নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অতিসাধারণ, সাধারণই থাকতে চাই।ঝামেলা অসহ্য লাগে।ঝামেলা জিনিসটা হলো আধোয়া থালা-বাসনের মত বিরক্তিকর।

মোঃসুমন মজুমদার

আমি অতিসাধারণ, সাধারণই থাকতে চাই।ঝামেলা অসহ্য লাগে।ঝামেলা জিনিসটা হলো আধোয়া থালা-বাসনের মত বিরক্তিকর।

মোঃসুমন মজুমদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘মৃত্তিকা মায়া’: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত ‘মৃত্তিকা মায়া’র অভাবনীয় সাফল্য।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৪

পরিচালকঃ গাজী রাকায়েত হোসেন

প্রযোজকঃ অডিও ভিজ্যুয়াল ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম

বিভাগঃ ড্রামা

অভিনয়েঃ রাইসুল ইসলাম আসাদ(ক্ষীরমোহন),শর্মীমালা(পদ্দ),তিতাস

জিয়া(বৈশাখ),মামুনুর রশিদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়,অপর্ণা ঘোষ।

মুক্তিঃ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩

ভাষাঃ বাংলা

দেশঃ বাংলাদেশ


২৩টি বিভাগের মধ্যে ১৭টি! তা–ও আবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার! অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এমন অভাবনীয় সাফল্যই দেখিয়েছে চলচ্চিত্র মৃত্তিকা মায়া।২০১২ সালের সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবিটি ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ১৭টি বিভাগে পুরস্কার জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মৃত্তিকা মায়া যেসব বিভাগে পুরস্কার জিতেছে সেগুলো হচ্ছে—সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা গল্প, সেরা সংলাপ, সেরা চিত্রনাট্য, সেরা অভিনেতা (তিতাস জিয়া), সেরা অভিনেত্রী (শর্মীমালা), সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (রাইসুল ইসলাম আসাদ), সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (অপর্ণা ঘোষ), খল চরিত্রে সেরা অভিনেতা (মামুনুর রশীদ)।

বাংলা চলচ্চিত্রে সংলাপ,অভিনয় এবং দৃশ্যপটে বেশ পরিবর্তন এসেছে।অতীতের তুলনায় আধুনিক সময়কার সিনেমাগুলি একটু ভিন্ন আঙ্গিকে রচিত হচ্ছে।আমার বাংলাদেশের সিনেমাগুলি দেখার অভিজ্ঞতা শুরু হয়েছে এইতো সেদিন। সিনেমা দেখে তা বুঝার ক্ষমতাও বেশি দিনের নহে।তবে মৃত্তিকা মায়ার মতো সিনেমাটি দেখার পর আমি আমার অভিমত প্রকাশ করতে পারায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি কারণ অভিমত প্রকাশ আর উপভোগ দুটার মাঝে অনেক বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।আরও ধন্য মনে করছি এইজন্য যে এটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সিনেমা।

গ্রাম বাংলার পেশাজীবী মানুষদের প্রতি সম্মানবোধের এক অনবদ্য সৃষ্টি উক্ত সিনেমাটি।পরিচালক গাজী রাকায়েত হোসেন এই জন্যই এক তাঁতি পরিবারের জীবনবোধ এবং পেশার প্রতি তাঁর সম্মানবোধকে তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছেন। পরিচালক দেখিয়েছেন মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি সম্মান না থাকলে প্রচুর সম্পত্তি ও কাজে আসে না। সিনেমাটির মূল উপজীব্য বিষয়সমূহের মধ্যে বিবাহ, প্রেম-ভালোবাসা, সম্পত্তির প্রতি লোভ,অনিয়ম, দুর্নীতি উল্লেখযোগ্য।

রাইসুল ইসলাম আসাদ পার্শ্ব অভিনেতা হলেও তাঁর অভিনয়ে আমি মুগ্ধ,আমার মতে তাঁর কারনেই সিনেমাটি সকলের মন কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।সিনেমার শুরুর দিকে রাইসুল ইসলাম আসাদের কথা আমার মনে পড়ে গেল সে তিতাস জিয়াকে বলতেছিল ‘যে কামের সাথে অর্থের যোগাযোগ নাই হে কাম এতো মনোযোগ দিয়া কইরা লাভ কি ?আমি হাত দিয়া মেলা মূর্তি করছি কিন্তু হেগুলা বিনা পয়সায় না।’ অপরপক্ষে তিতাস জিয়া যার কথা না বললেই নয়,সেরা অভিনেতার পুরস্কার তাঁর ঝুলিতেই রয়েছে। আসাদের কথার প্রত্যুত্তর কিন্তু দিলেন এভাবেই‘মানুষ টাকা পয়সার লাইগা কি সব কাম করে? ধইরা নেও কাম কাজ শেষে এইডা এক ধরনের মনের খোরাক।’ মনের খোরাক যোগাতে সৃষ্টিশীল কাজে আত্মনিয়োগ করাটা খুবই জরুরি।তাঁরই বহিঃপ্রকাশ পেয়েছি এই সিনেমাটিতে। রাইসুল ইসলাম আসাদের নাতনি শর্মীমালা যিনি সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন।সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী(অপর্ণা ঘোষ),সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র হিসেবে অপর্ণা ঘোষকে পেয়েছি সিনেমাটির মধ্যভাগে এক ট্র্যাজিক নারী রূপে যেকিনা নির্যাতিত,নিপীড়িত ও অবহেলিত হয়েছে সমাজের পশু সদৃশ মানুষের হাতে ।অভিনয় করেছে নিজের সাথে,ভান করেছে সমাজের সাথে কিন্তু কোনও মানুষের ক্ষতি করে নি বরং লুৎফর রহমান জর্জ যে ছিল ভাড়াটে খুনি তাঁকে হত্যা করে তিতাস জিয়াকে অনেকাংশে উপকার করতে সচেষ্ট হয়। প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজ নিজ জায়গায় সফল বলেই সিনেমাটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।

অসাধারণ সব সংলাপের অনবদ্য এ চলচ্চিত্রটি সত্যিকার অর্থেই পুরুস্কার পাওয়ার যোগ্য।সিনেমাটি দেখে আমার মোটেও সময় নষ্ট হয়নি বরং সিনেমাটি দেখার পর কিছুটা হলেও আমার মানবসুলভ চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন এসেছে।সুতরাং সকলের আত্মিক ও মানুষিক উন্নতির জন্য অবশ্যই ‘মৃত্তিকা মায়া’ সিনেমাটি উপভোগ করা উচিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.