![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অতিসাধারণ, সাধারণই থাকতে চাই।ঝামেলা অসহ্য লাগে।ঝামেলা জিনিসটা হলো আধোয়া থালা-বাসনের মত বিরক্তিকর।
ভাইফোঁটা- হিন্দুদের এই একটিই অনুষ্ঠানুকেই আমি সর্বাপেক্ষা গ্রহণীয় মনে করি। এটি একটি আবেগপ্রবণ অনুষ্ঠান। তবে মানতেই হবে এই অনুষ্ঠানটি যতোবেশী ধর্মীয় তারচেয়েও অধিক বেশী সামাজিক। পৃথিবীর প্রায় কোন ধর্মেই শুধুমাত্র ভাই-বোনের সম্পর্ককে এভাবে সামাজিক ও আত্মিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয় নি- অন্যান্য সম্পর্কগুলো থাকতে পারে কিন্তু এই সম্পর্কটিকে এতো বেশী জোড় দেয়া খুব সম্ভবত হয় নি।
এই উৎসবের পোষাকি নাম “ভ্রাতৃদ্বিতীয়া অনুষ্ঠান”। কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব “ভাইদুজ” নামেও পরিচিত। আবার মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে “ভাইবিজ” । নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং এর পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত “ভাইটিকা” নামে। নামে যাই হোক না কেন উৎসবের সার কিন্তু একই। ভাই এবং বোনের সম্পর্ককে আরও বেশী শক্তিশালী করা।
এই উৎসবের আরও একটি নাম হল “যমদ্বিতীয়া”। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে-
“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দেই আমার ভাইকে ফোঁটা যমুনার হাতে ফোঁটা খেয়ে যম হল অমর।
আমার হাতে ফোঁটা খেয়ে আমার ভাই হোক অমর।।”
বিষয় হচ্ছে এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে একজন বোন তার ভাইয়ের সর্ব মঙ্গল ও সর্ব সুস্থতার কামনা করে। অপর দিকে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই একজন ভাই তার বোনের সামাজিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতিটি পুনরায় ঝালিয়ে নেয়। এছাড়া বিভিন্ন পারিবারিক আবেগের বিষয়টি তো আছেই। রক্তের সম্পর্কের ভাই ছাড়াও পাতানো ভাই-বোনের সম্পর্কটি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজিক বৈধতা পায়। পাশাপাশি এটাও উঠে আসে শুধু মাত্র রক্তের সম্পর্কগুলোই মানুষের মৌলিক সম্পর্ক হতে পারে না। রক্তের সম্পর্কের থেকে বড় আত্মিক সম্পর্কটি সমাজ গঠনের মূল উপজীব্য।
উপরের ছবিগুলোর একটিতে ২০১৩ সালের ৬ই নভেম্বর বর্ধমানে অনুষ্ঠিত একটি সম্প্রীতির ভাইফোঁটার ছবি। বর্ধমান জেলার কালনা মহাকুমার পূর্বস্থলী ব্লকের শ্রীরামপুরে এরকম হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির একটি ছবি দেখা যায়। ধর্মের উর্ধ্বে যেয়ে ভাই-বোনের সামাজিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার এই দৃশ্য আমাদের ইতিহাস তো দূরে থাক পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: আসলেই। চমৎকার একটা কালচার।