![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন প্রবাসী শ্রমিক
একটি আদর্শ ডিজিটাল স্টুডিও
দেশের গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিদিনের বিভিন্ন প্রয়োজনে ছবি তোলার দরকার হয়, একারনে তাদের গ্রাম থেকে কাছের বাজার বা শহরে যেতে হয় যাতে তাদের অর্থ ও সময় দুটোই ব্যয় হয়। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার এবং প্রযুক্তি পণ্য সহজলভ্য হওয়ার ফলে সম্প্রতি আমাদের দেশে ডিজিটাল ক্যামেরার বহুবিধ ব্যবহার বেড়েছে। এর ফলে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও চালু হয়েছে ডিজিটাল স্টুডিও। অল্প সময়ে ছবি তোলা যায় বলে এটি খুব দ্রুততার সাথে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কম বিনিয়োগে ও অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায় তাই ব্যবসা হিসাবেও এটি খুব লোভনীয় ও সম্ভাবনাময়।
যা যা করা যায়
ডিজিটাল স্টুডিওতে স্ট্যাম্প, পাসপোর্ট থেকে শুরু করে যে কোনো মাপের ছবি তোলা ও প্রিন্ট করা যায়। কম্পিউটারের মাধ্যমে ছবিকে ছোট বড় করা, পুরোনো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া ছবিকে নতুনের মতো করা, সাদা কালো ছবিকে রঙিন করা, বিভিন্ন বর্ডার দেয়া, ক্যালেন্ডার বানানো সহ অনেক কিছু করা সম্ভব। ছবি রাখার ফ্রেম বা অ্যালবাম বিক্রি করা যেতে পারে। বিয়ে বা জন্মদিনের মত সামাজিক অনুষ্ঠানের ছবি তুলেও যথেষ্ঠ পরিমান অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এছাড়াও অতিরিক্ত সেবা দেয়ার জন্য কম্পিউটারে গ্রামীণ ফোনের GPRS (জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস) বা EDGE (এ্যানহ্যান্সড ডাটা রেট ফর গ্লোবাল ইভলুশন) সংযোগ নিয়ে গ্রাহকদের ইণ্টারনেট, ই-মেইল এর মত আধুনিক প্রযুক্তির সংস্পর্শে আনা যাবে।
যারা করতে পারেন
মোটামুটি পড়াশুনা যানেন বা মাধ্যমিক পাশ করেছেন এমন যেকোন ব্যাক্তি এই ব্যবসা করতে পারেন। কম্পিউটার এবং আলোকচিত্র সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেয়ার জন্য দুই মাসের একটি প্রশিক্ষন কোর্সে প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করে ডিজিটাল স্টুডিও দেয়া যায়।
ছবি তোলা
শুধু যন্ত্রপাতি থাকলেই হবে না, জানতে হবে ছবি কিভাবে তুললে ভালো হয়। সাধারণ ক্যামেরা বা এমএলআর ক্যামেরায় ছবি তোলা এবং ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলার মধ্যে মৌলিক কোনো তফাৎ নেই। ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে ফলাফল জানা ও ছবির মান এবং ত্রুটিগুলোও বোঝা যায়। মনে রাখতে হবে ক্যামেরাটি খুব স্পর্শকাতর এবং একটি ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছবি তোলা যায়। ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবিকে কম্পিউটারে সম্পাদনা করার সুযোগ থাকে বলে ফটোশপ বা যে কোন ফটো সম্পাদনার সফটওয়্যার সম্পর্কে জানা থাকলে ছবিকে আরও শিল্পমানসম্পন্ন ও সুন্দর করা যাবে।
কম্পিউটার ব্যবহার
ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবির ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার জানা সবচেয়ে জরুরী বিষয়। কম্পিউটার সম্পকে প্রাথমিক জ্ঞান থাকা যে কেউ এটি চালাতে পারেন। যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন সেগুলো হলো কম্পিউটারে লেখা, সিডি চালানো, নতুন ফাইল খোলা ও সেভ করতে জানলেই কাজ চলে। কম্পিউটারে থাকা ফাইলের ছবিকে সম্পাদনা করার জন্য ফটোশপ জানতে হবে। ফটোশপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছবিকে আরও সুন্দর বা কাজের উপযোগী করে তোলা যায়। এরপর একটি ফটো প্রিন্টার কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা জানা দরকার।
ফটো প্রিন্টারের ব্যবহার
একটি ফটো প্রিন্টার কিভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, তা জানতে হবে। যেমন ছবি তোলার পর প্রিন্ট করার সময় ছবির আলো, রং, উজ্জলতা এগুলো প্রয়োজন মাফিক বাড়িয়ে কমিয়ে নিলে প্রিন্টকৃত ছবির মান অনেক উন্নত হবে।
ডিজিটাল ক্যামেরা
স্টুডিও এর জন্য ভালো মানের ক্যামেরা ব্যবহার করা উচিত। এই ব্যবসায় যারা নতুন তাদের মানের সাথে সাথে নির্দিষ্ট ক্যামেরার নিয়ম-কানুন ভাল করে জানতে হবে। তাই ক্রয় করার পর ক্যামেরার সাথে প্রাপ্ত ম্যানুয়্যাল বা বিধিমালা মনোযোগ দিয়ে পড়া অবশ্য কর্তব্য। ম্যানুয়্যাল পড়ার সময় নির্দিষ্ট ক্যামেরার ফ্লাশ সম্পর্কিত বিষয়গুলো ভাল করে পরতে হবে। ডিজিটাল ক্যামেরা যেহেতু আকারের দিক দিয়ে ছোট তাই এই ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় স্ট্যান্ড ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। ডিজিটাল ক্যামেরার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল তাৎক্ষনিক ছবি দেখা যায় বলে ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনেক সময় অসাবধানতার কারনে যে ছবি খারাপ আসে তা মুছে আবার নতুন করে নেয়া যায়। এই ক্যামেরায় যেহেতু নিজেস্ব মেমরী বা আতিরিক্ত মেমরী কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে তাই প্রচুর পরিমাণে ছবি তোলা যায়।
নেগেটিভ স্ক্যানার
এচপি স্ক্যানজেট ২৪০০ স্ক্যানারে এ৪ সাইজ পর্যন্ত যেকোন ছবি স্ক্যান করা সম্ভব। আর ভেহো ৩৫এমএম ফিল্ম স্ক্যানার দিয়ে যেকোন নেগেটিভ থেকে ছবি স্ক্যান করে কম্পিউটারে নেয়া যায়। বর্তমানে বাজারে ক্যাননের ৪২০০ এস মডেলের স্ক্যানারের দাম ৮০০০ টাকা, এপসনের ৩৪৯০ মডেলের দাম ১১,০০০ টাকা ও ৩৫৯০ ফটো স্ক্যানারের দাম ১৩,০০০ টাকা।
ফটো পেপার ও কালি
ফটো প্রিন্টারের মান ঠিকভাবে কাজে লাগাতে ভালো মানের ফটো পেপার ও কালি ব্যবহার করা উচিত। কম দামের ফটো পেপার ও কালি ব্যবহার করলে ফটো প্রিন্টার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া ফটো ফ্যাকাসে হয়ে যেতে পারে। ফটো পেপারের ক্ষেত্রে গ্লসি বা ম্যাট জাতীয় পেপার ব্যবহার করা যেতে পারে। সবচেয়ে প্রয়োজন যে বিষয়টি সেটি হলো প্রিন্টার যে ব্র্যান্ডের সেই একই ব্র্যান্ডের কাগজ ও কালি ব্যবহার করা উচিত।
স্টুডিও বসানো
ডিজিটাল স্টুডিও তৈরী করতে এর সেট নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এরজন্য অবশ্যই সঠিক স্হান নির্বাচন করতে হবে। প্রথম বিষয়টি হলো আলোকসজ্জা। দুটি ছাতাকৃতির লাইট ও উজ্জল আলোর ব্যবস্হা করতে হবে। তবে টাংস্টান হ্যালোজেন বাল্ব ব্যবহার করতে পারলে উৎকৃষ্ট মানের ছবি তোলা যাবে। বিকল্প ব্যবস্হা হিসেবে ইলেক্ট্রনিক ফ্লাশ লাইট ব্যবহার করা যাবে। পেছনের পটভূমিটি হালকা নীল রংয়ের কাপড় দিয়ে করা যেতে পারে অথবা বড় কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি রাখা যেতে পারে। স্টুডিও এর সাথে একটি আয়না ঘর থাকলে ভালো হয়। মূল সেট তৈরি করতে পাঁচ-ছয় ফুট দৈঘ্যের ছোট ঘর হলেও চলবে। নীচের ছবিতে একটি আধুনিক স্টুডিও তৈরী করার নিয়মাবলী ছবি একে উচ্চতা ও দুরত্ব পরিমাপ করে দেখানো হয়েছে।
ফটো এডিটিং করা
ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার পর ছবি ইডিটিং করতে হবে। এর জন্য বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন্ সফটওয়্যার যেমন: এ্যাডোবি ফটোশপ, পেইন্ট শপ প্রো, মাইক্রোসফট ডিজিটাল ইমেজ প্রো বা ইউলিড ফটো ইমপ্যাক্ট এর মত প্রফেশনাল সফটওয়্যার ব্যবহার করলে উচ্চমানের ছবি পাওয়া যাবে।
লাভজনক খাত
ডিজিটাল স্টুডিও এর ব্যবসা বেশ লাভজনক। এত স্হায়ী খরচ হলো যন্ত্রপাতি ও স্টুডিও নির্মাণ এবং চলতি খরচ হলো ফটো পেপার ও কালির খরচ। চারটি পাসপোর্ট আকারের ছবির জন্য কাগজ ও কালিসহ খরচ পড়ে প্রায় ৩০ টাকা। বর্তমানে স্টুডিও মালিকরা ছবি তোলা ও প্রিন্ট করানোর জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। অন্যান্য খাতেও লাভের পরিমাণটা বেশ ভালো। যেমন: ছবির জন্য ফ্রেম তৈরী করা বা ছবি রাখার অ্যালবাম বিক্রি করা।
প্রশিক্ষণ স্হান
বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (বিপিসি) বাংলাদেশের প্রফেশনাল ও নতুন ফটোগ্রাফারদের উদ্যোগে ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে এই পেশার ব্যাপক প্রসার করা। তারা ফটোগ্রাফি সম্পকিত মাসিক “ফটোগ্রাফি” নামক একটি বুলেটিনও প্রকাশ করেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সেমিনার ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকেন। তাদের অন্যতম প্রধান একটি কাজ হলো প্রশিক্ষণ দেয়া। এপর্যন্ত তারা ৬৫টা ব্যাচে ৬০০ জন ব্যাক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ফ্লোরা লিমিটেড নামে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও একটি প্যাকেজ ডিজিট্যাল স্টুডিও তৈরীতে সহায়তা করে। ফ্লোরা লিমিটেড প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে। প্রতি মাসে দু’টি করে ব্যাচ। একটি ব্যাচকে ১দিনে মোট ৩৬ ঘন্টা প্রশিক্ষণ ও ৩৬ ঘন্টা অনুশীলন করা হয়। কোর্স ফি ৩০০০ টাকা।
যোগাযোগের ঠিকানা:
ফ্লোরা লিমিটেড
আদমজী কোর্ট এনেক্স-২ (৮ম তলা)
১১৯-১২০ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা।
ফোন: ৯৫৬ ৭৮৪৬
বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (বিপিসি)
৬৩/২ সায়েন্স ল্যাবরেটরী রোড, নীচতলা,
ঢাকা ১২০৫।
ফোন: ৮৬১১২৮৪
এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শাখা অফিসগুলো যেমন: নারায়গঞ্জ, চগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বগুড়ায় প্রশিক্ষণের জন্য ফ্লোরা লিমিটেডের নিজস্ব অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
খরচের হিসাব
খরচের হিসাব : (আনুমানিক)
যন্ত্রপাতি টাকা (পরিমাণ)
একটি কম্পিউটার (সাধারণ মানের) ২৫,০০০.০০ টাকা
একটি ডিজিটাল ক্যামেরা (৪ মেগা পিক্সেল) ১৪,০০০.০০ টাকা
একটি স্ক্যানার ৮,০০০.০০ টাকা
একটি ফটো প্রিন্টার ১২,০০০.০০ টাকা
আলোকসজ্জা (আমব্রেলা লাইট ২টি সহ) ১২,০০০.০০ টাকা
আসবাবপত্র/যন্ত্রপাতি ৮,০০০.০০ টাকা
অন্যান্য খরচ ২,০০০.০০ টাকা
মোট = ৮১,০০০.০০ টাকা
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০১
মোঃ শরিফুল আলম বলেছেন: আমি এই লিখাটা অন্যযায়গা থেকে কপি করেছি
ক্যামেরার মান যত ভাল অবশ্যয় ছবির মানও অনেক ভাল হবে।
২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫৫
মা-নবি০৩ বলেছেন: একটি ডিজিটাল ক্যামেরা (৪ মেগা পিক্সেল) ৪ না ৮ ?
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০১
মোঃ শরিফুল আলম বলেছেন: ৪ হলে চালাতে পারবেন
তবে ৮ হলেই ভাল হয়
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬
jahangirshs বলেছেন: স্টুডিওর নকশার চিত্রটি পাচ্ছি না। যা খুবই প্রয়োজন। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৮
হৃদয়হীনা বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ। আমার মনে হয় ক্যামেরার মানটা আরোও একটু ভাল হওয়া দরকার।