![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদসহ দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক এক বিবৃতিতে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ, উত্কণ্ঠা ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। দেশে যা কিছু ঘটছে তার দায় সরকারের এবং এর সমাধানে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
গণমাধ্যমকে দেয়া বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। এই সংঘাত আশু নিরসনের কোনো লক্ষণ কোথাও দেখা যাচ্ছে না। বরং দিনের পর দিন সংঘাতের মাত্রা তীব্রতর হচ্ছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ৬০ জনের মতো মানুষ নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই নিহত হয়েছেন পুলিশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণে। মাত্র একদিনের ঘটনায় এত ব্যাপক সংখ্যক মানুষ নিহত হওয়া বাংলাদেশের ৪১ বছরের ইতিহাসে আর কখনও ঘটেনি। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া পাকিস্তানিদের শাসনেও এমন কোনো নজির নেই। ব্রিটিশ ভারতে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডই একমাত্র ব্যতিক্রম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণের যে আইন ও বিধিবিধান রয়েছে, সেসব আইন ও বিধিবিধানও তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।
তারা বলেন, শুধু সাধারণ নাগরিক নয়, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরও প্রাণনাশের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা রক্তপাত চাই না। আমরা পুরো ঘটনারই নিন্দা জানাই। ধিক্কার জানাই। দেশে যাতে শান্তি, স্বস্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসে সেজন্য সব মহলকেই চূড়ান্ত ধৈর্যধারণের
অনুরোধ জানাব। যেসব সমস্যা ও বিরোধের ফলে দেশ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, সেসব প্রশ্নের ফয়সালার জন্য সব পক্ষকে সংলাপ ও সমঝোতার পথে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পত্রিকায় বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে আমরা শঙ্কিত। দেশবাসীও আছে ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যে। গৃহযুদ্ধের মতো জাতীয় দুর্যোগ কারোরই কাম্য হতে পারে না। পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, দেশে একটি সমান্তরাল সরকার কাজ করছে। এটিও রাষ্ট্রীয় সংহতি, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আমরা চাই গণতন্ত্র সমুন্নত থাকুক। নাগরিকরা নিরাপদ জীবনযাপন করুক। রক্তের হোলি খেলায় সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। আমাদের সোনার দেশ যখন জ্বলে-পুড়ে ছারখার হচ্ছে তখন প্রত্যেকটি নাগরিকেরই কর্তব্য হবে দলীয় অবস্থানের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের নিরাপত্তার পক্ষে দাঁড়ানো। এরকম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে কোনো কোনো মহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপতত্পরতা চালাচ্ছে। তাদের এই অপতত্পরতা বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোরই শামিল। জনগণের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে—আপনারা সব ধরনের সাম্প্রদায়িক অপতত্পরতা রুখে দিন।
বিশিষ্টজনরা বলেন, দেশে এখন যা কিছু ঘটছে তার দায়-দায়িত্ব সরকারের। সরকার কিছুতেই এ দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না। তাই সমস্যা সমাধানে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের মেয়াদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এ অবস্থায় সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রক্ষমতার উত্তরণই এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সমাধান আনতে পারে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এখন একটি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এ দাবিকে উপেক্ষা করার শক্তি কারও নেই।
আমরা আশা করি, গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে। আমরা একই সঙ্গে যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ দেয়ারও দাবি জানাচ্ছি। রক্তপাত সমস্যার সমাধান দেয় না। সেজন্যই রক্তপাতের বিপজ্জনক পথ পরিহার করে সরকার নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়ের পথে ফিরে আসবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিবৃতিদাতা অন্যরা হলেন—ডা. এমএ মাজেদ, প্রফেসর মনিরুজ্জামান মিঞা, বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ, কবি আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আসাফউদদৌলাহ, ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, ড. এসএমএ ফায়েজ, ড. মাহবুব উল্লাহ, খোন্দকার মুশতাহিদুর রহমান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ড. ইউসুফ হায়দার, ড. সদরুল আমিন, ড. তাজমেরী এসএ ইসলাম, রিয়াজউদ্দিন আহমদ, ড. আজহার আলী (রাবি.), ড. ইনাম উল হক, ড. হাসান মোহাম্মদ (চবি), ড. রেজাউল করিম (খুবি) ও কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার সংগৃহীত
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:০৩
আইলসা০ বলেছেন: রাষ্ট্রে এখনও মত প্রকাশের সুযোগ আছে। বিব্রিতি দাতাদের অভিনন্দন। যিনি এ বিষয়টি আমাদের পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তাকে অভিনন্দন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৫৮
মুসলিম শরীফ বলেছেন: ভাল।