![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেন লেখেন– এই প্রশ্ন সাধারণ সব লেখকের বরাতে সচারচর জোটে না। হতে পারে সবাই এমন প্রশ্ন নিতে পারেন না, কিংবা রচনায় প্রেক্ষাপটে নাসিকা কুঞ্চিত করার মতো বিষয়-আশয় না থাকলে এমন প্রশ্ন জেগেও ওঠে না। অথচ হাম্মাদকে এই প্রশ্ন বারবার শুনতে হয়, হয়েছে। কারণ একে তো তিনি একজন নারী, দ্বিতীয়ত বর্ণে তিনি কালো, তৃতীয়ত এবং সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো তিনি ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। অথচ সোহাইর বরাবর একজন ক্লাসিক কবি, বুদ্ধিজীবী ও সুভদ্র শিল্পীর মতোই উত্তরে বলেন– না লিখে পারি না। নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলের দোষে দুষ্ট আমার এই কণ্ঠ নীরব ছিলো বহুদিন। তা ছাড়া নারীরা এখনো লাঞ্ছিত হয় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই। পায়ের নীচে এখনো মাটি নেই মানুষের। দাসপ্রথা আর বর্ণ বৈষম্যের নিপীড়ন এখনো আছে। বাড়ছে ক্ষুধা, মায়েরা এখনো কাঁদেন। কাঁদতে হয় আমার মাকেও। এগুলোই কি একজন লেখকের লেখার যুক্তির পক্ষে যথেষ্ট নয়? হ্যাঁ, তবে আরও অনেক কারণে লিখতে হয় আমাকে।
সুতরাং সোহাইর হাম্মাদ লেখেন। তিনি কবিতা লেখেন। তার কবিতায় নির্বাসন, আমেরিকার নগর জীবন এবং বর্ণ-বিদ্বেষী সমাজে অ-গৌরবর্ণকায় রমণীর কথা আসে। বিদ্বেষ আর বৈষম্যের প্রতিরোধের কথা আসে। তার ভাষায়, তার বক্তব্যে এবং কখনও রহস্যময় কষ্ট-কল্পনায় ভরা সোহাইর হাম্মাদের কবিতা মানুষের মনের কথা বলে, যারা হারানোর বেদনা বোঝে আর খুঁজে বেড়ায় একটুকু শান্তি। তার প্রথম দুটি কবিতার বই বর্ন প্যালেস্টিনিয়ান বর্ন ব্ল্যাক (১৯৯৬) এবং ড্রপ্স অব দিস স্টোরি-তে তিনি প্রথম ধাক্কাতেই তাদের পারিবারিক ইতিহাস তুলে ধরেন দুরন্ত নি:সঙ্কোচে। তিনি জানেন, এতে তিনি রাজনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়তে পারেন এবং বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারেন, তবুও।
এমনকি এই আশঙ্কা সত্যি বলে প্রমাণিতও হয়। শেষপর্যন্ত নিউ ইয়র্কের হারলেম রিভার প্রেস যখন তার বই প্রকাশ করে, তখন ইলেট্রনিক ইনতিফাদার সাংবাদিক ক্রিস্টোফার ব্রাউন তাকে প্রশ্ন করেন– কেউ যখন আপনার কবিতা পড়ে, সেই পাঠক এক দ্বন্দ্বের মধ্যে দোদুল্যমান হয়ে যায়, তা হলো, রাজনীতি দ্বারা শিল্প প্রভাবিত হয় নাকি শিল্প দ্বারা রাজনীতি। আপনি এমন এক পৃথিবীর কথা বলছেন যা অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত। এভাবে কি আপনি পাঠকের কাছে পৌঁছেছে যেতে পারেন বলে মনে করেন?
সোহাইর লুকোচুরি না করেই বলেন– হ্যাঁ, আমি রাজনীতির কথা বলছি এবং বলছি আমার নিগৃহীত দেশের মানুষের কথা। কিন্তু আমার মনে হয়, যখন আপনি আপনার রচনায় শিল্পের অলঙ্কার পরাতে গিয়ে কোনো আপস না করবেন, তখন রাজনীতিও আপনার শিল্পের বাহন হতে পারে। তুমি যদি ফিলিস্তিনি কবি হও তবে তোমাকে বেদনবোধহীন বা অরাজনৈতিক কবিতা লিখতে হবে এবং তাহলেই তোমাকে প্রকৃত কবি বলে গণ্য করা হবে, না হলে তোমাকে কবি বলে মানা হবে না– আমি সমালোচকদের এই মানসিকতার জবাব এভাবেই আমার কবিতা দিতে চাই।
সোহাইরের কবিতার সবচে’ বড় কৃতিত্ব হলো, সহজবোধ্যতা। তিনি এক্ষত্রে ফিলিস্তিনের জাতীয় কবি মাহমুদ দারবিশ (১৯৪১-২০০৮) ও প্রতিরোধ সাহিত্যের জনক গাসসান কানাফানিকে (১৯৩৬-১৯৭২) হরহামেশাই স্মরণ করেন। যদিও তাদের ভাষা ও সোহাইরের ভাষায় পার্থক্য আছে। ব্যবধান আছে– হরফে ও লেটারে। বক্তব্যের স্টাইলে সোহাইর সরাসরি যুদ্ধের কথা বলেন মানবিকতার দাবি তুলে নিখাদ কিংখাব মখমলের ক্যানভাসে আঁকা উল্কার ছবির মতো। মানুষের মুখে মুখে রটে যাওয়া গানের মতো। তবে প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের শব্দ আসে অনমনীয় আকারেই।
তার অন্যতম কবিতার বই ফার্স্ট রাইটিং সিন্স-এ ক্রোধ নিয়ে লেখেন– আমি জানিনা, জীবনকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্যে কতোশত হত্যার প্রয়োজন হয়/ আমি কখনো এতো ক্ষুধার্ত ছিলাম না যতটা ক্ষুধার্ত আমাকে করা হয়েছে/ আমি কখনো এতোটা ক্রুদ্ধ ছিলাম না যাতে বন্দুকের প্রতিপক্ষ হিসেবে হাতে নিতে হয় অস্ত্র– কলম/ একজন নারী, একজন ফিলিস্তিনি এবং একজন মানুষ হিসেবে কখনো ভেঙ্গে পড়ি নি যতটা ভাঙতে বাধ্য করা হয়েছে আমাকে।
এ বইটি প্রকাশিত হলে, কবিতার এই পক্তিগুলো হিপহপ সম্রাট রাসেল সিমোনকে প্রবলভাবে আলোড়িত করে এবং তারপরেই তিনি তার ডেফ পোয়েট্রি জ্যাম-এ সোহাইরকে নিয়োগ দেন। তারপরই এই কবিতা শোনার জন্যে উন্মুক্ত মঞ্চে ১৫ হাজার দর্শক দাঁড়িয়ে যায়, মুগ্ধ হয়ে কবিতা শোনে এবং শুনতে শুনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
এভাবে সোহাইর হাম্মাদ গীতিকার হিসেবেও ভালো জায়গা করে নেন। ছোট বয়স থেকে সোহাইর সত্তরের দশকের জনপ্রিয় এই সঙ্গীত গোষ্ঠী হিপহপ দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। ফলে গান তার মনে সারাজীবনের জন্যে একটা স্থায়ীরূপে আসন গেড়ে নেয়। সোহাইরের মতে– গান মানুষকে শুধু আন্দোলিত করে না, সম্ভত ‘মানুষ’ করে তোলে। এবং বেশ দু:খের সাথে আমাকে বলতে হচ্ছে, আমার মনে হয় একমাত্র গানই মানুষকে নাড়া দিতে পারে। তাই আমি গানের আলোড়নে আশাবাদি হতে চাই।
এছাড়া তিনি সিনেমার জন্যে চিত্রনাট্য লিখেছেন– ফ্রম বৈরুত টু ব্রুকলিন। প্রথম দিকে অভিনয়ও করেছেন। সল্ট অফ দা সি তার অন্যতম অভিনীত ছবি। শিল্পের কোনো ক্ষেত্রকেই তিনি বাতিল করে দেয়ার পক্ষপাতি নন। এক সাক্ষাৎকারে সোহাইরবলেন– আসলে কাউকে বাতিল করে দেয়ার কিছু নেই, বাতিল করা মানে, আলোচনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর আলোচনা আর যোগাযোগ বন্ধ হওয়া মানে কিছইু না হওয়া। কেননা, আমি আবার নিজের সেই জন্মভূমিতে ফিরতে চাই। যেখানে আমার আজীবনের স্বপ্নসাধ জড়িয়ে আছে।
জর্ডানে ২৫ অক্টোবর ১৯৭৩ সালে ফিলিস্তিনি রিফিউজি পরিবারে জন্ম নেয়ার পর ছোট বয়সেই তাকে পরিবারের সাথে চলে আসতে হয় বৈরুতে, তারপর মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি এই যুদ্ধ-বিদীর্ণ অঞ্চল ছেড়ে মা-বাবার সাথে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে পাড়ি জমান। ছোট সময় থেকে সে তার বাবা আর দাদার কাছে ১৯৪৮ এবং তার পূর্ববর্তী সময়ের ফিলিস্তিনের স্মৃতিকথা আর তাদের বাড়ি লিডার গল্প শুনে বড় হন। সোহাইর শুনেছেন, কীভাবে ১৯৪৮ এ তার দাদা ও অন্তসত্ত্বা দাদীকে লিডা থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। ১৯৪৮ এ প্রথমে গাজা তারপর জর্ডানের উদ্বাস্তু জীবনের সমস্ত বৃত্তান্ত শুনে শুনে শুধু একজন মুসলমান কিংবা ফিলিস্তিনের নাগরিক বলে নয়, অধিকার বঞ্চিত মানুষের ইতিবৃত্ত, বঞ্চনা আর শোষণের ইতিহাস জানানোর জন্যে পেশা হিসেবে কবিতা লেখার কাজকে বেছে নেন হাম্মাদ।
নারী হিসেবে এই ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পেতে তাকে কঠিন এক সংগ্রামী জীবন বেছে নিতে হয়। কিন্তু সোহাইরতার সংকল্প থেকে পিছপা হন নি।
এবং তিনি জানেন বাড়ি ফিরতে গেলে, নিজের জন্মভূমির কোলে মাথা রাখতে হলে ‘প্রতিরোধ’ই হতে পারে একমাত্র উপায়। তাই প্রতিরোধ স্পৃহার ওপরেই হাম্মাদ জোর দিয়েছেন সব থেকে বেশি। কেননা, তিনি বুঝে গেছেন, বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা নিষ্পেষিত মানুষের পক্ষে কঠিন হলেও মানুষের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অসীম। আর সোহাইরের প্রতিরোধের অস্ত্র হলো কবিতা আর গান। সোহাইর ভাবেন– শিল্পী হিসেবে নান্দনিক পর্যায়ে কতটুকু স্থান এবং লক্ষ অর্জিত হয়েছে সেটা নয়, বরং সেই স্থান এবং লক্ষ অর্জনে কতটুকু সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ হতে পেরেছি এবং সে সাথে অন্য আরো কতজন শিল্পী ও দর্শককে সংশ্লিষ্ট করতে পেরেছি সেটাই সব থেকে বড় কথা। হতে পারে সেই শিল্পকর্মের নান্দনিকতা বা রাজনৈতিকতার প্রকাশ সেভাবে ঘটতে পারে নি, কিন্তু সে একটা স্থান করে নিতে পারে, যেখানে তার শিল্পী হৃদয়টি বাতায়ন খুলে অন্তত খানিকটা নি:শ্বাস নিতে পারে।
যদিও এতটুকু পথ চলতে গিয়ে তার অর্জনের ব্যাপ্তিও কম নয়। ১৯৯৫ সালের দ্য অড্রে লর্ড রাইটিং অ্যাওয়ার্ড থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে টনি অ্যাওয়ারর্ড (২০০৩), আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড (২০০৯) ও মরিস ফর হেলিং পোয়েট্রি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি তার দু’টি কবিতা ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছে পাঠক মহলে। কবিতা দু’টির অনুবাদ এখানে পত্রস্থ করা হলো–
আমার তালে নাচবো আমি
তোমাদের যুদ্ধের দামামায় আমি নাচবো না
তোমাদের রণবাজনায় দেবো না আমার হাড়মজ্জা, আমার আত্মা
এসবে আমি নচবো না, বলছি তো!
আমি চিনি ওই ঢাকের আওয়াজ
প্রাণের বিন্দুমাত্র নেই তাতে
আমি জেনে নেবো শিগগির ওই চামড়ার খোলসের মাজেজা
যাকে তোমরা বাজনা করে বাজাও
অথচ একদিন সেই চামড়ার জীবন ছিলো
তারা সেটা শিকার করে চুরি করে এনে টেনে লম্বা করে
টাইট করে তবলার গায়ে পরিয়ে এখন সেটাকে ডঙ্কা বানিয়েছে
ওই তবলায় তোমরা যতোই আঘাত করো আমি নাচবো না
আমি নড়বো না, শরীর বাঁকিয়ে ঘুরবো না,
নাচের মুদ্রায় ঝুঁকবো না তোমাদের দিকে
তোমাদের কিছুতে তো আমি বাধ্য হবো না,
অথবা এভাবে তোমাদেরও বাধ্য করবো না আমি
তোমাদের জন্যে আমার মাথা খোয়াবো না
বিশেষ করে তোমাদের কোনো কারণে মরতে রাজি না আমি
বিলাপ করবো না তোমাদের পাপের মৃত্যুতে, আত্মহত্যা করলেও না
তোমাদের মুখী আর হবো না,
কিংবা নাচবো না তোমাদের বোমার পতনে
অন্য সবাই নাচলে নাচুক
হতে পারে সবাই ভুল করে চলেছে
জীবন সত্য, কোনো পরিপূরক কিংবা আনুষঙ্গিক কিছু নয়
তাই আমি ভুলি না– কোথাকার আমি
অচিরেই আমার নিজের বিশেষ বাদ্য আমি বানাবো, দেখো
আমার কয়েক বন্ধুকে জুড়ে নেবো, আমাদের নাচের গানও হবে সহসাই
হবে আমাদের বাদ্যের গুনগুন সুর
তখন তোমরা আর আমার সাথে বাজনা বাজিয়ে পারবে না
আমার নামও তোমাদের করজ দেবো না,
তোমাদের বাজনার জন্যে সুর তুলেও দেবো না আর
তোমাদের তালে তাল মেলাবো না আমি
আমি আমার তালে নাচবো,
হ্যাঁ, আমি নাচবো আর প্রতিরোধ করবো
নাচবো আর প্রতিবাদ প্রতিক্ষোভ চালিয়ে যাবো, আর নাচবো
আমার এই হৃদয়ের স্পন্দন মৃত্যুর থেকে অনেক বেশি কথা বলবে
আমার আত্মার থেকে বেশি আওয়াজ তোমাদের রণডঙ্কারও নেই
নীরবতার প্রশ্ন
জানতে ইচ্ছে করে– কী শুনেছে সে, যখন সে ক্রমাগত ছুটছে
জানতে ইচ্ছে করে– কী ভেবেছে সে, যখন আমেরিকার একটি বুলেট
উড়ে এলো বাতাস ফুঁড়ে তার প্রভু ইসরায়েলের হাত গলে
হত্যা করতে আরেকটি স্বাধীনতার সন্তান
অথচ পেছনে ফিরে তাকায় নি সে একবারও
কেনো, সে কি শোনে নি কখনো সেই প্রগাঢ় সঙ্গীত
আমাদের নারীদের খুব দু:খের গান
খুব সুন্দর মলিন নি:শেষ প্রায়
বহু বছরের সঞ্চিত কান্নার গমকে ভেসে আসা সুর–
শোনো, তারা সবাই মিলে গাইছে–
ইশহাদ ইয়া আলাম আলাইনা ওয়া আলা বাইরূত
ইশহাদ আলা হারবিল শারইয়্যাহ
(সাক্ষী থাকো হে পৃথিবী আমাদের ও বৈরুতের
সাক্ষী থাকো তুমি স্বাধীনতা যুদ্ধের)
সে কি শুনেছে– সেই ফেরেশতাদের কণ্ঠস্বর
যিশুর জন্ম সংবাদ বয়ে আনলো যারা
অথচ সেই মাটিতে, সেই একই ভূমিতে কেড়ে নেয় সে
ফিলিস্তিনি নামের যতো বেহেশতি ফেরেশতা
খুব অল্প, নাবালক বয়সেই তাদের সে খতম করে দেয়
দেখো, কী দ্রুত ছুটছে সে আর তার বাদামি পা ছুঁয়ে যাচ্ছে
আর ভালোবাসছে ভালোবাসার বাদামি মৃত্তিকা
সে কি শুনেছে সেই মায়েদের ঘুম পাড়ানি গান
যতো দিন বেঁচে আছে অনিদ্রিত চোখ নিয়ে সে দেখছে,
অস্বীকৃত স্বাধীনতার চোখে দেখছে সে অধীকৃত ফিলিস্তিন
নিজের চোখে দেখছে আমার জনগণের মৃত্যু
অনুভব করে নি কি হৃদয়ে, জীবনের সংগ্রামে টিকে থাকা সেই সৈনিক
যার বুটের নীচে আজ বেঁচে আছে ফিলিস্তিন
শোনো নারীরা আবার গাইছে–
সে দেখবে কী করে নি:স্বজনের যন্ত্রণা,
তাকে অন্ধ করে রেখেছে আমেরিকা।
না, মনে রেখো– আমেরিকা তাদের অন্ধ করে নি,
বরং সে দেখেছে সব, সব শুনেছে সে ছুটতে ছুটতে
না বুঝে ছুটতে হবে, ছুটে চলতে হবে,
ছোটার অভ্যেস চালিয়ে যেতে হবে মনে হয় কেবল আমাদেরই
আমরা ফিলিস্তিনিরা যারা ছুটে চলেছি সব সময়
কিন্তু কোথায় যাবো আমরা?
কখনো পেছনে ফিরে না তাকিয়ে কোথায় ছুটবো আমরা?
সাক্ষী থাকো হে পৃথিবী আমাদের এই ছুটন্ত ফিলিস্তিনিদের
দেখো, এখন তারা তাকে থামতে বলছে, কাছে ডাকছে
ডাকছে গণতন্ত্র আর সন্ত্রাসের নামে
পুরনো দিনের ভাষায় বলছে, সে যেনো আর না ছোটে
অথচ তখনও সে ক্রমাগত ছুটছে আর ছুড়ছে আমেরিকার বানানো বুলেট
সে কি সেই ডাক শুনতে পেয়েছে
যখন তার প্রভু ইসরায়েলের হাত গলে বাতাস ফুঁড়ে আসা বুলেট
বিঁধেছে ফিলিস্তিনি ফেরেশতার বুকে
এবার তারা প্রচার করছে– এটা নিছক এক দুর্ঘটনা
মৃত্যুর জন্য দায়ি সৈনিকটি ছিলো জন্মবধির
আমি চুপ করেই থাকবো, যদি আমাকে তোমরা বলো–
বধিরও কি সৈনিক হয়?
ফেরেশতার মৃত্যুও কি হতে পারে নিছক দুর্ঘটনা?
কবিতার অনুবাদ : মনযূরুল হক
০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনি যখন বলেছেন, তখন মনে হয় ভালোই হয়েছে.. নইলে আমি এখনও ঠিক কবিতাটা বুঝে উঠতে পারি না.. ধন্যবাদ ভাই..
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৩০
হাসান মাহবুব বলেছেন: একজন গুনী শিল্পীর সাথে পরিচিত হলাম। কবিতার অনুবাদ চমৎকার হয়েছে।