![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা জুলাই/২০১১ এর ঘটনা। হামহাম নিয়ে পত্রিকা এবং ব্লগে অনেক লেখালেখি হয়েছে । এ রকমই এক পত্রিকায় হামহাম সম্পর্কে খোজ পাই। এর সৈন্দর্যের বর্ননা এবং ছবি দেখে আর লোভ সামলাতে পারিনি। তাই পরদিনই দুই দোস্তকে নিয়ে যাত্রা শুরু করি। মনেমনে কি সুখ.... জীবনে প্রথম যাচ্ছি জঙ্গলে তাও আবার ঝর্ণা দেখতে । কি নিতে হবে অথবা কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে তা কিছুই জানি না। পত্রিকায় পড়লাম ভোর থাকতে পৌছাতে হবে। তাই রাত ১১টার গাড়িতে রওনা দিলাম ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল। কিন্তু বজ্জাত গাড়ি আমাদের ভোর ৪টায় শ্রীমঙ্গল নামিয়ে দিলো
। এখন এই রাতে কই যাই..... যাইহোক রাস্তায় বসে তিনগুটি খেলে আর মশা মেরে ১ঘন্টা পার করলাম। সঙ্গী কম হওয়ায় বিপাকে পড়লাম...... সঙ্গী কম হলে সমস্যা হল টাকা বেশী খরচ হবে। গাড়ি রিজার্ভ করলে ২-৩ জনের যে খরচ ৭-৮ জনেরও প্রায় একই খরচ
। ৭/৮ হলে শ্রীমঙ্গল থেকে সরাসরি কলাবন পাড়া পর্যন্ত জিপ/ সিএনজি রিজার্ভ করে নিয়ে যাওয়া যায়। তবে রিজার্ভ করার সময় যাওয়া-আসা মিলিয়ে করে নিলে ভাল হয় (যেটা পরে বুঝতে পারছি
)। কারন যোগাযোগ ব্যাবস্থা খারাপ এবং গ্রামটি অনেক ভিতরে হওয়ায় বিকালের পর কোন যানবাহন সচরাচর পাওয়া যায় না। কলাবন পাড়া পর্যন্ত শুধু যাওয়া রিজার্ভ করলে ৬০০-৮০০ টাকা খরচ পরবে (এখন বেশী লাগতে পারে)।যাবার সময় জামা-কাপড় নেয়ার তেমন দরকার নেই কিন্তু আমরা ৩জনই ভালই জামাকাপড় নিছিলাম...... ঝর্ণায় গেসোল করুম তাই
। যত পারেন খাবার-দাবার নিয়ে নিবেন...... আমরা নিছিলাম ২টা করে আন্ডা আর ২প্যাক এনার্জি বিস্কুট
(পরে হাড়ে হাড়ে টের পাইছি)। আর নিছিলাম কেরোসিন, ম্যাচ, মোম.......... (যদি রাত হয় তাই)। কারন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া-আসা মিলিয়ে প্রায় ৮ কিঃমিঃ পথ হাটতে হবে (যদি রাস্তা না হারান
)। আর যেভাবেই যান না কেন গহীন অরন্যে প্রবেশের পূর্বে কলাবন পাড়া থেকে ভাল একজন গাইড নিয়ে নিবেন। গাইড আগে থেকেও নেয়া যায়, তবে খোজ-খবর নিয়ে ভাল একজন গাইড নেয়া উচিত। কিছু লোক আছে যারা হামহাম এর সঠিক রাস্তা না চিনেও টাকার জন্য গাইড হয়। যার জলজ্যান্ত প্রমান আমরা...... ওই বজ্জাত গাইডরে এখন পাইলে কান মইল্লা দিতাম
। আমরা জংঙ্গলে প্রবেশের আগে ৮ সদস্যের আরেকটি গ্রুপের সাথে মিলিত হই (আমরা সংখায় কম তো... তাই ভয় পাইছি)। পরিচয় পর্ব সেরে আমরা সকাল ৯টার দিকে জঙ্গলে প্রবেশ করি। গাইড বাবাজি আমাদের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নতুন রাস্তা তৈরি করে নিয়ে চললেন এবং ৪০মিনিট পর ঘোষনা দিলেন আমরা ভুল রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি
। পোকামাকড় আর জোকের কথাতো বাদই দিলাম। যাইহোক মেলা কষ্ট করে হামহাম এর কাছাকাছি পৌছুলাম..... যেখান থেকে ঝর্ণার বজ্রকন্ঠ শোনা যাচ্ছিলো। পথ যেনো আর ফুরায়না...... শরীরে ইশক-এর তেল যা ছিল তা ঝরে ঝরে পরতে লাগলো। আহহ... অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে অবশেষে দেখা পেলাম সেই ঝর্ণার। সে আর কি বলব....... এর সৌন্দর্য আমাকে পাগল করে দিলো। মন আর চাইছিলোনা এখান থেকে যেতে। কিন্তু এখানে থাকার কোন ব্যাবস্থা নাই। আমাদের ৩জনের মধ্যে ১জনের অবস্থা খারাপ..... ফিরে আসার পর কম ঝারি মারেনাই আমারে..... পরে অবশ্য থ্যাংকু দিছে (হাজার হোক আমার করনেই হামহাম স্বচোক্ষে দেখেছে)। ১ঘন্টা আরাম করার পর মানে ঝর্ণায় গা ভিজানোর পর আবার ফেরার পালা...........
। ফেরার রাস্তার কথা মনে হতেই শরীরটা গুলিয়ে উঠলো....... আবার হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম। তবে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে এলাম.......... যেটা তুলনা মূলক একটু সহজ
। জঙ্গলে পরিশ্রমের সময় মনে হইছিল এই জায়গায় মানুষ আসে!!!! এত কষ্ট, সাথে জোকের কামড়, সাপ আর ভাল্লুকের ভয় তো আছেই............
। যাইহোক তখন ফেরার সময় আর কোন সমস্যা হয় নাই............ তবে যে দোস্ত ২টারে নিয়া গেছিলাম ওরা আর আমার কথায় কোন যায়গায় যায় না
। হামহাম ভ্রমণের সময় যতই কষ্ট আর সমস্যা হোক না কেনো ঢাকায় ফিরে আসার পর মনে হইছে স্বপ্নরাজ্যে গেছিলাম (যা কখনো ভোলার নয়)...... এ যেন বাংলাদেশে আমাজন জঙ্গল। আমরা যখন গেছিলাম তখন হামহাম আবিষ্কার এর প্রথম দিক........ তাই অনেক পরিশ্রান্ত এবং নাস্তানাবুদ হইছিলাম। এখন মনে হয় না এত পরিশ্রম হয়..... । মাঝে শুনলাম হামহাম নাকি ভারতের দখলে । এখন কি অবস্থা কে জানে......... আর এই লেখা পড়ে কেউ হামহাম গেলে, ফিরে এসে দয়াকরে আমাকে বকবেন না । কারন জায়গাটা আসলেই অনেক ভয়ংকর সুন্দর এবং রোমাঞ্চকর
। আর যারা জোক ভয় পান তাদের তো কথাই নেই । এখানে আমাদের কিছু ছবি দিলাম......................................
কলাবন পাড়া এর একটি বাড়ি
জঙ্গলে প্রবেশের পথ
মনের সুখে জঙ্গল ঘুরতাছি
এরমধ্যে জোকের আক্রমন
পথ হারানোর পর আমগো গাইড
এই পথের শেষ কোথায়.....
পরিশ্রান্ত আমরা ক'জন
স্বচোক্ষে এই ভিউ এর দাম লাখ টাকা.........
এই সেই হামহাম ঝর্ণা............
বড়ই শান্তি
ফেরার পথে...............
ভাল থাকবেন...... ধন্যবাদ
২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৫
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: আমার পোষ্ট এর মাধ্যমে হামহাম ঘুরে এলেন জেনে খুবই ভাল লাগলো........... ধন্যবাদ
২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০১
দুর্বার বলেছেন: ভয়ংকর সুন্দর রুপ। যাবার প্লান ছিল এবং আছে কিন্তু জোক এর ভয়ে আর হয়ে উঠেনা।
একি ভাবে বান্দরবানের আমিয়াখুম বা নাফাখুম দেখতে যাওয়া হলোনা হাসিনা খালা-খালেদা ম্যাডাম দের রোষের কবলে পরে।
২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৮
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: নাফাখুম যাবার শখ আমারও আছে.......... জানিনা পূরণ হবে কিনা। হামহাম শীত কালে যাবেন, তাহলে আর জোকের ভয় নেই.......... ভাল থাকবেন, ধন্যবাদ
৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১৯
নবীন বালক বলেছেন: ভাই, চার মাস আগের টাটকা সৃতি মনে করায়ে দিলেন । ধন্যবাদ আপনাকে। জায়গাটা মোটামুটি বুনো ই আসে। তবে সচেতন পর্যটক এর অভাবে ঝর্ণার আশপাশে নোংরা কইরা রাখসে । ভাই, আপনি কি ঝর্ণার উপর এ মানে যেখান থেকে পানি পরে সেখানে উঠে ছিলেন ??
যাওয়ার রাস্তাটা বিপদজনক খাড়া পাহাড় বেয়ে কিছুটা পথ যেতে হয়।
২৮ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:২১
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: না ভাই, উপরে উঠতে পারি নাই। সময় কম ছিল আর আমরা খুব ক্লান্ত ছিলাম (রাস্তা হারাই ছিলাম তো তাই)। তবে যাবার খুব ইচ্ছে ছিল। কারন, উপরে উঠে ৩০-৪০ মিনিট হাটলে নাকি এরচে বড় ঝর্ণার দেখা পাওয়া যায়। ধন্যবাদ
৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৫
রেজোওয়ানা বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী সুন্দর হয়েছে!
২৮ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ধন্যবাদ............
৫| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৩৬
অতল গহবর বলেছেন: সুন্দর হয়েছে । ভাল লাগল।
২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪২
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ধন্যবাদ। আমার ব্লগে স্বাগতম
৬| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪০
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আ--------------হ্!
৩০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: আ--------------হ্!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
৭| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
বাংলাদেশের আইডল বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী সুন্দর হয়েছে
৩১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। আমার জন্ম শ্রীমঙ্গলের এক চা বাগানে। আমি জানি জোঁকের ভয়!
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩২
আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই................
শ্রীমঙ্গলে যখন বাড়ি তাইলে তো আপনার বাড়িতে দাওয়াত নিতে হয়...... আরো কিছু জায়গা ঘুরে আসতে পারতাম...........
৯| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৪
ভবঘুরে মানব বলেছেন: অসাধারণ অভিজ্ঞতা! যদিও জোঁকের কথা শোনে অনেকেই ভয় পেয়ে গেছে ইতোমধ্যে!
যারা এখনো সিলেটে ঢুঁ মারেন নি তারা সিলেটের কিছু আকর্ষণীয় জায়গাগুলোতে ঘুরে আসার বেশ কিছু ট্যুর প্যাকেজ দেখে নিতে পারেন যাওয়ার আগে http://bit.ly/29Ikjjk
১০| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ওরা আর আমার কথায় কোন যায়গায় যায় না /
সংক্ষেপে দারুন ট্যুর! ++++
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
বোকামন বলেছেন:
সম্মানিত ব্লগার,
আপনার পোস্টে চড়ে ঘুরে এলাম ...
কি দিব আপনাকে ?
ধন্যবাদ দিচ্ছি সাথে কৃতজ্ঞতা ......!