![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক.
জনৈক প্রগতিশীল লেখককে একটা সিরাত বিষয়ক প্রবন্ধ লিখতে অনুরোধ করলে তিনি বললেন— সিরাত নিয়ে তো আমার কোনো ধারণাই নাই। আমি কী লিখবো !
বললাম— অবশ্যই ধারণা আছে । আমাদের নবী মুহাম্মদ স.-এর ওপর কমবেশি ধারণা তো অবশ্যই আছে । আপনি তাকে নিয়ে যা ভাবেন, তাকে যে ধরনের মানুষ মনে করেন, সেটাই লিখবেন । আপনার পড়াশুনা ও জানাশোনা থেকে লিখলেই হবে । তার জীবন কাহিনীর তো দরকার নেই । তার অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে লিখুন ।
দীর্ঘসময় অনুরোধ-উপরোধ শেষে তিনি বললেন— এটা নিয়ে লেখার জন্যে যে পড়াশুনা করতে হবে তা আমি দিতে পারবো না ভাই। আমার উপন্যাসটাই আমি শেষ করতে পারছি না । পরে অন্যকোনো বিষয় নিয়ে অন্যকোনোদিন বলবেন ।
বললাম— একটা খসড়ার মতো করে হলেও দেন । আপনার লেখার প্রতি আমার খুব আগ্রহ ।
তিনি বললেন— যেনতেনভাবে দিয়ে দু’তরফেরই অসন্তুষ্টি থাকবে।
বলতে দ্বিধা নেই, তার সততায় আমি মুগ্ধ হয়েছি । আমাদের মধ্যে সিরাত নিয়ে পরিস্কার ধারণা ক’জনের আছে? সেটা স্বীকারই করেন ক’জন? আর যারা সিরাত সম্পর্কে দু’চার কলম পত্রিকায় লেখেন, তারাইবা কতটা পড়াশুনা করে লেখেন?
দুই.
আজকাল ইন্টারনেটে বেশিরভাগ সময় সিরাত রচনা অনুসন্ধানে থাকা হয় । প্রায় বছরধরে এই প্রক্রিয়া চলছে । বাংলায় ইন্টারনেটে সংরক্ষিত সুবিশাল সিরাত রচনা ভাণ্ডার থেকে এ-পর্যন্ত মাত্র ২৩৯টা আর্টিকেল উল্লেখযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করা গেছে । এবং সেখান থেকে আমার সিরাত প্রবন্ধ সংকলনের জন্য রাখা গেছে মাত্র ৬ টা ।
অবাক হয়ে লক্ষ করছি, নামজাদা ইসলামিক ওয়েব পোর্টালগুলোও কীভাবে ভালোমানের সিরাত প্রবন্ধের অভাবে খা খা করছে ।
যে সংকলনটির কথা বলছি, তার মোদ্দাকথা হলো, ৫ টি ক্যাটাগরিতে ২০টি করে মোট ১০০টি সিরাত প্রবন্ধ সংকলন হবে । তার মধ্যে প্রথম ক্যটাগরিতে থাকবে মনীষীদের রচনা । দ্বিতীয় ক্যাটাগরি হলো, অমুসলিম পণ্ডিতদের । তৃতীয়তে বাংলা সহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরা । চুতর্থ স্থানে থাকবেন সমকালীন আলেমগণ । পঞ্চম ক্যাটাগরি তরুণদের।
তিন.
প্রথমে থাকবে ইবনে ইসহাক থেকে নিয়ে আবুল হাসান আলী নদভি পর্যন্ত বিখ্যাত সিরাত রচয়িতাদের প্রবন্ধ । সমস্যা হয়েছে, আল্লামা ইকবাল বা আমাদের আব্দুর রহীম ইসলামাবাদীকে কি এই মনীষীদের কাতারে রাখা যায়? নইলে তাদের কোথায় রাখবো?
অমুসলিম সিরিজে থাকবে থমাস কার্লাইল থেকে অতুলকৃষ্ণ মিত্র বা গিরিশচন্দ্রের প্রবন্ধ। তবে রেভারেন্ড জেমস লং-এর মতো কয়েকজন আছেন, যারা ভিন্নধর্মী ছিলেন বটে, তবে পরে মুসলমান হয়েছেন । তাদের কি আর অমুসলিমদের কাতারে রাখা যায়? নাকি এ-জাতীয় ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন ক্যাটাগরি করবো?
বাংলা সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবদের তালিকায় কবি নজরুল থেকে বিচারপতি হাবীবুর রহমান পর্যন্ত থাকলেও রকিব হাসান বা নাসির হেলালকে এখানে রাখা যায় কি না ? তরুণদের নিয়ে একটা ক্যাটাগরি আছে, সেখানেও কি তারা মানানসই হবেন?
প্রতিটি ক্যাটাগরিতেই কি দেশি-বিদেশি দুটি বিভাগ রাখলে ভালো হয়?
চার.
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী সাহিত্যকরা হুজুর না হয়েও এমনকি বামপন্থী হয়েও নবীজিকে নিয়ে লিখেছেন । তাদের সেসব রচনাও আমাদের হাতের নাগালেই আছে । কিন্তু শামসুল হক ফরিদপুরী, হাফেজ্জী হুজুর, আল্লামা আজিজুল হক বা মুফতি আমিনী প্রমুখের মতো শীর্ষস্থানীয় আলেমদের রচনা আমাদের হাতে নেই । বহু খোঁজ করেও নিশ্চিত হতে পারি নি, তারা সিরাত নিয়ে কখনো প্রবন্ধ জাতীয় কিছু লিখেছেন কি না । কে জানে, হতে পারে রচনার চেয়ে আমলকেই তারা অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন ।
আর তরুণদের কথা তো বলাই বাহুল্য । বছর খানেক ধরে অন্তত ২ হাজার মানুষকে ইনবক্স করেছি । অনেকেই সাড়া দিয়ে লেখাটা পাঠিয়েছেনও । কিন্তু দুঃখের বিষয়, একটা মানসম্মত প্রবন্ধও কারও থেকে পাই নি । আমরা কি ‘ভালো রচনা’র মান নির্ণয়ে ব্যর্থ হলাম? অবশ্য তারা অনেকেই লিখবেন বলে আশা দিয়ে রেখেছেন ।
অথচ পশ্চিমা বিশ্বের প্রচুর তরুণদের সিরাত সম্পর্কিত দুর্দান্ত রচনা আছে । সেগুলো অনুবাদ করলেও বিরাট কাজ হতো ।
পাঁচ.
সবচে’ বড় অসুবিধা হলো, ভিন্নমতের লেখকদের প্রবন্ধ রাখা নিয়ে । দু’জন শিয়া নেতার রচনা আছে অসাধারণ ।প্রকাশক বললেন, রাখা যায় অমুসিলমদের ক্যাটাগরিতে । আপনার কী মনে হয়? তা ছাড়া আবুল আলা মওদুদির অসামান্য রচনা রয়েছে সিরাতে সরওয়ারে আলম । তো যেখানে অমুসলিমদের রচনাকে এতো যত্ন করে রাখছি, অনুবাদ করছি, সেখানে তাকে বা তার মতোদের বাদ দিই কী করে? গোলাম আযম কিংবা মতিউর রহমান নিজামীর স্ত্রী শামসুননাহার নিজামীরও সুন্দর রচনা আছে ।
সিরাত সম্পর্কে বেশি কাজ করেছে সম্ভবত জামায়াত-শিবির ঘরানার ছেলেরা। তাদেরটা কী করি? আছে ‘নাউ দে কলমি ইনফিডেল’ নামে এক ইহুদি নারীর রচনা । গ্রন্থের কোথাও কোথাও তিনি নবীজির ইহুদিনিধনকে হলোকাস্ট বললেও বেশিরভাগ স্থানে তার প্রশংসা করেছেন । তার একটা প্রবন্ধ কি রাখা যায়?
ছয়.
একবার মনে হলো, নবীজিকে নিয়ে রচিত বিখ্যাত কবিদের কবিতাও নিয়ে আসি । কাব ইবনে জুহাইরকে আনা যেতো । কবি নজরুলও তো ‘মরুভাস্কর’ লিখেছেন । লিখেছেন গালিব, হাফিজ, সাদিরা । দারবিশ-জলন্ধরিরা । কিন্তু সেটা করতে গেলে আরও বিশাল আয়োজন দরকার । অথচ আমাদের টার্গেট অনূর্ধ্ব ৫ শত পৃষ্ঠা ।
যদিও কবিতা নিয়েও উপর্যুক্ত ক্যাটাগরি অনুসারে পৃথকভাবে সুবিশাল গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব । একবার এটা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা করার ইভেন্টেও শরিক হয়েছিলাম । পরে সে-কাজটা আর এগোয় নি । আমার মনে হয়, চাইলে অন্য কেউ কাজটায় হাত দিতে পারেন । বড়দের কবিতা সংগ্রহের তালিকায় রেখে নতুনদের কবিতাও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ করা যায় ।
সাত.
অবশেষে পাঠক, আপনার কাছেও একটা সিরাত প্রবন্ধ কামনা করছি (যদিও কারও থেকে কিছু পাবো বলে মনে হয় না) । হোক সেটা অনুবাদ । মানোত্তীর্ণ প্রতিটি রচনার জন্য থাকবে যথাযোগ্য সম্মানী । চাইলে আপনার জীবনের সেরা রচনাটি সিরাত বিষয়ক হতে পারে । বিষয়টা একটু আনকমন হলেই ভালো । একটা রচনা পেলাম, ‘মহানবীর আবির্ভাবকালে বাংলাদেশের অবস্থা’ । কী আশ্চর্য ! বিষয় ভাবনাটাই ভিন্ন । এ-ও বলছি যে, আপনার রচনাটি অন্যত্র প্রকাশিত হলেও সমস্যা নেই ।
অথবা চাইলে আপনি কোনো ভালো প্রবন্ধের সন্ধান দিতে পারেন । সম্মানী থেকে মাহরুম হবেন না । ভালো কাজে আপনার সহযোগিতা অবশ্যই পুণ্য বয়ে আনবে এবং একটি ভালো কাজ পরবর্তী অনেক ভালো কাজের সূচনায় ভূমিকা রাখে ।
আরেকটি কথা হলো সিরাত সংক্রান্ত নারীদের রচনা এতোটাই কম যে, মনে হয়, নারীরা সিরাত লিখতেই জানেন না । আপনাদের সংগ্রহে নারী-লিখিত ভালো কোনো রচনা থাকলে জানাবেন ।
২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৮
মনযূরুল হক বলেছেন: আয়োজক আপাতত অধম নিজেই..। যদিও প্রথম পর্যায়ে প্রফেসর’স প্রকাশনী ও মুহাম্মাদ স. রিসার্চ সেন্টার অর্থায়ন ও প্রকাশনায় সহযোগী হিসেবে থাকছে..।
২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৩
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: বৃহৎ কলেবরের এই উদ্যোগকে মুবারকবাদ জানাই।
২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০০
মনযূরুল হক বলেছেন: সম্ভব হলে আপনাদের সহযোগিতাও চাচ্ছি...। হোক সেটা রচনা, অনুবাদ বা বড় লেখকদের রচনা সংগ্রহে...
৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩
টারজান০০০০৭ বলেছেন: সংকলন রেফারেন্সের মানসম্মত হইতে হইলে বিতর্কিত, অসত্য প্রবন্ধ, কবিতা অন্তর্ভুক্ত না করাই শ্রেয়। প্রতিটি লেখা অবশ্যই ওলামায়ে হকদের দ্বারা পরীক্ষিত ও স্বীকৃত হইতে হইবে। বর্ণনার সূত্র অবশ্যই উল্লেখিত থাকিতে হইবে। বিধর্মী , শিয়া , সাধারণ শিক্ষিতদের লিখনি অন্তর্ভুক্ত করিতে হইলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। তাহাদের বর্ননা সত্যের বিপরীত বা ভুল হইলে বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হইলে টিকা সহকারে দেওয়া উচিত। যেমনটি দিয়াছেন মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দা.বা. গুরুদত্ত শিং এর লেখা 'তোমাকে ভালোবাসি হে নবী ' এর অনুবাদে।
ম্যাংগো পিপল হিসেবে দোজাহানের সর্দার সাল্লাল্লাহুআলাইহিসসালামের সীরাত লেখার সাহস হয় না। সীরাতের নিভরযোগ্য কিতাবের সংখ্যাও খুব বেশি পড়া নাই। ভাল লাগিয়াছে আল্লামা ইদ্রিস কান্ধলভী র. লিখিত 'সীরাতে মুস্তফা স. '
উদ্যোগ প্রশংসনীয় হইলেও বিপদের মাত্রাও অনেক বড়। দোয়া করি কবুলিয়াতের সাথে সফল হোন।
২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০১
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনার প্রতিটি পরামর্শই আমলে নেওয়া হইবে, ইনশাআল্লাহ...
সহযোগিতা কাম্য...
৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৫
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এই কাজের দায়িত্ব নেবার মত যোগ্য ব্যক্তি তো আপনিই। শুরু করুন, তারপর শেষ হয়ে যাবে। অভিজ্ঞদের দিয়ে প্রুফ রীড করাবেন।
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২৮
মনযূরুল হক বলেছেন: আমি যোগ্য, এতটা আস্থা নিয়ে বলছেন কী করে ?
শুরু হয়েছে বহু আগেই, এখনও শেষ হচ্ছে না । আল্লাহ কবুল করুন..।
৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫১
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: " আমি যোগ্য, এতটা আস্থা নিয়ে বলছেন কী করে ?
শুরু হয়েছে বহু আগেই, এখনও শেষ হচ্ছে না । আল্লাহ কবুল করুন..। "
যোগ্যতার চেয়েও বেশী প্রয়োজন সদিচ্ছা এবং উদ্যোগ। যখন আল্লাহ চাইবেন তখন শেষ হবে। অমর কবি কায়কোবাদ ১০ বছরে শেষ করেছিলেন মহাশ্মশান।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৯
মনযূরুল হক বলেছেন: ভালো..। ইতোমধ্যেই আপনাকে চেনা গেছে.. আবারও ধন্যবাদ
৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩
কাউয়ার জাত বলেছেন: আজকেই লেখাটি চোখে পড়ল যদিও পোস্ট করা হয়েছে প্রায় দু'সপ্তাহ আগে। আমি যদি লিখতে চাই সেক্ষেত্রে শর্তাবলী কি?
বিশেষত ডেডলাইন, শব্দসংখ্যা, জমা দেয়ার ঠিকানা এগুলো জানতে চাচ্ছি।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১
মনযূরুল হক বলেছেন: শব্দ সংখ্যা ২০০০, ডেড লাইন আগেই পার হয়ে গেছে । তারপরও যেহেতু আজ এখনও বাকি, তাই আপনার জন্য ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবো, তার বেশি না । ঠিকানা : [email protected]
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০২
শাবা বলেছেন: প্রশংসাযোগ্য আয়োজন। আয়োজক কারা জানতে পারলে খুশি হবো।