![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হযরত ইউসূফ (আ সম্পর্কে কিছু তথ্য:
আল্লাহ পাক কোর’আনুল করীমকে হেদায়েতের বাণী হিসেবে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন , তাই কোর’আনে কোন নবীর জীবণ কাহিনী ধারাবাহিক ভাবে বিস্তারিত বর্ণনা নেই । তবে বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে বিভিন্ন নবীদের কিছু জীবণ চরিত্র তুলে ধরা আছে । বিভিন্ন নবী রসূল (সা) ও মহিয়সিনীদের নামে সূরা আছে , আমরা পাঠ করতে হয়ত ভাবতে পারি এই সূরা মূলত উনার জীবণ কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নাজিল হয়েছে । আসলে তা নয়, তাদের জীবণের কাহিনী কোম বরং উপদেশ বাণীই তুলে ধরা আছে । তবে , একমাত্র বাতিক্রম সূরা হল সূরা ইউসূফ । হযরত ইউসূফ (আ এর পুরা জীবণ কাহিনী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তুলে ধরা আছে । সুবহানাল্লাহ................
যার মাধ্যমে আমরা তার জীবণ কাহিনী থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারি । তবে, আমাদর মাঝে বহুপ্রকার মিথ্যা ধারণা, অমূলক প্রচার, অসত্য বক্তব্য প্রচলিত আছে । তা বিভিন্ন নবী রসূল বা আওলিয়াদের ক্ষেত্র । হযরত ইউসূফ (আ) ও তার ব্যতিক্রম নোন । বিশেষ করে বিভিন্ন চটিবই, অপোক্ত লেখকদের অমূলক ধারণা প্রসূত বর্ণনা , রসালো বর্ণনা করতে গিয়ে নবী রসূলদের জীবণে অনেক মিথ্যারোপ করা হয়েছে , অনেক গান গজলে আরও সাংঘাতিক কথা বর্ণনা করা হয়েছে ।
যেমন ছোট বেলা থেকেই আমরা একটি গান শুনে আসতাম, ‘প্রেম কইরাছেন ইউসূপ নবী, তার প্রেমে জুলেখা বিবি ...’
লা হাওলা ওয়ালা কুয়াত ............ নবীগণ কোন নারীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে আসেননি । তাদের কাঁধের উপর ছিল অনেক দায়িত্ব । আসুন, আমরা হাদিস কোরান ও বিভিন্ন তাফসীর এবং অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই থেকে আজ হযরত ইউসূফ (আ) এর কিছু বাস্তব সত্য তথ্য জানব ।
**জুলেখার স্বামী : আমরা সাধারণত জানি যে হযরত ইউসূফ (আ কে যিনি কিনে নিয়ে ছিলেম সেই ব্যক্তির নাম আজিজ, এবং তিনিই জুলেখার স্বামী ছিলেন । কথাটা সত্য যে হযরত ইউসূফ (আ
কে ক্রয়কারী ব্যক্তি জুলেখার স্বামী ছিলেন, কিন্তু তার নাম আজিজ, এটা সত্য নয় । তার নাম ছিল ‘ইতফির’ । তার স্ত্রী হলেন জুলেখা , আবার কোন তাফসীরের মতে তার স্ত্রীর নাম রাঈল । ‘ইতফির’ ছিলেন মিসরের রাজার সেনাপতি । আর সেই পদের নাম ছিল ‘আজিজ-এ-মিশর’ বা ‘মিশরের আজিজ’ .... আমরা ভুলক্রমে তার নামকে আজিজ মনে করে থাকি । কিন্তু আজিজ কোন নাম নয় এটা রাজপদের নাম ।
হযরত ইউসূফ (আ কে এই পদে দেয়া হয়েছিল , যখন তিনি রাজার স্বপ্নের বর্ণনা সঠিক ভাবে করে দিয়েছিলেন , তাই আল্লাহ পাক কোর’আনে হযরত ইউসূফ (আ
কেও ‘মিশরের আজিজ’ শব্দে অভিহিত করেছেন । (সূরা-ইউসূফ আয়াত ৭৮) ।
রাজার নিচের পদই হল ‘আজিজ’ পদ , যা একজন প্রধান সেনাপতি ও মহা অধ্যক্ষ হিসেবে পদ সামাল দেয়ার বিশেষ ‘পদবি’ ।
মিশরের সম্রাটের নাম ছিল রাইয়ান ইবনে ওসায়দ । তিনি ইউসূফের হাতে ধর্ম কবূল করেছিলেন । তার পরই হযরত ইউসূফ তার রাজ্যে পদ নিতে সম্মত হয়েছিলেন । (উর্দূ মা’রেফূর কোর’আন)
মওলানা আবু আ’লা মওদুদি হযরত ইউসূফ (আ) সম্পর্কে লিখেছেন ‘তিনি নাকি রাজার কাছে এই পদ চেয়ে নিয়েছিলেন !’ তথাটা সত্য নয়, বরং তাফসীরে মা’রেফুল কোর’আনের মতে ইউসূফকে যখন রাজা মিশরের মহামন্ত্রী করতে প্রস্তাব দেন তখন ইউসূফ (আ) তা সরাসরি নাকোচ করে দিয়ে বলেন ‘আপিন যদি আমাকে দিয়ে বিশেষ কোন দায়ীত্ব সামলাতে চান তবে তার চেয়ে নিচের পদ দিন, যাতে করে আমি যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারি । .. এর পর ইউসূফকে মিশরের ধনভান্ডার সামাল দেয়া ও খাদ্য সংগ্রহের এবং নিয়ন্ত্রনের দায়িত্ব দেন ।‘ কাউকে বড় পদ দিতে চাইলে তিনি তা না নিয়ে যদি তার চেয়ে ছোট পদ চান তবে তা চেয়ে নেয়া হয়না । বরং নির্লোভীতাই প্রকাশ পায় ।
বাইবেলের আদিপুস্তকের মতে জুলেখার স্বামীর নাম পোটিফর ছিল । তিনি মিশরের সেনাপতি ছিলেন । পরবর্তীতে তিনি মিশরের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হোন । (আদি পুস্তক ৩৯:১)
**তবে ইউসূফের স্ত্রী কে ছিলেন ???
কিতাবুল মকাদ্দসের বর্ণনাতে উল্লেখ্য হযরত ইউসূফ (আ) যাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি ছিলেন মিশরের রাজা বা ফারাওয়ের রাজ্যের প্রধান ধর্মজাযক ‘কিতফির’ এর কণ্যা ‘আসনাৎ’ ( পয়দায়েশ ৪১:৪৩) । আর বাইবেলে তার নাম উল্লেখ আছে
আসনাৎ নাম্নী হিবেবে ।
আসনাৎ এর গর্ভে দুটি সন্তান জন্ম নেন । একজনের নাম ‘অফরাহীম’ অপরজন হলেন ‘মানশা/মিশা’ । ( মারেফুল কোর’আনের বাংলা তাফসীর) ।
কিছু কিছু তাফসীর কারকের মতে হযরত ইউসূফ (আ) জুলেখা কে বিয়ে করেছিলেন, সেটি ঘটেছিল জুলেখার প্রথম স্বামী ইতফিরের মৃত্যুর পর , কিন্তু এই বর্ণনাটি নেহায়েত কল্পণাপ্রসূত , এর স্বপক্ষে কোন হাদিস কোর’আন বা তাফসীরের কোন ডকুমেন্ট নেই । এমনকি ইহুদিদের গ্রন্থ তাওরাতেও জুলেখার সাথে ইউসূফের বিয়ের কোন উল্লেখ নেই ।
বরং বিভিন্ন কোরানের তাফসীরে জুলেখার সাথে ইউসূফের বিয়ের কথার বিরোধীতা করে হয়েছে কঠোর ভাবে ।
উর্দূ তাফসীরে বর্ণনা করা হয়েছে “যে নারী একজন নবীকে মিথ্যা অপবাদ প্রদান করে ৭ বছর জেলে রাখতে পারে, সেই নারীর সাথে বিবাহ হওয়া অবশ্যই অসম্ভব মনে হয় । “
অন্যত্র বর্ণনা করা হয়, “ যার সাথে নবুবীয়াত পাক সাফের উপর তর্ক বিতর্ক হয়েছে , যে মহিলা কামনা বাসনায় লিপ্ত তার সাথে একজন নবীর বিয়ে অসম্ভব ।“ (তাফসীর ইবনে কাসীর)
কোর’আনে বহু অংশে একজন সতীসাধ্যি স্ত্রী গহণের সবাইকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে , সেখানে একজন নবীর স্ত্রী এমন কেউ হবেন যিনি কিনা সেই নবীকেই দু:চরিত্রের অপবাদ দিবেন । এটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি অনেক তাফসীর কারকের কাছে ।
সুতুরাং আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য যেন তেন লেখকের বই না পড়ে বরং গ্রহণযোগ্য আলেমদের লিখা পড়তে হবে । যাতে করে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয় ।
আল্লাহ তা’লা আমাদের সবাইকে সঠিক তথ্যা জানার তওফিক প্রদান করুণ । ওয়ামা তওফিকি ইল্লা বিল্লাহ....
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৮
নূসরাত তানজীন লুবনা বলেছেন: জাযাকাল্লাহ