![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এরশাদের ‘হেফাজত মিশন’ ব্যর্থ
হেফাজত আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ : নয়া দিগন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের
‘হেফাজত মিশন’ ব্যর্থ হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের
আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সমর্থন লাভের জন্য
গতকাল তার সাথে সাক্ষাৎ করে মলিন
মুখে ফিরে আসতে হয় তাকে। আসন্ন
নির্বাচনে বা নির্বাচনী জোটে তাকে সমর্থন করার বিষয় হেফাজত আমিরের কাছে উত্থাপনই
করতে পারেননি এরশাদ। হেফাজত কোনো রাজনীতির
সাথে জড়াবে না এবং কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য এই
মুহূর্তে শুনতে প্রস্তুত নয়Ñ সাক্ষাতের
সূচনাতে আল্লামা শফী পরিষ্কারভাবে এ কথা স্মরণ
করিয়ে দেয়ার পর এরশাদ শুধু দোয়া চেয়েই ফিরে আসেন। তবে এরশাদ নিজে আওয়ামী লীগের
অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি হেফাজত
আমিরের সামনে প্রকাশ্যে স্বীকার
করে প্রকারান্তরে তাকে সমর্থন দেয়ার প্রচ্ছন্ন
আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি হেফাজত আমিরের
সামনে এক নেতার প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা উল্লেখ
করেন। নিজে আবার ক্ষমতায় গেলে সংবিধানে আল্লাহর
ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনবেন বলেও জানান। তবে এসব
বিষয়ে হেফাজত আমিরকে সরাসরি তিনি কিছুই
বলেননি এবং কোনো আহ্বানও জানাননি। হেফাজত সূত্র
মতে, এরশাদ মূলত দু’টি উদ্দেশ্যে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। প্রথমত,
হাটহাজারী আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির
প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম
মাহমুদ আগামী নির্বাচনে (যে সরকারের অধীনে হোক
না কেন ) যাতে হেফাজতের সমর্থন পান সে জন্য
এরশাদকে হেফাজতের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রমাণের জন্য আল্লামা শফীর সাথে সাক্ষাৎ করানোর সর্বাত্মক
উদ্যোগ নেন। এ ছাড়া হেফাজতের সমর্থন ও
ইসলামি কয়েকটি দলকে নিয়ে জোট গঠন করে এরশাদ
যাতে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশ
নিতে পারেন সে জন্য এই প্রক্রিয়ার অংশ
হিসেবে সাক্ষাতের জন্য উদ্যোগ নেন জাতীয় পার্টির ওই দুই নেতা। সূত্র মতে, হেফাজতসহ
ইসলামি দলগুলোকে সাথে নিয়ে একটি জোট
করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার
কৌশলে বেশ কিছু দিন ধরে হেফাজতের
সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে আসছিল জাতীয় পার্টি।
এ ক্ষেত্রে ব্যারিস্টার আনিস আল্লামা শফীর সাথে সাক্ষাৎ ছাড়াও তার ছেলে আনাস মাদানীসহ
ঘনিষ্ঠদের সাথে যোগাযোগ করেন। এ
ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকায়
কাজ করেন এমন একজন হেফাজতকে এরশাদের প্রতি দুর্বল
করার জন্য নানা চেষ্টা চালান। এ নিয়ে হেফাজতের
আমিরের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ কয়েকজন হেফাজত নেতার সাথে দফায় দফায় হাটহাজারী গিয়ে সাক্ষাৎ করেন ওই
ব্যক্তি। সর্বশেষ এরশাদকে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়ার
বিষয়টি নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েন হেফাজত
নেতারা। এ ব্যাপারে হেফাজত আমিরও ঘনিষ্ঠদের
পরামর্শ নেন। কেউ কেউ এই মুহূর্তে সাক্ষাৎ না দেয়ার
মত দিলে আল্লামা শফী বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রাখেন। সর্বশেষ শনিবার বিকেলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম
মাহমুদ আল্লামা শফীর
সাথে একান্তে কথা বলে এরশাদের সাক্ষাতের
অনুমতি আদায় করেন। তবে গত শনিবারই
আল্লামা শফী কোনো রাজনৈতিক জোটের সাথে হেফাজত
না যাওয়ার বিষয় নিয়ে বিবৃতি পাঠানোর নির্দেশ দেন, যা গতকালের প্রায় সব পত্রিকায় এসেছে।
হেফাজত সংশ্লিষ্টরা জানান, হেফাজতের
ঈমানী আন্দোলনের সাথে দলমত নির্বিশেষে সব
মানুষের সমর্থন আছে এবং এ জন্য রাজনৈতিক নেতাদের
হেফাজতের আমিরের সাথে সাক্ষাৎ করতে অসুবিধা নেই
এমন যুক্তিতে এরশাদকে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়। হেফাজত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায়
এরশাদ হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর
সাথে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথে এ সময় অন্যান্যের
মধ্যে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ
মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এইচ এম এরশাদের সফর সঙ্গী ছিলেন জাতীয় পার্টির
প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম
মাহমুদ, জিয়া উদ্দীন বাবলু এবং চট্টগ্রাম মহানগর
সভাপতি সুলাইমান শেঠ প্রমুখ। প্রায় পৌনে এক
ঘণ্টা হেফাজত আমিরের কার্যালয়ে এরশাদ অবস্থান করেন। প্রথমেই হেফাজতের আমির এবং জুনায়েদ
বাবুনগরী ১৩ দফা বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলেন।
তারা এরশাদকে হেফাজতে ইসলামের অরাজনৈতিক
অবস্থান ও ঈমান-আকিদা ভিত্তিক আদর্শিক আন্দোলনের
অবস্থান পরিষ্কার করেন। এ সময় জুনায়েদ
বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ঈমান-আকিদা ভিত্তিক একটি ইসলামি সংগঠন।
কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা জোটের
প্রতি আমাদের সমর্থন নেই। হেফাজতে ইসলামের ১৩
দফা দাবি মেনে নিয়ে যে বা যারাই ইসলাম ও
মুসলমানদের পক্ষে কাজ করবেন, তারাই উপকৃত হবেন।
ফলে এরশাদ রাজনৈতিক বিষয় এড়িয়ে কথা বলেন। এ সময় এরশাদ বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মীয়
শিক্ষাসহ বিভিন্ন স্তরে জাতীয় পার্টির বিগত সরকার
ইসলামের পক্ষে কাজ করে গেছে। তিনি হেফাজতের
আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকারের জনসমর্থন ১০
ভাগও নেই। সর্বদলীয় সরকার গঠন হলে তাতে আমার দলের লোকও থাকবে। আমি পূর্ণ আশাবাদী, ইনশা আল্লাহ
নির্বাচনে আমরা জিতে সরকার গঠন করতে পারব। এ
সময় হেফাজতের এক নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকার
ছাড়া সর্বদলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় পার্টি অংশ
নেবে কি না, জানতে চাইলে এইচ এম এরশাদ বলেন, এ
ছাড়া তো উপায় নেই। নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে। না হয় গণতন্ত্র রক্ষা পাবে না এবং তৃতীয়
শক্তি চলে আসতে পারে। এরশাদ আরো বলেন,
আওয়ামী লীগ যা করেছে, তাতে তারা ১০ ভাগ ভোটও
পাবে না। আমরাই নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করব। এ
সময় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন,
সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে কারচুপি করা কখনোই সম্ভব হবে না।
আওয়ামী লীগ পাঁচ ভাগ ভোটও পাবে না। এরশাদ
আরো বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য
এখানে আসিনি। আমি এসেছি হুজুরের কাছ
থেকে দোয়া নেয়ার জন্য। হুজুর বাংলাদেশের
সর্বজনশ্রদ্ধেয় শীর্ষ আলেম। হুজুর দোয়া করলেই আমার চলবে। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে এরশাদ
হাটহাজারী মাদরাসা ত্যাগ করেন। হেফাজত আমিরের
কার্যালয়ে এরশাদকে হাসি মুখে প্রবেশ
করতে দেখা গেলেও বের হওয়ার সময় এরশাদসহ জাতীয়
পার্টির নেতাদের মধ্যে বেশ বিমর্ষভাব ও হতাশার
ছাপ দেখা যায়। হেফাজত সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচন করলে সেই
নির্বাচনে এরশাদ অংশ নিলে এরশাদ নিজেই
নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করতে পারবেন এমন কথাই
ব্যক্ত করেন হেফাজত নেতাদের সামনে।
এটাকে হেফাজত নেতারা এরশাদের ‘চালাকি’ আখ্যায়িত
করে বলেন, মূলত বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের একক নির্বাচনের পথকে সহজ
করতেই এরশাদ মিশন পরিচালনা করছেন। হেফাজতের
সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক
ইসলামাবাদীর কাছে এরশাদের সাক্ষাতের
ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হেফাজত আমির
পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক জোট বা দলের সাথে হেফাজতের যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
হেফাজত ঈমানী আন্দোলন। যারা হেফাজতের
ঈমানী দাবিকে বাস্তবায়ন করবে তাদের
প্রতি হেফাজতের সমর্থন থাকবে। বর্তমান মহাজোটই
সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা বাদ দিয়েছে।
রাসূলের অবমাননাকারীদের বিচার তো করেইনি বরং তাদেরকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
ফলে মহাজোটের প্রতি হেফাজতের ন্যূনতম সমর্থন
বা সহানুভূতির প্রশ্নই আসে না। মহাজোটের শরিক
হিসেবে এরশাদ সাহেবও দায় এড়াতে পারেন না।
তিনি বলেন, এরশাদ সাহেব যদি কোনো জোট
করে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচন করার ইচ্ছা নিয়ে হুজুরের সাথে দেখা করতে এসে থাকেন
সেটা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলতে হবে।
তিনি যদি ঈমান ও ইসলামের ক্ষতি করেছে এমন
দলকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন
তা হলে তিনি দালাল হিসেবেই চিহ্নিত হবেন। এ
দিকে মহাজোট থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করার ব্যাপারে এরশাদ তার মনোভাব
গতকাল হেফাজত নেতাদের সামনে প্রকাশ
করে ফেলেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তাকে একাই অংশ
নিতে হতে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলই
তার সাথে জোট গঠনের ব্যাপারে রাজি হয়নি।
চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন অতীতে এরশাদের সাথে জোট করে নির্বাচন করলেও
এবার তার সাথে জোট গঠনের কোনো সম্ভাবনা নেই
বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। অন্য
দিকে ১৮ দলের বাইরের অন্য ইসলামি দলগুলোও
এরশাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তারা ‘ন্যাশনাল
ইসলামিক এলায়েন্স’ নামে একটি আলাদা মোর্চা গঠন করতে যাচ্ছে। আজ সংবাদ সম্মেলনে এই মোর্চার গঠনের
ঘোষণা আসার কথা রয়েছে। এই মোর্চায় বাংলাদেশ
খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি ছোটখাটো ইসলামি দল এই
মোর্চায় থাকতে পারে। এই ইসলামি দলগুলোও
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের
সাথে সম্পৃক্ত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩
সেমিবস বলেছেন: এরশাদের মুখের কথা আর পাছার কথা বর্তমানে এক।
তবে উনি ঠিক হলে হয়ত রাজনীতি অনেকটা সুস্থ ধারায় থাকতে পারত অন্তত ২ নেত্রীর থেকে.............
পোশাক শিল্পের অশনী সংকেত........
Click This Link