নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোলা জানালার মতো আমর ব্লগটাও সেই ভাবে আছে

আমর সম্পর্কে লেখার মতো এখনো কিছু তৈরি হই নাই ।

মেহেদী হাসান সোহান

আসোলে আমর সম্পর্কে লেখার মতো এখনো তেমন কিছুই তৈরি হই নাই । :)

মেহেদী হাসান সোহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বিতীয় ভালবাসা

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৩

তড়িঘড়ি করে পাপ্তি লিফট থেকে নামতে যেয়ে হঠ্যাৎ করে ধাক্কা খেলেন উপরের তলার ইমরানের সাথে । ইমরান এই বাড়িটির মালিক ওর ছোট একটা মেয়েও আছে তবে ওর একটা পা একটু ছোট এইটাই ওর জীবনের একটা বাজে জিনিস । ইমরানের সাথে পাপ্তির ধাক্কা লাগার ফলে ইমরানের হাত থেকে ওর স্টিকটা পড়ে গেছে যেইটা ধরে ইমরান ভালোকরে হাটাচলা করতে পারে, পাপ্তি তাড়াতাড়ি স্টিকটা তুলে দিয়ে ইমরানকে সরি বললো কিন্তু অন্যদিক থেকে ইমরানের কোন রেসপন্স পাওয়া গেলোনা । সবাই যার যার মতো চলে গেলো । ইমরানের নিজস্ব একটা ফার্ম আছে সেখানেই সে বসে । পাপ্তি ইমরানের বাসার ভাড়াটিয়া সে একটা অফিসে জব করে । পাপ্তির সাথে ইমরানের মেয়ের খুব ভাব মেয়েটি ছোট আর মেয়েটির মা বেচে নেই তাই হইতো পাপ্তি একটু বেশিই আদর করে । পরের দিন ইমরানের সাথে পাপ্তির লিফটে দেখা হলো পাপ্তি হইতো কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু গম্ভির ভাবে থাকা ইমরান তার কোন পাত্তাই দেই না । জিনিসটা খুবই অবাক করে পাপ্তিকে লোকটি এমন কেন মনে কোন ভালোবাসা নেই । শনিবারের দিন পাপ্তির অফিস বন্ধ, ওই দিন ইমরান তার ফার্মে যাওয়ার পর পাপ্তিকে ইমরানের মেয়ে তাদের বাসায় নিয়ে গেলো । বাসাটির ভেতোরের পরিবেশ দেখে খুবই অবাক হলো পাপ্তি এতো সুন্দর করে সাজানো । বাসায় ইমরান ওর মেয়ে আর ইমরানের এক খালা থাকে । খালা পাপ্তিকে খুবই স্নেহ করে কারণ পাপ্তি দেখতে যেমন সুন্দর তার ব্যবহার তেমন ভালো । পাপ্তি ইমরানের মেয়ের সাথে ইমরানের রুমে গেলো একটু ঘুরতেই পাপ্তির চোখে পড়লো সবুজ মলাটের একটি ডাইরি সে অনিহা সত্ত্বেও ডাইরিটা খুললো আর তারপর

সে এক নাগাড়ে সেইটা পড়তে লাগলো, সেইখানে শুরুটা ছিলো

হয়তো আমর জন্যই

তারপর যা লিখা ছিলো-

সেইদিন ভার্সিটিতে আমর প্রথম দিন না হলেও একটি মেয়ের প্রথম দিন ছিলো মেয়েটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার কথা বালা ও অন্যান্য সব কিছু, ক্লাশের সবাই মেয়েটির সাথে বন্ধুত্ত প্রেম এই সব করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ল । মেয়েটিকে আমর খুব ভালো লেগেছিলো মনে হয় ভালোবেসে ফেলেছিলাম, কিন্তু আমর ভাগ্যে তো আর এইসব নেই আমি পঙ্গু মানুষ । এই সব ভেবেই আমর দিন কেটে যাচ্ছিলো, একদিন আমি সিড়ি দিয়ে তিন তালায় উঠছিলাম এমন সময় কে যেন আমকে পিছন থেকে ডাক দিলো ইমরান আমি ঘুরে দেখেতো ওবাক আরে এ যে আমদের ক্লাশের সেই সুন্দরী মেয়েটি ওর নাম সাদিয়া । আমি দাড়ালাম সাদিয়া এসে আমাকে বললো আমাদের প্রগ্রামিং সি এর ক্লাশটা কোথায় আমি ঠিক খুজে পাচ্ছি না । আমি ওকে আমর সাথে আসতে বললাম ও আসলো, আমর সিঁড়ী দিয়ে উঠতে একটু কষ্ট হচ্ছিলো তাই দেখে ও আমকে ধরেই ক্লাশে নিয়ে গেলো আর ক্লাশে যেয়ে বসলোও আমর সাথে । আমাকে বললো তুমিতো এইবার ক্লাশে ফার্স্ট হয়েছ অনেক সুনাম তোমার, আমি বললাম এই সব তুমি কার কাছে শুনলে সবাই একটু বেশিই বলে ও অনেক সুন্দর একটা হাসি দিল । এরপর প্রতিদিন ও আমর সাথে বসতো আর আমর সাথে ওর খুব ভালো বন্ধুত্ত হয়ে গেলো এই দেখে ক্লাশের বাকিরাতো জ্বলে মরছে আমর সাথে কিভাবে বন্ধুত্ত হয় ।

আমরা এখন সব সমই এক সাথে থাকি তিন বছর কেটে গেলো আমর মনে হয় সাদিয়া আমাকে এখন ভালোবাসে মেয়ে মানুষ তাই হয়তো বলতে পারছে না । সামনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ঠিক করলাম ওইদিন ওকে বলবো ভালবাসি । ওই দিন রাতেই সাদিয়া আমাকে ফোন করে বলল ইমরান ১৪ তারিখ ফ্রি থাকলে তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো আর তোকে কিছু জরুরি কথা বলার আছে , আমি ভাবলাম এতো মেঘ না চাইতেই জল । যাই হোক আমি ১৪ তারিখ বেশ একটু সেজেগুজেই গেলাম দেখা করতে , সাদিয়া আমাকে বললো ইমরান চল আমরা দিয়া বাড়ি যাবো, আমি একটা রিকশা ঠিক করলাম তারপর দুইজন দিয়া বাড়িতে গেলাম । দুইজন হাটছি হঠ্যাৎ দূরে একটা বাইক দেখিয়ে বললো ইমরান ওই যে বাইকের সাথে যে ছেলেটি ও হচ্ছে আমর বয় ফ্রেন্ড আমাদের চার বছরের প্রেম কিন্তু এই কথা কাউকে জানাইনি এমনকি তোকেও না, কথাটা শুনে আমর মাথা ঝিম খেলে গেলো চখে পানি চলে আসছিলো অনেক কষ্টে পানি আটকালাম /:) ওর বয় ফ্রেন্ডের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল ছেলেটির নাম আকাশ । সাদিয়ার বাড়ি থেকে নাকি ওর বিয়ে ঠিক করেছে কিন্তু ও আকাশকে ছাড়া থাকতে পারবে না তাই ওরা পালিয়ে বিয়ে করবে আমর সাহায্য লাগবে । আমি নিরুপায় হয়ে বললাম হ্যা তাতো করবোই বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কথা । ১৫ তারিখ ওরা বিয়ে করলো এর পর ওরা বান্দরবান চলে যায়, পরে আমর সাথে আর যোগাযোগ করে নি । বছর খানেক পর একদিন একটা অপরিচিত নামবার তেকে ফোন আসলো ভাঙা গলায় একটি মেয়ে কথা বললো ইমরান আমি সাদিয়া কিছুক্ষনের জন্য আমি চুপ হয়ে গেলাম তারপর বললাম হ্যা বল, সাদিয়া জানালো ও খুব বিপদে আছে এই খান থেকে যাওয়ার পাঁচ মাস পর আকাশ রোড অ্যায়কসিডেন্টে মারা গেছে কিন্তু কথাটা বলার সাহস আর কাউকে হইনি আর আমি এটাও জানতাম তুই আমাকে কতোটা ভালোবাসিস, পারলে তুই আমাকে মাফ করে দিস আমি এখন দশ মাসের প্রেগন্যান্ট, আমি চুপ করেই ছিলাম পরে ঠিকানা নিয়ে ওর কাছে হাসপাতলে গেলাম ওর সাথে অনেক কথা হল, ও বলেছিল তুই কি আমকে এখন গ্রহণ করতে পারবি আমি শুধু মাথা নাড়িয়ে বলেছিলাম হ্যা পরে ওর হাসিমুখটা দেখে বাইরে আসলাম ওই দিন রাতেই সাদিয়ার ডেলিভারি হলো ওর একটা মেয়ে হয়েছে ডাক্তার জানালো আর বললো সাদিয়ার নরমাল ডেলিভারি হই নাই আমরা অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাচাতে পার নাই আমরা দুঃখিত । কথাটা শুনে আমি আবর যেন হারিয়ে গেলাম কেন আমর সাথেই কেন হবে আমি ভালোবেসে কি অপরাধ করেছিলাম যে ওকে আমর কাছে দিয়েও কেড়ে নিতে হবে । চোখের অনেক পানি ফেলেছি তারপর সাদিয়ার মেয়েটিকে নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসি আর সেই দিন থেকেই ঠিক করি যতোদিন বাচবো ভালোবাসার শেষ চিহ্ন সাদিয়ার মেয়ে আমর ঝিনুককে নিয়েই বাচবো।

ডাইরিটা পড়তে পড়তে পাপ্তির চোখে পানি চলে আসে তারপর সে বাসায় চলে যায়। এখন সে বুঝতে পারলো কেন ইমরান সবসময় এই গম্ভীর ভাবে থেকে। পাপ্তি এর পর থেকে সবসময় চেষ্টা করতো ইমরানকে হাসিখুশি রাখতে তার অতিত ভুলিয়ে রাখতে কিন্তু সে পারতো না কেন যানি পাপ্তি ইমরানের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করে, পাপ্তি ধরেই নিয়েছে সে ইমরানকে ভালোবেসে ফেলেছে, তাই সে একদিন সময় বুঝে ইমরানকে বলেই বসলো তাকে সে ভালোবাসে কিন্তু ইমরান অভার রিয়েক্ট করে ওই খান থেকে চলে গেলো এবং কয়েকদিন পর পাপ্তি শুনতে পেল ইমরানকে ওর খালা বিয়ে দিচ্ছে আর ইমরানও নাকি বিয়ে করে নিচ্ছে কথাটা শোনার পর থেকেই পাপড়ির বুক ফেটে কান্না আস্তে লাগলো। পাপ্তি ঠিক করেছে ইমরানের বিয়ে দেখে ওইদিনই বাসা ছেড়ে চলে যাবে। বিয়ের দিন পাপ্তি ইমরানদের বাসায় গেলো সকাল দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হল সবাই চলে এসেছে কিন্তু পাত্রী এখনো আসেনি, কিছুক্ষন পর ইমরান বিয়ের আসর থেকে উঠে এসে পাপ্তির হাত ধরে বিয়ের পিড়িতে নিয়ে যেয়ে বলে আমর পাত্রী হলেন আপনি ;) আর আপনাকে এই কষ্টটা দেওয়ার জন্য দুঃখিত, আপনি আমার আলোবিহিন জীবনে আলো নিয়ে এসেছেন আপনাকে আমি আর ছাড়ছি না। কথা শেষ না হতেই পাপ্তি ইমরানকে জড়িয়ে ধরলো ।।

অতঃপর স্বামী স্ত্রী কন্যার সুখের সংসার :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.