নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"মাঝে মাঝে শীতকেও অনুভব করতে হয়, না হলে শীতের পরের উষ্ণতা যে কতটা আরামদায়ক সেটা বোঝা যায় না।।\" \"দৃশ্যের বাইরেও এমন কিছু অদৃশ্য শক্তি থাকে যার জন্য একজন মানুষও অপরিচিত থেকে অতি আপন হতে পারে, হতে পারে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ।।\"

মায়ের ভালবাসা

বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া উচিত । মানুষের কষ্টকে নিজের ভেতর অনেক বেশি অনুভব করি । মা, মাটি, মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালবাসি । নিয়মের বাইরে কোনকিছু না করে যার যার অবস্থান থেকে তার তার দায়িত্ব ভালভাবে পালন করলেই আমাদের দেশ উন্নত হয়ে যাবে । Facebook: https://www.facebook.com/ah.cse.pu

মায়ের ভালবাসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিন ওরা কেউ আসবে না

২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:২৯



বছর ঘুরে আসা মাহে রমজানের প্রায় শেষ প্রান্তে অপু বাসায় ফিরেছে । ওরা চার ভাইবোন । বড় বোন মাস্টার্স শেষ করে এখন চাকরি করছে । মেজ বোন অনার্স পড়া অবাস্থায় বাংলাদেশ পুলিশ-এ চাকরি পেয়ে গেছে কিছু দিন হল । ছোট ভাই অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র । আর অপু এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে অধ্যায়নরত । বাড়িতে থাকে শুধু ওদের মা-বাবা । বাড়িতে ফিরেই চকচকে রোদ পড়া উঠানে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অপু । শুন্য যেই বাড়িটা ওদের আগমনে প্রান ফিরে পায়, নিঃশব্দে থাকা যেই বাড়িটাই কোলাহলে ভরে ওঠে, সেটাতে ওর দুই বোনের কেউই ফেরে নি । ছুটি পায়নি বলে ওরা এবার আসবে না । আসবে না বলেই, ওদের আবেগমাখা ঝগড়াতে অপুর ঘুম ভাঙ্গবে না । আর অপুও ওদের অট্টহাসিতে বাড়ি মাতানো সৌন্দার্য চোখে ঘুম নিয়ে উপভোগ করতে পারবে না ।

বাড়িতে আসলেই যেন প্রকৃতির নিয়ম হয়ে যেত ওরা দুপুরে ঘুম শুরু করবে আর সেটা বিকেল অবধি পৌঁছে যাবে । আর অপু তখনি শুরু করে দিত ডাকাডাকি । এই তোমরা উঠে পড় আর চল আমরা মাঠ দেখতে যাব । গাছগাছালির সবুজে ভরা ওদের বাড়ির চারপাশ আর সাথে হরেক রকম পাখির কুহুকুহু রব চোখে এবং কানে যেন অন্যরকম এক অনুভূতির জন্ম দিত । এবার আর অপুর কর্কশ চিৎকারে ওদের ঘুম ভাঙ্গা বিরক্তিকর চেহারা অপু দেখতে পারবে না । এখনো ওই পরিবেশ হয়তো অপু আর ওর আপুদের জন্য মায়াবী সৌন্দার্যের আঁধার বিছিয়ে দিয়ে রাখে ।ভাই-বোনের সম্পর্কের চেয়ে মধুর সম্পর্ক পৃথিবীতে দ্বিতীয়ত নেই । এই সম্পর্কটাই পরিস্ফুটিত ওই সব ভাইদের কাছে যাদের একাধিক বড় বোন আছে । এই সম্পর্ক ছাড়া তো শুধু অপুর চোখে প্রকৃতি তার লুকানো সম্পদ ফুটিয়ে তুলবে না ।

এভাবে কেটে যাওয়া দিনের পর ওরা ইফতার তৈরী করত আর অপুকে ডাকতো, অপু ইচ্ছে করেই ঘরে বসে থেকে একটু পরে আসত । ওদের ভালবাসাময় অনুশাসনে যে এক অসাধারণ তৃপ্তি লুকিয়ে আছে সেটাতো অপুর মত ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ বুঝবে না । ওরা ছাড়া অপুকে এখনও কেউ বলে না, তুমিতো ছোট মানুষ, তোমার রোজা রাখা লাগবে কেন, অনেক কষ্ট হবে তোমার । এসব কথাগুলোর মাঝে আসলেই এক অদৃশ্য ভালবাসা লুকিয়ে থাকে ।

ওরা আগে বাড়ি আসলে অপুর জন্য আর অপু আগে আসলে ওদের জন্য আসার ক্ষণে রাস্তায় এসে অপেক্ষা করা যেন এক নিয়ম হয়ে গেছে । প্রিয়জন আসবে বলে তাদের জন্য অপেক্ষা করার মজাই আলাদা । এবার অপুকে আর কারও জন্য অপেক্ষা করতে হবে না ।এমনই শুন্যতা নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে অপুর । ওদের অনুপস্থিতি অপুকে একান্তই একাকী করে তুলছে । যে ভালবাসার মধুর বন্ধনে ওরা আবদ্ধ সেটার অভাব অপু ক্ষণে ক্ষণে বুঝতে পারছে ।

ঈদ চলে এসেছে । সারাবিশ্বই এখন ঈদের খুশিতে আনন্দিত । বছর শেষে প্রিয় মানুষগুলোকে সকল ব্যস্ততা থেকে একটু কাছে পাওয়ার জন্যই হয়তো ঈদ । কিন্তু অপুদের মত অনেকেই আজ ঈদ কাটিয়ে দেবে শুধু প্রিয় মানুষগুলোর ছেলেমানুষী করা কথাগুলোর কথা ভেবেই । অপু এখন বুঝতে পারছে একটা ঈদ নয়, ওদেরকে এখন থেকে একত্রে পেতে হলে কয়েকটা ঈদ এভাবে পার করতে হবে । অপুও একদিন ব্যস্ত হয়ে যাবে, সেদিন ওরা আসলেও অপু আসতে পারবে না । এভাবে শুন্য বাড়িটাই একদিন শুন্য থেকে হাসিখুশিতে ভরে ওঠার জন্য ওদের পথপানে চেয়ে থাকবে, সেদিন থেকে ওরা আর কেউ আসবে না ।


ছবিঃ গুগল

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ১১:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: এরকম অপু বহু আছে।
সময় পরিবেশ চাকরি জীবন। এসব না থাকলে কোনো সমস্যা ছিল না।
আবার এসব ছাড়া বেঁচে থাকাও সম্ভব না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.