নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম

“যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, এবং সে ঈমানদার হবে, এরূপ লোক জান্নাতে দাখিল হবে, আর তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না।” (আন-নিসা ৪:১২৪)

ভালবাসা007

প্রত্যক মানুষের জীবনে কাউকে না কাউকে ভালবাসা প্রয়োজন। এম ডি আরিফ

ভালবাসা007 › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীর মান-সম্মান, ইজ্জত-আব্রু হিফাজতের লক্ষ্যে পর্দাকে একমাত্র অবলম্বন হিসাবে গ্রহণ করার বিকল্প নেই (১ম পর্ব)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:০৫

পর্দা একটি ফার্সী শব্দ, যা আরবী হিজাব শব্দের প্রতিশব্দ। বাংলা ভাষায়ও আমরা পর্দা-ই বলে থাকি। মহান রাব্বুল আলামীন অত্যন্ত কঠোর ভাষায় মুসলিম নারীদের পর্দার নির্দেশ প্রদান করেছেন। সাথে সাথে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম) থেকেও পর্দার অপরিহার্যতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকা সত্তেও আমাদের মুসলিম সমাজে মুসলিম রমণীদের মাঝে পর্দার মত ইসলামের এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অত্যন্ত অবহেলিত ও উপেক্ষিত। শুধু তা-ই নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে পর্দানশীন নারীদের হাসি-ঠাট্টার শিকার হতে হচ্ছে। যা কিনা একটি মুসলিম দেশের মুসলিম সমাজে আদৌ কাম্য নয়।

হে মুসলিম নারী সম্প্রদায়! আপনারা কি জানেন না, মহান আল্লাহ পর্দা সম্পর্কে আপনাদের উপর কিরূপ নির্দেশ প্রদান করেছেন? পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন ঃ

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

তোমরা (নারীরা) গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। (সূরা আহযাবঃ ৩৩) অর্থাৎ - তোমরা গৃহে অবস্থান করবে, বর্বর যুগের নারীদের মত দেহ প্রদর্শন করে চলাফেরা করবে না। যেহেতু ইসলামপূর্ব যুগকেই জাহেলী-মূর্খতার যুগ বলা হয় । আর সেই যুগে নারীরা দেহ-সৌষ্ঠব প্রদর্শন করে ঘোরাফেরা করত। তাই উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা সেই যুগের নারীদের মত মুসলিম নারীদের চলাফেরা নিষিদ্ব ঘোষণা করেছেন। ইসলাম নারীদের ইজ্জত-আব্রু হিফাজত ও তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্যই এমন নির্দেশ প্রদান করেছে। ইসলামপূর্ব যুগে নারীরা ছিল লাঞ্চিতা, নির্যাতিতা, নিগৃহীতা। সেই সমাজে ছিলনা তাদের মান-মর্যাদা কিছুই। পবিত্র কোরআন সেই যুগের যাবতীয় কুসংস্কারের বিরূদ্ধে এক নির্ভিক প্রতিবাদ। সর্বপ্রকার কুসংস্কার ও অজ্ঞতার ধুম্রজাল ছিন্ন করে পবিত্র কোরআন পুরুষের পাশা পাশি নারীজাতিকেও উচ্চ-সম্মানের আসনে সমাসীন করেছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে ঃ

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آَدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

অর্থাৎ- নিশ্চয় আমি (আল্লাহ) আদম সন্তানকে (নারী-পুরুষ সবাইকে) মর্যাদা দান করেছি। আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি, তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ঠ বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (সূরা বনি ইসরাঈল ঃ ৭০)

অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে ঃ

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

অর্থাৎ- যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং যে ঈমানদার, পুরুষ হঊক কিংবা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরস্কার দেব, যা তারা করত।(সূরা নাহাল ঃ ৯৭)

অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, আজ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মুসলিম নারীদের নির্লজ্জ চালচলন আর লেবাছ-পোশাকের আঁটসাট ও নগ্নতা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, সেই অন্ধকার বর্বর যুগের বেহায়া নারীরাও তাদের সামনে হার মানতে বাধ্য। শুধু তা-ই নয়, বরং বর্তমান বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের অমুসলিম নারীরা মুসলিম নারীদের পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে অট্টহাসি দিয়ে বলছে; এই যদি হয় মুসলিম রমণীদের পোশাক, তাহলে আর আমাদের সাথে পার্থক্য কোথায়?

অথচ মহান রাব্বুল আলামীন কিয়ামত পর্যন্ত আগন্তক সব নারীর ইজ্জত-আব্র“ হিফাজত করার লক্ষ্যে বিশ্বের নারীকুল শ্রেষ্ঠ পূণ্যবতীনারী নবীপত্নীগণকে সম্বোধন করে বলেছেন ঃ

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের ন্যায় নও; যদি আল্লাহকে ভয় কর, তবে পর পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলোনা। ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সূরা আহযাব ঃ ৩২)

অর্থাৎ- তোমরাতো গৃহাভ্যান্তরে অব¯হান করবেই। তবে যদি সঙ্গত কারণে পর-পুরুষের সাথে কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তবে বাক্যালাপের সময় কৃত্রিম ভাবে নারীকন্ঠের স্বভাব সুলভ কোমলতা ও নাজুকতা পরিহার করবে। এবং তা এজন্য যে, যাতে ব্যাধি গ্রস্থ অন্তর বিশিষ্ট লোকের মনে কুলালসা ও আকর্ষণের সৃষ্ঠি না হয়। মহান রাব্বুল আলামীন নারী জাতির উপর এ বিধান জারি করার অর্থই হল, নারীরা যাতে পর পুরুষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে পর্দার সর্বোচ্ছ স্থর অর্জন করতে পারে।

হে মুসলিম নারী! একটু লক্ষ্য করে দেখুন। মহান আল্লাহ উপরূক্ত আয়াতে যাদের প্রতি সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেছেন, তাঁরা কারা? তাঁরা হলেন, উম্মাহাতুল মু’মিনীন বা মু’মিনগণের মাতা। যাঁদের সাথে কোন মু’মিনের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন বৈধ নয়। যাঁরা নবীপতœী হওয়ার মত গৌরব অর্জন করেছেন। যাঁরা সরাসরি বিশ্ব নবী মুহাম্মদ {সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম}এর নিকট থেকে ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। এমন পবিত্রাত্মা ও পূণ্যবতী নারীদের প্রতি যদি এমন নির্দেশ হয়, তাহলে আমাদের সমাজের নারীদের বর্তমান ফিতনা-ফাসাদের এ যুগে কিভাবে পর্দা করা উচিত ভেবে দেখার বিষয় নয় কি?

হাদিস শরিফে এসেছে ঃ উপরোক্ত আয়াত নাযিল হওয়ার পর উম্মত জননীগণ যদি কোন প্রয়োজনে পর-পুরুষের সাথে কথা বলতেন, তাহলে মুখে হাত রেখে কথা বলতেন, যাতে কন্ঠস্বর পরিবর্তীত হয়ে যায়।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী {সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম} এর সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন ঃ

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

তোমরা (হে মু’মিনগণ) নবীপত্নীগণের নিকট কোন কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে,এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (সূরা আহযাব ঃ ৫৩)

মুসলমান ভাই ও বোনেরা! একটু ভেবে দেখুন, এমন পর্দা যদি নবীপত্নী ও সাহাবায়ে কেরামগণের আত্মিক পবিত্রতা ও মানসিক কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায় হয়, তাহলে আমাদের সমাজের মুসলিম নারী-পুরুষের পর্দার বিধান মেনে চলার দিকে কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া দরকার তা সহজেই অনুমেয়। অথচ আমাদের সমাজে যে বা যারা পর্দার বিধানের প্রতি অবহেলা করছেন, তাদের নামও আয়েশা, খাদিজা, ফাতিমা, আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান। মুসলিম সমাজে মুসলমান পিতা-মাতার ঔরসে জন্ম গ্রহন করে, মুসলিম মনীষীদের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রেখে আল্লাহ ও তার রাসুলের দেওয়া বিধানের বিরূদ্ধাচরণ করে তারা আসলে নিজেদের সাথেই প্রতারনা করছেন।

মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন ঃ

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ হে নবী! আপনি আপনার পত্নী ও কন্যাগণকে এবং মু’মীনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। (সূরা আহযাব ঃ ৫৯)

উক্ত আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে মুফতি শফি রাহঃ তাফসিরে মাআরিফুল কোরআনে লিখেন ঃ হযরত ইমাম ইবনে সিরিন (রাহ.) বলেন, আমি বিশিষ্ঠ তাবেঈ হযরত উবাইদা সালমানীকে এই আয়াতের উদ্দেশ্য ও জিলবাবের আকার আকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি মস্তকের উপর দিক দিয়ে মুখমন্ডলের উপর চাদর ঝুলিয়ে তা ঢেকে ফেললেন এবং কেবল বাম চক্ষু খোলা রেখে ’ইদনা’ ও ’জিলবার’ এর তাফসির কার্যতঃ দেখিয়ে দিলেন। সুতরাং বোঝা গেল, মস্তকের উপর থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর ঝুলানোই হচ্ছে উক্ত আয়াতের তাফসির। অর্থাৎ-নিজের উপর চাদর নিকটবর্তী করার অর্থ চাদর মস্তকের উপর দিক থেকে ঝুলানো। (মাআরিফুল কোরআনঃ সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্ঠব্য)

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা ইমাম ইবনে জারীর তাবারী (রাহ.) তাফসীরে তাবারীতে রঈছুল মুফাচ্ছিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিআল্লাহু আনহুমা) থেকে ব্যাখ্যা উদ্বৃত করেন । হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেনঃ মহান আল্লাহ মু’মীন নারীদের নির্দেশ প্রদান করেছেন যে, তারা যেন মাথার উপর থেকে চাদর টেনে তাদের চেহারা ঢেকে ফেলে এবং কেবল একটি চক্ষু খোলা রাখে।

মুসলমান ভাই ও বোনেরা! নারীর মুখমন্ডল পর্দার অন্তর্ভুক্ত কি -না এ ব্যপারে কেউ কেউ ভিন্ন মত পোষণ করেন । তাদের প্রতি প্রতিবাদী ভাষায় নয়, বরং শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলছি, আসুন আমরা রাসুল {সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম}এর কাছ থেকে সরাসরি শিক্ষা প্রাপ্ত পবিত্রাত্বা নবীপত্নীগণ, সাহাবা ও সাহাবিয়্যাহগণের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে দেখি, তাদের নিকট পর্দার রূপরেখা কি ছিল? বা তাদের নিকট পবিত্র কোরআনের পর্দার আয়াত সমূহের কি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ছিল?

*প্রথমেই সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত উম্মত জননী হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (রাযি..)এর বর্ণনা ঃ তিনি ইফ্কের ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেনঃ

وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ الْمُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْجَيْشِ فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِي فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ فَعَرَفَنِي حِينَ رَآنِي وَكَانَ رَآنِي قَبْلَ الْحِجَابِ فَاسْتَيْقَظْتُ بِاسْتِرْجَاعِهِ حِينَ عَرَفَنِي فَخَمَّرْتُ وَجْهِي بِجِلْبَابِي

সাফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল (রাযি.) পর্দা ফরজ হওয়ার পূর্বে আমাকে দেখেছেন, তাই আমাকে চিনতে পেরে ”ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”পড়েছেন। তা শুনে আমি জেগে উঠি, অতঃপর আমার চাদর দ্বারা আমার চেহারা ঢেকে নিই।

*বুখারী শরীফে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ {সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম }ইরশাদ করেন ঃ

وَلَا تَنْتَقِبْ الْمَرْأَةُ الْمُحْرِمَةُ وَلَا تَلْبَسْ الْقُفَّازَيْنِ

নারীরা চেহারা আবৃতকারী নেকাব এবং হাত আবৃতকারী (কুফ্ফাযাইন) ইহরাম অবস্থায় পরবে না।

অর্থাৎ-ইসলাম হজ্ব ও উমরার ইহরাম অবস্থায় নারীদের মুখমন্ডল ও পাঞ্জাদ্বয় খোলা রাখা ওয়াজিব করে দিয়েছে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল, ইহরাম অবস্থায় নারীর মুখমন্ডল উন্মুক্ত রাখার বিধান দ্বারাই প্রতীয়মান হয় যে, তখনকার মহিলাগণ পর-পুরুষ থেকে চেহারা আবৃত করেই রাখতেন।

*হযরত আছমা বিনতে আবু বকর (রাযি..) বলেন ঃ (ইহরাম অবস্থায়) পর পুরুষ সামনে এসে গেলে আমরা তাদের থেকে চেহারা আবৃত করে ফেলতাম। (হাদিসটি ইবনে খুজাইমা ও হাকেম বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুসারে এটি সহীহ। ইমাম যাহাবী এতে একমত পোষণ করেছেন।)

*হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন ঃ আমরা রাসুল {সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম}এর সঙ্গে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম, উষ্ঠারোহীগণ আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রমকালে যখন মুখোমুখী হয়ে যেত, আমরা মাথা থেকে চাদর টেনে মুখমন্ডল ঢেকে নিতাম, অতঃপর তারা যখন অতিক্রম করে যেত আমরা আমাদের চেহারা খোলে দিতাম। (হাদিসটি ইমাম আহমাদ, আবুদাউদ, ইবনে মাজাহ, দারে ক্বুতুনী ও বাইহাকী বর্ণনা করেছেন)

মুসলমান ভাই ও বোনেরা! উপরোক্ত হাদিসগুলো আমাদের সামনে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, নারীর মুখমন্ডল পর্দার অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের চেহারা আবৃত রাখা ওয়াজিব হওয়া সত্বেও নবীপত্নী ও সাহাবীয়্যাহগণ পর- পুরুষ থেকে চেহারা আবৃত করেছেন, সেহেতু কার্যতঃ তাঁরা কেয়ামত পর্যন্ত আগন্তক নারীকুলকে পর্দার বাস্তবরূপ দেখিয়ে গেলেন। স্মর্তব্য যে, কোন একটি ওয়াজিব বিধান ততোধিক প্রবল ও শক্তিশালী ওয়াজিব আদায়ের খাতিরেই বর্জন করা যেতে পারে।

আগামী পর্বে আরো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:২৯

সামির ইরফান বলেছেন: সহমত।ইভ টিজিং বন্ধে RAB POLICE লাগবে না।পর্দাই যথেষ্ঠ।কিন্ত নারীদের কে বোঝাবে?

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪২

জাতিষ্মর বলেছেন: পর্দা প্রথা ভালো, ঠিকাছে। কিন্তু নারীরা কেন পর্দা করেনা বইলা আপনের ধারণা?

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৪১

সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: আপনার লিখাটা পড়লাম আপনি পর্দা সম্পর্কে যা বলেছেন তা কোরআন সম্মত নয়।
আপনি একজসনর রেফারেন্স দিয়েছেন মুফতি শফি রাহঃ তাফসিরে মাআরিফুল কোরআনে লিখেন ঃ হযরত ইমাম ইবনে সিরিন (রাহ.) বলেন, আমি বিশিষ্ঠ তাবেঈ হযরত উবাইদা সালমানীকে এই আয়াতের উদ্দেশ্য ও জিলবাবের আকার আকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি মস্তকের উপর দিক দিয়ে মুখমন্ডলের উপর চাদর ঝুলিয়ে তা ঢেকে ফেললেন এবং কেবল বাম চক্ষু খোলা রেখে ’ইদনা’ ও ’জিলবার’ এর তাফসির কার্যতঃ দেখিয়ে দিলেন। সুতরাং বোঝা গেল, মস্তকের উপর থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর ঝুলানোই হচ্ছে উক্ত আয়াতের তাফসির।
এবার বলি পর্দা সম্পর্কে কোরআন কিবলে চলূন দেখি। কোরআনের সূরা নূর ২৪:৩১ আয়াত
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُ

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৩৪

সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: অর্থ: ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

কোরআন বলছে নারীরদের পর্দা করতে হবে তবে যা দৃশ্যমান তা যেন তাদের দেখা যায়। দৃর্শমান বলতে একটি নারী তার নিজ বাড়ীতে সাভাবিক অবস্থায় থাকলে চলা ফেরা করলে যা দেখা যায়; যেমন দুই হাত, পায়ের কনুই পর্যন্ত এবং পুরো মূখমন্ডল এই গুলি'ই দৃশ্যমান। এই গুলি'ই দৃশ্যমান বলেই অজু করার সময় কেবলী দৃশ্যমান স্থান গুলি ধৌত করতে হয় কারন এই গুলিতে কাজ কর্মের সময় সাধারণত ময়লা মাটি পড়ে। কিন্তু আমাদের দেশে নারীদের পায়ে মোজা, হাতে মোজা, এক কথায় আপদমস্তক ঢেকা কেবল চোখ দুটি দেখা যায়। শুধু যদি চোখ দুটি দেখা যাওয়ার কথা থেকে থাকে কোরআনে তাহলে অজুর সময় মেয়েদের জন্য কেবল চোখ ধোয়ার কথাই থাকতো। নূর সূরাটি স্পষ্ট বলে যা দৃশ্যমান তা ছাড়া তাদের অন্য্য সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন না করে। তাহলে আমরা দৃশ্যমান স্থান গুলি কেন পর্দা করি? মূখমন্ডল খোলা রাখার সম্পর্কে কেন বলা হয়েছে সে সম্পর্কে আগে জানতে হবে। চলূন সূরা আহযাব ২৫:৫৯ আয়াত দেখি কি বলে
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَك%

৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫৪

সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: অর্থ:হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

এই সূরায় চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়ার কথা বলেছে। এতে করে যেন তাদের চেনা সহজ হয় বলে উল্লেখ আছে; আবার বলেছে তাদের কেউ উত্যক্ত করা হবে না। তাহলে নারীকে চেনা গেলে উত্যক্ত করা হবে না। এবার বলুন যতি কোন নারী পর্দা করতে তার মূখ মন্ডল ঢেকে কেবল চোখ দুটি বের করে রাখে তাহলে তাকে দেখেকি চেনা যাবে? আহযাবের এই আয়াতে চেনার কথা বলা হয়েছে। চোখ বাদে সব স্থান গুলি ঢাকলে একটি মানুষকে কি করে চেনা সম্ভব? আসলে একটি মানুষকে চিন্তে না পারলে বিপত্তিও হতে পারে। যেমন ধরুন কোন ব্যাক্তি নতুন বিয়ে করেছে তার বৌ এবং শালিকার একই উচ্চতা, দুই বোনেএকই রংয়ের বোরখা পরে কেবল চোখ বাদে পুরো শরীর ঢেকে রেখে চলাচল করে, আবার দুই জনে একসঙ্গে বাইরে থেকে বাড়ী ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করলো এমন সময় সদ্য বিবাহিত স্বামী ভুল করে বৌ মনে করে শালিকাকে জড়িয়ে ধরতে পারে। আবার সমস্ত শরীর মূখ মন্ডল ঢেকে রাস্তা দিয়ে হাটছেন এমন সময় না চিনে নিজের পরিচিত জন'ই তাকে উত্যক্ত করতে পারে। যেমন আহযাব সূরায় এই আয়াতে বলা আছে, তাদের চেনা গেলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। এই চেনা বলতে কি বোঝাচ্ছে কোরআন? নিশ্চয় চোখ বাদে পুরো মূখ মন্ডল ঢাকাকে বোঝায়নি? পুরো মূখ মন্ডল ঢাকলে কাউকে সহজে চেনা যায় না। আসলে কোরআন কে ভালো ভাবে অনুধাবন করতে হবে। কোরআনে একটি কথা অনেকবার বলেছে যে, এই কোরআন জ্ঞানিদের জন্য, এই কোরআন বোদ্ধাদের জন্য, এই কোরআন চিন্তাশীলদের জন্য। আসলে কোরআন বুঝে পড়তে হবে সকলকে, তার চেয়ে বেশী পড়তে হবে আলেম ওলামাদের তবেই সঠিখ পথের সন্ধান মিলবে। কোরআন বাদ দিয়ে অন্য গ্রন্থ্য নিয়ে চর্চা করলে কিংবা মূল গ্রন্থ বাদ দিয়ে অন্য কিতাব দিয়ে ফয়সালা করলে বিপত্তি থাকবে'ই। কোরআন বাদে অন্য কিতাব চর্চা করা কোরআন সম্মত নয় সূরা মায়েদা একটু দেখে নেই
সূরা মায়েদা ৪ঃ৪৪ হতে ৪৯ আয়াত
تَشْتَرُواْ بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلاً وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
অর্থঃ যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।

আমাদের ফায়সালা করতে হলে আল্লাহর বিধান মানতে হবে। অন্য কিতাব দিয়ে সঠিক পথ পাওয়া যায় না, পাওয়া যায় লানতের পথ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.