![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নূর হোসেনের তো ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে হাইকোর্ট গত ২১ আগস্ট । তার নামে কি ১০ নভেম্বর দিবস হতে পারে ? সে নারায়ণগঞ্জের সাতটি খুনকর্ম সম্পাদন করেছে তা-ও ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল । তাহলে আজ কেনো নূর হোসেন দিবস ?
হেফাজত নেতা একজন আছেন নূর হোসেন (কাসেমী) । যিনি র্যাবের কাছে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার জন্য নিরাপত্তা সহায়তা চেয়েছিলেন । কিন্তু তারপরের ইতিহাস তো আপনার জানেন । তার জন্ম তারিখ ১০ নভেম্বর সে-তথ্যও কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করে নি ।
বুদ্ধিজীবি সিরাজুদ্দিন হোসেনর (১৯২৯-১৯৭১) তিন সন্তানের নামের শেষেই নূর আছে । তাতে তাদের যে কাউকেই নূর হোসেন বলা যায় । কিন্তু তাদের নিয়ে দিবস হবার তো কিছু নেই । আশ্চর্যের বিষয় হলো, সিরাজুদ্দিন শহীদ হয়েছেন একাত্তরের ১০ নভেম্বর । সে হিসেবে ১০ নভেম্বর শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন দিবস হতে পারতো ।
আরও একজন নূর হোসেনকে আমি চিনি । চিনি আমাদের নিকটাত্মীয় এবং তার নাবালক সন্তান হঠাৎ করে মারা যাওয়ায় তিনি শোকে বেসামাল হয়ে পড়েন । সে ঘটনাও ১০ নভেম্বর নয় এবং এতো নিম্নমানের মানুষের শোকগল্প পত্রিকার নিউজ হওয়ারও কথা নয় ।
এমন হাজারও নূর হোসেন বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রাণবান । তাহলে কোন নূর হোসনের দিবস আজ? কেনো ?
এই প্রশ্ন বোঝার আগে মনে রাখতে হবে দিবস হওয়ার জন্য পত্রিকার নিউজ হওয়া খুবই জরুরি । কেননা, আমাদের দেশীয় পত্রিকাগুলো সত্যসংবাদ প্রকাশ করতে পারে না সরকারি ‘চাপে’ । তাই পাঠক ধরে রাখতে তাদের বিভিন্ন আয়োজনের প্রয়োজন হয় এবং দিবসকেন্দ্রিক আয়োজন এ-অঞ্চলে জনপ্রিয় ।
সে-হিসেবেই কি নূর হোসেন দিবসের আমাদনি ? নয়তো ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর যেই নূর হোসেন গণতন্ত্র মুক্তির স্লোগান বুকে সেঁটে শহীদ হয়েছিলো, তার নামে কেনো একটা দিবস হবে ? সে তো বড় কোনো ‘নিউজ-নেতা’ ছিলো না । এবং তাকে হত্যার পরও সেই ‘স্বৈরাচার’ এরশাদ অদ্যবধি জীবিত— ফাঁসি হয় নি । বরং এরশাদকে মামলা-মোকদ্দমার থেকে মুক্ত রেখে বর্তমান গণতন্ত্রের মানসকন্যা গণতন্ত্র সমুন্নত রেখেছেন ।
কেননা, নূর হোসেন ও এরশাদ দু’জনেই গণতেন্ত্রর জন্যে জরুরি । নূর হোসেনর মাধ্যমে গণতন্ত্র না আসলে কী করে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে এরশাদের পার্টি বিরোধীদল এবং এরশাদকে গণতন্ত্রের মানসকন্যার বিশেষদূত বানানো সম্ভব হবে ? বিরোধীদল না থাকলে কী করে সংবিধান রক্ষা পাবে ? হোক সে গৃহপালিত ।— এটাই নূর হোসেনের আদর্শ ।
মূলত নূর হোসেন দিবস হওয়া উচিত, ২৮ অক্টোবর—২০০৬ সালের যেদিন সত্যিকার অর্থে লগি-বৈঠার আলোড়নের মধ্য দিয়ে দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছে । ফখরু-মঈনরা ক্ষমতায় এসেছে । তারপর সমঝোতার ইলেকশনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জয় হয়েছে । তাই এখন প্রায় একযুগ ধরে (সম্ভবত চিরতরে) ভোটের ঝুট-ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়েছে দেশের সমস্ত নাগিরক ।
এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের হত্যাযজ্ঞ এবং ৫ মে’র নিধনযজ্ঞের মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও পাকাপোক্ত হয়েছে এবং ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে গণতন্ত্র পেয়েছে সাংবিধানিক স্বীকৃতি । নূর হোসেন দিবসের প্রতিষ্ঠাতা মিডিয়ার ভাষায়—সংবিধান রক্ষার নির্বাচন । আর সংবিধান রক্ষাই হলো গণতন্ত্র রক্ষা, ভোট-নোট কিছু নয় । ফলে এখন আর কাউকে কষ্ট করে মিছিলেও নামতে হয় না ।
যেহেতু নূর হোসেনের মূল ভাবাদর্শ ফলিত হয়েছে ২৮ অক্টোবর এবং গণতন্ত্রের সত্যিকারের মুক্তি সূচিত হয়েছে সেদিন থেকে । তাই কেবল ২৮ অক্টোবরকেই নূর হোসেন দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক ।
নইলে হাজারও নূর হোসেন এবং ‘৮৭-এর শহীদ নূর হোসেনের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য থাকে না ।
পুনশ্চ : শামসুর রাহমান ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’ কবিতায় লিখেছেন—
কাল রাত ঢাকা ছিল প্রেতের নগরী,
সবাই ফিরেছে ঘরে সাত তাড়াতাড়ি। চতুর্দিকে
নিস্তব্ধতা ওঁৎ পেতে থাকে,
ছায়ার ভেতরে ছায়া, আতঙ্ক একটি
কৃষ্ণাঙ্গ চাদরে মুড়ে দিয়েছে শহরটিকে আপাদমস্তক।
মাঝে মাঝে কুকুরের ডাক নৈঃশব্দ্যকে
আরো বেশি তীব্র করে তোলে
প্রহরে প্রহরে, নূর হোসেনের চোখে
কবি তো জীবিত থাকতেই দেখেছেন, কেবল সেই ৮৭-এর ১০ নভেম্বর নয়, বরং এখন প্রতিটি রাত ঢাকা ‘প্রেতের নগরী’ এবং প্রতিটি প্রহরেই হাজারও ‘নূর হোসেনের চোখে’ অন্ধকার থাকে । তাদের সবার কব্জিতে দপদপ করে ভবিষ্যৎ...
১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩৮
মনযূরুল হক বলেছেন: “তেনার ত্যাগের কারণে” শব্দগুচ্ছ ভালো লেগেছে...
২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৭
আবু তালেব শেখ বলেছেন: সব সম্ভাবনার বাংলাদেশ
এখানে সবই সম্ভব।
ক্ষমতায় এখানে মুখ্য
গনতন্ত্রের নামে এখন দেশ চলছে।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৮
মনযূরুল হক বলেছেন: নামেই গণতন্ত্র.। কামে কিছু নেই...
৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার কিছু বলার নাই !!!
১১ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
মনযূরুল হক বলেছেন: আমারও না...
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: জাতি নূর হোসেনের কাছে ঋনী। ২৮শে অক্টোবর, ৫ই মে, ৫ই জানুয়ারী সবই তেনার ত্যাগের কারণে আই মিন গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠা। ভালো লিখেছেন...