![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্ম বড় নাকি মানবতা— এই প্রসঙ্গে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হলো, ধর্মের চাইতে মানবতাই বড় । এ ক্ষেত্রে সাধারণ যুক্তি হলো— আগে মানুষ এসেছে এবং তার পরে তাকে বিধান দেয়া হয়েছে; আগেই বিধান নাজিল করে রাখা হয় নি । আর গভীর কথাটা হলো— আমি যদি নিজেকে মুসলিম বলি, তাহলে হয়তো আমি পৃথিবীর ১৫০ কোটি মানুষকে সাথে পাবো । কিন্তু আমি যদি বলি আমি মানুষ, তাহলে বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষ বা পৃথিবীর তাবৎ জনগোষ্ঠীর কথাই আমার বলা হবে । আমার কাছে ১৫০ কোটির চেয়ে অবশ্যই ৭০০ কোটির স্বার্থ বড়— এখানে ধন্দের কী আছে ! এর মানে কি মানবতার জন্যে আমি ধর্ম ছেড়ে দেবো ? কিংবা মানবতা ও ধর্মের যখন দ্বন্দ্ব হবে, তখন কি আমি ধর্ম বাদ দিয়ে মানবতা গ্রহণ করবো ? কেউ আগ বাড়িয়ে হয়তো বলেও ফেলবেন— আপনি কি নাস্তিক ? ধর্মে বিশ্বাস করেন না ? তবে মূল প্রশ্নটা শুনতে কিন্তু যতো জটিল মনে হয়, আসলে ততোটা জটিল নয় ।
কেননা, মানবতাকে বড় রাখতে গিয়ে আমাকে কখনোই ধর্ম ত্যাগ করতে হবে না । কেননা, আমার মতে, সত্যিকারের কোনো ধর্মে এমন কোনো বিধান থাকতে পারে না, যা মানবতার খেলাফ— অমানবিক । এখানে যুক্তি হলো, সব ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস একটাই— যিনি তাদের বিধান দিয়েছেন, তিনিই মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন । সুতরাং মানবের জন্যে কোনটা ভালো, এটা তার চেয়ে ভালো আর কে জানে ? যেমন— কোরআনে বলা হয়েছে, “কোরআন তার পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ হয়েছে, যিনি সু্উচ্চ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ।” (২০ : ৪)
এখনই প্রশ্ন আসবে, তাহলে আমি ইসলামকে কেনো মানছি, অন্য ধর্মও তো গ্রহণ করতে পারতাম ? তারও আগের প্রশ্ন হলো, ধর্ম বড় নাকি মানবতা, কেনো এই প্রশ্ন উঠলো ? আগের প্রশ্নের উত্তর আগে বলি । ধর্ম বড় নাকি মানবতা, এই প্রশ্ন এ জন্যেই উঠেছে, যখন আমরা দেখবো কোথাও মানবতা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে এবং ধর্মের নামে সেটা চাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে, ‘মানবতা বড়’ এই কথাটা যদি তখন আমাদের মাথায় থাকে, তাহলে সহজে বুঝে নিতো পারবো যে, ধর্মের কোথাও বুঝতে ওদের ভুল হচ্ছে । যেমনটা ঘটেছিলো হিন্দুদের সতীদাহ প্রথার বেলায় । রাজা রামমোহন রায়কে ধন্যবাদ ।
একই সঙ্গে ধর্ম নাকি মানবতা এই আলোচনা এ জন্যেও দরকার, যেহেতু অনেকেই আজকাল ঐকতানে বলছেন ধর্মমুক্ত মানববাদের কথা । কারণ তাদের মতে, ধর্মের কারণেই মূলত দ্বন্দ্বটা তৈরি হয়, আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই মানবজাতির মধ্যে ধর্মযুদ্ধ হয়েছে সবচে’ বেশি এবং পৃথিবীতে সবচে’ বেশি নিহত হয়েছে মানুষ ধর্মযুদ্ধে । ধর্ম থাকলে দ্বন্দ্বটা তৈরি হবেই । কেননা, প্রত্যেকেই মনে করে তার ধর্মই বেস্ট ।
সুতরাং অন্য ধর্ম না মেনে আমি ইসলাম কেনো মানছি, সেই প্রশ্নের উত্তর এখন বের হয়ে এসেছে । অর্থাৎ ইসলাম আমি এ জন্যেই মানছি, কেননা, ইসলামই আমার কাছে বেস্ট ।
গত ২৭ আগস্ট মুভ ফাউন্ডেশনের কর্মশালায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাংবাদিক রাহাত মিনহাজও ‘দ্বন্দ্ব ও বাক-স্বাধীনতা’ বিষয়ক আলোচনায় দ্বন্দের মূলকারণ বোঝাতে গিয়ে একই যুক্তি তুলে ধরেছেন যে, দ্বন্দ্বটা এ জন্যে তৈরি হয়, কেননা, প্রত্যেকেই মনে করে তার ধর্মই বেস্ট । আমি প্রশ্ন করেছিলাম, স্যার, যদি আমি আমার ধর্মকে বেস্ট মনে না করি, তাহলে আমি সেটা কেনো গ্রহণ করবো ? তিনি কোনো জবাব দেন নি ।
আসল কথা হলো, প্রত্যেকেই তার ধর্মকে বেস্ট মনে করার কারণে মূলত দ্বন্দ্বটা তৈরি হয় না । বরং দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, আমার কাছে যেমন আমার ধর্মটা বেস্ট তেমনি তার কাছেও তো তার ধর্মটা বেস্ট— এই মনোভাব পোষণের অভাব থেকে । আমার মতো তার ধর্মও তার কাছে বেস্ট— এই মনোভাব যদি আমরা লালন করতে পারতাম, তাহলে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কসুর হতো না । দ্বন্দ্বটাও বাঁধতো না । ইসলাম এ জন্যেই দাওয়াতের বেলায় নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে যে, ‘উদউ ইলা সাবিলি রব্বিকা বিল হিকমাতি অল-মাওয়িজাতিল হাসানা’ (১৬ : ১২৫) অর্থাৎ অপরকে দাওয়াত দিতে হলে বুদ্ধিমত্তা ও সুন্দর কথার মাধ্যমে দাওয়াত দিতে হবে । আপনি যদি কাউকে বলেন, আপনার ধর্ম ভালো নয়— দ্বন্দ্ব তখনই বাঁধবে ।
আর ‘ধর্মযুদ্ধ’ বলতে আধুনিক পরিভাষায় যেটা বোঝানো হয়, অর্থাৎ এক ধর্মের বিরুদ্ধে আরেক ধর্মের যুদ্ধ— সেটা আদৌ ইসলাম সমর্থন করে না এবং কোনো ধর্মই সেটা সমর্থন করতে পারে না । কেউ হিন্দু-খ্রিষ্টান বা অন্য কোনো ধর্মের হলেই তাকে আঘাত করা যাবে, এই নীতি কি কোনো ধর্মের হতে পারে ? পারে না । কেননা, ধর্মের চেয়ে বড় পরিচয় মানুষ, ভিন্ন ধর্ম হলেও সেটা তো ধারণ করে আছে । কোরআন বলেছে— ‘লা ইকরাহা ফিদ দীন’ (২ : ২৫৬) অর্থাৎ ইসলামে কাউকে জোর করে আনা যাবে না । কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না । যে যে-ধর্মেরই থাকুক, তারা নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে ।
প্রশ্ন আসবে তাহলে জিহাদ কী ? জিহাদ কি ইসলামের ধর্মযুদ্ধের নাম নয় ? এর উত্তর সরাসরিই বলা যায়— না, জিহাদ কোনো ধর্মযুদ্ধ নয় । জিহাদ হলো অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, মানবতার প্রয়োজনে যুদ্ধ । সারা পৃথিবীর মানুষ, সে যে ধর্মেরই হোক না কেনো, ইসলাম তাকেও এই যুদ্ধের পথে আহ্বান করে, অবিচারের বিরুদ্ধে লড়তে বলে । আমরা দেখেছি— নবি মুহাম্মাদ স. মক্কা বিজয়ের আগে ও পরের কয়েকটি যুদ্ধে অমুসলিমদেরও সাথে নিয়েছিলেন । মক্কা বিজয়ের প্রেক্ষাপটের দিকে আমরা লক্ষ করি । ‘বনু খুজায়া’ নামের একটি অমুসলিম গোত্রের উপর রাতের আঁধারে ‘বনু বকর’ নামের আরেকটি অমুসলিম গোত্র আক্রমণ করে কয়েকজনকে হত্যা করেছে এবং বনু খুজায়া এসে মুসলিমদের কাছে নালিশ করে এর প্রতিবিধান চেয়েছে, যেহেতু তারা মুসলিমদের সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলো । মুহাম্মাদ স. মক্কার মুশরিক কোরাইশদের বলছেন এর প্রতিবিধান করতে, যেহেতু বনু বকর ছিলো কোরাইশদের সাথে চুক্তিবদ্ধ এবং কোরাইশ নিজেও এই আক্রমণে আঁতাত দিয়েছে বলে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া গেছে । কিন্তু কোরাইশ নেতৃবৃন্দ এর প্রতিবিধান করতে অস্বীকার করেছেন এবং মুসলিমগণ কোরাইশের এই অবিচারের বিরুদ্ধে, যেই অবিচার করা হয়েছিলো একদল অমুসলিমের ওপর, সেই অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এবং এই অভিযানের মাধ্যমেই মক্কা বিজয় সূচিত হয়েছে । ইতিহাস জানাশোনা সবাই জানেন, এই বিজয়ের সময় কোনো অমুসলিমের ওপর আক্রমণ করা হয় নি এবং বনু খুজায়াকে ন্যায়সঙ্গতভাবে ‘প্রতিবিধান’ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে । এখানে কিন্তু ধর্মের বিবেচনার চেয়ে মানবতাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ।
আমরা মনে করি, বিশ্বের সব ধর্মের ও বর্ণের মানুষ যদি শুধু অবিচারের বিরুদ্ধে একাট্টা থাকতো, তাহলে কখনো জিহাদ ও যুদ্ধ শব্দ দুটিকে আলাদা করে বোঝার প্রয়োজন হতো না । এবং আমরা এটাও জানি, কোনো ধর্মই অন্যায়কে সয়ে নিতে বলা হয় নি, বরং অন্যায়কে রুখে দিতে বলা হয়েছে । এমন কি কখনো হতে পারে যে, অন্যায়টা একেক ধর্মে একেক রূপ নিয়ে আছে ? অর্থাৎ ইসলামের চোখে যেটা অন্যায় এবং এমন অন্যায় যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে, কিন্তু অন্য ধর্মের চোখে সেটাই ন্যায়সঙ্গত ? ধর্মানুসারীদের অ্যাক্টিভিটি দেখে বিচার করলে চলবে না, বরং ধর্মে কী বলা আছে, সেটাকেই বিবেচনায় আনতে হবে । উদাহরণ স্বরূপ— গুজরাটে যে ব্যাপকহারে মুসলিম নিধন হলো, সেটা ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায় । কিন্তু সেটা কি হিন্দু ধর্মে অন্যায় নয় ? অবশ্যই অন্যায় । যদিও উগ্র হিন্দুরা সেটা ধর্মের কাজ বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছে । একইভাবে অর্টিজেনে যে ছেলেরা খ্রিষ্টান ও হিন্দুদের নৃশংসভাবে হত্যা করলো, সেটা অবশ্যই হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মের মতে অন্যায় । ইসলাম ধর্মমতে কি সেটা অন্যায় নয় ? অবশ্যই অন্যায় । যদিও উগ্র মুসলিমরা সেটা ধর্মের কাজ বলে আখ্যা দিয়েছে ।
বোঝা গেলো, অন্যায় সব ধর্মের চোখেই অন্যায় এবং মানবিকতা সব ধর্মের চোখেই সমান । ধর্মের ভেতরকার পার্থক্য কেবল দুটি বিষয়ে । একটি হলো তাদের ঈশ্বর বিশ্বাস; সেটা হতে পারে দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য । আরেকটি হলো, তাদের ইবাদত ও অর্চনার পার্থক্য । সামাজিক ও বৈশ্বিক ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে ধর্মগুলোর মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য আদতেই নেই । তাহলে আমরা এবার প্রশ্ন করি, যারা ধর্মমুক্ত মানববাদের কথা বলেন, তারা মানবতাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করতে চান ? আমরা দেখেছি, তারা নানা ধর্মের অনুসারীদের বিভিন্ন স্খলন নিয়ে সোচ্চার থাকেন; প্রকৃত অর্থে যেগুলো ধর্মের ত্রুটি নয় । এভাবে আসলে তারাই কি দ্বন্দ্বটা উস্কে দিচ্ছেন না ? অবশ্য আমার মনে হয়, এটা করে তারা অনুসারীদের একরকম উপকারও করছেন । কেননা, এর ফলে ধর্মবেত্তারা তাদের অনুসারীদের ভুল-চুক সম্পর্কে আরও বেশি ওয়াকিবহাল হতে পারছেন এবং ধর্মের প্রকৃত মর্ম জানতে তারা আরও বেশি গবেষণা করছেন । ফলে আমরা দেখি, পৃথিবীতে ধর্মমুক্ত মানুষের সংখ্যা যতো বাড়ছে, ধর্মের প্রতি অনুরাগীর সংখ্যা বাড়ছে তার চেয়ে বহু বহুগুণ বেশি ।
সবিশেষ— অর্টিজেনে হামলার পরে স্পষ্টতই সবাই একসুরে বলছেন, ধর্মীয় পড়াশুনার অভাবেই ছেলেগুলোকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হয়েছে । অর্থাৎ ধর্মের সঠিক জ্ঞান থাকলে এমন অমানবিক কাজ তাদের দিয়ে হতো না । বোঝা যায়, কেবল ধর্মের সঠিক বোধ ও অনুশাসনের মাধ্যমেই মানুষ সত্যিকারের মানবিক হতে পারে । সুতরাং ধর্মের চেয়ে মানবতা বড় হলেও মানবতা শেখার জন্যে ধর্মের চেয়ে বড় আর কিছু নেই ।
বি.দ্র. মুভ ফাউন্ডেশনের কর্মশালায় রাহাত মিনহাজ স্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছিলেন যে, সারা বিশ্বে ইসলামই কেনো বারবার আক্রান্ত হচ্ছে ? দুইভাবে ইসলাম আক্রান্ত হচ্ছে, ইরাক-আফগান-ফিলিস্তিনের মতো বহু মুসলিম দেশ ও মুসলিম জনগোষ্ঠী আক্রান্ত এবং বিভিন্ন মুসলিম গ্রুপ জিহাদের নামের বিচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে; যার ফলে আক্রান্ত নয় এমন মুসলিম দেশ এবং অমুসলিম দেশে বসবাসকারী শান্তিপ্রিয় মুসলিম জনসাধারণ অপমানিত হচ্ছেন । কিন্তু সময়ের অভাবে সেদিন এ নিয়ে আলোচনা করা যায় নি । আমার মনে হয়, এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা সময়ের দাবি এবং সেই আলোচনার মধ্য দিয়েই ‘ইসলাম কেনো বেস্ট’ সেটা উঠে আসতে পারে ।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪
মনযূরুল হক বলেছেন: আমি তো ভেবেছিলাম, বিষয়টা সহজ । এখন তো দেখি বিরাট ডিবেটের বিষয় দাঁড়িয়ে গেলো । ‘ধর্মের কারণে কোনো অমানবতা হচ্ছে না’ এটা আমার ভুল ধারণা কেনো সেটাই তো বুঝতে পারছি না । এখনও বুলছি ধর্মের কারণে অমানবতা হয় না, বরং ধর্ম-অনুসারীরা ধর্মটাকে ঠিকভাবে না বোঝার কারণেই অমানবতা হয় ।
স্রষ্টা প্রদত্ত ধর্ম আছে এবং প্রত্যেক ধর্ম-অনুসারী তার ধর্মকে স্রষ্টা প্রদত্ত বিশ্বাস করেই সেটা মানেন । এটা নিয়ে বিতর্কের কিছু আছে বলে মনে হয় না । এটা নিরেট বিশ্বাসের ব্যাপার । কেউ ধর্ম মানলে পৃথিবীর উপকার ছাড়া ক্ষতি যে কিছু নেই, সে ব্যাপারে আমার অন্তত কোনো সন্দেহ নেই । সুতরাং আমরা ভিন্ন প্রসঙ্গ ছেড়ে কোনটা আমাদের কাছে প্রধান হবে, ধর্ম নাকি মানবতা— সেটা ক্লিয়ার থাকলেই হয় । মানবতা যদি প্রধান ধরা হয়, তাহলে যদি কোনো ধর্মের মধ্যে আপনার মতে ‘অমানবতা’ থেকেও থাকে, তবু সে-ক্ষতি এড়িয়ে যাওয়া যাবে; যার উদাহরণ আমি দিয়েছি ।
২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০০
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: গভীর ভাবে চিন্তা করার সময় মানুষের কোথায়?
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
মনযূরুল হক বলেছেন: মানুষ ছাড়া আর কারও কাছে কি গভীরভাবে ভাবার সময় আছে ?
৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৩৩
রাসেল সরকার বলেছেন: লেখককে প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি, সত্যের সন্ধানে বিচরণ করার জন্য । যদিও ইচ্ছা ছিল বিস্তারিত লেখার কিন্তু সময়ের সল্পতার কারণে লিখতে পারছিনা । তাই, বিশ্ব মানবতার পরম বন্ধু "ইমাম হায়াত আলাইহি রাহমা" এর লিখনি থেকে কিছুটা তুলে ধরছি:
"ইসলাম ঈমানের মাধ্যমে মানুষকে সব বস্তুর উর্ধে সব সৃষ্টির উর্ধে একটা সত্ত্বা ও পরিচয়, জীবন ও জীবনের রূপরেখা দিয়েছে । সব মানুষের জন্য এটা মানবিক সত্ত্বা বা ইনসানিয়াত বা মানবতা আর ঈমান গ্রহণকারীর জন্য এটা তাওহীদ রেছালাত ভিত্তিক সত্ত্বা বা মুমিন সত্ত্বা, যার ভিত্তি ঈমানের পবিত্র কলেমা । পবিত্র কলেমা গ্রহণের মাধ্যমে এবং কলেমার বিপরীত বস্তুবাদী সত্ত্বার প্রত্যাখানের মাধ্যমে এটা ঘোষিত ও নির্ধারিত হয় । তাই মুমিনের আত্মসত্ত্বা ও পরিচয়, জীবন ও জীবনের রূপরেখা কোন বস্তুর ভিত্তিতে নয়, একমাত্র আল্লাহর নামে রেছালাতে ইলাহীকে অর্থাৎ রাছুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম কে কেন্দ্র করেই গঠিত হয় । মুমিন তাই কোন বস্তুর দাস নয়, বস্তুপূজারী নয়, বস্তু মানুষের জন্য, মানুষ বস্তুর জন্য নয়, বস্তু মানুষের কল্যাণের জন্য, ব্যবহারের জন্য, কিন্তু মানুষের উর্ধে নয় ।
ইমাম হায়াত" এর লিখনি প্রমাণ করে, ইসলামই হচ্ছে একমাত্র মনোনীত জীবন বিধান, যা সব ধর্মের, সব মানুষের যে যার বিশ্বাস-আদর্শ নিয়ে মুক্ত স্বাধীনভাবে চলবে, কেউ কারো উপর জোর পূর্বক কিছু চাপিয়ে দিবেনা ।
আরো প্রমাণ করে যে, মুমিন হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার নিকট, পৃথিবীর যে কোন ধর্মের বা মতের অনুসারীর জান-মাল-আমানত-ইজ্জত হেফাজত স্বরূপ । তাই নির্দিধায় বলা যায়, "মানবতা" হল পবিত্র ইমলামের একটি গুণ । যে কেউ মানবতায় আসল, সে যেন ইসলামের বারান্দায় চলে আসল । সালাম
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৬
মনযূরুল হক বলেছেন: ওকে । ধন্যবাদ, ভাই...
৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৩৪
কুহুক বলেছেন: আমি যেদিকে তাকাই হিন্দু মুলস্লিম না শুধু মানুষ দেখতে পাই । অসাধারণ লেখা
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭
মনযূরুল হক বলেছেন: আমি যেদিকে তাকাই হিন্দু মুসলিম না শুধু মানুষ দেখতে পাই । অসাধারণ কথা
৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৫৭
সাদা মনের মানুষ বলেছেন:
সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই.........আমি এই মন্ত্রে দিক্ষীত মানুষ
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৯
মনযূরুল হক বলেছেন: পৃথিবীতে মানুষের চেয়ে সত্য আর কী আছে ? মানুষের এই সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল আরও বহু সত্য প্রমাণ করা সম্ভব । মানুষ ছাড়া সত্য প্রতিষ্ঠার কোনো উপায় কি আছে ?
৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৫
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি আমার মূল প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেন।
মানবতা যদি প্রধান ধরা হয়, তাহলে যদি কোনো ধর্মের মধ্যে আপনার মতে ‘অমানবতা’ থেকেও থাকে, তবু সে-ক্ষতি এড়িয়ে যাওয়া যাবে; যার উদাহরণ আমি দিয়েছি ।
ধর্মের কারনে মানবতার যতবড় ক্ষতি হয় অন্য কিছুতে এত বড় ক্ষতি হয় না। বিস্তারিত ব্যখ্যা ও প্রমান আমি ভিন্ন পোষ্টে দিব।
ধর্মের মূল উপকার নৈতিকতা বলা হয়। বাস্তবে ততটা নয়। তার প্রমান নিম্নের লিঙ্কেএকটি লিঙ্কে আরো দু’টি লিঙ্ক আছে, তিনটিই দেখবেন)
নৈতিকতা কি ধর্মের উপর নির্ভরশীল (প্রমান ভিত্তিক আলোচনা)( পর্ব-৩)
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৯
মনযূরুল হক বলেছেন: আমি কিন্তু এড়িয়ে যাই নি, বরং আমার জবাব যা, তাতো আপনি পোস্ট পড়েই বুঝেছেন । আমি কমেন্টে আরও স্পষ্ট করেছি । অবশ্য আপনি যদি আমার কাছে বিশেষ কোনো জবাব আশা করেন, সেটা ভিন্ন কথা ।
আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, যারা ধর্ম মানে না, তাদের কি এমন কোনো রুলস কিংবা নিয়ম-নীতি আছে, যেগুলো মানলে মানুষ নীতিবান ও মানবিক হতে পারে ? ধর্মহীনরা সবাই কোন রুলস ফলো করে আমাকে বলবেন ? তারা কি সবাই ইচ্ছেমতো জীবন যাপন করে না ? আপনি যদি বলেন, রুলসের কী দরকার, বিবেকই তো সব । তাহলে তো আমার মনে হয়, পৃথিবীর কোনো কনস্টিটিউশনেরই দরকার নেই ।
আমি আপনার পোস্টটি সময় করে পড়বো ।... ভালো থাকবেন । ধন্যবাদ ।
৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪৭
রাসেল সরকার বলেছেন: বিবেক ও সত্য @ আপনি কোন ধর্মে বিশ্বাসী তা জানিনা, এতটুকু জানি যে, ন্যায়-অন্যায় কথা সব ধর্মেই আছে । ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুণ হল "মানবতা" । যার মাঝে মানবতা নাই, সে মানুষ নয়, মানুষরূপী হিংস্র জানোয়ার । মানুষ দাবীর প্রধান শর্ত হল, মানবতায় বিশ্বাসী হওয়া । ঈমান গ্রহণকারীর জন্যে তারও উর্ধে "ঈমানীয়াত" ।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১
মনযূরুল হক বলেছেন: মানুষ দাবীর প্রধান শর্ত হল, মানবতায় বিশ্বাসী হওয়া চমৎকার কথা বলেছেন । ধন্যবাদ ।
৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০১
বিবেক ও সত্য বলেছেন: লেখককে আমি আমার প্রশ্নটি বোঝাতে পারিনি। মনে করুন দু’জন লোক বিতর্ক করল। একজন বললো যে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে অমুক ধর্ম দিয়েছেন আর অপরজন বলল যে সৃষ্টিকর্তা কোন ধর্মই দেয়নি। এ বিতর্কে যদি প্রমানিত হয় যে আসলে স্রষ্টা কোন ধর্ম দেয়নি তাহলেও কি আপনি ধর্ম মানবেন?
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৪
মনযূরুল হক বলেছেন: আমিও বোধ হয় আপনাকে বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছি । ওকে, আপনি বলুন, এই প্রমাণটা কী করে হবে ? থার্ড পার্টি কে থাকবে এখানে, যার সালিশ দুজনে মেনে নেবে; সে কি ধর্ম পালন করে, নাকি করে না ? যদি করে, তাহলে তো ধার্মিকের পক্ষেই যাবে, নয়তো অন্যজনের পক্ষে । বস্তুগত কিংবা চাক্ষুস প্রমাণ তো ধার্মিকেরা বহু ক্ষেত্রেই আমলে নেবে না; যেহেতু তারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে ।
আমার মনে হয়, আপনি একটি অলীক প্রশ্নের অবতারণা করেছেন । কেননা, যারা ধর্ম বিশ্বাস করে, তারা ধর্মগ্রন্থের মাধ্যমেই স্রষ্টার পরিচয় গ্রহণ করে এবং সেই ধর্মগ্রন্থের মাধ্যমেই এই ভার্সেস পায় যে স্রষ্টাই তাদের এই ধর্ম দিয়েছেন । হ্যাঁ, মানিবক নানান দিক থেকেই কেবল ধর্মকে বিচার করার সুযোগ আছে । সেটার যখন কোনো ব্যত্যয় মানুষ দেখবে না, অন্তত প্রয়োগিক জীবনে, তখন তো ধর্ম তার জন্যে শুধু আশীর্বাদই বয়ে আনবে । কেননা, তখন তার ধর্ম বিশ্বাস আরও পরিপক্ক হবে এবং স্রষ্টার প্রতি ভক্তি তার আরও বাড়বে ।
সর্বশেষ কথা- ঈশ্বর বা স্রষ্টা কোনো ধর্ম দিয়েছে কি দেয় নি, এটা বহু আগেই প্রুভ হয়েছে বলেই আমরা জানি । যেমন কোরআনকে আমরা বহু কারণে বহু বিচারে ঐশ্বরিক গ্রন্থ হিসেবে পেয়েছি; যা কোনোভাবে মানব রচিত গ্রন্থ হওয়ার অবকাশ নেই । এই কোরআনের রুলসই তো ধর্ম । সুতরাং এখানে কনফ্লিক্টের প্রশ্নই আসে না । প্রশ্ন হতে পারে শুধু জানার জন্যে, বিষয়টি অস্বীকারের জন্যে নয় ।
আপনি বলবেন, যদি প্রমাণ করা যায় যে, কোরআন মানব রচিত গ্রন্থ, স্রষ্টার রচিত নয় ? আমি সেই প্রশ্নে যাবোই না । কেননা, সেটার সমাধান আমি বহু আগেই পেয়েছি । আমাকে নতুন করে সেটার প্রমাণ দিতে হবে না, কেননা, এর প্রমাণ বহুজন বহুভাবে দিয়েছেন, যেগুলো আমার আস্থা আরও বাড়িয়েছে । আপনি বলবেন, আপনি পান নি । আমি বলবো, আমি আপনাকে হেল্প করতে পারি টেক্সটা দিয়ে নয়তো আলোচনার মাধ্যমে বুঝিয়ে । বাকিটা তো আপনার কাছে । কেননা, এটা একটা নলেজেবল বিষয় এবং বোঝাটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল ।
আশা করি আমার বক্তব্য আমি স্পষ্ট করতে পেরেছি ।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৯
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনার লেখার ভাষা দেখে মনে হয় আপনি ভাল উদ্দেশ্য লিখেছেন। আপনার কাছে একটি প্রশ্ন- কোন মানবরচিত ধর্মকে স্রষ্টার নামে চালানো কি প্রতারনা নয় কি? স্রষ্টা কোন ধর্ম না দিলেও কি কোন মানবরচিত ধর্মকে মানতেই হবে?আপনি যদি বলেন যে স্রষ্টা প্রদত্ত ধর্ম আছে তাহলে সেটা আলাদা আলোচনার বিষয়। আগে উত্তর দিবেন যে যদি অনুসন্ধানে এটা প্রমানিত হয় যে স্রষ্টা প্রদত্ত কোন ধর্ম নেই তাহলে আপনি কি করবেন?
আর স্রষ্টা প্রদত্ত কোন ধর্ম আছে বলে প্রমানিত হলে সে ধর্ম মানতে হবে তা অস্বীকার কেউ করার কথা নয়।
আপনি প্রমান করতে চেয়েছেন যে ধর্মের কারনে কোন অমানবতা হচ্ছে না। এটা আপনার ভূল ধারনা। ধর্মের কারনেই সমাজে বেশি বিভেদ ও অমানবতা হয়। আপনি হয় আশা করবেন যে আমার এ কথার ভিত্তি কি আর আপনার লেখার যুক্তি খন্ডন কিভাবে হয়। আমি আপনার আশানুরুপ উত্তর দিতে গেলে বড় একটি পোষ্টে রুপ ধারন করবে। তাই এখানে আমি বিস্তারিত উত্তর দিচ্ছি না। পরবর্তীতে এ বিষয়ে লেখার ইচ্ছা রইল।
আপাতত আপনার কাছ থেকে আমার উত্থাপিত প্রশ্নের জবাব প্রত্যাশা করবো।
আপনি কি জানেন সত্যানুসন্ধান আপনার জীবনের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব?
আপনি যে অন্ধভাবে মুসলিম তার প্রমাণ
পৃথিবীতে মোট ধর্মের সংখ্যা-১(এক)/প্রামান্য ব্যখ্যা