নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হায়!হায়!

ইইসমাইল

০৫০৮০২৯

০৫০৮০২৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালনের বিপক্ষে একটি লেখা

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬

সারা বিশ্বে একদিন ঈদ পালন করার ভ্রান্ত চেষ্টা নিয়ে

প্রতি বছরই আমরা লক্ষ্য করেছি, আমাদের দেশে যেদিন প্রকৃত ঈদের দিন অর্থাৎ যেদিন সকালে আমাদের দেশে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সেদিনের ঠিক একদিন কখনোবা দু’দিন পূর্বেই আমাদের দেশের সিলেট এবং চাঁদপুরের কিছু জায়গায় নেহায়েত গন্ডমূর্খ, শরীয়তের ইলম বর্জিত, অন্ধঅনুকরণ প্রিয় কিছু লোক ঈদের জামায়াত আদায় করে। তাদের এহেন অদ্ভুত আচরণের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা কয়েকটি বিষয় জানতে পেরেছি। আর তা হলো-

১. তারা বিশ্বাস করে সারা পৃথিবীতে একদিনে ঈদ হওয়া সম্ভব এবং একই দিনে ঈদ পালন করা উচিত।

২. তারা আরও বিশ্বাস করে একই দিনে সারা বিশ্বে ঈদ পালন করলে মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বোধ বৃদ্ধি পাবে।

গন্ডমূর্খ কিছু লোক বিচ্ছিন্নভাবে যারা আমাদের দেশে সৌদি আরবকে অন্ধ অনুকরণ করে ঈদ পালন করে তাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই স্বয়ং সৌদি আরবও চাঁদ না দেখেই বিগত বহু বছর যাবৎ ঈদ পালন করে আসছে। যদি আমরা ধরেও নেই সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গিয়েছিল তথাপি সৌদি আরবে চাঁদ দেখার সাথে আমাদের দেশে ঈদ পালনের কোন যুক্তি নেই।

ধরা যাক, সৌদি আরবের আকাশেই প্রথম ঈদের চাঁদ দেখা গেল। তাহলে সৌদি আরবের পশ্চিমে অবস্থিত দেশগুলোতে সৌদি আরবের সাথে একই দিনের সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলেও সৌদি আরবের পূর্ব দিকের দেশগুলোকে পরবর্তী দিনের সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে অর্থাৎ তাদের ঈদ একদিন পিছিয়ে যাবে (যেহেতু সৌদি আরবের পূর্বের দেশগুলোতে চাঁদ না দেখা গিয়েই সন্ধ্যা এসেছে)। আর যদি তারা সৌদি আরবের সাথে একই দিনে ঈদ উদযাপন বা পালন করতে চায় তাহলে তা হবে সে সকল দেশে চাঁদ না দেখেই ঈদ করা। আর কোন দেশ যদি সৌদি আরবের পূর্বেই চাঁদ দেখে থাকে তবে কি সে দেশ সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে?

উদাহরণ হিসেবে আমরা অস্ট্রেলিয়া এবং রিয়াদের চাঁদ দেখার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারি।

ধরা যাক কোন এক তারিখে, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণে চাঁদ না দেখা গিয়েই রাত নেমে এলো। তখন সৌদি আরবের রিয়াদে রবিবার সময় সকাল ১০টা। রিয়াদে ৮ ঘণ্টা পর যখন সন্ধ্যা নামলো তখন সন্ধ্যা ৬টা এবং পৃথিবীতে কোন এক শাওয়াল মাসের চাঁদ প্রথম রিয়াদে দেখা গেল। তাহলে রিয়াদে সন্ধ্যা ৬টায় যখন চাঁদ দেখা গেল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণে তখন সোমবার রাত ২টা। সৌদিআরবের রিয়াদে সেদিনের চাঁদ দেখা অনুযায়ী যদি পরের দিন সকালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণের মুসলমানগণ ঈদের নামায আদায় করে তবে তা হবে চাঁদ না দেখেই রোযা ভঙ্গ করা এবং ঈদ পালন করা। প্রকৃতপক্ষে মেলবোর্ণবাসীর উচিত হবে সোমবার সন্ধ্যায় তাদের দিগন্তে চাঁদ দেখার পর মঙ্গলবার ঈদ পালন করা। তাহলে কি করে সৗদি আরবের চাঁদ দেখা অনুযায়ী সমগ্র বিশ্বে একদিনে ঈদ উদযাপিত হবে?

আবার ধরা যাক, কোন এক রমযান মাসের শেষে রিয়াদে প্রথম চাঁদ দেখা গেল এবং মনে করি সে দিনটি সোমবার এবং সন্ধ্যা ৫:৩০ ঘণ্টায় রিয়াদের আকাশে চাঁদ দেখা গেল। তখন আর্জেন্টিনায় সময় সোমবার সকাল ১১:৩০ ঘণ্টা। রিয়াদের চাঁদ দেখা অনুযায়ী আর্জেন্টিনার মুসলমানগণ ঈদের নামায পড়তে চাইলেও তা সম্ভব নয় কেননা তখন ঈদের নামাযের ওয়াক্ত থাকে না। আবার যখন রিয়াদের পরের দিন মঙ্গলবার ভোর ৬:৩০ ঘন্টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে তখন আর্জেন্টিনায় মঙ্গলবার রাত ১২:৩০ ঘণ্টা (এএম)। সে সময় ঈদের নামায পড়া সম্ভব নয়। যেহেতু রিয়াদের সঙ্গে আর্জেন্টিনার সময়ে পার্থক্য ৬ ঘণ্টা সেহেতু সৌদি আরবে যে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখবে তার ৬ ঘণ্টা পর আর্জেন্টিনায় চাঁদ দেখা যাবে। সুতরাং সৌদি আরবের সাথে আর্জেন্টিনার মুসলমানদের একই দিনে ঈদ পালন করা সম্ভব নয়।

এ ছাড়াও যে সকল কিতাবে সারা পৃথিবীতে একদিনে ঈদ হওয়া সম্পর্কে অভিমত পোষন করা হয়েছে সে সমস্ত কিতাবে একদিনে ঈদ হবার কোন ভৌগলিক ব্যাখ্যা নেই। একদিনে সারা বিশ্বে ঈদ পালনকারীরা একদিনের কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। দিন বলতে আমরা দু’রকম বুঝতে পারি, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়কে দিন বলে আবার দিবা-রাত্রি মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টাকেও দিন বলে। সৌর মাস এবং চন্দ্রমাস হিসেবেও দিন আবার দু’রকম। সৌর মাসের দিন শুরু হয় রাত ১২টা থেকে এবং তা থাকে পরবর্তী দিনের রাত ১২টা পর্যন্ত।

আবার চন্দ্রমাসে দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে এবং তা থাকে পরবর্তী দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত। আবার একদিন বলতে একই তারিখ বা বার বোঝানো যেতে পারে। সৌরমাস হিসেবে কোন তারিখ আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পশ্চিম থেকে অর্থাৎ রাশিয়া বা নিউজিল্যান্ড থেকে শুরু হয় এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হিসেবে আমরা অর্থাৎ বাংলাদেশ এবং অন্যান্য মুসলিম বিশ্ব তথা সৌদি আরব, সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান ইত্যাদি সকল দেশই সৌরমাসের তারিখ এবং বার গণনা করে থাকি। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অনুযায়ী সৌরমাসের তারিখ এবং বার গণনা করা অত্যন্ত সহজ এবং তা নির্দিষ্ট। কিন্তু চন্দ্রমাসের জন্য কোন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। কেননা চন্দ্রমাস শুরু হয় বাঁকা চাঁদ দেখার সময় থেকে। ফলে যখন কোন দেশ প্রথম চাঁদ দেখার পর চন্দ্রমাস শুরু করে তখন তার পূর্বের দেশ পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে নতুন চন্দ্র মাসের দিন শুরু করবে। সেখানে সারা পৃথিবীতে একদিনে ঈদ পালন করার যুক্তিটি নিতান্তই হাস্যকর।



দ্বিতীয় মতের ব্যাখ্যা: আমরা খুব তিক্তভাবে উপলব্ধি করেছি ১৪২৭ হিজরীর রমযান মাস শুরু এবং রমযানের শেষে ঈদের দিন পালন করা নিয়ে তথাকথিত মুফতী কমিনী এবং তার সমগোত্রীয়রা বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে কতটা বিভেদ, অনৈক্য সৃষ্টি করেছে।

এই অনৈক্য সৃষ্টির অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি কারণ ছিল সৌদি আরবের রোযা ও ঈদের দিন শুরুর সঙ্গে এ দেশের রোযা ও ঈদের দিন শুরুর মধ্যে একটা সামঞ্জস্যতা রক্ষা করা। সৌদি আরবকে অন্ধঅনুকরণ করতে গিয়ে সারা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা করতে গিয়ে নিজের দেশেই জন্ম দিল চরম অরাজকতা, ভ্রাতৃত্বহীনতা এবং অসন্তোষ। মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা করা কুরআন-সুন্নাহর বিধান। সুতরাং কুরআন সুন্নাহর নির্দেশিত পথেই সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা সম্ভব হবে। কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত চলে, মনগড়া ভাবে ফতওয়া দিয়ে ফরজ রোযা এবং ওয়াজিব ঈদের নামায নষ্ট করে ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা করা যে কতটা অর্থহীন তা বলার অপেক্ষাই রাখে না। আমরা জানতে পেরেছি সৌদি আরবের সাথে এ দেশে চাঁদ না দেখেই ঈদের জামায়াত আদায় করতে গিয়ে দেশের অনেক জায়গাতেই সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছে লাঠা-লাঠি হয়েছে এবং মানুষ রক্তাক্ত হয়েছে। চরম মুর্খতাই শুধুমাত্র ভ্রাতৃত্ববোধের জায়গায় রক্তাক্ত সংঘর্ষের সৃষ্টি করে সমাজে অশান্তি ডেকে আনে।









কৃতজ্ঞতায় @ব্লগার ক্লাউনবয়৮৭

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

কসমিক রোহান বলেছেন: সময় উপযোগী সুন্দর লেখা, ধন্যবাদ।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

বড়দাদা বলেছেন: সিলেটে এভাবে ঈদ পালন করা হয় প্রথম শুনলাম।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

মুখচোরা বলেছেন: Jotir biggani ebong alemder somonnoye ekti committee gothon kore ekti nirdisto man ba neeti sthir kora uchit. Desher dharonata vul. Bangladesh ekti desh abar Russia o ekti desh. Bangladesher ek sthane chand dekha gele sorbotro eid palon kora hoyto thik kintu Russiar khetre seta nao hote pare. Kajei ek sathe chand dekhte parar vougolik obosthaner vitti te prithibike chinnito kora uchit.

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:১৪

নাম বলবো না বলেছেন: নিচের ব্লগটা পড়ে দেখতে পারেন, হয়ত আপনার ভালো লাগতেও পারে:
Click This Link

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৩

সাব্বির ০০৭ বলেছেন: ++++++

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪৪

প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

৭| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:১৩

অডি বলেছেন: "চাঁদপুরের কিছু জায়গায় নেহায়েত গন্ডমূর্খ, শরীয়তের ইলম বর্জিত, অন্ধঅনুকরণ প্রিয় কিছু লোক ঈদের জামায়াত আদায় করে।"

লেখকের যোগ্যতা যদি একটু শেয়ার করতেন, তাহলে উপকৃত হই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.