![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলো ও আঁধারের ব্যবধান স্পষ্ট। সুতরাং আলোর ভেলকি এবং আঁধারের অভিধান বুঝতেও কষ্ট হবার কথা নয়। আঁধারকে ভাঙা যায় না; তাড়িয়ে দেয়া যায়। একই ভাবে মুছে দেয়া যায় না আলোর বরাভয়। প্রবল ফুৎকারেও নিভিয়ে দেয়া যাবে না কিছুতেই। বরং আলোর যাত্রাকে সাময়িক বাধাগ্রস্ত করা যায় মাত্র। এখানে অস্তিত্ব একটা বড় ফ্যাক্টর। আলোর ঝলমলানি বলি, কিংবা বলি আঁধারের অমনিশা, এদের যে কোনটিকে আপনি অনাহুত-অযাচিত যাই ভাবুন না কেন, চেতনে-অচেতনে কিংবা অবচেতনে অথবা অসচেতনে এরা কিন্তু আপনার হৃদয় কন্দরে, ঘরে-অন্দরে, বাইরের প্রকৃতিতে জায়গা করে নেবেই নেবে। শুধুই আলো চাইবেন, আঁধার নেবেন না, অথবা কেবলই আঁধারের ঘেরাটোপে বন্দি থাকবেন, আলোর স্পর্শকেও অচ্ছূৎ ভেবে গাঁ বাঁচিয়ে চলবেন- এ অসম্ভব। প্রদীপের তলেই অন্ধকার- কথাটা একটু গেঁয়ো প্রবাদের মতো শোনালেও অস্বীকার করার উপায় কিন্তু আদতেই নেই। এজন্যই আলো-আঁধারের বৈপরিত্য নিয়ে এতোটা খুলে বলার দরকার হয় না। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি, মানুষ কিন্তু আলো ও আঁধার দু’টোকেই ভালোবাসে। নিজের প্রয়োজনেই সে একটা সময় আলোতে রাঙাতে চায়, অন্য সময় আঁধারে হারাতে চায়। ভোরের সোনালী সূর্যকে যেমন সে প্রাণপণে কামনা করে। তেমনি জীবনের তাগিদেই সে সূর্যের প্রস্থানও চায়। রাত চায়। একটু নিরালায় নিশ্চিন্তে ঘুমুতে চায়। যদিও এই অমোঘ সত্যটা মানুষ সচরাচর মানতে দ্বিধা করে।
আমাদের কাছে, বিশেষ করে এই আলোচনায় আলো-আঁধার জাস্ট অ্যা সিম্বলিক টাইটেল। একটা রূপক ক্ষেত্র তৈরিতে এর বিকল্প ছিলো না। সুতরাং সংজ্ঞা, অর্থ ও ব্যাবহারে খানিকটা ব্যত্যয় দেখা দিলেও প্রচ্ছন্ন মিল তো অবশ্যই থাকবে। বর্তমানে আমাদের সাধারণ বিবেচনায় আলো হচ্ছে ভালো আর অন্ধকার মন্দের প্রতীক। বিজ্ঞান মনষ্কতায় ভাবলে আলো মৌলিক; আঁধার নয়। আলোর কণা আছে অঁধারের নেই। তাছাড়া শক্তির উৎস বলা হয় আলোর উৎস সূর্যকে। ইদানিংকালে অবশ্য গড পার্টিকল বা ঈশ্বর কণা নিয়ে বেশ হৈচৈ চলছে বিজ্ঞান জগতে। কিন্তু সূর্যের উৎস কি? বিগ-ব্যাং ফিগব্যাং-এর ক্যাচালে গেলে তর্ক উঠবে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দোদুল-দোলা জাগবে। তাহলে আবারও প্রশ্ন করি- এই বিশ্বাসের উৎস কি? কোত্থেকে এসেছে পৃথিবী কাঁপানো অবিচল বিশ্বাসের বিস্ময়কর উপাখ্যানগুলি? কে দিলো সেই শক্তি মহান?
এক.
প্রসঙ্গটা এবার একদম শুরু থেকে শুরু করা যাক। আকাশ ও পৃথিবীর আলোর আধার যিনি তাঁর থেকেই। আঁধার ও আধারের তফাৎ ভুলে গেলে তালগোল পাকিয়ে ফেলবেন। অকাট মূর্খ আর ঘোর নাস্তিক বাদ দিলে-বাদ তো দিতেই হবে, কেননা, ওরা তো আলোও চেনে না, আঁধারও বোঝে না-বিশ্ব জগতের স্রষ্টা একক প্রতিপালক বলতে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তাতে যে যে নামেই ডাকুক না কেন। তার অনেক সুন্দর নাম রয়েছে। কেবল দ্বিতীয় কাউকে তাঁর অংশীদার না মানলেই একটা সমঝোতায় আসা যায়। আসাটা সম্ভব। তিনি নিজেই তো আলো। অনন্তর সৃষ্টি করলেন সময়, সময়ের আবর্তন। এই যে আমরা ‘এখন’, ‘তখন’, ‘কবে’, ‘কখন’ ইত্যাদি বলি, এগুলো কিন্তু সময়ের সমার্থক শব্দ। সময়ের স্রষ্টা প্রভু মানেই হলো যে তিনি সময় সৃষ্টির পূর্ব থেকেই আছেন- এই জলের মতো পরিষ্কার সত্য কথাটা বোঝে না বলেই নির্বোধেরা শুধায়- সৃষ্টিকর্তা কখন থেকে আছেন। এতোটা মাথামোটা অনর্থ প্রশ্নকারীরা অন্তত আমাদের আলোচনায় জায়গা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। যা হোক, বিশ্ব-জগতকে সেই সময়ের আবর্তনে আবদ্ধ রাখার লক্ষ্যে তিনি বাধিয়ে দিলেন আলোর এক নিপুন চক্রের তুমুল খেলা।
কেন বানালেন তিনি এই দিন-রাত্রির অববাহিকা? এই আলো আঁধার পৃথিবী সব তো মানুষের জন্যই। তারপর বিজ্ঞান-দর্শনের বোধ-উপলব্ধি সবকিছুর ক্ষেত্রই কিন্তু মানুষ। আরো উদাত্ত স্বরে, সন্দেহবাদীদের মতো করে বললে বলা যায়- ঈশ্বর থাকুক বা না থাকুক, মানুষ তো আছে। যদিও ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করা মানুষের সত্যতা স্বীকার করার চেয়ে অনেক সহজ। তাই নয় কি ! প্রসঙ্গক্রমে একটা প্রশ্ন তোলাই যায় এখানে, আসলে মানুষ কবে ঠিক মানুষ হয়ে উঠলো?
আমরা পৃথিবীর ইতিহাস জানি। জানি এর ভৌগলিক অবস্থান। চৌম্বকীয় বলয়ের অদৃশ্য কক্ষপথে তার অবিশ্রান্ত চলার গতি। জগতের হাঁক-বাঁক আর কৌশলের দুর্বিপাক জানতে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ক্ষয়ে বয়ে নি:শেষ হয়ে যায়। আমরা এখন প্রবেশ করেছি মঙ্গলের যুগে, হতবাক স্যাটেলাইটের যুগে। কিন্তু এই যে এতো এতো কিছু, এতসব তা-ব কীর্তি যার বা যাদের জন্য, যাদের কারণে এবং যারা এই সমস্ত কৃতিত্বের মৌলিক দাবিদার, সেই প্রাণীরা কখন থেকে মানুষ, কবে সে সত্যিকারের মানুষ বলে গণ্য হয়েছে, আর অমানুষই বা হয় কী করে, কোন অবদানের ফলে সে মানুষ থেকেছে, কিভাবে সে মানুষ থাকবে- এ প্রশ্ন কি নিতান্তই অবান্তর? আল্লাহর দেয়া চব্বিশটা ঘণ্টা ক্ষুৎ-পিপাসা-অন্নজ্বালা মেটানোর নিবিড় ব্যস্ততার পরিসরে এই প্রশ্ন কি একবারও হৃদয়ে জেগে ওঠে না? জীবনে কি একটুখানি আশ্রয় পাওয়ার যোগ্যতাও সে রাখে না? অথচ মানুষ এতো জ্ঞানের অধিকারী হবার পরেও ইরশাদ হচ্ছে-“আমি তোমাদেরকে জ্ঞানশক্তি দিয়েছি অতি সামান্যই।” সেই অথৈ জ্ঞানের মধ্যে মানুষ-চেনার জ্ঞানটুকুও রয়েছে বৈকি। নিজেকে চিনতে পারার ভেতরে রবকে চেনার, সর্বজ্ঞ প্রতিপালককে জানার বর্ণনাও বিধৃত হয়েছে। তাই জ্ঞানের মাধ্যমে অহঙ্কার কাম্য নয়; ওটা অমানবিক। জ্ঞানের স্রষ্টা, পরম করুণায় যৎ-সামান্য জ্ঞান যিনি মানুষকে দান করলেন, সেই মহাজ্ঞানীর সমীপে আত্মসমপর্ণের জন্য পুন:নির্দেশের প্রয়োজন আছে বটে, কিন্তু মানবিকতার দাবি সেই নির্দেশ অপেক্ষা অনেক বেশি। সহজ কথা- মানুষের মধ্যে জ্ঞান অর্জনের নেশা আছে, জানার বিপুল তৃষ্ণা আছে। বলাই বাহুল্য, তিনি দিয়েছেন বলেই আছে। এই মানবীয় অন্বেষায় সে পৃথিবীর পথে পথে ছুটে চলে অবিরাম। ছুটতে গিয়ে তাকে সামাজিকতার ব্যবস্থাকে সমাদর করে চলতে হয়। আচার-আখলাকের নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা করে চলতে হয়। তাই তাকে জ্ঞানের ময়দানে দৌড়াবার আগেই ভালো মানুষ হতে হয়, যদি সে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে সফল হতে চায়। মানুষের জীবনের লক্ষ্য কি- এ প্রসঙ্গটাও অনিচ্ছায় জড়িয়ে আসে এখানে। যা হোক, ভালো মানুষে পরিণত হতে মানুষ গড়ার কারখানায় আত্মাকে ঝালিয়ে নিতে হয়। আত্মাকে আমরা একটা ছোট্ট ঘরের সাথে তুলনা করতে পারি। দিন-রাতের মতো এখানেও আলো-আঁধারের চক্র কার্যকর। পার্থক্য হলো, আলো এখানে এমনিতে আসে না। আলোর ব্যাবস্থা করতে হয়। নিয়মিত কিছু নিয়ন্ত্রিত কর্মসূচির প্রাকটিস করতে হয়। যাকে অন্যকথায় বলে সাধনা। নচেৎ ময়লা অন্ধকারে ঘরটা বেদখল থাকবে নিশ্চিত। আলোকিত হৃদয় মানেই আলোকিত মানুষ। অর্থাৎ ভালো মানুষ। জ্ঞান আলো, সত্য আলো এবং সর্বোপরি আলোই ভালো। আর যেহেতু হৃদয়ের মালিক ও জ্ঞানের মালিক সেই একই শক্তি-মহান এবং আলোর আধারও তিনি। অতএব তাঁর সামনে নিজেকে সমর্পণ করাই কি মানুষের একমাত্র ও অবিকল্পিত উদ্দেশ্য নয়, যদি সে সত্যিকারের মানুষ থাকতে চায়?
দুই.
ভালো কথা, মানুষ কি? মানুষ কি একটা প্রাণী? প্রাণী হলে কোন জাতীয় প্রাণীর গোত্রভুক্ত সে? এমন করে প্রশ্ন করলে বিবাদ-বিতর্কের মধ্য দিয়ে ভালো কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। যুক্তিবিদ্যা বা প্রাণীবিদ্যা ঘাটলে অনেক মহামূল্য সংজ্ঞা-পরিচয় হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু ওইটাই কি মানুষের আসল পরিচয়? আমাদের মতে, যে যা-ই বলুক, মানুষ মানুষই। আর কিচ্ছুটি নয় সে। সত্যি বলতে কি, মানুষকে প্রাণী বলতে মানুষ হিসেবেই আমাদের সংকোচের অন্ত থাকে না। কারণ মহামানবদের মতে, প্রাণীর স্বভাবজাত ছোঁয়ারোগ থেকে পবিত্র থাকতে পারলেই কেবল মানুষকে মানুষ বলা যায়। অবশ্য স্কুলে পড়া ভাবসংক্ষেপ- প্রাণ থাকিলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকিলে মানুষ হওয়া যায় না-এর সম্প্রসারিত অর্থটা একটু ভিন্নরকম। তবে মোটের উপর হিসেব করতে গেলে ব্যাখ্যায় তেমন কোন হেরফের হয় না।
মানুষ মাত্রই সে ভালো। সুতরাং ‘ভালো মানুষ’ বিশেষণে তার মূল্যমান বাড়ে না মোটেই। তবে অনেক পশু চরিত্রের মানুষকেও যেহেতেু সমাজে আমাদের মানুষ বলে স্বীকৃতি দিতে হয়, তাই সত্যিকারের মানুষের সঙ্গে অন্তত ভালো মানুষ শব্দগুচ্ছ না যোগ করলে মানক্ষুণœ হবার শঙ্কা থেকে যায়।
তিন.
একটা প্রশ্ন বারবার নিভৃতে আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়ে যায়। আমার মেয়েকে, অথবা আমার আদরের বোনটিকে যখন বিয়ে দিতে মনস্থ করি, একটা শিক্ষিত ছেলে দেখি তখন। একটু ধার্মিক হলে আলেম বা হুজুর টাইপের কাউকে খুঁজি। আরেকটু বেশি হলে সম্ভ্রান্ত পরিবার কি না তাও যাচাই করি। তারপর খবর রাখি টাকা-পয়সার হাল-হকিকত। বংশের জৌলুসও চিন্তার মধ্যে থাকে। তার উপর ছেলে যদি হয় ভদ্র-নম্র গোছের, তাহলে আর বিয়ের জোগার-যন্তরে কালক্ষেপণ করা চলে না। একবারও ভাবা হয় না, ছেলেটা মানুষ হিসেবে ভালো কি না। মনুষ্যত্বের নিক্তিতে সে কতটা ওজনদার। মানবিক বোধে সে কতখানি উত্তীর্ণ। মৃত্যুর দিগন্তে নি:শ্বাস ফেলা পর্যন্ত দীর্ঘ জীবনের বায়না-কাবিন নিয়ে যার কাছে আমার বোন বা মেয়েকে হাওয়ালা করে দিলাম, তার কাছে ওর জীবন ও বিশ্বাস কতটুকু নিরাপদ, শতবার কি ভাবা উচিৎ ছিলো না?
শুধু মেয়ে-বোন কেন, ভাই বা ছেলের ব্যাপারেও ওই একই কথা। যেখানে তাদের পড়তে দিয়েছেন, আরেকটু বুদ্ধি করে বললে বলতে হয়, ওদেরকে মানুষ বানাতে দিলেন যেখানে, যাদের দরবারে, সেই পাঠশালার মহাপ-িতেরা আসলেই মানুষ তো? নাকি...থাক। মনে রাখা উচিত ‘শিক্ষিত শয়তান’ বলেও একটা অভিনব জাতি কিন্তু আমাদের চারপাশে আছে। নববী ইরশাদেও নির্দেশনা রয়েছে, ‘কার’ থেকে জ্ঞান আহরণ করা হচ্ছে, সেটা যাতে আগেই বিবেচনা করে দেখা হয়। যেন কোন বাবাকে স্রোতহারা পন্ডিত ছেলের কথা বলতে গিয়ে- আহ্, ছেলেটা শিক্ষিত হয়েছে বটে, কিন্তু মানুষ হয়নি- বলে দীর্ঘশ্বাস লুকোতে না হয়।
এ যুগে মনস্তত্ত্ববোধের অভাব মানুষের আরেকটা বিরাট শূন্যতা। উদ্দিষ্ট জনের সাদা মুখ লাল, নীল, বিবর্ণ কিংবা বেগুনি রঙের ভোল বদলানোর সঙ্গে সঙ্গেই চটপট বুঝে ফেলবেন যে, তিনি এখন চটেছেন, খুশি হয়েছেন নাকি হকচকিয়ে গেছেন, দু:খ পেয়েছেন কিংবা ভাবনার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন- এমন ধীমান মানুষ এখন হাতে গোণা ক’জন আছেন, জানা নেই। তবু কেন যে আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে মনস্তত্ত্ববোধের পাঠ নেই, চর্চা নেই, নাকি বর্তমানকালের গুণীজনেরা এর কোনো দরকার আছে বলেই মনে করেন না, কে জানে।
পৃথিবীটা কোথায় চলছে আজকাল? কক্ষপথ বিচ্যুত হয়ে কৃষ্ণবিবরে তলিয়ে যায়নি তো ! যতই দিন গড়াচ্ছে, ক্রমশ আলো ও আঁধারের পার্থক্যটা কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। সত্য ও মিথ্যার বিভেদটা আর আগের মতো প্রকট আকারে ধরা পড়ছে না। মাঝেমধ্যে আশঙ্কা হয়, একজন প্রকৃত মানুষকে জাদুঘরে প্রদর্শনের সময় বুঝি ঘনিয়ে এলো ! তবু আশার কথা হলো, এখনও নাকি জগতে ভালোর সংখ্যাই বেশি। যেমন- কবিগুরু বলেছেন, ‘আমার মতে জগতটাতে ভালোটারই প্রধান্য, মন্দ যদি তিন-চল্লিশ ভালোর সংখ্যা সাতান্ন’। তাছাড়া আমরা তো কখনোই নৈরাশ্যবাদীদের দলে নই। তাই বলছি, চলো হে নবীন, প্রাণের আবেগে আবার আমরা মানুষের জয়গান গাই। মানবিকতার দৃপ্ত অঙ্গিকারে আরেকবার ঝলসে উঠি।
[email protected]
©somewhere in net ltd.