![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি
অর্ক আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই ভড়কে গেলো । দেখতে কত ভদ্র লাগছে । কেউ দেখলে বুঝবেনা গত রাতেও এক ছেলেকে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছে ।
অর্ক সকাল ১০ টা বাজে ঢাকা ভার্সিটির ছবির হাটে এসে বসে আছে । মৌমিতা এখনো
আসছেনা কেন ? হঠাৎ মোবাইলে রিং টোণ বেজে উঠলো । পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে দেখল , অন্তুর ফোন ।
-হ্যালো ।অর্ক ভাই !
-হম কি হইছে ? কাহিনি কি ?
-ভাই একটা ভেজাল হইয়া গেছে । তাসফি তো মহানগর লিডারের আপন ছোট ভাই ।
-তো কি হইছে ? সেইজন্য অন্যায় করলে মাইর খাইবো নাহ ?
-কিন্তু ভাই ? লিডার তো হেভি ক্ষেইপা রইছে । আপনারে হলের কমিটি থেকে বাদ দিয়া দিতে কইছে ।
-হল সভাপতি কি কইলো ?
-ভাই কইছে ! আপনে নিজে যাইয়া ক্ষমা চান লিডারের কাছে
-আমি কোন দোষ করিনাই ।ক্ষমাও চাইতে পারুম নাহ । এইটা ভাইরে আমি আগেই কইছি ।
- ভাই ! হল সভাপতি , আপনেরে অনেক পছন্দ করে । উনি কইলো , কয়েকদিন এর লইজ্ঞা আপনে পার্টির কাজ কাম থেকে অফ যান
-হুম ! ভাই যা ভালো মনে করে আমি সেইটাই শুনতে রাজী আছি শুধু ক্ষমা চাইতে পারমুনা ঐ কুত্তার কাছে ।
অর্ক ফোন রেখে দেয় । মেজাজটা প্রচণ্ড গরম হয়ে আছে ।
কিছুক্ষন পর মৌমিতা রিক্সায় করে ছবির হাটে এসে নামে । মৌমিতাকে দেখেই অর্কের সব টেনশন , মেজাজ খারাপ দূর হয়ে যায় । অসম্ভব ভালো একটা মেয়ে ।সবসময় ওকে সাপোর্ট দিয়ে আসছে ।
অর্ক মৌমিতাকে দেখেই মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে ,বউ তোমারে বেগুনী কালার এর সালওয়ার কামিজে অনেক মানাইছে ।
মৌমিতা অর্কের পাশে বসে পা নাড়াতে থাকে । তারপর অর্কের দিকে তাকিয়ে বলে , তোমার দুনিয়ার কোন কিছু সম্পর্কেই ধারনা নাই । আর কালার সম্পর্কে তো একদমই নাই । এইটা বেগুনী কালার ?
অর্ক জিহ্বায় একটা কামড় দিয়ে বলে , সরি বউ ! এইটা তো গোলাপি কালার । ভুল হইয়া গেছিলো ।
মৌমিতা দিগুন বিরক্ত হয়ে বলে , এইটা ম্যাজেন্টা কালার বুদ্ধু ।
অর্ক অবাক হবার ভঙ্গিতে মুখে হাত দিয়ে বলে । ওরে বাবা ! কত আজিব কালার যে আছে দুনিয়ায় !
মৌমিতা হেসে ওঠে । হুম হইছে ! আপনার কালার কম্বিনেশন নিয়া আর মাথা ঘামান লাগবেনা । আপনার কাজ তো দেশ নিয়া । ও আচ্ছা কাল নাকি তোমাদের হলে গেঞ্জাম হইছে ?
অর্ক চোখ বড় করে বলে ,তাই নাকি ? শুনি নাই তো ! ঘুমাইয়া ছিলাম বুঝলা । ঘুমের মধ্যে চিল্লাপাল্লা শুনছিলাম কিন্তু বিছানা থেকেই উঠিনাই ।
মৌমিতা তৃপ্তির হাসি দিয়ে বলে , ভেরি গুড । কখনো এসব ঝামেলায় নিজেকে জড়াবানা । তোমার কিছু হলে আমি কিন্তু বাঁচবোনা ।
অর্ক ডান হাত দিয়ে মৌমিতার ডান বাহু ধরে আরও কাছে টেনে এনে বলে , বোকা মেয়ে ! কোন চিন্তা করবানা ।আমি এসব ঝামেলার মধ্যে নাই । তাছাড়া আমাকে হল সভাপতি অনেক ভালোবাসে । তাই আমার গায়ে হাত দেয়ার আগে ওরা তিনবার ভেবে নিবে । মৌমিতা
অর্কের বুকে মাথা দিয়ে বলে তবুও আমার না মাঝে মাঝে খুব ভয় করে । অর্ক বলে ,কাল তো রোজার ছুটি দিয়ে দেবে, বাসায় যাবে কবে ?
মৌমিতা ওর নিজের চুল আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে বলে , কালই চলে যাবো । তুমি কবে যাবা ?
ওদের সামনে হঠাৎ একটা রিক্সাকে একটা প্রাইভেট কার ধাক্কা মারে ।রিক্সায় বসা একজন বৃদ্ধা রিক্সা থেকে রাস্তায় পরে মাথায় প্রচণ্ড চোট পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় । তার মাথা ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে ।
সাথে সাথে অর্ক লাফ দিয়ে প্রাইভেট কারের সামনে চলে যায় । প্রাইভেট কারের চালক পাশ কাটিয়ে দ্রুত সরে যেতে চেয়েছিল কিন্তু সামনে জ্যাম এর কারনে সরতে পারেনি । অর্ক এক ঘুসি দিয়ে প্রাইভেট
কারের কাঁচ ভেঙে ফেলে । এক ঝটকায় দরজা খুলে চালককে রাস্তায় এনে মারা শুরু করে । আশে পাশের মানুষ জন তাকিয়ে আছে ওর দিকে । চালক ছেলেটা কম বয়সী । কোন বড় লোক বাবার আদরের দুলাল হবে ।ছেলেটার পকেট
থেকে মানিব্যাগ বের করে দশটা পাঁচশো টাকার নোট বের করে অর্ক নিজের পকেটে নেয় । তারপর ছেলেটাকে ছেড়ে দিয়ে বৃদ্ধার কাছে আসে । মৌমিতা এসে বৃদ্ধার মাথা নিজের কোলে নিয়েছে । অর্ক এতক্ষন
খেয়াল করেনি বৃদ্ধার পাশে আরেকটা দশ- বার বছরের ছোট একটা ছেলে ছিল । বৃদ্ধার নাতি হবে মনে হয় ।ছেলেটাও সামান্য ব্যথা পেয়েছে ডান কব্জিতে । ওদেরকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে পঙ্গু বিভাগে ভর্তি
করিয়ে দিয়ে আসে অর্ক আর মৌমিতা । ছেলেটার কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ওর বাবাকে ফোন দেয় ।হাসপাতাল থেকে আসার সময় ছেলেটার হাতে ঐ নোট গুলো দিয়ে বলে ,কোন চিন্তা করিস না ।
তোর বাবাকে ফোন দিছি । কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে ।
রিক্সায় মৌমিতা কোন কথা বলছেনা অর্কের সাথে । অর্ক কনুই দিয়ে মৌমিতার হাতে ধাক্কা দিয়ে বলে ,বউ ! রাগ কইরা আছো কেন ?
মৌমিতা ঠোঁট ফুলিয়ে বলে , তুমি ঐ ছেলেটাকে মারতে গেলে কেন ? আবার নিজের হাতের ও বারটা বাজাইছো ।
অর্ক বলে , আমার না মাথা গরম হইয়া গেছিলো । মনে হইল আমার মাকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফালাইয়া দিছে ।কথাটি শুনে মৌমিতার চোখ ছলছল করে উঠলো । মৌমিতা জানে সে শুধু শুধু এই গুণ্ডাটার প্রেমে পরে নাই ।
অর্ক রিক্সা নিয়ে মৌমিতার হল এর সামনে আসে । অর্কের গায়ে মৌমিতার দেয়া সাদা পাঞ্জাবী । মেয়েটা বিশাল একটা কালো ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বীরদর্পে । মৌমিতা আকাশী নীল সালওয়ার কামিজ পড়া । অর্ককে দেখে একটা লাজুক হাসি দেয় সে । অর্ক নিচে
নেমে ট্রলি ব্যাগটা নিজেই রিক্সায় উঠায় । মৌমিতা রিক্সায় বসেই বলে , তোমাকে না বলছি ঈদ এর দিন সকালে পড়বা পাঞ্জাবীটা ।আগেই পরে পুরানো করে ফেলছো কেন ? অর্ক মৌমিতার হাতে হাত রেখে বলে , বউ তোমারে দেখাবো বলে পড়লাম আর তুমি আমারে বকা
দিচ্ছো ? খুলে ফেলি ? এখনি খুলে ফেলি ? মৌমিতা হাসি চেপে বলে , হুম সাহস থাকলে খুলো । অর্ক ঢোক গিলে বলে ,থাক মেয়েদের সামনে আমি সাহস দেখাই নাহ । মৌমিতা বলে , তবে ওইদিন যে ছেলেটাকে মারলা আমার সামনে ? অর্ক চুপ করে যায় । সে বলতে
পারতো, বউ ! তুমি সামনে না থাকলেও আমি ঐ ছেলেটাকে মারতাম ।গুলিস্থানে এসে জ্যামে আটকে যায় ওরা । মৌমিতা অর্ককে গুঁতো মেরে বলে ,অর্ক ! এই অর্ক দেখো ! আঙুল উচিয়ে রাস্তার ওপারে একজোড়া তরুন তরুনির দিকে দেখায় ।
মেয়েটা রাগ করে কিছুদুর হেটে যাচ্ছে আর ছেলেটা পিছে পিছে মেয়েটার পাশে যেয়ে কি যেন বলছে। আবার মেয়েটা ১৮০ ডিগ্রি টার্ন নিয়ে অন্যদিকে হাঁটছে ছেলেটাও সেই কাজ করছে । অর্ক পাঞ্জাবির হাতা গুটাতে গুটাতে বলছে ,আমার মনে হয় ছেলেটা মেয়েটাকে
ইভটিজিং করছে ,তাই নাহ বউ ?
" দূর গাধা ! দেখছো ! ছেলেটার হাতে শপিং এর কতগুলো ব্যাগ ! মনে হয় নতুন বিয়ে হইছে ! আহা বেচারা ! হাউ সুইট ! "
অর্ক আরও ভালো করে দেখার চেষ্টা করছে ।জ্যাম ছেড়ে দিয়েছে । সদ্য বিবাহিত হাউ সুইটদের দৃশ্য পিছনে চলে গেছে । অর্ক কিছুটা অভিমানের
সুরে বলে ,এখানে সুইটের কি আছে ? বাই দা ওয়ে সুইট কাকে বল্লা তুমি ? ঐ পোলারে ? দাঁড়াও তোমারে স্টেশনে দিয়ে আসি । মৌমিতা অর্কের গালের চিপ টেনে বলে ,এই গুন্ডা ! আরেকবার যদি এমন কথা শুনি তাহলে কিন্তু খবর আছে ।অর্ক ব্যাথায় বাম চোখ বন্ধ করে
চিৎকার করে ওঠে । এই এই ছাড়ো ,বউ আমার ! ব্যথা পাচ্ছি তো । উহহ । মৌমিতা আরও জোড়ে টেনে বলে , আর কোনদিন গুণ্ডামি করবা ? জামাই বাবু ! অর্ক আরও জোড়ে চিৎকার দিয়ে বলে ,নাহ ! নাহ ! জীবনেও নাহ ! মৌমিতা অর্ককে ছেড়ে দিয়ে মাদার তেরেসার
ভঙ্গীতে বলে , যাও ! ছেড়ে দিলাম ! স্টেশনে এসে সীট খুঁজে দিয়ে ট্রেন থেকে নেমে আবার জানালার পাশে এসে দাঁড়ায় অর্ক ।মৌ ! শোনো ! কোন শালায় যদি ভেজাল করে কিছু বলার দরকার নাই শুধু ওর ফোন নম্বর টা হাসি মুখে চেয়ে নিবা ! তারপর বাকি কাজ আমি করমু !
আর
যাত্রা পথে কিছু কিনে খাবার দরকার নাই । মৌমিতা হেসে বলে ,জনাব ! এখন রোজা চলছে ! আর ইফতারের আগেই বাসায় পৌঁছে যাবো , ইন শাহ আল্লাহ । হঠাৎ ট্রেন এর হুইসেল শোনা যায় । শেষ বার এর মতো মৌমিতার হাতটি একবার ধরে ছেড়ে দেয় অর্ক । ট্রেন সামনের দিকে চলতে থাকে । অর্ক ট্রেন এর সাথে হালকা গতিতে দৌড়ে আসতে থাকে মৌমিতার
জানালার পাশে । মৌমিতা বলে , এই পাগল আর দৌড়ানো লাগবেনা ।এখন হলে গিয়ে বিশ্রাম নেন । অর্ক কিছুটা থেমে গিয়ে
আবার দৌড়ে মৌমিতার জানালার পাশে এসে বলে , বউ শোনো !
মৌমিতা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলে, কি ?
"দেইখো তুমি !দেশটাকে একদিন বদলে দেবো "
বলে অর্ক দাঁড়িয়ে যায় ।অর্ক বুকে অসামান্য ব্যথা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে শেষ বগিটি অদৃশ্য হওয়া পর্যন্ত । হলে এসে দ্রুত কিছু সিদ্ধান্ত নেয় অর্ক । যে স্বদিচ্ছা নিয়ে রাজনীতিতে সে জড়িত হয়েছিলো তাঁর সামান্য ছিটে ফোঁটা ও অবশিষ্ট নেই এখন
আর । তবে এতো গভীর থেকে নোংরামি গুলো দেখতে পেরেছে সে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার কারনেই । সমাজ টাকে কিভাবে বদলাবে সে একা কিম্বা কয়েকজন ? অর্ক রাজনীতি করলেও কখনো লোভের রাজনীতি করেনি । সব সময় দেশের কথা ভাবে সে । যাদের গায়ে সে
হাত তোলে প্রত্যেকের অনেক বড় অপরাধ ওর চোখের সামনে ধরা পরেছিল । কিছুদিন আগে তাসফি নামের ছেলেটাকে সে পাগলের মতো হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছিলো । কারন ছেলেটি ওদের ভার্সিটির এক মেয়ের সর্বনাশ করে ছিল । আর মেয়েটি
যখন কনসিভ করে তখন মেয়েটিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় । মেয়েটি যখন ঘুমের ওষুধ খেয়ে সুইসাইড করতে গিয়ে কোনোমতে বেঁচে যায় তখন মেয়েটারই ক্লোজ ফ্রেন্ড ইফতি অর্ককে সব ঘটনা খুলে বলে । অর্ক জীবনে কাউকে এমন পশুর মতো মারেনি । আর
লিডার রা কি সুন্দর অপরাধীকে কিছু না বলে অর্ককে হল কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দিলো । অর্ক মনে মনে ভাবল , লাথি মারি এমন রাজনীতিকে । আজই ভাইকে বলে দিবে সে টেম্পোরারি নয় একদম পার্মানেন্টলি রাজনীতি ছেড়ে দেবে । কিছুক্ষন আগে মৌমিতা
ফোন দিয়েছিলো । পাগলী নাকি এখন বসে বসে ছোট বোন টাকে অঙ্ক করাচ্ছে আর টম অ্যান্ড জেরি দেখছে । হঠাৎ বাসার কথা মনে পরে গেলো অর্কের । রাজনীতির কারনে হল বন্ধ দিলেও হলে থেকে যেত অর্ক । এক বছর যাবৎ ছোট ভাইটার সাথে দেখা হয়না । পুচকেটার
গাল টেপা হয়না কতদিন হয়েছে । বাবার সাথে বাজার করা । রান্না ঘরে মায়ের পাশে বসে গল্প করা । একসাথে খাটের উপর তোয়ালে বিছিয়ে ইফতার করা । অর্কের চোখে পানি চলে আসে । কালই বাসায় চলে যাবে অর্ক । হঠাৎ অন্তুর ফোন ! ভাই ! মহানগর লিডার
আপনার হলের নিচে চার পাঁচটা হুন্ডা নিয়া আসছে । আপনে হলের দিকে জাইয়েন নাহ ! অবস্থা ভালো নাহ । হল সভাপতিরে ফোন দিছিলাম ।ভাইয়ের ফোন বন্ধ । অর্কের হঠাৎ গলা শুকিয়ে যায় । ওর তো কখনো আগে এমন ভয় হতোনা । তাহলে কি ফ্যামিলির
কথা ভেবেই মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত থাকে ! নাহ ! তাকে এতো ভয় পেলে চলবেনা । যে করেই হোক তাদের সামনে গিয়ে দাড়াতে হবে । নিজে থেকে কথা বলতে হবে । হয়তো হল সভাপতি তাদের সাথেই আছে । অর্ক অন্তুকে বলে , শোন !আমি হলে আমার রুমেই আছি । সমস্যা
নাই । ব্যাপারটা আমি ট্যাকেল দিতাছি ।
আমার মামা র্যাব তিনে আছে ।
তাঁর মোবাইল নম্বর টা ডিলিট হয়ে গেছে ।তুই র্যাব তিন অফিসে গিয়ে মেজর সাত্তার কে খুজবি । সে আমার মামা । তাকে সব খুলে বলবি । যাহ । তাড়াতাড়ি । অন্তু কেঁদে দেয় । ভাই ! আপনে একটু সাবধানে থাইক্কেন । প্রয়োজন বোধে পা ধইররা ক্ষমা চাইবেন ।
ভাই ! জীবন বাচানো ফরজ ।মাঝে মাঝে এর লইজ্ঞা দুই একটা অপরাধীর পা ধরলেও দোষ নাই । অর্ক হেসে দেয় । আচ্ছা ! দেখি কি করা যায় । অর্ক ফোন রেখে দেয় । হলের নিচে কেঁচি গেটের সাথে ধাতব কিছুর সংঘর্ষের শব্দ পায় সে ।
(
বি: দ্র :
১)পরের দিন বিকেলে পুলিশ এসে অর্কের বীভৎস মৃত দেহ আবিষ্কার করে হলের পাশে ডোবা থেকে ।
২) ইফতারির সময়ের অনেক ক্ষণ আগে থেকেই আযানের জন্য বাংলা চ্যানেল গুলোতে ধরে রাখা হয় সব বাসায় । বাবাকে কিছু বলতেও পারছেনা মৌমিতা । সাড়ে ছয়টায়
জি ছিনে অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামটা আছে । হঠাৎ নিচে ব্রেকিং নিউজে আসলো , দলীয় অন্তরকোন্দলের কারনে ঢাকা ভার্সিটির মহসিন হলের বহিষ্কৃত নেতা অর্ক খুন ! মৌমিতার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে । সে এখন আর লিখা গুলো পড়তে পারছেনা !
ব্রেকিং নিউজের লাল আর সাদা লিখা গুলো লেপটে গেছে
মনে হচ্ছে । উফ! মাগো ! দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ।
৩)অর্কের বাবা ,আজিজ সাহেব ছোট ছেলেকে নিয়ে এখন শুধু স্বপ্ন দেখেন । বড়টাকে তো মানুষ করতে পারলেন না । ইশ ! ডাবল গোল্ডেন পাওয়া ছেলে মেডিকেলে প্রথম বার চান্স পেলো না বলে রাগ করে দ্বিতীয় বার দিলো না ।
কি নীতি কথা তিনার ।
"আমি সেকেন্ড টাইম পরিক্ষা দিয়ে ফার্স্ট টাইম যারা অ্যাডমিশন দেবে তাদের হক মারবো নাহ "। তাই ঢাকা ভার্সিটিতে পরিসংখ্যান নিয়ে ভর্তি হল । এরপর তাঁর দেশপ্রেম নিয়ে কি লাফালাফি ।দেশকে সময় দিতে গিয়ে এখন বাসার কথাও ভুলে গেছে । লাগবেনা ! এমন ছেলে
তাঁর লাগবেনা । ছোট টাকে পিটিয়ে ডাক্তার বানাবে । আজিজ সাহেব , ইফতার পূর্ব অনুষ্ঠান দেখছেন । হঠাৎ কিছু একটা দেখে তাঁর চোখ থমকে গেলো । তিনি কম্পিত কণ্ঠে চিৎকার করলেন , অর্কের মা ! তোমার ছেলেকে দেখে যাও ।
৪) ঘটনার ছয় মাস পর র্যাব এর হাতে ক্রস ফায়ারে নিহত হয় সেই মহানগর লিডার । র্যাব জানায় তারা সেই লিডারকে ড্রাগ ও অস্র মামলায় গ্রেফতার করে । সেই লিডারকে নিয়ে অস্র উদ্ধারে গেলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপর গুলি বর্ষণ করে । র্যাব ও
আত্ম রক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে শুধু মাত্র সেই মহানগর লিডার নিহন হন
৫) মহানগর লিডারের ভাই তাসফি এই এক্সট্রা জুডিসিয়াল কিলিংকে স্রেফ হত্যা বলে র্যাব এর বিরুদ্ধে মামলা করে । তবে র্যাব তাদের ক্রসফায়ারের কারন খুব সুন্দর ভাবে আদালতে উপস্থাপন করে এই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি পায়
২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৬
মেজবা_স্বপ্ন বলেছেন: আপনার কথাগুলো অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৯
রাজিব বলেছেন: আপনার গল্পটা পড়ে মন খারাপ ও ভাল দুটোই লাগলো। আমাদের অনেকের মনের মধ্যেই অর্কের মত চিন্তা কাজ করে আবার ভয়ে আপোষ করতে হয় করে যাই। ছাত্র রাজনীতি সহজে আর ভাল হবে না। আর হবেই বা কিভাবে, ছাত্ররা কি সমাজের বাইরে? আসল রাজনীতি যেখানে অনেকাংশে পচে গেছে সেখানে ছাত্র রাজনীতি আর কি করে ভাল হবে। তারপরও দেশ নিয়ে আমরা আশা করি। হয়তো উচ্চ শিক্ষিত লোকের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, ফেইসবুকে যেভাবে মানুষ যোগ দিচ্ছে কিংবা ব্লগে তাতে করে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন একটু একটু করে ইতিবাদক দিকেই যাবে এমন স্বপ্ন দেখি আমি। অনেক ধন্যবাদ এ লেখাটার জন্য।