![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইয়াঙ্গুনের আলো ঝলমল বিশালকায় ইমারতগুলোর মধ্যে জীর্ণ দোতলা সমাধি অঙ্গনে ঢুকতেই বাঁ দিকে চোখে পড়বে তার কয়েকটি ছবি ও ফলক, ডান দিকে ছোট্ট অভ্যর্থনা কক্ষ। খোলা চত্বর পার হয়ে কিছুটা সামনে এগোতে বাঁ দিকের কক্ষে তিনটি কবর । পাশে স্ত্রী জিনাত মহলের একমাত্র আলোকচিত্র, আরবিতে লেখা নিকাহনামা, আরেকটি ফলকে তারই হাতের ক্যালিওগ্রাফি।
নিচের তলায় তার সমাধি, সবুজ গিলাফে ঢাকা, অনেক দিনের পুরোনো। দেয়ালের একটি ছবিতে তাকে হুক্কা হাতে শোয়া অবস্থায় দেখা যায়, জীবনের শেষ দিনের ছবি। আরেকটি ছবিতে সামরিক আদালতে বিচারের পর তাকে সেনা প্রহরায় নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য; তৃতীয়টিতে তিনি শিষ্যদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিচ্ছেন।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯৪১ সালে এই সমাধিতে ফুল দিয়েই ‘দিল্লি চলো’ প্রচারণা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ মিয়ানমার পার হয়ে পূর্ব ভারতের ইম্ফল পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিলো।
১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধী সমাধি পরিদর্শনকালে লিখেছিলেন— হিন্দুস্তানে আপনি দু’গজ মাটি পান নি সত্য।তবে আপনার আত্মত্যাগ থেকেই আমাদের স্বাধীনতার আওয়াজ উঠেছিল। দুর্ভাগ্য আপনার নয়, স্বাধীনতার বার্তার মধ্যে দিয়ে ভারতবর্ষের সুনাম ও গৌরবের সঙ্গে আপনার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে ।
সিপাহি বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে তার স্মৃতিতে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক নাম পরিবর্তন করে তার নামে রাখা হয় ।
উইলিয়াম ডালরিমপন তার লাস্ট মোগল বইয়ে লিখেছেন— মিরাট থেকে ৩০০ জনের একটি বিদ্রোহী দল এসে তার সঙ্গে দেখা করে তাকে এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে বললে তিনি রাজি হন। এরপর তিনি ওঠেন ভারতের কোটি কোটি মানুষের বিদ্রোহ ও ঐক্যের প্রতীক। ব্যারাকপুরে শুরু হওয়া ইংরেজবিরোধী বিদ্রোহ সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ে ।
১৮৫৮ সালের ২৭ জানুয়ারি দিল্লিতে তার বিচার শুরু হয় এবং শেষ হয় ৯ মার্চ। আদালত তাকে মিয়ানমারে নির্বাসনে পাঠানোর সুপারিশ করে।
ইয়াঙ্গুনের বিখ্যাত শোয়ে ডন প্যাগোডার পূর্ব পাশে ৬ জিওয়াকা সড়কের একটি বাড়িতে তিনি ও তার স্বজনদের রাখা হয়। তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র চারটি কক্ষ। সেখানে তাকে লেখার কলম ও কাগজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
১৮৬২ সালের ৭ নভেম্বর তিনি মারা গেলেও নতুন বিদ্রোহের আশঙ্কায় সে খবরটি তখনই জানানো হয়নি। দিল্লিতে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয় ১৫ দিন পর।
তিনি ছিলেন চিরবিষণ্ন কবি । আব্দুল হালিম খাঁ তার কবিতা অনুবাদ করেছেন—
জাফর, এই রহস্যের ভেদ কি
আসছে না আমার বুঝে,
যে আছে ভেতরে, সবাই মরছে
তাকে বাইরে খুঁজে খুঁজে।
আজ ২৪ অক্টোবর শেষ মোগল সম্রাট কবি বাহাদুর শাহ জাফরের জন্মদিন।
মিয়ানমারের এই দুর্দিনে কেমন আছেন তিনি । কেমন আছে তার কবিতারা । কেমন আছে তার সবুজ গিলাফ ।
তথ্যসূত্র ও ছবি :
১. প্রথম আলো
২. দৈনিক সংগ্রাম
৩. বিবিসি, হিন্দি
৪. দ্য হিন্দু
৫. উর্দুপয়েন্ট
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২৮
মনযূরুল হক বলেছেন: আমি তো আজও দেখি নি । দেখার ইচ্ছা ছিলো এবং উদযোগও করেছিলাম, কিন্তু তারপর তো রোহিঙ্গা নিয়া নতুন ইতিহাস হলো । কী আর করা? অন্যের চোখ দিয়ে দেখি...
আপনাকে ধন্যবাদ...
২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:৫৮
মলাসইলমুইনা বলেছেন: হ্যা, সম্রাট বাহাদুর শাহ -এর কবরের এপিটাফটা :
“ কিতনা হায় বদ নসিব “জাফর”
দাফন কে লিয়ে দো গজ জমিন ভি না মিলি কিউ -ই -ইয়ার মে ”
অর্থ:
“এতই হতভাগা জাফর, যে তার দাফনের প্রয়োজনে,
স্বজনের দেশে দু’গজ মাটি- তাও মিললনা।" (খুব সম্ভবত সত্যেন্দ্র নাথ দত্তের অনুবাদ)
খুবই হার্টরেনডিং | এটার কথাই রাজীব গান্ধী সমাধি পরিদর্শনকালে লিখেছিলেন | আপনার লেখাটা খুব ভালো লাগলো |
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩১
মনযূরুল হক বলেছেন: এই কবিতাটা বহুজনই জানেন, তাই উদ্ধৃত করলাম না । আপনি পাঠকদের অবশিষ্টাংশের জন্য সেই অভাবটুকুও পূরণ করলেন বলে অশেষ ধন্যবাদ ।
আচ্ছা, যদি কিছু মনে না করেন, ‘মলাসইলমুইনা’ শব্দটা আসলে কী? দুর্বোধ্য লাগছে..। একবার ব্যাখ্যা করবেন ?
৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:৫৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন নান্দনিক শিরোনামেই লুকিয়ে আছে সত্যাব্রত।
জাফর, এই রহস্যের ভেদ কি
আসছে না আমার বুঝে,
যে আছে ভেতরে, সবাই মরছে
তাকে বাইরে খুঁজে খুঁজে।
এই কাব্যের জাফর যেন আজ সারা ভারত বর্ষ!
বাঙালী সমাজেতা বটেই।
সবাই খুঁজে পাক আত্মসন্ধান। আলোয় ভরে উঠুক ভুবন।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৭
মনযূরুল হক বলেছেন: অসাধারন নান্দনিক শিরোনামেই লুকিয়ে আছে সত্যাব্রত। এটা কি কোনো কবিতার লাইন?
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...
৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:০৯
সুমন কর বলেছেন: জানা ছিল না। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৮
মনযূরুল হক বলেছেন: আমিও কি জানতাম? জেনেই মাত্র শেয়ার করলাম...
ধন্যবাদ জানবেন...
৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৫০
খাঁজা বাবা বলেছেন: যে আছে ভেতরে, সবাই মরছে
তাকে বাইরে খুঁজে খুঁজে
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯
মনযূরুল হক বলেছেন: হুমম, তাই তো দেখছি..।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...
৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:০১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ভাল লাগলো লেখা, ছবি ও ইতিহাস।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯
মনযূরুল হক বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে...। ধন্যবাদ
৭| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:০৩
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন:
মলাসইলমুইনা-এর সংগে সুর মিলিযে বলতে হয়--
“ কিতনা হায় বদ নসিব “জাফর”
দাফন কে লিয়ে দো গজ জমিন ভি না মিলি কিউ -ই -ইয়ার মে ”
অর্থ:
“এতই হতভাগা জাফর, যে তার দাফনের প্রয়োজনে,
স্বজনের দেশে দু’গজ মাটি- তাও মিললনা।" একই কথা রাজীব গান্ধী সমাধি পরিদর্শনকালে লিখেছিলেন | সুন্দর একটি লেখা।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪০
মনযূরুল হক বলেছেন: =====
৮| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:২১
নতুন নকিব বলেছেন:
অভিনন্দন সুন্দর পোস্টে।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪০
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনার জন্য রইলো শুভেচ্ছা...।
৯| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৮
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: খুব সুন্দর পোস্ট। ভালোলাগা রইল।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪১
মনযূরুল হক বলেছেন: শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য...
১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫
টারজান০০০০৭ বলেছেন: হ্যা ! বদনসীবই বটে ! রাজাকার তখনও ছিল, যাহাদের কারণে ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নৃশংস পরিণতি , লক্ষ , লক্ষ স্বাধীনতাকামীদের ফাঁসি, মুসলমানদের সর্বস্ব হারানো। আর রাজাকাররা পাইলো রাজাবাহাদুর, খানবাহাদুর, স্যার উপাধি ! অতিকায় হস্তীগুলো লোপ পাইয়া গেলো, জীবিত সিংহরা চলিয়া গেলো আত্মগোপনে, তেলাপোকারা বাঁচিয়া রহিল পরজীবী হইয়া !
তাহার লিখিত গজলগুলো হৃদয় খুঁড়িয়া বেদনা জাগিয়ে তোলে ! নিরীহ এক কবি মানুষ, স্বাধীনতার প্রতীক হইয়া নির্বংশ হইলো, সন্তানদের ফাঁসিও দেখিতে হইলো, বেজন্মা ইংরেজদের কারণে ! আর গোলামের বাচ্চা গোলামরা ইংরেজরে ব্লো জব দিয়া হইয়া গেলো উপমহাদেশের দণ্ড মূর্তের কর্তা !
মউত পর্যন্ত ইংরেজ তাহাকে ভয় পাইতো ছবির বাঘ সত্যিকারের গর্জন ছাড়ে কিনা ! ইংরেজ তাহাকে গৃহপালিত সম্রাট বানাইয়াছিলো ! তাই বিলাস ব্যাসনে ভরপুর ছিলেন ! চাকর নওকর কম ছিল না ! ভাবিয়াছিল কবি মানুষ, কবিতা আর বিলাস ব্যাসনে ব্যাস্ত থাকিবে ! ঘুমন্ত বাঘ ঠিকই জাগিয়া উঠিয়াছিল ! তিনি যোদ্ধা ছিলেন না ! প্রতীকই ছিলেন ! প্রতীক হইয়াই রহিলেন !
আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসিব করুন ! আমিন !
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৫
মনযূরুল হক বলেছেন: সেই ব্রিটিশ ইংরেজদের তোষণ এখনও কি আমাদের মজ্জাগত নয় ? রোহিঙ্গাদের এই দুর্দিনের পেছনেই কি মূলহোতা তারাই ছিলো না...। বাহাদুর শাহ নিরীহ হয়েই কিংবা প্রতীক হয়েও জেগে উঠেছিলেন...।
১১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭
ঢাকার লোক বলেছেন: স্যালুট সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর! সেকালে ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্বে রাজি হওয়া কম কথা ছিলনা ! আজকাল দেশীয় শাসকদের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দূরে থাক অবস্থান নেওয়ার লোকই বিরল ! টারজানের ভাষায় "ব্লো জব দিয়া --- দণ্ড মূর্তের কর্তা " হওয়াতেই আগ্রহ বেশি !
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৬
মনযূরুল হক বলেছেন: আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসিব করুন ! আমিন !
ধন্যবাদ...
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:২৩
জুন বলেছেন: আমার দেখা সবুজ গিলাফ । ভালোলাগলো আপনার উদবীগ্নতা ।