী । তোমার বাইরে তৃতীয় কোন সৌন্দার্যের আঁধার পৃথিবীতে থাকতে পারে না । তুমিই একমাত্র স্বর্গীয় সূখের আঁধার । জন্মলগ্ন হতে তোমার সংস্পর্শে বড় হওয়া আমি এখনও যে তোমায় ভেবে নিজেকে বেদনাহত করি । তোমায় যে ভালবাসি অনেক বেশি ও আমার অপরূপা পল্লী প্রকৃতি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.