![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নারীনীতি কিংবা হাইকোর্টের মূর্তি নিয়ে যারা হরহামেশাই চিৎকার-চেঁচামেচি করেন, তারা কি দেয়ালের ওপাশের দিকে কখনো চোখ বাড়িয়েছেন? কখনো বাংলাদেশের আইন-বিধি-সংবিধান-নীতিমালাগুলো লাইন বাই লাইন ঘেঁটে দেখেছেন? বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণে শিক্ষার্থী, যারা মাদরাসায় পড়েন এবং ইসলামি আইনে তাদের পারদর্শিতা জাহের করেন, তাদের বলছি—
বাংলাদেশের আইনগুলো তো মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আইনই বটে। এসব আইনেরই প্রয়োগ হয় এই দেশে প্রতিদিন। এই আইনেই চোরের শাস্তি হয়, খুনীর দণ্ড হয় এবং বিদ্রোহীর দেশান্তর হয়। প্রতিটি মানুষ এই আইন মেনেই এই দেশে বসবাস করে; এমনকি আপনিও। আপনার বাবাও যদি ভিকটিম হন, কিংবা আপনার ভূমিও যদি বেহাত হয়, তবে আপনিও এ-আইনের আশ্রয় নিতেই থানায় যান, আদালতের শরণাপন্ন হন।
কেননা, আপনি যে আইন মাদরাসায় পড়েন সে-আইন এ-দেশে চলে না, অচল। না, পুরোপুরি অচল না; কিন্তু এ-দেশের মুসলিম পারিবারিক আইনে ‘সিরাজি’ স্বীকৃত তা আপনি মাদরাসা পড়ুয়া হয়েও জানেন না। তবে এ-ক্ষেত্রেও ১৯৬১ সালের এডিশন নিয়ে বিতর্ক আছে। সুতরাং…
তাহলে সে-আইন আপনি কেনো পড়েন? কোনো সুদূর ভবিষ্যতে যদি ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং আপনাকে যদি তখন জাস্টিস তকি উসমানি হতে হয়— সেজন্যে? আচ্ছা, বাংলাদেশের সব আইন যে অনৈসলামিক কিংবা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক— সেটা কি হলফ করে বলা যায়?
মাহাথির মোহাম্মাদ ঢাকা ভার্সিটিতে এই বক্তব্য রেখেছিলেন— ক্ষমতা গ্রহণের পরে দেখেছি, আমার দেশে ইসলামি আইন চালু করা সম্ভব নয়। কেননা, বিভিন্ন গোত্র ও দলে বিভক্ত দেশের মানুষ তাতে ইসলামদ্রোহী হয়ে উঠতে পারে। তাই আমি এমন আইন চালুর পরিকল্পনা করেছি, যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।
এই বক্তব্য প্রায় প্রতিটি মুসলিম দেশের জন্যেই এখন প্রযোজ্য।
মূলকথা হলো— বাংলাদেশের আইন-বিধি-সংবিধান-নীতিমালাগুলোর প্রতিটি ধারা-উপধারা-অনুচ্ছেদ ইসলামের নিরিখে বিচার করা হয় নি আজও, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রায় অর্ধশতক হয়ে যাবার পরও। শুনেছি, পাকিস্তানে হয়েছে, মালয়েশিয়া এবং এমন আরও অনেক দেশেই কাজটি শুরুতেই সমাধা হয়েছে।
অথচ এ-দেশে কয়েক হাজার ‘ইফতা বিভাগ’ (যেখান থেকে ফতোয়া দেয়া হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পড়ানোও হয়) আছে এবং তাতে গড়ে অন্তত ২০ জনেরও অধিক ছাত্রও আছে; যাদের প্রতি বছর অন্তত ১৫০ তামরীন (আইন-অনুশীলন) করানো হয়। সে-হিসেবে বাংলাদেশের আইনগুলোর তামরীন করা সর্বোচ্চ ১০০ ছাত্রের ২ বছরের কাজ হতে পারে। তারা খুঁজে দেখবেন ইসলামি আইনের সাথে বাংলাদেশের আইনের কোথাও কোনো দ্বন্দ্ব আছে কি না, থাকলে কোথায় কোথায় দ্বন্দ্ব আছে এবং তার সমন্বয় কী করে হবে কিংবা হতে পারে।
তারপর, সেই তামরীনের ফলাফল যদি মাদরাসায় পড়ানো হয় এবং বিভিন্ন আইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেয়া হয়, তাহলে আলাদা কোনো কোর্স ছাড়াই এমন আইনবিদের দেখা মিলবে এ-দেশে যারা একই সঙ্গে ইসলামি আইন ও দেশীয় আইনে পারদর্শী।
একই সাথে জঙ্গিবাদের ধোঁয়াও হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে তখন। কেননা, জঙ্গিরা সবসময়ই এই যুক্তি দেখায় যে, এ-দেশের আইন ব্রিটিশ গোলামি আইন, বেদীন রচিত আইন; যা কোরআন বিরোধী। এর মাধ্যমে তারা বোঝাতে যায়, এ-দেশ দারুল হরব (কাফের শত্রুর দেশ), তাই কিতাল চালু করতে হবে বেদীন শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
ইসলামি টেক্সটের নিরিখে এ-দেশের যাবতীয় আইন-সংবিধান ও নীতিমালা বিচার-বিশ্লেষণ এবং সিজিল-মিছিল করা হলে এ-জাতীয় সকল অভিযোগের সত্যমিথ্যা নির্ণিত হয়ে যাবে এবং দেশের মানুষের সামনে পরিষ্কার থাকবে সকল জবাব। প্রয়োজনে কেবল সাধারণ মানুষের জন্যে ‘ইসলামি আইন বনাম বাংলাদেশি আইন : দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়’ নামে একটা সাদামাটা গ্রন্থও তৈয়ার করা যেতে পারে। যে-গ্রন্থটি দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ সাদরে স্বাগত জানাবে— নিশ্চিত করে বলা যায়।
মারকাযুদ দাওয়াহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ইসলামি আইন সহায়তা কেন্দ্র বা যে-কারো দ্বারা কাজটি হতে পারে। মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ কৃত ১ লক্ষ আলেমের ফতোয়ার কাজেরও বহু আগে উচিত ছিলো এ-কাজটি সামাধা করা।
যারা ইসলামি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেন তারা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। এবং নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করতে পারেন— বাংলাদেশের আইন কি ইসলামি নাকি ইসলামবিরোধী?
১৪ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২০
মনযূরুল হক বলেছেন: ধর্ম সম্পর্কে হয়তো জ্ঞানের অভাব থেকে বলেছেন, অথবা ধর্মকে যেভাবে মানুষ আজকাল ব্যবহার করছে, সে-কারণেই বোধ করি আপনার এই ধারণা সৃষ্টি হয়েছে....
২| ১৩ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৬
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন। যারা না বোঝার তারা পৃথিবীর শেষ দিনেও বুঝবে না! (বৌ পছন্দ না হলে তরকারি একটু খারাপই হয় সবসময় সেরকম আর কি) যাদের কাছে দেশটাকেই দেশ মনে হয় না তারা কিভাবে দেশের আইন সংবিধানে শ্রদ্ধা দেখাবে!!
এমন সুন্দর আলোচনা প্রিয়তে না রাখাটা অন্যায় মনে করছি।
শুভকামনা জানবেন।
১৪ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনার জন্যেও রইলো আন্তরিক শুভ কামনা...
৩| ১৩ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:১৯
সুমন কর বলেছেন: আপনার জ্ঞান অনেক। ভালো লিখেছেন।
+।
১৪ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১
মনযূরুল হক বলেছেন: নারে ভাই, যতো পড়ছি, দেখছি, ততোই দেখি আরও বেশি মূর্খ হচ্ছি....
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১
চাঁদগাজী বলেছেন:
আজকে, বিশ্বের যেকোন দেশে রচিত আইন, যেকোন ধর্মীয় বিধি থেকে হাজার গুণে মানবিক।