নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৫ :( :(

১৬ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৮

আগের চারটি পর্বের লিংকঃ
(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ১-৪

পাগলিটার ঘুমরত অবস্থাই আমি আমার জীবনে প্রথম প্রেমে পড়লাম । পড়লাম মানে একেবারে ডুবে গেলাম । রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী গল্পের মত বলতে ইচ্ছে করছিল তখন, "আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম" । সেই মুহূর্তেই আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান বলে মনে হচ্ছিল । এত খুশি খুশি অবস্থায় আছি যে যে কোন মুহূর্তে হার্টফেল করে বসতে পারি, এই ভয়তে আমি তখনই ওর পাশের জায়গাটুকুকে শুয়ে পড়লাম । শুইলাম অবশ্য ওর দিকে মুখ দিয়ে । ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি আর মুচকি মুচকি হাসছি । কখন যে এভাবে ঘুমিয়ে পড়েছি, তা নিজেরও মনে নেই । যাই হোক, সকালে আমার ঘুম কখনই খুব ভোরে ভাঙ্গে না । বরং বিয়ের আগে থেকেই বাড়ির সকলের ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর মা এসে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যেতো । বেকার মানুষ, এই ঘুম ছাড়া আর আছেই বা কি । এখন তো বিয়ে করেছি, তাই এই দায়িত্ব থেকে যে মা অবসর নেবেন, সেটা তিনি আগেই বলে দিয়েছেন । আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন ঘড়িতে বারোটা পার হয়ে গেছে । হ্যাঁ, কেউ আমাকে ডাকেনি, নিজে নিজেই উঠেছি ঘুম থেকে । ঘড়ির সময় দেখে আবার মেজাজ গরম হলো । তাছাড়া উঠে পাশে মেয়েটিকেও পেলাম না । আসলে তখন পর্যন্ত মেয়েটি মেয়েটি করছি কারণ তখন পর্যন্ত ওর নামটিই শোনা হয়নি আমার ।

যাই হোক, আমাদের বাড়িতে সবাই যে যার মত থাকলেও তিন বেলা খাওয়াটা সবাই এক সাথে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া হয় । সকাল বেলার নাস্তা খাওয়ার সময় সকাল দশটা । এখন তো আরও দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, মনে হয় আজকের সকালের নাস্তাটা গেলো । ধুর, মেয়েটির উপর আবার রাগ আসছে । তবু নিজেকে বুঝ দিলাম, ধুর, এই মেয়েটার না আমি প্রেমে পড়েছি, তাহলে আবার রাগ কিসের !!! হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে দেখলাম খাটের পাশে একটি চেয়ার রাখা আর সেই চেয়ারের উপর নাস্তা রাখা । মুহূর্তেই আমার চেহারা ১০০ ওয়াটের বাতির মত উজ্জ্বল হয়ে গেলো ।

ফ্রেশ হয়ে নাস্তাটা সেরে নিলাম । ঐ যে একটা কথা আছে না, "পুরুষ মানুষের মনের রাস্তা শুরু হয় তাদের পেটের মাধ্যমে", আমার এই কথাটিই বারবার মাথায় আসছিল । কারণ আজকের নাস্তার স্বাদ অন্য রকম হয়েছে, মা যে বানায়নি আমি নিশ্চিত । তাহলে কি পাগলিটাই !!! আমি তদন্ত করতে ধীর পায়ে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম । প্রায় রান্নাঘরে ঢুকবো এমন সময় পিছন থেকে মা বলে উঠলেন, "কি রে কালাম ? আজকে এত দেরি করে ঘুম থেকে উঠলি যে ? কাজ-কাম নাই তোর ?" ততক্ষণে পাগলিটার দিকে আমার চোখ গেছে । আমি খেয়াল করলাম কথাগুলো শুনে মেয়েটি মুচকি মুচকি হাসছে । তবু এখন মেয়েটির কর্মকাণ্ডে আমার মোটেও রাগ আসছে না । "হ্যাঁ, মা, যাবো তো । মানে ভাবলাম ওর সাথে একটু দেখা করে যাই, তাই আর কি...... " আমি মায়ের কথার উত্তরে বললাম । "ও তো তোর বিয়ে করা বউ । এত পিরিতির কি আছে ? ও কি কোথাও চলে যাচ্ছে নাকি? এখানেই আছে । তুই যা, আমি বউমাকে একটু কাজ শিখিয়ে নিচ্ছি ।" মায়ের গলা দেখছি ধীরে ধীরে চড়া হচ্ছে । বাড়িতে নতুন বউ আসলে মায়েরা যে নিজেদেরকে অনিরাপদ মনে করে, তার প্রমাণ পাচ্ছি হাতেনাতে । তারা ভয়ে থাকে তাদের ছেলে হয়তো পর হয়েই গেলো । আচ্ছা, এমন ভয় থাকলে ছেলেকে আবার বিয়ে দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায় কেন এই মায়েরা ? না বাপু, এত কথা আমার মাথায় ঢোকে না । অন্য সময় না হলেও এখন তো মায়ের কথা শোনাই লাগবে, মাইয়ের ভয় যদি আবার বিশ্বাসে পরিণত হয়, তাহলে তো বিপদ । তাই কি আর করার...... পাগলিটার সাথে দেখা না করেই আমি গুছিয়ে বাইরে বের হয়ে গেলাম । আব্বার সাথে নিয়মিত দোকানে বসছি, কাজ শিখতে হবে । নতুন দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়েছে, এবার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর একটা তাগিদ অনুভব করছি ।

দোকানে বসে আছি অনেকক্ষণ, কাজে মন বসছে না । খালি বাড়ি ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে । পাগলিটার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে, অনেক কথা । ছোটবেলা থেকে যে কথাগুলো জমিয়ে রেখেছি, যেই কথাগুলো বাবা-মাকে বলা যায় না, বড় কিংবা ছোট ভাই-বোনকেও বলা যায় না, সেই কথাগুলো, মনের অনুভূতিগুলো, ইচ্ছেগুলো ওকে বলতে ইচ্ছে করছে খুব । আমার অমনযোগী ভাব আব্বার চোখ এড়ালো না । "কালাম, কোন সমস্যা ?" "না, তো আব্বা, কোন সমস্যা নেই ।" আমার উত্তর শুনে আব্বা দেখি মুচকি মুচকি হাসছেন । "ক্ষিদা লাগছে, কিন্তু আজকে বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে না । তুই গিয়ে বাড়ি থেকে টিফিন বাটিতে করে আমার খাবারটা নিয়ে আয় ।" আব্বা এই কথা বলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন । আব্বার এই কথা শুনে মনের মধ্যে খুশির বোমা ফুটলেও, আমি এমন ভান করার চেষ্ঠা করলাম, যেন আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও তার আদেশ পালন করছি । আমি বাড়ির পানে রওনা হলাম । এত খুশি লাগছে যে মনে হচ্ছে নাচতে নাচতে বাড়ি যাই ।

(বাকিটা আগামী পর্বে)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

অংকুর জেসফি বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৫

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য । আশা রাখছি, গল্পের শেষ পর্যন্ত আপনাকে সাথে পাবো । যাই হোক, গল্পের পরবর্তী পর্বটি নিচে দিলামঃ

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৬

২| ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪২

Ronju islam বলেছেন: পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া—————— অসাধারন লিখছেন সে তো বলতেই হচ্ছে

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৭

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ । আপনাদের অনুপ্রেরণায় গল্পটি এতদূর নিয়ে এসেছি । শেষ করবো কোথায় জানা নেই, হয়তো যতদিন আপনাদের ভালো লাগবে ততদিন । যাই হোক, গল্পের পরবর্তী পর্বটি নিচে দিলামঃ

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৬

৩| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাহ রোম্যানটিক পর্ব।
জেলে থেকে রোম্যান্স!! তারপর!!

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৮

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: হা হা হা হা :#) । ঠিকি বলেছেন, মানুষ পারেও বটে । জেল তো কিছুই না, আমি রোমান্সের ব্যাপারটা আরও কঠিন অনেক জায়গাতেই লক্ষ্য করেছি । সে আর নাইবা বললাম । যাই হোক, গল্পের পরবর্তী পর্বটি নিচে দিলামঃ

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৬

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.