![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তানভীরুল হাকিম মিরাজের ব্লগ
এটা একটা দরিদ্র ছেলের গল্প। নাম- আনিস, বয়স- ১২ কি ১৩। গায়ের রঙ- কালো।
ছেলেটি একটা রেস্টুরেন্ট এ টেবিল বয়ের কাজ করে।
আজ সকালে একজন মহিলা খেতে আসলেন তার ১২ বছরের বাচ্চা কে নিয়ে । মহিলার হাঁতে একটা টেডিবিয়ার, দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছেলেটির জন্য কেনা হয়েছে, ছেলের হাঁতে জুস তবু কাঁদছে! কাঁদ কাঁদ গলায় বলছে- আমি বার্গার খাব, বার্গার খাব।
মহিলা ওয়েটারকে ডেকে বললেন – একটা হ্যাম বার্গার দাও তো।
ছেলের গালে চুমু দিয়ে বললেন আর কিছু খাবা, আমার সোনা বাবা!
- না, আমি বার্গার খাব। আমি বার্গার ছাড়া কিছু খাই, তুমি জাননা?
মহিলা - আমি জানি আমার বাবা বার্গার খায়, এইতো আঙ্কেল আনছে।
ওয়েটার অর্ডার নিয়ে আনিসকে ডেকে বলল টেবিল পরিষ্কার করে দিতে ও টিস্যু সার্ফ করতে।
আনিস টেবিল পরিষ্কার করতে করতে বেশ কয়বার চোখাচোখি হল মহিলার সাথে।
ততক্ষণে বার্গার এসে গেছে।
ওয়েটার বার্গার রাখতে রাখতে বলল – এই যে বাবু তোমার বার্গার।
মহিলা বলল- সোনা বাবা আমার, তোমার বার্গার এসে গেছে , ঝটপট খেয়ে নাও।
- তুমি না খাইয়ে দিলে আমি কখনও খাই, জাননা।
মহিলা- আচ্ছা বাবাম, আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
এরপর দীর্ঘ সময় নিয়ে মা তার ছেলেকে অনেক মমতার সাথে খাওয়ালেন। খাওয়া শেষ করে ছেলে তার মাকে অনেক সময় ধরে জড়িয়ে ধরে রাখলো।
- আমার লক্ষ্মী মম।
এই পুরো দৃশ্যই আনিস পরম যত্ন নিয়ে আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখেছে। কল্পনার রাজ্যে হারালো আনিস...
তার মা ও তাকে সব সময় ভাত খাইয়ে দিত, আনিসও মায়ের হাত ছাড়া ভাত খেতনা। অনেকদিন মায়ের হাঁতে খায়নি আনিস।
আনিস যখন কল্পনার রাজ্যথেকে ফিরলো তখন দেখলো ম্যানেজার তার কলার ধরে টানছে আর তার পাশে একটি গ্লাস ভেঙ্গে পড়ে আছে !!
বিকাল পর্যন্ত আনিসের মন ভালো হয়নি, তার মায়ের কাছে যেতে ইচ্ছা করছে, মায়ের হাঁতে ভাত খেতে মন চাচ্ছে। অবশেষে ম্যানেজার কে গিয়ে কাঁচুমাচু করে বলল- স্যার, আমি বাড়ি যাব, স্যার, আমি বাড়ি যাব।
বজ্রপাত হল সাথে সাথেই- সকালে গ্লাস ভাংছিস, কাজের কোন ঠিক নাই, আসছে- স্যার, আমি বাড়ি যাব।
মুখকে ঈষৎ বাঁকা করে এরপর যা বলল তা ভদ্র ভাবে লেখা যাচ্ছেনা। তবু আনিসের অতি পিড়াপীড়িতে
ম্যানেজার জানালো – যদি যাবি তো একবারেই যা! আর আসতে পারবিনা!!
আনিস জানে, ম্যানেজার স্যার মুখে বললে ও তাকে বাদ দিবে না। যাওয়ার সময় ম্যানেজার তাকে ভাংতি মাসের টাকা দিয়ে বললেন – তারাতারি ফিরে আসিস।
ছেলেটি রাস্তা ধরে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে গেল “মায়ের ফুল” বিতানে। আনিস জানে তার মা বড় বড় লাল গোলাপ খুব পছন্দ করে। আজ সে অনেকগুলো গোলাপ কিনবে! মায়ের জন্য কিনবে!!
কিন্তু এখানেও সেই ছেলেটি! তার মা তাকে গোলাপ কিনে দিচ্ছে।
আনিসও একথোকা গোলাপ নিলো। তার সবগুলো পকেট হাতড়ে সব টাকা দেয়ারপরও দোকানী আরও দশ টাকা চাচ্ছে।
আনিস অনেক করে বলল- আমার কাছে আর টাকা নেই, দিন না, অন্য কোন দিন দিয়ে যাবো।
কিন্তু দোকানি কিছুতেই দিবেনা, বলল- অন্যটা নাও। এটা নিলে আরও ১০টাকা দিতে হবে।
আনিসের এই থোকাটিই পছন্দ হয়েছে। ও মিনতি করতে থাকলো- আমার মায়ের জন্য নিচ্ছি। আমাকে দিননা!!
সেই মহিলা এগিয়ে এসে গোলাপের থোকাটি কিনে আনিসের হাঁতে দিতে দিতে বলল- সব সময় তোমার মাকে এভাবে ভালবেস! আনিস জ্বল জ্বল চোখে মহিলার দিকে তাকিয়ে আছে।
ছেলেটি যখন তার মায়ের কাছে পৌছাল তখন গোধূলি নেমেছে। মায়ের পাশে বসলো ছেলেটি, কবরের বুকে ফুলগুলো রাখতে রাখতে বলল- মা, আমি ভাত খাব! তোমার হাঁতে ভাত খাব! আমার অনেক খিদা পেয়েছে মা, আমাকে তুমি খাইয়ে দাও! তুমি জাননা তুমি না খাইয়ে দিলে আমি ভাত খাইনা। আমাকে ভাত দাও মা। ভাত দাও।
অশ্রু ঝরল ছেলের চোখে! এ অশ্রু ঝরা থামেনা কবু। কাঁদতে কাঁদতে ছেলেটি কবরের পাশেই ঘুমিয়ে পড়লো!!
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:০৫
মি্রাজ বলেছেন: আমার ও যতদিন মা ছিল, একবারের জন্য ও বুঝতে পারিনি মা না থাকলে কি বিপদে পড়তে পারি। আজ বিপদে পড়ার পর বুঝলাম।।
ধন্যবাদ কি করি আজ ভেবে না পাই
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯
ডাঃ মারজান বলেছেন: মা' এর জন্য একজন মা' হারার ভালোবাসা যার কোন তুলনা নেই। ভালো লাগলো পোস্টটি। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:০৮
মি্রাজ বলেছেন: মায়ের কোন পরিপূরক নাই।।
ডাঃ মারজান, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৭
গেম চেঞ্জার বলেছেন: হৃদয়ের গভীরে ছোঁয়া দিল গল্পটা!!
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৪
মি্রাজ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার
৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৮
স্পর্শিয়া বলেছেন: মায়ের জন্য প্রার্থনা।
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:১৯
মি্রাজ বলেছেন: ধন্যবাদ স্পর্শিয়া ।
চাই- সব সন্তানরা মায়েদের জন্য প্রার্থনা করুক।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৩৮
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আহ,,,স্পর্শী
আমিও মায়ের হাতে ভাত খেতে চাই
কিন্তু মা-ই আর ফিরেনা.............