![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনি কি জানেন, একজন লেখক একটি লেখার স্বপ্ন নিয়ে দিনের পর দিন পেটে কিল মেরে শুয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, লেখকের বউরা এসব ছ্যাবলামি দুচোখে দেখতে পারে না।
লেখকদের ধান্দাল মনে করে মানুষ (বিশেষ করে প্রকাশক ও পত্রিকার জন্যে ফরমায়েশি লেখা প্রত্যাশীরা, কারণ আজ দেবো-কাল দেবো করে করে লেখক তাদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে)। অথচ তারা জানে না, একজন লেখকের সঙ্গে তার লেখা কী পরিমাণে ধান্দালি করে। কারণ, ভাষার ব্যাকরণ, কাহিনীর কলকব্জা, উপস্থাপনার কলাকৌশল- এইসব শেখা যায়, চর্চা করা যায়। কিন্তু লেখাটা শিখলে কিছুই হয় না। এটা আসতে হয়। সে আবার সব সময় আসে না। লেখাটা যদি না আসে, ভেতরে প্রেরণা তৈরি না হয়, তবে আপনি যতই কান্নাকাটি করেন, মারধোর বা বকাবকি করেন- কী লাভ! ইচ্ছাটা চাগিয়ে না উঠলে একটা জানা গল্পের দুটা লাইন, কবিতার একটা মাত্র ছত্র, অনুবাদের দুটি শব্দ, এমনকি নেট ঘেঁটে কপি-পেস্ট করার ধৈর্যও আপনার হবে না।
নির্দিষ্ট একটা লেখা কখনো মাসের পর মাস পেরিয়ে যায়, ধরা দেয় না। হয়তো এর ফাঁকে আরো অনেক লেখা তৈরি হয়ে যায়, কিন্তু ওই লেখাটা আর হয় না- ধরতে গেলেই ঘাসফরিঙের মতো উড়াল দেয়।
লিখনি কাজটা বড় কষ্টের। সাধারণ মানুষকে টেনশন পোহাতে হয় একমাত্র উপার্জন নিয়ে । কিন্তু এই টেনশনটাই লেখকের লেখার জন্যে সবচে’ বড় বাধা। কারণ লেখককে সংগ্রাম করতে হয় তার লেখা নিয়ে। একজন ন’মাসের প্রেগন্যান্ট নারীকে দুই কিলো দূরে নিয়মিত অফিস করতে হলে, তার কেমন যাতনা হবে ? একজন লেখককে লেখা প্রসবের জন্যে তেমন অসহনীয় যাতনা নিয়ে দিন কাটাতে হয়, আবার আঁতুরঘরে শুয়ে শুয়ে রোজগারের চিন্তা করতে হয়।
না, লেখক অর্থের কাঙাল না, ভালোবাসাও খয়রাত চায় না; তার শুধু দরকার নিরুপদ্রব জীবন। লেখক কাঙাল হতে পারে কেবল একটু স্বীকৃতির জন্যে। এ সময়েই লেখকসত্তাটা খানিক আপসকামী হয়ে ওঠে এবং তার ব্যক্তিসত্তার সঙ্গে দ্বৈরথে জড়িয়ে পড়ে।
পরিবার ও প্রতিবেশ ম্যানেজ করতে গিয়েই একজন লেখকের ওপর হতাশা নেমে আসে গাঢ় অন্ধকারের মতো। এখনকার সব লেখাতেই তাই হতাশার ছায়া থাকে। এবং এ কারণেই নোবেল পাওয়ার মতো লেখক তৈরি হয় না এ সমাজে। এখানেই রবি আর কাজীর ফারাক। এ যুগে ধনী হওয়া ছাড়া লেখকের টিকে থাকা মুশকিল। গরিব লেখক মরে যায় অকালে। মধ্যবিত্ত লেখক আধখানা সম্মাননা বগলে চেপে ধুঁকতে থাকে আজীবন।
কবি জসীমুদ্দীনকে নৌকায় চড়িয়ে নদীর বুক বরাবর নিয়ে বলা হলো, এখনই দুটি কবিতা লিখে দিন, নইলে নদীতে ফেলে দিয়ে নৌকা নিয়ে চলে যাবো। পেরেছিলেন কি না জানা নেই। তবে লেখকের থেকে লেখা পেতে চাইলে তাকে হৃদ্যতাপূর্ণ চাপ ও আন্তরিকতায় ভরপুর প্রেরণা দিন- এটা বেশ কাজে লাগে। নয়তো লেখকের মন খারাপ হলে দু-চার লাইন কবিতা বেরুলেও বেরুতে পারে, কিন্তু আপনার লেখাটা আর হবে না।
সত্যি বলতে কি, লিখতে কিন্তু তত ভালো লাগে না। লেখাটা একটা বোঝার মতো চেপে থাকে। সেটাকে ঝেড়ে নামাতে পারলে ফ্রেশ লাগে মাথাটা। লেখকের যদি ভালো লাগার মতো কিছু থেকে থাকে, সেটা পড়া। পড়া’তেই লেখক সবচে’ বেশি সুখ খুঁজে পান। আর নিজের প্রকাশিত লেখাটা পড়তে গিয়ে নিষিদ্ধ প্রণয়ের আনন্দ হয় তার।
সহানুভূতি ও সহমর্মিতা পেতে লেখকমাত্রই ঘৃণা করেন। একজন লেখকের মন সবচে’ স্বাধীনচেতা মন। আর যে যা-ই বলুক, লেখাটাই হলো তার বিশ্বাসের অক্ষরীয় আকার। লেখক আর কিছু চায় না, শুধু বাঁচতে চায়; মরতে ভয় পায়- যদিও অসহনীয় কষ্টে প্রায়ই সে মরণ কামনার কথা বলে থাকে।
তাই লেখককে বাঁচতে দিন, বেঁচে থাকার প্রেরণা দিন। জানেন তো, লেখক মরে যাওয়া মানেই পৃথিবীটা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া। সেদিনই প্রলয় নেমে আসে ধরায়। এ কারণেই মহাময় প্রভু কেয়ামতের আগে হরফ উঠিয়ে নেবেন, শূন্য হয়ে যাবে কোরআন। তারপর যবনিকা হয়ে যাবে বিশ্বের...
এসব আমি একটু আধটু বুঝি। মাঝেমধ্যে তাদের কষ্ট আমার মধ্যেও সংক্রামিত হয়। তাই কোনো লেখকের সঙ্গে দেখা হলেই, আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে আসতে চায়- আহা, লেখক বেচারা !
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১
মনযূরুল হক বলেছেন: ...সময় করে পড়েছেন বলে অশেষ ধন্যবাদ আপনাকেও...।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৫
কল্লোল পথিক বলেছেন: প্রামানিক ভাইয়ের সাথে সহমত ।দারুণ লিখেছেন অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২
মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে...
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২
রুদ্র জাহেদ বলেছেন:
পরিবার ও প্রতিবেশ ম্যানেজ করতে গিয়েই একজন লেখকের ওপর হতাশা নেমে
আসে গাঢ় অন্ধকারের মতো। এখনকার সব লেখাতেই তাই হতাশার ছায়া থাকে।
এবং এ কারণেই নোবেল পাওয়ার মতো লেখক তৈরি হয় না এ সমাজে। এখানেই রবি
আর কাজীর ফারাক। এ যুগে ধনী হওয়া ছাড়া লেখকের টিকে থাকা মুশকিল। গরিব
লেখক মরে যায় অকালে। মধ্যবিত্ত লেখক আধখানা সম্মাননা বগলে চেপে ধুঁকতে
থাকে আজীবন।
যথাযথ লিখেছেন
+++
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩
মনযূরুল হক বলেছেন: যথাযথ না লিখে উপায় আছে, ভাই...।
শুভেচ্ছা রইলো...।
৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন ।
শুভ কামনা রইল ।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৭
মনযূরুল হক বলেছেন: শুভ কামনা রইলো আপনার জন্যেও...। অনেক ধন্যবাদ ।
৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫১
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
যে কাজটা যার নিকট কঠিন লাগে সেটা তার জন্য বড় কষ্টের তো বটেই। কত লেখক আছে কলম চালালেই মুক্ত ঝড়ে। আপনি একটু আধটু বুঝেন বলছেন আমি দেখছি, আপনি লেখক বেচারাদের যথেষ্ট কাছের বন্ধু। আসেন কোলাকুলি করি, মনযূরুল।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৩
মনযূরুল হক বলেছেন: কত লেখক আছে কলম চালালেই মুক্ত ঝড়ে। সম্ভবত তাহারাই প্রকৃত লেখক ।
আপনি কি সেই প্রকৃত লেখকদের একজন ? তাহলে আসেন কোলাকুলি করি...।
সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন...।
৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০০
তুষার আহাসান বলেছেন: একেবারে মনের কথা বলে ফেলেছেন ভাইয়া,
আসেন কোলাকুলি করি।
++++
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৪
মনযূরুল হক বলেছেন: একেবারে মনের কথা ?
অনেক শুভকামনা রইলো..। ধন্যবাদ..।
৭| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫২
সুমন কর বলেছেন: পুরো লেখাটিই দারুণ লাগল। চমৎকার লিখেছেন।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০১
মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই..।
৮| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৮
পুলহ বলেছেন: জসীমউদ্দীনের ঘটনাটা কি সত্য নাকি ভাই?
"নির্দিষ্ট একটা লেখা কখনো মাসের পর মাস পেরিয়ে যায়, ধরা দেয় না। হয়তো এর ফাঁকে আরো অনেক লেখা তৈরি হয়ে যায়, কিন্তু ওই লেখাটা আর হয় না- ধরতে গেলেই ঘাসফরিঙের মতো উড়াল দেয়।"-- খুব ভালো অবজারভেশন।
"...তাই কোনো লেখকের সঙ্গে দেখা হলেই, আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে আসতে চায়- আহা, লেখক বেচারা !"- উলটো দিকটাও কিন্তু আছে ভাই! চমতকার একটা লেখা পড়ার পর নিজের অজান্তেই মনে সে লেখকের প্রতি এক আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। অচেনা, অজানা একজন মানুষের প্রতি- শুধু তার লেখা পড়েই- মুগ্ধতা তৈরি হওয়াটাও কিন্তু অনেক বড় ব্যাপার।
আর এ প্রাপ্তি জোটে শুধু লেখকসমাজের কপালেই!
আপনার লেখা খুব ভালো লেগেছে। শুভকামনা জানবেন
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৯
মনযূরুল হক বলেছেন: শ্রদ্ধাবোধ তো অবশ্যই তৈরি হয় এবং সেটাই সত্য কথা। আমি ইকটু ইয়ে করে বললাম আরকি ! বুঝছেন তো ?
ধন্যবাদ..। শুভকামনা রইলো..।
৯| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২১
সকাল রয় বলেছেন: সহি বলিয়াছেন
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২১
মনযূরুল হক বলেছেন: যাহা বলিবো সহি বলিবো, সহি বৈ মিহি বলিবো না...।
অনেক অনেক ধন্যবাদ...।
১০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
সত্যি বলতে কি, লিখতে কিন্তু তত ভালো লাগে না। লেখাটা একটা বোঝার মতো চেপে থাকে। সেটাকে ঝেড়ে নামাতে পারলে ফ্রেশ লাগে মাথাটা। লেখকের যদি ভালো লাগার মতো কিছু থেকে থাকে, সেটা পড়া। পড়া’তেই লেখক সবচে’ বেশি সুখ খুঁজে পান। আর নিজের প্রকাশিত লেখাটা পড়তে গিয়ে নিষিদ্ধ প্রণয়ের আনন্দ হয় তার। -একদম ঠিক!
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২২
মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ, বস...। ভালো থাকবেন...।
১১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: দারুণ ভাবেই তুলে ধরেছেন লেখক শব্দের পেছনের মানুষটাকে।
পোস্টে ভালো লাগা।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৭
মনযূরুল হক বলেছেন: এত ব্যাকুল করা ভালো লাগা দেখে আমার কেমেন যেনো একটু সন্দেহ হচ্ছে, আসলেই কি ইয়ে মানে কিছু হইছে নাকি ?
ধন্যবাদ রইলো ..।
১২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এই কিছু হইছে নাকি প্রশ্নেই বারবার ধরা খাই?
প্রশ্নকর্তা / প্রশ্নকর্ত্রীর জেশ্চার না দেখলে ক্যামনে বুঝবো যে কি বুঝাচ্ছে সে! তাই প্রতিবার নিশ্চুপ থাকি।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৫
মনযূরুল হক বলেছেন: জেশ্চার.... বেশ বলেছেন...।
তাইলে তো দেখছি আপনিও আমার মতো সন্দেহ-কাতর...।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৫
প্রামানিক বলেছেন: লিখনি কাজটা বড় কষ্টের। সাধারণ মানুষকে টেনশন পোহাতে হয় একমাত্র উপার্জন নিয়ে । কিন্তু এই টেনশনটাই লেখকের লেখার জন্যে সবচে’ বড় বাধা। কারণ লেখককে সংগ্রাম করতে হয় তার লেখা নিয়ে। একজন ন’মাসের প্রেগন্যান্ট নারীকে দুই কিলো দূরে নিয়মিত অফিস করতে হলে, তার কেমন যাতনা হবে ? একজন লেখককে লেখা প্রসবের জন্যে তেমন অসহনীয় যাতনা নিয়ে দিন কাটাতে হয়, আবার আঁতুরঘরে শুয়ে শুয়ে রোজগারের চিন্তা করতে হয়।
কবি জসীমুদ্দীনকে নৌকায় চড়িয়ে নদীর বুক বরাবর নিয়ে বলা হলো, এখনই দুটি কবিতা লিখে দিন, নইলে নদীতে ফেলে দিয়ে নৌকা নিয়ে চলে যাবো। পেরেছিলেন কি না জানা নেই। তবে লেখকের থেকে লেখা পেতে চাইলে তাকে হৃদ্যতাপূর্ণ চাপ ও আন্তরিকতায় ভরপুর প্রেরণা দিন- এটা বেশ কাজে লাগে। নয়তো লেখকের মন খারাপ হলে দু-চার লাইন কবিতা বেরুলেও বেরুতে পারে, কিন্তু আপনার লেখাটা আর হবে না।
একজন লেখকের বাস্তব কথাগুলোই এই পোষ্টে লিখেছেন। পড়ে সবগুলো কথাই উপলব্ধি করলাম। দারুণ লিখেছেন। লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।