নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের জন্য সৃষ্ট সুখগুলো ধরে রাখতে লেখালেখি চালিয়ে যেতে চাই।

মীর সাজ্জাদ

নতুন কিছু করার আশায় থাকা মানুষগুলোই এক সময় সফল হয়।

মীর সাজ্জাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনে রঙয়ের পালাবদল

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭



ছোট্ট একটা সবুজ গ্রাম। সে গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে যমুনা নদী, গ্রামটি যেন স্বয়ং সম্পূর্ণ, বিদ্যুৎ, রাস্তা ঘাট, হাট বাজার, বিদ্যালয় ও উর্বর ক্ষেত থাকার জন্য। আর সে গ্রামের সব থেকে মেধাবী ছেলেটি হল সুশিল। লেখাপড়া আর বুদ্ধিতে সে যেন ওস্তাদ। সত্যবাদি বলে গ্রামে তার অনেক সুনামও রয়েছে। সে এ গ্রাম হতে সে গ্রাম ঘুড়ে বেড়াতে সব থেকে বেশি পছন্দ করে, হঠাৎ একদিন বই হাতে বিদ্যালয়ের পোশাক পড়া একটা মেয়েকে দেখে তার ভালো লেগে যায়। (জীবনে রঙয়ের পরিবর্তন) মেয়েটার রঙ যেন দুধে ধোয়া, ফিতা দিয়ে বেণী করা লম্বা চুল যেন ময়ূরীর পেখম, তার হাসিতে যেন মন পাগলামি করা শুরু করে দেয়। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যাওয়া সুশিল সিদ্ধান্ত নেয় জীবনে বিয়ে করলে একেই করবে। বাড়িতে এসে জানায় তার ভালো লাগার কথা। বাড়িতে আছে মা আর বড় ভাই বোন, বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন, বড় ভাই বোনের সবারই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেল মেয়েদের পরিবারটাও অনেক ভালো। তাই সবাই রাজি হল, বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হল, মেয়েদের পরিবার থেকেও সবাই রাজি হল। কথাবার্তা পাকা হয়ে রইল। এদিকে সুশিলের মনে যেন আনন্দ ঢেউ খেলছে। সে লেখালেখি শুরু করে দিল, তার লেখায় ছিল শুধু সেই সুন্দরী নারী নাম তার রানু। প্রতিদিনই তিন থেকে চারটা চিঠি সুশিল রানুকে পাঠাত। রানু সেগুলো লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ত, আর হাসত। কখনো কোন চিঠির উত্তর দিত না। এভাবেই শুরু হল তাদের প্রেম। বেশ কিছুদিন পর তাদের বিয়ে হল অনেক ধুমধাম করে। (জীবনে আরো কিছু রঙ সংযোজন হল) বিয়ের পর সুখেই দিন কাটাতে লাগলো তারা। সুশিল ব্যবসায়ের সুবাদে ঢাকা চলে গেলেন, প্রতি সপ্তাহেই তিনি বাড়িতে আসতেন আর নিয়মিত ডাইরি লিখতেন, এসে রানুকে সে ডাইরীর লেখাগুলো পড়ে শোনাতেন। একসময় একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন রানু। তাদের আনন্দ আর দেখে কে। নাম রাখলেন সুনীল। সুনীলকে নিয়ে তাদের সকলের সুখের সে সংসার। সুনীল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলো, তার সকল চাহিদা পূরনে বাবা মা যেন সর্বদা ব্যস্ত। রানু আর সুশিল দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নিল পরের বছর সুনীলকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবে, কত স্বপ্ন ছেলেকে ঘিরে। একদিন সুশিল ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রউনা দিল, রাস্তায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।(জীবনে রঙয়ের পরিসমাপ্তি এবং অন্যদের জীবনে কালো রংয়ের ঘনঘটা)। সমাপ্তি ঘটল একটি বিশুদ্ধ প্রেমের। রানুর জীবনে যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। সুখের সাগর টা হঠাৎ করেই পানিশূন্য হয়ে গেল। রানু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। ছোট্ট সুনীল জীবনে বড় হওয়ার আগেই তার মাথার উপর থেকে নির্ভরতার ছায়াটা সরে গেল। জীবনের রঙ কখন যে কি রুপ নেয় তা কেউ জানে না, সেই ছোট্ট সুনীল জানে না যে তার বাবার মৃত্যুতে কান্না চলে আসে। জীবন তো থেমে থাকেনা, জীবনের গতিতে জীবন গড়িয়ে যায়। সুনীলও ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। বাবার আদরগুলোও তার মনে থাকে না। তবে জীবনে বাবার গুরুত্ব যে কত বেশি তা সে বুঝতে পারে। বাবা যেন আশ্রয়স্থল, মনের সাহস। বাবা মাথায় হাত রাখলেই যেন আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তবে তার মা কখনোই নিজের মনের কষ্ট তাকে বলেনা। বাবার কথা উঠতেই মায়ের চোখ লাল হয়ে যেত। যাদের বাবা আছে তারা যেন বাবার গুরুত্বটা বোঝেনা। মাঝে মাঝে সুনীল বাবা মায়ের সেই পুরানো ছবির এলবাম বের করে, ছবিগুলো দেখে দুচোখ জলে ভিজে যায়, মায়ের সামনে কখনো এলবাম বের করে না সে। সুনীল আরো ভাবে বাবা থাকলে হয়তো জীবনটা অন্যরকমভাবে বড় হত। আসলে প্রত্যেক বাবাই তার সন্তানের জীবন গড়ার কারিগর। সেলুট সেসকল বাবা মায়েদের যারা সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলছেন।

একসময় সুনীলও প্রেমে পড়ে, ভালো একটা চাকরীও হয়ে যায়। (জীবনে রঙের পরিবর্তন)। জীবনে রঙ যে আরও কতভাবে কত নিয়মে পরিবর্তন হয় তা সত্যিই বিস্ময়কর।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৫০

আরোগ্য বলেছেন: জীবনে রঙের কোন অভাব নাই। গল্প ভালো লাগলো।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:৪৪

মীর সাজ্জাদ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৫৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটাই জীবন। প্যারা করে লিখবেন...

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:৪৫

মীর সাজ্জাদ বলেছেন: ঠিকাছে। এর পর থেকে প্যারা করে লিখবো।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:১০

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
আমি গ্রামে ফিরে যাবো।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৪

মীর সাজ্জাদ বলেছেন: ধন্যবাদ। তবে যারা শহরে বড় হয়েছে, শহরে থাকে। তারা প্রামে থাকতে পারে না। কিছুদিনই মাত্র ভালো লাগে। দীর্ঘদিন থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.