নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
শরীর থেকে ক্রমশ কৃশ কালো গাউনটা খুলে ফেলে গা ঝাড়া দিয়ে উঠছে পূর্ব-পৃথিবীর শ্বেতাম্বরী সকাল। গায়ে এখন কবেকার খোয়া যাওয়া ঢাকাই মসলিনের মতো মিহি কুয়াশার শ্বেত অন্তর্বাস। কামাতুর সূর্য এটাও খুলে নেবে ক্রমশ, উন্মত্ত সূর্যের সঙ্গে দীর্ঘ মৈথুন শেষে পাশ ফিরবে পূর্ব-পৃৃথিবী। এরই মাঝে জন্ম হবে কতো গল্পের, কতো ঘটনার! সৃষ্টি হবে, নাশও!
গায়ে চাদর জড়িয়ে ঘরের মধ্যে বিছানায় বসে আছেন মধ্য চল্লিশের নিখিল। খোলাচুল নারীর গ্রীবার মতো আধো আলো-আধো অন্ধকারময় ঘর। কানে ভেসে আসছে ঘুমভাঙা পাখিদের কলতান; তাপসীর সংসার বিন্যাসের খসখস, ঠুসঠাস, টুংটাং আওয়াজ। বারান্দা থেকে আসছে তুহিনের ব্রাশ করার ঘসঘস শব্দ। ছেলেটা এতো জোরে ব্রাশ করে! ঘরের পিছন দিক থেকে ভেসে আসছে মানুষের গুঞ্জন। আর এইসব শব্দের ভেতর দিয়ে প্রবল ভিড় ঠেলে এগোনো দুঃসংবাদ শোনা কোনো মানুষের মতো কানে ভেসে আসছে মেয়েলি কান্নার সুর! সুরটা নিখিলের বড় চেনা, সুরটায় বড় মায়া!
ভীষণ শীত পড়েছে। মৃদুমন্দ বাতাসে দরজার পর্দাটা দুলছে। দক্ষিণের জানালাটা খোলা, পশ্চিমেরটা বন্ধ। পশ্চিমের জানালা বন্ধ তাতে কি, কান্নার সুর কি আর বাধা মানে! অনেকক্ষণ পর পর্দা ঠেলে তাপসী ঘরে ঢুকে বললেন, ‘কলেজে যাবে না?’
‘যাব।’ নিখিলের শান্ত উত্তর, সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক তিনি।
‘এখনও বসে রইলে যে?’
‘দেরিতে যাব।’
কি একটা কাজের জিনিস নিয়ে চলে গেলেন তাপসী, অতোটা খেয়াল করলেন না নিখিল। সংসারের জন্য তাপসী খুব খাটেন। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ঘরদোর পরিষ্কার করেন, রান্নাবান্না করেন। ছেলে-মেয়ে এবং নিখিলকে খেতে দেন, তারপর নিজে খেয়ে স্কুলে যান। জেলাস্কুলের সহকারী শিক্ষক তাপসী। স্কুল থেকে ফিরে আবার সংসারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেবল মাঝে মাঝে রেগে গেলে তাকে সামলানো মুশকিল!
আচ্ছা, এখন তাপসীর অনুভূতি কী? ওর খারাপ লাগছে না? এই যে ওর ঘরের পিছনের প্রতিবেশির চব্বিশ বছরের তরুণ ছেলেটা হঠাৎ করেই পৃথিবীর সাথে স্বেচ্ছায় সম্পর্ক ছেদ করলো। চোখের সামনেই বেড়ে উঠেছে ছেলেটা, দৌড়-ঝাঁপ করেছে, হেসেছে-খেলেছে। ভদ্র-শান্ত একটি ছেলে। ওর বাবার সাথে যতো শত্রুতাই থাক, তাপসীর কি একটুও মায়া জন্মেনি ছেলেটার ওপর! কষ্ট হচ্ছে না ছেলেটার জন্য? তাপসীর মুখ দেখে অবশ্য খুব বেশি কিছু বোঝা গেল না। নিখিলের মাথায় এলোমেলো ভাবনার ঘূর্ণিপাক!
হঠাৎ সম্মিলিত কান্নার রোল। ভীষণ আর্ত আর জোরালো। বোধহয় কোনো আত্মীয়-স্বজন এলো। এমন হয়, মৃত্যুবাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এলে শোকাতুর বাতাসের প্রবল একটা ঝাপটা লাগে, স্মৃতির ঝাঁপি খুলে যায়, বাড়ির মানুষের ব্যথা চাগিয়ে ওঠে। ব্যথা ছিটকে বেরোয় কান্না অথবা বিলাপ হয়ে। পরিস্থিতি শান্ত হতে একটু সময় লাগে।
নিখিলের বোবা সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। একসময় নেহা এসে তার ভাবনার মন্দিরে মৃদু ঘন্টা বাজিয়ে মৌনতা ভাঙলো, ‘বাবা, আমার পাঁচশো টাকা লাগবে।’
চোখ তুলে তাকালেন নিখিল। নেহা এবার আঠারোতে পা দিয়েছে। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। নিখিলের একমাত্র মেয়ে।
‘ড্রয়ার থেকে নিয়ে যা।’ মেয়েকে আবার দেখলেন নিখিল। মুখটা কেমন সন্ধ্যার মতো। ওর মুখে নাচতে থাকা হাসিটা আজ উধাও। হাজার হোক প্রতিবেশির ছেলেটা...!
নেহা ড্রয়ার থেকে টাকা নিয়ে চলে গেল। মায়ের কাছে ও টাকা চায় না। তাপসী একদিন ওকে বলেছিলেন, ‘তুই দু-দিন পর পর এতো টাকা নিয়ে কী করিস! খরুচে হাতটা একটু কমা।’
ব্যাস! এই নিয়ে মা-মেয়েতে লেগে গিয়েছিল কথা কাটাকাটি। তারপর থেকে ও আর তাপসীর কাছে টাকা চায় না। তাপসী দিলেও নেয় না। এমনিতে মায়ের সাথে অন্য সব ব্যাপারে ঠিক আছে। কেবল টাকার ব্যাপারেই মাকে এড়িয়ে চলে। এই নিয়ে তাপসীর দুঃখভরা অনুযোগ নিখিলের কাছে, ‘মেয়েকে লাই দিয়ে তুমি মাথায় তুলেছ। শ্বশুরবাড়ি গিয়ে এই জেদ বজায় রাখলে কপালে দুঃখ আছে!’
উচ্চকিত কান্নার আওয়াজ নেই এখন, এখন গুঞ্জনটাই বেশি; মৃত্যুবাড়ির কাজের ব্যস্ততার সুস্পষ্ট শব্দ।
‘মা আমার সাইকেলের টায়ারটা বদলাতে হবে। টাকা লাগবে।’ চেঁচালো তুহিন।
নিখিলের ছেলে। দূরন্তের এক শেষ। ক্লাস নাইনে পড়ে। তুহিন বাবার চেয়ে মায়ের ন্যাওটা বেশি। তার যতো চাওয়া, যতো আব্দার সব মা আর বোনের কাছে। মায়ের দেওয়া টাকা বাড়তি খরচ করে ফেললে দিদির কাছে হাত পাতে, নয়তো দিদির ব্যাগ থেকে চুরি করে। পরে অবশ্য চুরির কথা স্বীকার করে। আর ভাই-বোনে লেগে যায় ধুন্দুমার কাণ্ড!
‘বাবা আমি বেরুচ্ছি। মা বেরুচ্ছি।’ কলেজের উদ্দেশ্যে বারান্দা থেকে নামলো নেহা।
‘আজকে টায়ারটা ঠিক করি, কাল থেকে তোকে আমি কলেজে লিফট দেব। তোর রিক্সা ভাড়াটা আমাকে দিস। আজ কিছু অ্যাডভান্স কর।’ সাইকেলের টায়ার টিপতে টিপতে বললো তুহিন।
তুহিনের প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে নেহা বললো, ‘হুম, গাড়ির নিচে চাপা পড়ি আর কী!’
‘ইস! যে না ফড়িং! তুই বসে থাকলে আমি টেরই পাব না! আচ্ছা মাসে পাঁচদিনের টাকা ছাড়, এবার দু-দিনের অ্যাডভান্স দে।’ সাইকেল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়ালো তুহিন।
‘যা, সর।’ চলে গেল নেহা।
এ বাড়ি নীরব। ও বাড়িতে এবার বিলাপ! পাহাড়ের গায়ে গায়ে ধাক্কা খাওয়া মন্দিরের ঘণ্টার শব্দের মতো বিলাপের ধ্বনি যেন আছড়ে পড়ছে নিখিলের হৃদয়ে। কিন্তু মন্দিরের ঘণ্টার শব্দের মতো মিলিয়ে যাচ্ছে না।
‘মা, তাড়াতাড়ি।’ আবার তাড়া দিল তুহিন।
স্নান সেরে বের হলেন তাপসী। মাথায় গামছা জড়িয়ে খোঁপা বাঁধা। গায়ে ব্লাউজ নেই। বুকে কাপড়ের আবরণ। মাথা থেকে জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে ঘাড় বেয়ে পিঠে, গলা বেয়ে নেমে যাচ্ছে বুকের সরোবরে, হয়তো পেটের অগভীর কুয়োতেও। ঘরে গিয়ে ব্যাগ থেকে টাকা এনে তুহিনের হাতে দিলেন তাপসী।
টাকা হাতে নিয়ে বললো তুহিন, ‘চিক্কু স্যারকে বোলো, আমার ফার্স্ট ক্লাসে যেতে একটু দেরি হতে পারে। টায়ারটা পাল্টে তারপর যাব।’
ধমকালেন তাপসী, ‘থাপ্পড় খাবি। তোকে না বলেছি, স্যারকে এসব বলবি না।’
‘ওনার নাম ধরে ডাকলে কেউ এখন চিনবে না! আমি তো তবু চিক্কু স্যার বলি, অন্যরা তো চিক্কুমামু-চিক্কুকাকু বলে!’
‘সবাই বললেও তুই বলবি কেন?’
‘স্কুলের মতো বাড়িতেও তোমার নানান রকম বিধি নিষেধ। বাড়িতে যে তুমি আমার মা, এটা তোমার মনেই থাকে না! এজন্যই আমি বাবার কলেজে ভর্তি হবো না। ঢাকায় ভর্তি হবো। দিদির বুদ্ধি কম, তাই বাবার কলেজে ভর্তি হয়েছে। কলেজে বাবা থাকলে নিশ্বাস নেওয়া যায়!’
বেল বাজিয়ে সাইকেল ঠেলতে ঠেলতে রাস্তায় উঠলো তুহিন। তাপসী তুহিনের দিকে তাকিয়ে রইলেন চোখের আড়াল না হওয়া পর্যন্ত। ছেলেটা কতো বড় হয়ে গেল, অথচ এখনও যেন তিনি স্তনে ওর কচি মুখের স্পর্শ টের পান!
ঘরে ঢুকলেন তাপসী। ওর গা থেকে সাবান মিশ্রিত স্নিগ্ধ গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো সারা ঘরে, নিখিলের ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে। দক্ষিণের জানালা দিয়ে কিছু গন্ধ হয়তো বাইরে বেরিয়ে মিলিয়েও গেল বাতাসে!
খোলা পিঠ নিখিলের দিকে দিয়ে অন্তর্বাস-ব্লাউজ পরছেন তাপসী। নিখিল এখন একটা বই সামনে নিয়ে টেবিলে বসে আছেন। একটা অক্ষরও পড়েননি। বইয়ের পৃষ্ঠাজুড়ে কেবল পলাশ। শৈশব-কৈশোর, যৌবনের পলাশ। তাপসী এখন নিখিলের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আলনা থেকে শাড়ি নিয়ে পরছেন। শাড়িটা সায়ার ওপরে এক প্যাচ, বাকিটা মেঝেতে লুটিয়ে। তখনই নিখিল চোখ তুলে চাইলেন তাপসীর দিকে।
জামবাটি ভর্তি শীতের সকালের মাখনের মতো তাপসীর তলপেট। মাখনের ভেতরের সরু খেঁজুর পাতার মতো সামান্য ভাঁজ। বয়সের তুলনায় যথেষ্ট কম। তাপসীর তলপেটের ভাঁজ নিখিলের চেনা। ভাঁজ-নিভাঁজের সাথে প্রায় রোজই নিশিথে হয় সাক্ষাৎ, হয় গভীর আলাপন। এখন এই অবস্থায় তাপসীকে যেন নতুন লাগছে। শাড়ি পরিধানরত তাপসীকে তিনি দেখেন না অনেকদিন। ছেলে-মেয়ে বাড়িতে নেই। অন্য সময় হলে তাপসীকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন। শৃঙ্গার রসের কথা বলে রসিকতা করতেন। মন দূরন্ত হলে অন্যকিছুও হতে পারতো! অথচ এখন তার মনে হচ্ছে তাপসী শাড়ি পরতে এতো সময় নিচ্ছে কেন! তাড়াতাড়ি স্কুলে যায় না কেন! এখন একা হবার অদম্য তাড়না তার ভেতরে।
‘ও বাড়িতে একবার যাবে না?’ কোমরে শাড়ি গুঁজতে গুঁজতে বললেন তাপসী।
‘তুমি গিয়েছিলে?’
‘গিয়েছিলাম। যতো যাই হোক, এই সময়ে না গেলে কী ভাল দেখায়!’
‘ও এমন কাণ্ড করলো কেন?’
‘কোন মেয়ের সাথে নাকি সম্পর্ক ছিল। তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এই নিয়ে বাপ-বেটাতে কাল ঝগড়া হয়েছে। তাই অভিমান করে.....’
‘শিবু একটা শুয়োর...’
‘তলে তলে আরো কী হয়েছে কে জানে! গুষ্ঠির স্বভাব-চরিত্র তো সিনেমা বানানোর মতো!’
তাপসী ঢিলটা কোথায় ছুঁড়লো! বুঝে উঠতে পারছেন না নিখিল।
‘এভাবে বলছো কেন! পলাশের আচরণে খারাপ কিছু দেখেছ?’
তাপসীর শাড়ি পরা শেষ। বাড়িতে পরার শাড়িটা ভাঁজ করে আলানায় রেখে বললেন, ‘খোঁজ নিয়ে তো দেখিনি কখনও! যাকগে, তুমি পারলে একবার যেও।’
তাপসীর কথায় বিরক্ত হলেন নিখিল। নিজেকে গুছিয়ে বের হবার সময় তাপসী বললেন, ‘ব্যাংক থেকে টাকাটা তুলে এনো।’
‘আজ পারব না।’
‘সুব্রত টাকাটা নিতে আসবে আজ।’
‘বললাম তো আমি পারব না। সব দায়িত্ব কি আমাকেই নিতে হবে!’ নিখিলের মুখ নিসৃত প্রতিটি শব্দে রুক্ষ কাঁকর মেশানো।
‘আশ্চর্য! রেগে যাচ্ছ কেন তুমি?’
‘রাগলাম কোথায়!’ বলে নিখিল নিজেই অনুভব করলেন তার গলার স্বরের অস্বাভাবিকতা। তাপসীর চোখ থেকে নিজের বিব্রত চোখ নামিয়ে নিলেন। বুঝতে পারলেন পলাশের দিকে ছোড়া কাদা তিনি দলা পাকিয়ে ঢিল হিসেবে নিক্ষেপ করেছেন তাপসীর দিকে।
‘মাঝে মাঝে তোমাকে বুঝতে পারি না, বড্ড অচেনা লাগে!’ বলেই ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে গেলেন তাপসী।
নিখিল থম মেরে বসে রইলেন। বাড়িতে এখন তিনি একা। তার কাছে এখন এই নিঃসঙ্গতার অনুভূতি বদ্ধ কুঠুরিতে এক ঝাপটা শীতল বাতাসের নিবিড় স্পর্শের মতো! এবার ইচ্ছে মতো শ্বাস নিতে পারবেন। এতোক্ষণ তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল যেন!
টেবিল ছেড়ে উঠলেন নিখিল। টেবিলে রাখা চায়ের কাপে দুটো চুমক দিয়ে ফেলে রেখেছেন। গলা দিয়ে চা নামতে চায়নি। তাপসী তখন কাছে দাঁড়িয়ে ছিল তাই বাধ্য হয়ে চুমুক দিয়েছিলেন। এখন শীতল হয়ে পড়ে আছে চা-টা। পলাশও এখন শীতল। কতোটা শীতল! অথচ কাল বিকেলেও যখন রাস্তায় দেখা হলো, পলাশের কাঁধে হাত রেখে তিনি কথা বলেছেন। তখন কী উষ্ণ ছিল পলাশের শরীর! ওর শরীরের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়েছিল তার হৃদয়ে। তখন তো একবারও বোঝা যায়নি ওর ঐ উষ্ণ শরীর এতো তাড়াতাড়ি শীতল হবে!
ঘরের মধ্যে পায়চারি করছেন নিখিল। বুকের ভেতর একটা কালো পাথর চেপে বসেছে। সেই পাথরটা আছড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে শিবু মাস্টারের মাথায়। শালা হারামীর বাচ্চা, একটা গোঁয়ার শুয়োর। ও কী করে সন্তানের মর্ম বুঝবে! শালা খোঁজা কোথাকার!
মনে মনে ইচ্ছে মতো শিবু মাস্টারকে গাল পেরেও শান্ত হচ্ছে না নিখিলের মনটা। ক্রমশ ভারী হয়ে আসছে বুক। বাঁশঝাড়ে বাঁশের গোড়ায় দা’য়ের কোপ পড়ছে। সেই শব্দ তীরের মতো এসে বিঁধছে নিখিলের বুকে। একটু পরই করাতে গাছ কাটার শব্দ হলো। খুব কাছ থেকে শব্দটা আসছে। নিখিলের বুঝতে বাকি রইলো না কোন গাছটি কাটা হচ্ছে। গাছটি নিখিলের লাগানো। তখন ঘরের পিছনের ছয় শতাংশের লম্বা ফালির জমিটুকু নিখিলদের দখলে ছিল। শিবু মাস্টারের বাবার কাছ থেকে কিনেছিলেন নিখিলের বাবা। শিবু মাস্টারের বাড়িটা অনেক বড়। মফস্বল শহর হলেও বাগান-বাঁশঝাড় বেষ্টিত বিশাল বাড়ি। আগে আরো বড় ছিল। বিক্রি করতে করতে এখন কিছুটা ছোট হয়ে এসেছে।
ওই ছয় শতাংশ জমির কাগজপত্রে কিছু ঝামেলা ছিল। তা ঠিক করার আগেই শিবু মাস্টারের বাবা মারা যান। তারপর তো জমির দাম হু হু করে বেড়েছে। শিবু মাস্টারের লোভাতুর চোখ পড়েছে এই ছয় শতাংশ জমির ওপর, জমির মালিকানা দাবী করে মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন। সেটা পলাশের জন্মের অনেক পরে। সবে নেহা জন্মেছে তখন। উকিল নোটিশ হাতে পেয়ে নিখিল তো বিস্ময়ে হতবাক!
মামলা লড়লে জমিটা হয়তো নিখিল-ই পেতেন। কিন্তু মামলা লড়তে চাননি। তাপসী বুঝিয়েছিলেন, অন্য আত্মীয়রা বুঝিয়েছিলেন। তবু মামলা লড়েননি নিখিল। জমির দখল ছেড়ে দিয়েছেন। তার মনে হয়েছিল কার বিরুদ্ধে মামলা লড়বেন তিনি, পরোক্ষে নিজের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে! তার মামলা না লড়াটা আজও তাপসীর কাছে এক বিস্ময়!
জমিটা যখন নিখিলের দখলে ছিল, তখন অনেকগুলো ফলের গাছ লাগিয়েছিলেন তিনি। আম, জাম, জামরুল, ডালিম ইত্যাদি ফলের গাছ। গাছ কেনার সময় নার্সারির লোকটা একটা গাছ দেখিয়ে বলেছিল, ‘দাদা, এই গাছটা নিয়ে যান। বিদেশি ফলের গাছ।’
গাছটার নাম বলতে পারেনি লোকটা। নিখিল নিয়ে এসেছিলেন গাছটি। ঘরের পিছন দিকের জানালা থেকে সামান্য দূরে লাগিয়েছিলেন। অন্য গাছগুলোর সাথে এই গাছটিও বেড়ে উঠেছিল যত্নে। তারপরই তো ঐ মামলা, অতঃপর জমির দখল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
জমির দখল ছেড়ে দিলেও গাছগুলোর ওপর মায়া ছিল নিখিলের। জানালা খুলে প্রায়ই তাকিয়ে থাকতেন গাছগুলোর দিকে। একে একে অন্য গাছগুলোতে ফুলের পরে ফল ধরেছে। কিন্তু ফলের স্বাদ নেওয়া হয়নি তার। আর বিদেশী গাছটিতে ধরেছে চমৎকার গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল। গাছভর্তি থোকা থোকা নীল রঙের ফুল হয়, দেখতে বেশ লাগে। ফুলের পরে ফলও ধরে, তবে সে ফল খাওয়া যায় না। ফলগুলো দেখতে অনেকটা আগের দিনের কাজললতার মতো, গোলাকৃতি এবং কালো, চিকন বোঁটা। তখনও নিখিল জানতেন না এটা কী ফুলের গাছ। ফুলগাছটির পরিচয় জানবার কৌতুহলে একদিন এক থোকা ফুল কলেজে নিয়ে গিয়েছিলেন। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাবিব আহমেদকে দেখিয়ে তার কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন ফুলগাছটির ইতিবৃত্ত। ফুলগাছটির বাংলা নাম-নীলগুলমোহর। বৈজ্ঞানিক নাম Jacaranda Mimosifolia. আদি নিবাস লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা-বলিভিয়ায়। তবে এখন এই বিশ্বায়নের যুগে মানুষের মতো নীলগুলমোহরও ছড়িয়ে পড়েছে সারা পৃথিবীতে, মানুষের হাত ধরে।
নার্সারির লোকটা হয়তো ভুল জানতো কিংবা জেনেও তাকে মিথ্যে বলেছিল বিক্রি করার জন্য। যেমন জেনেও তাকে একটি মিথ্যে বলতে হয় সবার কাছে। চব্বিশ বছরের একটি মূর্তিমান সত্যকে তিনি নিজের ভেতরে লুকিয়ে রাখেন। আরও একজন জানেন এই সত্য। তিনিও লুকিয়ে রাখেন। রাখতে বাধ্য হন। মিথ্যে বিদেশী ফলের আড়ালে যেমন অনেক বছর লুকিয়ে ছিল নীলগুলমোহরের গাছটি, তেমনি মিথ্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে একটি সত্য!
নীলগুলমোহরের গাছটি এখন কাটা হচ্ছে। অভিমানে দগ্ধ হৃদয় জুড়োতে পলাশ শীতল হয়েছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নীলগুলমোহরের গাছটিতে ঝুলে! গাছটি ওর বড় প্রিয় ছিল। ফুলগুলো খুব পছন্দ করতো ও। নীলগুলমোহর গাছটিও এখন চিতায় উঠবে ওর সাথে!
হুড়মুড়িয়ে পড়লো নীলগুলমোহর গাছটি। ভাবনায় ডুবে থেকে গাছ পড়ার শব্দে কেঁপে উঠলেন নিখিল। বুকটা শুকিয়ে গেছে। মনে হচ্ছে কতোকাল তিনি জল খান না! উঠে গিয়ে জল খেয়ে আবার চেয়ারে এসে বসলেন। অমনি হাঁটি হাঁটি পা পা করে কাছে এলো পলাশ! পলাশ তাকে কাকু বলে ডাকতো। শিবু প্রাইমারি স্কুলের মাস্টার ছিলেন। এখন এল পি আর এ আছেন। শহর থেকে সাইকেল চালিয়ে সাত কিলোমিটার দূরের স্কুলে আসা-যাওয়া করতেন। শিবুমাস্টারের অগোচরে লুকিয়ে পলাশকে আদর করতেন নিখিল। কোলে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। পলাশের মা দেখে হাসতেন। কাছে এসে দাঁড়াতেন। পলাশের মায়ের চোখে উড়তো কতো না বন কৈতর! নিখিলের চোখে অপার বিস্ময়!
ও বাড়িতে আবার উচ্চকিত কান্নার রোল। হয়তো আবার কোনো আত্মীয় এসেছে। এক দঙ্গল কাক ডেকে ডেকে মুহূর্তগুলো ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে।
চোখের সামনে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছে পলাশ। গোঁয়ার শিবুমাস্টার যখন ওকে মারতেন তখন নিখিলের ইচ্ছে করতো ছুটে গিয়ে শিবুমাস্টারের হাতটা মুচড়ে দিতে। কিন্তু ইচ্ছেটাকে গলা টিপে মারতে হতো। অক্ষমতায় নিজের মাংস খামচে ধরতেন। মাঝে মাঝে তাপসীকে বলতেন, ‘এইটুকু ছেলেকে কেউ এভাবে মারে! গোঁয়ার শুয়োর একটা!’
তাপসী বলতেন, ‘তার ছেলেকে সে মারবে, তাতে তোমার কী!’
কী সুন্দর দেখতে হয়েছিল পলাশ! শিবুমাস্টার তো খাটো, কুচকুচে কালো। কঙ্কালসার চেহারা। চোয়াল ভাঙা। আবার চুলের কী বাহার! মাথাভর্তি কাঁচা-পাকা ব্যাকব্রাশ করা চুল। বুক পকেটে চিরুনী রাখেন, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঘন ঘন চুল আচড়ান। অথচ জোর বাতাসে উড়িয়ে নেয় আর কী! পলাশের মায়ের চেয়ে অন্তত ষোল বছরের বড়। অথচ ওর মা সুনিতা কী সুন্দরী আর বুদ্ধিমতী! শিবু মাস্টারের সম্পত্তি দেখে মেয়েটাকে বিসর্জন দিয়েছিলেন সুনিতার বাবা-মা!
পলাশ লেখাপড়ায় ভাল ছিল। গান গাইতো ভালো। ধারালো বুদ্ধি ছিল। শিবুমাস্টারের নির্দেশ মতো এ বাড়িতে ওর আসা বারণ ছিল। কিন্তু শিবুমাস্টার বাড়িতে না থাকলে ও আসতো। কখনও কখনও পিছনের জানালায় টোকা দিত। জানালা খুললেই বই-খাতা বাড়িয়ে দিয়ে বলতো, ‘কাকু এই অংকটা করে দাও।’
অংক কষে দিতেন নিখিল। একদিন তাপসী বলেছিলেন, ‘তোর বাবা তোকে অংক করে দেয় না?’
‘বাবা অংক করানোর চেয়ে মারে বেশি।’
‘তোর মা দেখলে রাগ করবে না?’
‘মা-ই তো বলেছে, তোর কাকু খুব ভাল মাস্টার। কিছু না পারলে কাকুকে দিয়ে দেখিয়ে নিস।’
অন্যের বউয়ের কাছে সার্টিফিকেট পাওয়ার খেসারত নিখিলকে দিতে হয়েছিল ঘরের বউয়ের কাছে!
নিখিল বেশির ভাগ দিন দুপুরের পরপরই কলেজ থেকে ফিরে আসতেন। তখন বাড়িতে কেউ থাকতো না। ঐ সময়টায় প্রায়ই পিছনের জানালায় টোকা পড়তো। খুলে দিতেই পলাশ বলতো, ‘কাকু হাঁ কর।’
হাঁ করলেই মুখে গুঁজে দিতো ওর মায়ের হাতের যত্নে বানানো পিঠা অথবা অন্য কোনো খাবার। মাঝে মাঝে নিখিল ওর কোমল হাতের আঙুলে লেগে থাকা খাবার চেটে খেতেন। ওর ছোট্ট আঙুল মুখে পুড়ে নিতেন। জল আসতো নিখিলের চোখে। পলাশের মা আড়াল থেকে দেখে চোখের জল মুছতেন।
পলাশ আরেকটু বড় হলে জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে নানান রকম প্রশ্ন করতো নিখিলকে। নিখিল পরম মমতায় ওর সব প্রশ্নের উত্তর দিতেন। একদিন তাপসীর সামনেই পলাশ বলেছিল, ‘জানো কাকু, মা বলেছে আমি বড় হলে তোমাদের জমি যেন ফিরিয়ে দিই।’
তাপসীর সামনে বড় অস্বস্তিতে পড়েছিলেন নিখিল। পলাশের মা যে কী, ছেলেকে এসব বলার কী দরকার!
তাপসী প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কেন, তুই ফিরিয়ে দিবি কেন?’
‘বা রে! ও জমি তো তোমাদের। বাবা জোর করে নিয়েছে। বাবা মরে গেলে আমি তোমাদের জমি তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেব।’
তাপসী ভ্রু কুঁচকে পলাশের চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে ছিলেন!
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো পলাশ। নিখিল কতোবার তাপসীকে মিথ্যে কাজের কথা বলে পলাশের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। নিখিলকে দেখে পলাশ অবাক হয়ে বলতো, ‘কাকু তুমি!’
‘কাজে এসেছিলাম। আমার আসার কথা শুনে তোর মা কিছু টাকা পাঠালো।’
‘দেখো দেখি, তোমাকে আবার শুধু শুধু কষ্ট দিলো!’
‘কষ্ট আর কী! আমি তো এদিক দিয়েই যাই। টাকার কথা তোর বাবাকে আবার বলিস না। বাইরে থাকিস, কতো রকম খরচ। তোর বাবা তো এসব বোঝে না। তাই তোর মা গোপনে পাঠায়।’
দিনের পর দিন খুব যত্ন করে পলাশকে এই মিথ্যেটা বলেছেন নিখিল। পলাশের মা টাকা পাঠাতেন না, তিনি নিজেই দিতেন। মিথ্যেটা বলতে পেরে সুখানুভূতি হতো। মিথ্যে বলায় এতো সুখ!
তারপর পলাশকে নিয়ে পুকুরের পাড়ে গিয়ে বসতেন নিখিল। খাবার কিনে নিয়ে যেতেন। দু-জনে একসাথে বসে খেতেন। পুকুরে তখন অতিথি পাখির ছুটোছুটি, খুনসুটি। পলাশের সঙ্গ ভীষণ উপভোগ করতেন নিখিল। ওকে ছেড়ে আসতে কষ্ট হতো। ফেরার সময় বুকের ভেতরটা মুচড়ে যেতো। ওকে বুকে জড়িয়ে ধরতেন।
অস্থির লাগছে নিখিলের। আজ তিনি কিছুতেই কলেজে যাবেন না। ক’দিন যাবেন না, তাই বা কে জানে! মানুষের কণ্ঠ ভেসে আসছে। কান্নার সুরটা চড়ছে। পশ্চিমের জানালার পাল্লা দুটো খুলে দিতেই ঘরের মেঝেতে ম্রিয়মাণ আলো ছিটকে পড়লো বিষন্নতার মতো।
করাতে-কুড়ালে মিলে নীলগুলমোহরের গাছটা ছিন্নভিন্ন করেছে। জায়গাটা এখন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। কুয়াশার অন্তর্বাস খুলে এখন প্রকৃতিতে রৌদ্রলেহন। উঠোন ভরা মানুষ। তুলসীতলায় ভিড়টা বেশি। ওখানেই শুইয়ে রাখা হয়েছে পলাশকে। চারপাশে লোকজন বেষ্টিত হয়ে বারান্দায় বসে আছেন শিবু মাস্টার। নিখিলের ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে কুড়ালের কোপে ওর মুণ্ডটা কেটে ফেলতে!
মানুষের পায়ের ফাঁক দিয়ে একবার পলাশের পায়ের দিকটা দেখতে পেলেন নিখিল। ওর ফ্যাকাশে পায়ের তালু বড় পাথরের চাঁই হয়ে যেন আছড়ে পড়লো বুকে! মুখটা বড় দেখতে ইচ্ছে করছে! কিন্তু কী করে সহ্য করবেন ঐ স্তব্ধ মুখ!
কয়েকজন লোক বাঁশের খাটিয়া নিয়ে ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই একপাশ খানিকটা ফাঁকা হলো। সাদা কাপড়ে আবৃত করে পলাশকে তোলা হলো খাটিয়ায়। মুখটা দেখার চেষ্টা করেও দেখতে পেলেন না নিখিল। ঘর থেকে ভেসে এলো আর্তনাদ। উঠোনে ছুটে এলেন ওর মা। ওর মাকে ধরলো কয়েকজন মহিলা। তিনি ছুটে যেতে চাইছেন ছেলের কাছে। আহ্! মায়ের বড় আদরের ছেলে। বিয়ের পর কয়েক বছর কোনো সন্তান হচ্ছিল না। অথচ সন্তানের জন্য বুক জুড়ে ছিল তীব্র আকাঙ্ক্ষা!
সে বছর মধ্য চৈত্রে আকাশে বিদ্যুৎ চমকালো, তৃষিত জমিনের মুখে হাসি ফুটিয়ে রাত্রে বৃষ্টি নামলো, অন্ধকারে বৃষ্টিতে ভিজে নিখিলের ঘরে এলো একটি ছায়ামূর্তি। পরের বছর শীতে পলাশের জন্ম হলো। যক্ষের ধনের মতো পলাশকে আগলে রাখতেন ওর মা। পলাশের গায়ে হাত তোলা নিয়ে শিবু মাস্টারের সাথে কতো ঝগড়া হয়েছে ওর মায়ের! সেই পলাশ আজ...। ছেলের শোকে মাটিতে আছাড়ি-পিছাড়ি খাচ্ছেন পলাশের মা। নিখিলের শরীর কাঁপছে!
হরিধ্বনি দিয়ে খাটিয়া তোলা হলো। পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী আর যন্ত্রণাদায়ক বোঝাটা এখন বইতে ইচ্ছে করছে নিখিলের। পরপর হরিধ্বনি দেওয়া হচ্ছে। জোয়ান ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে, তাই খোল-করতাল সহযোগে গান গাওয়া হচ্ছে না।
খাটিয়া নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে গেল শ্মশান যাত্রীরা। নিখিলের মনে হচ্ছে তার হৃদয়ের একটা অংশ কেউ ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে। ছুটে যাবেন নাকি শ্মশানে! কিন্তু নিজেকে সামলাতে পারবেন তো! উঠোনে আত্মীয়-স্বজন, পলাশের মা আর্তনাদ করছে। আর্তনাদরত অবস্থায় একবার পুবের দিকে তাকালেন পলাশের মা। দুইহাতে জানালার গরাদ ধরে তাকিয়ে আছেন নিখিল। চোখাচোখি হলো। নিখিলের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে জল, নিখিলের চোখে চোখ রেখেই একজন আত্মীয়ার কোলে মূর্ছা গেলেন পলাশের মা!
ঢাকা।
ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫২
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা................
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩২
ঘুম হ্যাপি বলেছেন: লেখা ভালো লেগেছে।