নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌভাগ্যবান/সৌভাগ্যবতীদের কপালেই একসাথে হাসি আর কান্না জোটে । বাকীদের নয়...

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬

- এই নাও, ১০০০০ টাকা ।
- এতগুলো টাকা !! তা আবার ১০০০০ !! কেন ?
- কেন মানে কি !! দিয়েছি, নাও চুপচাপ ।
- যদি না নেই ?
- না নেই, মানে কি !! নাও বলছি ।
- না, এভাবে কারও কাছ থেকে শুধুশুধু টাকা নেওয়ার শিক্ষা আমি বাসা থেকে পাইনি ।

শিপলুর কথায় অরিণের কান্না চলে এলো । চোখের কোণা বেয়ে বিন্দু বিন্দু অশ্রুকণা উঁকি দিলো তার । কান্নার কারণে অরিণের ফুঁপানো ভাবও চলে এলো । শিপলু অবশ্য এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিল না । অরিণের হঠাৎ কান্নায় শিপলু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ।

- এই কি করছো কি !!
- (ফোঁপাতে ফোঁপাতেই) কিছু না ।
- কাঁদছো কেন ?
- কই কাঁদছি ?
- তাহলে চোখে পানি কেন ?
- চোখে কি যেন একটা গেলো, তাই মনে হয়...
- ওহ, চোখে কিছু একটা গেলে কি ফোঁপানো ভাবও আসে মানুষের ?

শিপলুর কথা শুনে অরিণ চুপ হয়ে গেলো এবার । তার হাতে এখনও সেই ১০০০ টাকার নোটগুলো আছে । অরিণ আর কিছু না বলেই পিছন ঘুরে যেতে উদ্যত হতেই পিছন থেকে শিপলু খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেললো । এমন অবস্থার জন্য অরিণ মোটেও প্রস্তুত ছিল না । তবে তাদের দুইজনের মধ্যেই অরিণই প্রথমে কথা বললো ।

- এই কি করছো !! হাত ধরলে কেন ?
- ধরলাম কেন, মানে ?
- মানে কিছু না । হাত ছাড়ো । আমি যাবো ।
- যাবো মানে ? কোথায় যাবে ?
- বাসায় ।
- না, পারবে না ।

শিপলুর কথায় অবাক হয়ে গেলো অরিণ । শিপলু আর অরিণ এক সাবজেক্টেই থার্ড ইয়ারে পড়ে এক স্বনামধন্য বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে । বড়লোকের দুলালী অরিণ আর প্রাইমারী স্কুল মাস্টারের ছেলে শিপলু । অর্থনৈতিক স্ট্যাটাস অবশ্য কখনই অরিণের পথ আটকাতে পারেনি শিপলুকে পছন্দ করতে । সেই ফাস্ট ইয়ার থেকেই অরিণের এই ভালোলাগা । শিপলুকে অরিণ কখনও না বললেও শিপলু ব্যাপারটা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে । কিন্তু ধনী-গরীবের ফারাকের ব্যাপারটাই এতদিন শিপলুকে এগুতেই দেইনি একেবারে । কিন্তু আজকে...... অরিণের চোখের পানি সব বাধ ভেঙে দিয়েছে শিপলুর ।

- পারবো না মানে ?
- না, পারবে না । বলছি তো ।

শিপলুর কথায় অজান্তেই অরিণের হাসি পেয়ে যায় । অরিণ চোখ ভালো করে মুছে, শিপলুর দিকে তাকায় এবার ।

- তো কি করবো এখন ?
- এখন আমরা ঘুরতে যাবো ।
- কিন্তু তোমার এই সেমিস্টারের ফি দেওয়ার ব্যাপারটা ?
- সেটা পরে দেখা যাবে ।
- তাহলে কিন্তু দুইজন মিলেই দেখবো, ঠিক আছে ? আগে তুমি টাকাগুলো রাখো নিজের কাছে ।

শিপলু অরিণের কথার কোন জবাব দিতে পারলো না । কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে অবশেষে অরিণের কাছ থেকে ১০০০ টাকার নোটগুলো নিয়ে নিজের পকেটে ঢুকালো সে । কিন্তু এতকিছুর পরেও শিপলু অরিণের হাত ছাড়েনি । ওদিকে আশেপাশের অরিণ আর শিপলুর এই ব্যাপারটা অনেক কৌতূহল নিয়েই দেখতে লাগলো । শিপলু হঠাৎ অরিণের হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে হাঁটা শুরু করলো । ওদিকে আশেপাশের সবার দৃষ্টি খেয়াল করে, অরিণ পুরো লজ্জায় লাল হতে লাগলো । তাহলে কি অবশেষে......? হ্যাঁ, অরিণের হাত এখন তার ভালোলাগার মানুষটির হাতে !! অরিণের আবার কান্না এলো । এবারের কান্নাটা অবশ্য অনেক আবেগের, ভালোলাগার, সুখের । কোন মানুষের জীবনে একইসাথে এরকম কান্না আর হাসি কি জোটে !! হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না । তবে যাদের জোটে, তারা কিন্তু সত্যিই অনেক সৌভাগ্যবান/সৌভাগ্যবতী ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.