নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

foooysaaal\'s blog

ফখরুল আমান ফয়সাল

সব ব্লগাররাই আমার চেয়ে জ্ঞানী, তাই নিজেকে জাহির করার দৃষ্টতা দেখাচ্ছি না। ফেসবুক: www.facebook.com/foooysaaal.own

ফখরুল আমান ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কীসের বাবা-মা?"

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৮

একটা অদ্ভুত ব্যাপার ইদানিং কালের বাবা-মায়েদের মাঝে প্রচন্ড লক্ষ্যনীয়। ছোট বাচ্চারা যখন খুব কম বয়স থেকে স্মার্টফোন কিংবা ট্যাব ব্যবহার করতে শুরু করে এবং এসব স্পর্শকাতর প্রযুক্তি সম্পর্কে ওয়াকিবহল হয়ে যায়, তখন এসব বাবা-মা গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে সবাইকে বলে বেড়ায়,

"আমাদের সন্তান এই বয়সেই স্মার্টফোনের সব ব্যবহার শিখে যাচ্ছে, ওকে কিছুই দেখিয়ে দিতে হয় না!"
"আরে ভাবী আমাদের ৪ বছরের বাচ্চাতো youtube-এর সব লেটেস্ট ভিডিও নিজে নিজেই প্লে করে!"
"আর আমার বাচ্চাতো মোবাইলে হিন্দি আইটেম গান না ছাড়লে খেতেই চায় না!"

একটা কথা হয়তো শুধু আমি না আপনারা সবাই বলতে শুনেছেন এসব বাবা-মায়েদের মুখে; তা হচ্ছে -

"আরে, আমি আর ফোনের কি জানি, আমার এইটুকু বাচ্চা এখনো ঠিকভাবে কথাই বলতে পারে না অথচ ফোনের 'স______ব' খুঁটিনাটি জানে, সে একাই বলে দিতে পারবে কোথায় কি আছে!" (আনন্দে দাঁত কেলিয়ে ভ্রু উঁচিয়ে বলতে দেখা যাবে)

এবার মজার আরেকটা তথ্য দেই, ২০১২ সালের গবেষণায় পাওয়া তথ্য- ঢাকায় স্কুলগামী শিশুদের প্রায় ৭৭ ভাগ পর্নোগ্রাফি দেখে (সূত্র- বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, দৈনিক প্রথম আলো)।

ব্যাক্তিগত জীবন থেকে নেয়া 'গল্প নয় সত্যি' কথা বলি। আমার খুব পরিচিত একজন বাসায় গিয়ে ছোট দুটি বাচ্চা পড়ান; ২য় ও ৩য় শ্রেনীর ছাত্র এরা। স্মার্টফোন আর কম্পিউটারে তাদের অবাধ বিচরণ আরোও ছোট বয়স থেকেই। কোনও এক কারনে একদিন এই দুই ভাইয়ের একটা হোমওয়ার্ক করাতে আমার বাসায় নিয়ে আসা হয়, ওদের সাথে আমি তখন গল্প জুড়ে দিই। যেহেতু ঢাকার ফ্ল্যাট বাসার সংস্কৃতিতে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো অলীক ব্যাপার, তাই আমিই বেশি আগ্রহী ছিলাম তাদের সাথে সময় কাটাতে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওদের সাথে ভালো সখ্যতা হয়ে যায়। দেখলাম ইন্টেরনেটের উপর ভালো দক্ষতা তাদের, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংও করছে! আমি জিজ্ঞেস করলাম, আর কী কী জানো, আমাকেও শেখাও। উত্তরে ছোট ছেলেটি অর্থাৎ ২য় শ্রেনীতে পড়ুয়া শিশুটি আমাকে একটা ওয়েবসাইটের নাম বলল। নাম শুনে আমি শুধু অবাকই হই নি, বরং ভাবছিলাম, আমি কি ঠিক শুনেছি? ওয়েবসাইটি ছিলো একটা পর্ণ সাইট। আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'তুমি কিভাবে জানলে এর সম্পর্কে?' 'আমার ফ্রেন্ড বলেছে।' ওর সে সময়ের চেহারাটা দেখে আমারই লজ্জা লাগছিল। আমরা কি প্র্যাকটিস করাচ্ছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে! কোথায়, কতটুকু নজরদারি করতে হবে তা না ভেবেই ওদেরকে আমরা গোলকধাঁধাঁর এই স্মার্টফোন বা ইন্টারনেটের রাজ্যে স্বাধীন প্রবেশ করাচ্ছি, ওরা নিজেও জানে না ভালো কি মন্দ কি! পরে আমি ওদের গৃহশিক্ষককে অবগত করেছি ব্যাপারটা যাতে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে ওদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে।

কিছু দিন আগে একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে ১২ বছরের পূর্বে কোনও শিশুকে ট্যাব/স্মার্টফোন ব্যাবহার করতে দেয়া উচিৎ না, এতে তাদের বুদ্ধি ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাঁধাপ্রাপ্ত হয়, আচরণগত অপরিপক্কতা দেখা দেয়। এখনকার এই বাবা-মায়েরা তাহলে কবে শুধরাবে?
কিছু দিন আগে একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে ১২ বছরের পূর্বে কোনও শিশুকে ট্যাব/স্মার্টফোন ব্যাবহার করতে দেয়া উচিৎ না, এতে তাদের বুদ্ধি ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাঁধাপ্রাপ্ত হয়, আচরণগত অপরিপক্কতা দেখা দেয়। এখনকার এই বাবা-মায়েরা তাহলে কবে শুধরাবে?

এই নীরব বিষটি কিছু অত্যানন্দিত, অর্ধ-শিক্ষিত, আধুনিকতার প্র্যাকটিস করা বাবা-মায়েরা খুব গর্বের সাথে বাচ্চাদেরকে দিয়ে যাচ্ছে। যে শিশুরা এমন অসুস্থ লাইফস্টাইলের ভুক্তভোগী হচ্ছে চলুন এদেরকে না শাসিয়ে এদের বাবা-মাকে একটু বুঝাই। কারন গাছ ভালো হলে ফল নিয়ে কি আর ভাবতে হয়?

- - - ফখরুল আমান ফয়সাল

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমার মাথা কাজ করছে না। নিজের সন্তানকে কীভাবে এই প্রবণতা থেকে দূরে রাখবো সেটা নিয়ে নিত্যদিন চিন্তা করি। সামনে কঠিন দিন। সরকারেরই উচিত ঘোষণা দেয়া ১৮'র আগে স্মার্টফোন না দেয়া। তাহলে হয়তো অভিভাবকরা বাধ্য হবে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.