নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চ্যাংড়া ছেলেটার অদ্ভুত শখ B-) :D

০৪ ঠা মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪



সাইকেলের মত হুইল চেয়ারে বসে সেটার চাকা আর হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ভিক্ষা করছিলেন আসমত শেখ । দুই পায়ের শক্তি হারানোর পর শখের রিকশাটা বিক্রি করতে হয় তাকে । এরপর পাঁচ ছেলে আর তিন মেয়ের মুখে খাবার যোগাড় করার জন্য বেছে নিতে হয় ভিক্ষাবৃত্তি । তার বউ-ও বসে থাকে না, সেও বাড়িতে কামলা খাটে মানে কাজের বুয়া আর কি ।

আজকে দারুণ রোদ পরেছে । শালা, রোদ পড়ার আর সময় পাইনি !! ঐ সূর্যর কি যায় আসে !! হারামিটার তো খাওয়া লাগে না । আমাদের শক্তি খাইয়াই তো হারামিটা ভালো মোটাতাজা হইতেছে । আর গরম আইলে মনে হয় হারামিটার ক্ষিদা বাইড়া যায় । আসমত শেখের মাঝে মাঝে মনে হয়, কোনদিন যদি ম্যালা ট্যাকা হয়, তাইলে রকেটে কইরা ঐ সূর্যে যাইবো আর একগাদা পানি ঢাইলা দিয়া আসবো, তখন দেখা যাইবো হারামিটা ক্যামনে ভালো থাকে !! আবার মাঝে মাঝে মনে হয়, পানি না, বরফ ঢাললে মনে হয় আরও খবর হইবো !!

আজকে ভিক্ষাও কম হইতাছে । অন্য দিন যেখানে দুপুর ১২ টার মধ্যেই ৪০০-৫০০ টাকা হয়ে যায়, আজকে রাস্তায়ও মনে হইতাছে লোক কম, তাই টাকাও কম । এখন ঘড়িতে কয়টা বাজে, এটা আসমত জানে না । তবে কম করে হলেও ২টা বাজবে, এটা সে অনুমান করতে পারতেছে । খাওয়া-দাওয়া করার দরকার । তাই হ্যান্ডেল আর চাকা ঘুরাতে ঘুরাতে বাড়ির দিকে রওনা দিলো সে । হঠাৎ বলা নেই, কওয়া নেই, কোত্থেকে একটা চ্যাংড়া টাইপের ছেলে এসে তাকে একটা অফার দিলো, যা কোনদিন কেউ তাকে দিবে, এমনটা ভাবেনি আসমত শেখ ।

- চাচা, একটা চাইপা বসবেন ?
- মানে, বাবা ?
- মানে টানে কিছু না, আজকে সারাদিন আপনার সাথে ভিক্ষা করমু আপনার পাশে বইসা ।
- এটা কি কও, বাবা
- আহা, চাচা আগে শোনেনই না, আমারে শেষ করতে দেন । এতে সম্পূর্ণ আপনারই লাভ হবে ।
- লাভ ? কিসের লাভ, বাবা ? আর তুমি কি বলতেছো আমি তো কিছুই বুঝতাছি না ।
- আরে চাচা, আমি চাকা ঘুরামু হাত দিয়া, হ্যান্ডেল থাকবে আপনার হাতে । আমার আল্লাহ্‌-নবীজির নাম নিয়া গান গাওয়ার দায়িত্ব আমার । এতদিন তো আপনি একা একা ভিক্ষা করছেন, কিন্তু এরকম প্যান্ট-শার্ট পড়া কেউ যদি আপনার পাশে বসে ভিক্ষা করে, লোকজন তো অবাক হয়েই দেখতে আসবে, আর আসলেই কেল্লা ফতে, ভিক্ষা না দিয়ে কাউরে যেতে দেবো না । এরপর কেউ যদি আপনার কাছে উপরি চায়, সেটা দেওয়ার দায়িত্ব আমার । পুলিশ ধরলে দায়িত্ব আমার । আর দিনশেষে আপনার ভিক্ষার টাকা সব তো আপনারই, আমি আরও বাড়তি আপনাকে ২০০ টাকা দেবো, দেখছেন কত লাভ ? পুরো লাভজনক একটা দিন কাটবে আপনার ।
- কিন্তু বাবা ?
- ধুর চাচা, সরেন তো ।

আসমত শেখকে অবাক করে দিয়ে চ্যাংড়া ছেলেটা প্রায় এক লাফে আসমত শেখের পাশে বসে পড়লো । ঘটনার আকস্মিকতায় আসমত শেখ পুরোপুরি নির্বাক । মনে মনে আল্লাহ্‌কে ডাকছেন, ভালো পাগলের পাল্লায় পড়লেন মনে হয় । এর চেয়ে তো রোদই ভালো ছিল । আর খাওয়া-দাওয়া ? সেটা নিয়ে তো ছেলেটা কিছু বললো না । তাইলে তিনি আর সে খাবে কোথায় ? আর খাবারের বিলই বা কে দেবে ? ও আল্লাহ্‌, তুমিই মালিক, তুমিই একমাত্র সহায় । রক্ষা করো, এমন পাগলের হাত থেকে । ওদিকে পাগলের মত প্রলাপ বোকা চ্যাংড়া ছেলেটা মহা খুশিতে চাকা ঘুরিয়েই চলেছে । মনে হচ্ছে ভিক্ষা করা তার অনেক দিনের শখ । আর আজকে তার সেই শখ পূরণ হচ্ছে, তাই সে মহাখুশি :D :-B

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:



এটাও একটা গল্প?

২| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

প্রামানিক বলেছেন: মজাই পেলাম, ভিক্ষুক এক পাগল ঐ চেংড়া আরেক পাগল।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪

মৌরি হক দোলা বলেছেন: প্রামাণিক ভাইয়ের সাথে সহমত :D

গল্পটি বেশ সুন্দর হয়েছে। অনেক অনেক ভালোলাগা রইল...........

৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: হে হে হে, মানুষের মন কখন যে কি চায় সেটা বলা দায়। এই যেমন আমার সখ আছে কম পক্ষে একটা দিন ও রাত বেদে বহরের সাথে থেকে কাটিয়ে দেওয়া। সেটা আজো পূরণ হয়নি :D

৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২

পবন সরকার বলেছেন: কামাল ভাইয়ের এই সখ পুরণ করতে আমি সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো। আপনি সাভারে আসেন ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।

৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটা আবার কেমন শখ? মানসিক ডাক্তার দেখানো দরকার...

৭| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব গল্প।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.