![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“আইন যেখানে ন্যায়ের শাসক
সত্য বলিলে বন্দী হই
অত্যাচারিত হইয়া যেখানে
বলিতে পারি না অত্যাচার”
ভুল বুঝবেন না । ’৭১ এর যুদ্ধকে খাটো করার উদ্দেশ্য আমার নয় । তাহলে তো আমি নিরেট মোনাফেক । আমরা যে শাহবাগ চত্বরে আজ লাখো জনতা সমবেত, সেটাও কি ওই ’৭১ বিনা সম্ভব হতো ? শুধু শাহবাগ কেন, যেই দেশকে ভালোবাসি বলেই এই জাগরণ, এই বিপ্লবের সূচনা ও সম্ভাবনা, সে দেশটাই কি ’৭১ বিহীন কিছুতেই অর্জন করা যেত ? যেত না বলেই ’৭১ মহান । মুক্তিযুদ্ধ সুমহান ।
কিন্তু সত্যি করে বললে, যদিও কথাটা অনেকটা ‘পুরান ডায়ালোগে’র মতই, মুক্তিযুদ্ধের এই ৪২ বছর পরেও আমরা স্বাধীনতা পাইনি । বরং একটা নোংরা রাজনীতি আর অর্থহীন গণতন্ত্রের গোলাম হয়ে আছি ।
শাহবাগের আন্দোলনে এবার স্বাধীনতাটাকে উদ্ধার করতে হবে । পেটপুজারি রাজনীতির কবর রচনা করে সত্যিকারের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারলেই আন্দোলন সফল বলা যাবে ।
আমাদের গর্বিত একাত্তরেও গুটিকতক স্রোতহারা লুটেরা মুক্তিযোদ্ধার কাহিনী আমরা শুনি । যাদের কারণে অনেক সময় দেশবিরোধী গোষ্ঠীর মুখে তীর্যক মন্তব্য শুনতে হয় । যদিও জানি, পাকিস্তানিদের নৃশংসতা আড়াল করতেই এই সাতকাহন । কিন্তু আমি চাই না, শাহবাগের যোদ্ধারা একজনও তেমন একটাও ভুল করুক ।
একাত্তরের যুদ্ধে আমাদের অজস্র মা-বোন সম্ভ্রম খুইয়েছেন । লাঞ্চনার সুদীর্ঘ ইতিহাস বড় করুণ । আমার শাহবাগের ভাইয়েরা, আমাদের এই যুদ্ধে একজন বোনও যদি সামান্য ইভটিজিংয়ের শিকার হয়, তাহলে আপনাদের যোদ্ধা বলে ‘থু’ ফেলতেও আমার ঘৃণা করবে ।
একাত্তরে একজাতীয় ধার্মিক বিভীষণ যেমন মীরজাফরি করে রাজাকার হয়েছে । তেমনি অনেক অধার্মিক ধর্মভীরু সেজে হানাদারদের হত্যাযজ্ঞকে ত্বরান্বিত করেছে । আমি চাই না, শাহবাগের কোন যোদ্ধা ধর্মের নামে গালাগাল করে মহীয়ান প্রভুর বিরাগভাজন হোক । কিংবা কোন ধর্মবেত্তা অধর্মের কাণ্ড করে আবার মীরজাফরি করার সুযোগ পাক ।
একাত্তরের পরে, আজ এই প্রায় অর্ধযুগ পরেও লাখো মুক্তিযোদ্ধা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে । শাহবাগের যুদ্ধও কি তেমন কোন পরিণতি বয়ে আনবে ..?
আমি চাই না, রাজাকারের বিচার দাবী করবে একদল রাজাকার । কেবলমাত্র ক্ষমতার বলে যারা কেউ মন্ত্রী কেউ আমলা । আবার শাহবাগের যোদ্ধাদের সুরে সুর মিলিয়ে গাঁ-বাঁচানোর কোশেশ করবে এরা ।
আমি চাই না, শাহবাগের যুদ্ধ একাত্তরের যুদ্ধের মতো হোক । যে যুদ্ধে একটি দেশের কড়াল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়ে আরেক দেশের ভক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হব আমরা । একদল রাজকারের ফাঁসিদণ্ড কার্যকর করে আরেকদল রাজাকারের থাবায় হারবো আমরা ।
আমি এমন যুদ্ধও আর চাই না, যে যুদ্ধের পর মানুষকে ’৭২-’৭৪ এর মতো দুর্ভীক্ষে হাহাকার করতে হয় । জাতির সর্বোচ্চ নেতাকে কতক কুলাঙ্গারের হাতে নিহত হতে হয় । আবার সেই নিধনযজ্ঞ দেখে কতক বিকৃতমস্তিষ্কের মানুষ পথে ঘাটে মিষ্টি বিলিয়ে উল্লাস করে বেড়ায় । তেমন যুদ্ধ আমি চাই না ।
কে বিপ্লবের পিতা আর কে ঘোষক- এমন অশ্লীল কাদা ছোড়াছুড়ির অবকাশ দেয়া যুদ্ধও আমার কাম্য নয় ।
আমি এমন যুদ্ধ চাই না, যে যুদ্ধের পরে দ্রব্যমূল্যের আগুনে পুড়বে সাধারণ মানুষ, সেনাবাহিনী হবে সরকারের খেলার পুতুল কিংবা পিলখানার মতো জাতিকে শক্তিহীন করার নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার, পথেঘাটে মার খাবে জাতির বিবেক সংবাদিকগণ, ত্যাগী নেতারা হবে গুম-খুনের বলি, পঙ্গু অর্থনীতিতে দেশের সবক’টি নাগরিক বইবে বিদেশি ঋণের বোঝা, লাখো ভিক্ষুকের পেটে লাথি মেরে শতকোটি টাকা খরচ করা হবে সামান্য নাম-বদলের অজুহাতে, একডজন মার্ডারের পরও আসামি মুক্ত হবে রাষ্ট্রপতির সামান্য কলমের এক খোঁচায় ।
আমি এসব চাই না বলেই শাহবাগে এসেছি । শাহবাগে এসেছি আমি আমার স্বাধীনতা পুনরোদ্ধোরের লক্ষ্য নিয়ে । ন্যায় বিচারের দাবী নয়, আদায় করতে এসেছি ।
যে যুদ্ধের পরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী শিক্ষার্থী তরুণেরা গলাটিপে মারবে রাস্তার নিরীহ মানুষকে, শিক্ষাঙ্গনে হবে ধর্ষণের সেঞ্চুরি- সে যুদ্ধ দিয়ে আমি কী করবো ? সেই ’৭১ ধুয়ে কি আমি জল খাবো..?
আমি চাই, শাহবাগের এই যুদ্ধে যেন সব রাজাকার, লম্পট, খুনির যবনিকা ঘটে । অধার্মিক-নাস্তিক, প্রতারক ধর্মের ব্যাপারী এবং দেশবিরোধী শত্রু মোনাফেক বিভীষণের যেন চিরসমাধী রচিত হয় । সব অন্ধকার, সব দুর্নীতি, সব আবিলতা, অসারতা যেন ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ।
শাহবাগের এই যুদ্ধের পরে আর কাউকে কোনদিন যেন রাজাকার বলে গালি দিতে না হয় আমাদের । যুদ্ধের পরে জন্ম নেয়া কোন শিশুকে যেন রাজাকার শব্দটিও কখনো উচ্চারণ করতে না হয় । আমাদের নিত্তদিনকার সকল অভিধান থেকে যেন রাজাকার শব্দের বিলুপ্তি ঘটে...
মনে রাখতে হবে, যুদ্ধ যুদ্ধই । যুদ্ধ কোন ছেলেখেলা নয় । আমরা এবার যুদ্ধে নেমেছি । আমাদের খুব ভালো করে চিনে রাখতে হবে- কে শত্রু, কে শত্রু নয় । কে মিত্র আর কে মিত্র নয় । একাত্তরের মতো শাহবাগের যুদ্ধেও রাজাকার ঘাপটি মেরে থাকা বিচিত্র নয় । মুক্তিযুদ্ধের রাজাকারেরাই কেবল শাহবাগের যুদ্ধের রাজাকার, বাকি সবাই ধোয়া তুলসি- এমন ধারণা করলে বিভ্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি । হানাদার চিনতে পারলে রাজাকার চিহ্নিত করা সহজ হবে ।
আমি চাই, এক নতুন আলোয় স্নাত বাংলাদেশ । যে দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন নয়, বরং বিশ্বের একনম্বর শিরোপা লাভ করবে শান্তির রোল মডেলে ।
তাই, আমি চাই, এবং এই তারুণ্যের জাগরণে আশাতুর হয়ে আমি চাইতেই পারি, শাহবাগের যুদ্ধ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে আনেক মহান । আমাদের রক্তঝরা ’৭১-এর চেয়ে অনেক বেশি অর্থবহ ও বলীয়ান ।
বিপ্লবের এই বাসনা হে প্রতিপালক অপূর্ণ রেখো না ।।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
মনযূরুল হক বলেছেন: ইয়েস...
২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০
গোধূলির রঙ বলেছেন: মনে হচ্ছে নাটক আর সিনেমার অভিনয় চলতাছে। সামু সহ সবখানে খালি ছবি আর ছবি। সবাই খালি ছবি তুলতাছে। এরই নাম আন্দোলন?
এরা ভুল প্রজন্ম ! এরা আন্দোলনের মানে জানে? দেখি পুলিশ ফায়ার করুক, কাল পর্যন্ত কয়জন থাকে দেখি? ল্যাঞ্জা গুটাইয়া সবাই নিমিশেই হাওয়াতে মিলাইয়া যাইবো। শেয়ার বাজার, সার-রুনীর হত্যা, পদ্মা সেতু, হলমার্ক, কালো বিড়াল কলংক, দুনীতি, ঘুম, খুন, দ্রব্যমূল্য উর্ধগতি, তেলের দাম বৃদ্ধি সহ আরো যাবতীয় প্রতিবাদে এরা নামে নাই কেন? মামুরা নামলে দেখতা সরকার তোমাগো চুমা দিতো নাকি বাঁশ দিতো।
চার দিকে কত আলো, কিন্তু শাহবাগের কীটগুলারে ঝাপটে ধরেছে অন্ধকার। ওখানে গতকয় দিন আলো যাচ্ছেনা। জংগীরা কয় কি, বিচার বুঝিনা ফাঁসি চাই! মামার বাড়ীর আবদার। ওরে জংগীর দল একাত্তর দেখসনি ভালো কথা, কিন্তু পড়া শুনা কর। বিচার কি আগে জাইনা লও। তোরাও পুরা দেশটারে আফগানিস্তান বানাইয়ালাবি। তালেবান আল কায়েদা যেমন অন্ধ তোরাও দেখি অন্ধ। আয় আলোর দিকে আয়। দেখবি জীবন মানে অন্ধকার না, জীবন মানে সতেজতা।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জবাব আগের পোষ্টে দিছি । আপনি এত সচেতন, তাইলে বসে বসে আঙ্গুল চোষেন কেন ? দেখান না, দেশের জন্য কী করতে পারেন..
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫
...নিপুণ কথন... বলেছেন: শাহবাগের যুদ্ধ যেন হয় মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে মহান