নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুনর্জাগরণ

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ফাঁকা রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটছে চৌদ্দ বছরের শাওন; চিকন শারীরিক গড়ন, শ্যামবর্ণ গায়ের রঙ, সুন্দর মায়াবী মুখশ্রী; গায়ে স্কুলের ইউনিফর্ম আর কাঁধে ব্যাগ, বাসায় ফিরছে সে, এখন তার বাসায় ফেরার কথা না, বাস চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঢাকাসহ দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের জন্য সরকারের কাছে নয় দফা দাবী জানিয়ে দাবী পূরণের লক্ষ্যে যে ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে, এখন তার সেই আন্দোলনে থাকার কথা। তাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্ত্বরে অবস্থান নিয়েছে, এতোক্ষণ বন্ধুদের সঙ্গে সেখানেই ছিল সে, গলা ফাটিয়ে মিছিল করছিল, গাড়ির লাইসেন্স চেক করছিল, ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন গাড়ির চাবি নিয়ে নিচ্ছিল আর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা গাড়িগুলো ছেড়ে দিচ্ছিল, অ্যাম্বুলেন্স এবং রোগী বহন করা যানবাহনের পথ করে দিচ্ছিল। রাষ্ট্রের ব্যর্থ ট্রাফিক পুলিশের দায়ভার নিজের অপোক্ত কাঁধে তুলে নিয়েছিল। হঠাৎ-ই তার পুলিশ অফিসার বাবা রিয়াজের ফোন, ‘কোথায় তুই?’

কী বলবে বুঝে উঠতে পারছিল না শাওন। তার বদরাগী বাবা, বাবাকে সে ভীষণ ভয় পায়! তাকে চুপ করে থাকতে দেখে ফোনের ওপার থেকে ধমক দিলো রিয়াজ, ‘কথা কস না ক্যান? কোথায় তুই?’

‘১০ নম্বরে।’

‘আন্দোলন মারাচ্ছো! দশ মিনিটের মধ্যে বাসায় না গেলে তোর চামড়া ছুলে ফেলবো। যা, বাসায় যা। এক্ষুনি বাসায় যাবি।’

অগত্যা বাবার হাতের মারের ভয়ে বাসায় ফিরছে সে। কিছুদূর হেঁটে আসার পর শুরু হয়েছে বৃষ্টি, রাগের চোটে কোনো দোকানে বা কোথাও আশ্রয় নেয়নি, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরছে। রাগে গা জ্বলছে তার, চৌদ্দ বছর বয়সের বেয়াড়া রাগ; ইচ্ছে করছে স্কুল ব্যাগটা বৃষ্টির মধ্যে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আন্দোলনে যোগ দিতে, তারপর আর বাসায় না ফিরে নিরুদ্দেশযাত্রা করতে। রাস্তার ওপরে থাকা একটা ইটের টুকরোয় জোড়ে লাথি মরলো, ইটের টুকরোটা গড়াতে গড়াতে গিয়ে লাগলো একটা বিদ্যুতের খুঁটিতে। রাগে ফুলতে ফুলতে আন্দোলনস্থল বা নিরুদ্দেশের পথে নয়, বাসার গলিতেই ঢুকে পড়লো সে।

বাসার কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলো শাওনের মা ফারজানা, ‘ভিজছিস ক্যান তুই, কোথাও দাঁড়াইতে পারলি না?’

মায়ের মুখের দিকে শুধু একবার তাকালো শাওন, উত্তর দিলো না, ক্ষোভের সঙ্গে কাঁধের ব্যাগটা ডাইনিং রুমে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো।

ছেলের মুখ আর ব্যাগ ছুড়ে ফেলার ধরন দেখেই ফারজানা অনুমান করতে পারলো কিছু একটা হয়েছে। পুনরায় প্রশ্ন করলো, ‘কী হইছে তোর?’

এবারো মায়ের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে শাওন নিজের ঘরে ঢুকে জোরে শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। শাওনের দাদী ফাতেমা বাথরুম থেকে গোসল সেরে বেরিয়ে নাতির ওভাবে চলে যাওয়া দেখে ফারজানাকে বললেন, ‘কী অইছে বৌমা?’

‘কী জানি, কিছুই তো কয় না! মনে হয় কারো সাথে মারামারি করছে!’

তখনই ফারজানার সেলফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। সে নিজের ঘরে গিয়ে দেখলো রিয়াজ ফোন করেছে। ফোন রিসিভ করলো, ‘হ্যালো।’
‘শাওন বাসায় ফিরছে?’
‘হ্যাঁ ফিরছে।’
‘ও যেন আর বাসার বাইরে না যায়।’
‘আইসা তো রাগ দ্যাখাতেছে, কী অইছে ওর?’
‘ছাত্র আন্দোলন মারাইতে গেছিলো। ওরে বাইরে যাইতে দিয়ো না। আমি রাখলাম।’
ফোন কেটে দিলো রিয়াজ।

রিয়াজ বাসায় ফিরলো অনেক রাতে, তখন বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। গোসল করে, খেয়ে শুয়ে পড়লো। সারাটা দিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে কাটাতে হয়েছে। বড় ক্লান্ত শরীর। আবার উঠে যেতে হবে ভোরবেলায়। পাশ ফিরে শুয়ে ফারজানাকে বললো, ‘শাওন যেন কালকে স্কুলে না যায়। মোটকথা ঘরের বাইর হইতে দিবা না।’

রিয়াজের ক্লান্ত শরীরে ঘুম এসে গেল সহজেই। এক ঘুমে রাত পার; সকালে উঠেই ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে ইউনিফর্ম পরে আবার বেরিয়ে পড়লো।

দুই

লিয়াকত হোসেনের ইচ্ছে ছিল তার একমাত্র ছেলে রিয়াজ মানুষ হবে; তার কাছে মানুষ হবার মানে কেবল মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে একটা ভাল চাকরি পাওয়া, মাস শেষে ভাল বেতন পাওয়া, অবস্থাপন্ন ঘরের সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে সন্তানের জন্ম দিয়ে নিজের স্ত্রী-সন্তান পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে থাকা নয়; তার কাছে মানুষ হওয়া মানে নিজের পরিবারের বাইরেও আরো অনেক মানুষকে নিয়ে ভাবা, তাদের সুখ-দুঃখের কথা শোনা, তাদের বিপদে পাশে দাঁড়ানো, তাদের মুখে হাসি ফোটানো, ক্ষুধার্ত এবং অসুস্থ পশু-পাখিকে সেবা করা; মোট কথা মানুষ, পশুপাখি, উদ্ভিদ সবাইকে নিয়ে বাঁচা। কিন্তু ইচ্ছে পূরণ হয়নি লিয়াকত হোসেনের, রিয়াজ তার আশার বেড়া ডিঙিয়ে হয়েছিল ছাত্রলীগকর্মী, তারপর হয়েছে পুলিশ; ছাত্রলীগকর্মী বা পুলিশ হলে যে মানুষ হওয়া যায় না ব্যাপারটা তা নয়, কিন্তু রিয়াজের কর্মকাণ্ড দেখার পর লিয়াকত হোসেনের মনে হয়েছে- রিয়াজ মানুষ হয়নি। এই ইচ্ছে পূরণ না হবার কারণে তিনি মাঝে মাঝে মনোকষ্টে ভোগেন।

লিয়াকত হোসেন নিজে কমিউনিস্ট পার্টি করতেন। ষাটের দশকে জেল খেটেছেন, মাথায় হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে বেরিয়েছেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে, এক শহর থেকে আরেক শহরে। আইয়ুব খান আর মোনায়েম খানের পোষা গুণ্ডাবাহিনী ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশন বা এনএসএফ এর হাতে মার খেয়েছেন অনেকবার। এখন যেমন ছাত্রলীগ ছাত্র ইউনিয়ন বা অরাজনৈতিক প্রগতিশীল ছাত্রদের যে কোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, মিছিল বা মানববন্ধনে সশস্ত্র হামলা করে, হাতুরিপেটা করে ছাত্রদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ছাত্রদের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে দেয়, প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মানুষ মারে; ষাটের দশকে এনএসএফও তাই করতো। তখনকার ছাত্রলীগও কী কম মার খেয়েছে এনএসএফ এর হাতে! তখনকার ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকেই এখন মন্ত্রী হয়ে ভুলে গেছেন সে-সব দিনের কথা। তাই এখন তারা ছাত্রলীগের বেয়াড়া লাগাম টেনে ধরা তো দূরের কথা, বরং ছাত্রলীগকে নানাভাবে উস্কে দেন অরাজনৈতিক ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।

ব্যাপারটা এমন নয় যে লিয়াকত হোসেন রিয়াজকে নিজের ছাঁচে ঢেলে তার নিজের ভাষায় মানুষ বানাবার চেষ্টা করেননি। ছেলেবেলা থেকেই রিয়াজকে মার্ক্স, লেনিন, চে গেভারার জীবনের গল্প শুনিয়েছেন। ওর শিশুমনে বুনে দিয়েছিলেন সমাজতন্ত্রের বীজ। বুঝিয়েছিলেন গণতন্ত্র হচ্ছে ফাঁকা বুলি, সমাজতন্ত্রই সাধারণ মানুষের মুক্তির উপায়। বাসায় অনেক বই-পত্র ছিল, নিজে বেছে বেছে রিয়াজকে বই পড়া শিখিয়েছেন। উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত তার দেখানো পথেই হেঁটেছিল রিয়াজ। গোল বাঁধলো বিশে পা দিয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার বছর খানেক পর রিয়াজ নাম লেখালো ছাত্রলীগে। অথচ লিয়াকত হোসেন রিয়াজকে তৈরি করেছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন করবার জন্য! রিয়াজ যে ছাত্রলীগে নাম লিখিয়েছিল তা শুরুতে জানতেন না তিনি। তখন বিএনপি ক্ষমতায়, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী, ছাত্রদলের প্রবল দাপট, তারাও মারপিটে দারুণ দক্ষ, তবে এখনকার ছাত্রলীগের মতো এতোটা বিধ্বংসী ছিল না। এখনকার ছাত্রলীগের এতোটা বিধ্বংসী হয়ে উঠার পিছনের কারণ হয়তো-বা এক সময়ের দাপুটে, গলা কাটা, হাত-পায়ের রগকাটা, গাছে ঝুলিয়ে রড দিয়ে পিটানো ছাত্র শিবিরের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ এবং সেই মারমুখী বিদ্যা ছাত্রলীগে ছড়িয়ে পড়া। যাইহোক, খালেদা জিয়ার প্রথমবারের শাসনামলে একদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের হাতে মার খেয়ে ঠোঁটে-মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসায় আসে রিয়াজ। তখনই সত্যটা জেনেছিলেন লিয়াকত হোসেন। সঙ্গে সঙ্গে রিয়াজকে কিছু বলেননি, দিন কয়েক পর সুস্থ হলে তিনি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, ‘রাজনীতি যদি করতেই চাও ছাত্র ইউনিয়ন কর।’

তিনি ছেলেকে বোঝাতে পারেননি। সেই প্রথম রিয়াজ তার মুখে মুখে তর্ক করেছিল। বলেছিল, ‘সারাজীবন বামপন্থী রাজনীতি করে কী পেয়েছো? নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, ছেলেমেয়ের একটু বাড়তি সখ পুরণ করতে পারো না। তোমাদের বামপন্থী রাজনীতির দিন শেষ। এখন রাজনীতি করতে চাইলে হয় আওয়ামী লীগ করো, নয়তো বিএনপি করো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমার ভাললাগে তাই ছাত্রলীগ করছি। আর আগামীতে আওয়ামী লীগের সুদিন আসবেই।’

লিয়াকত হোসেন বুঝেছিলেন যে তার আদরের ছেলে আর ছোটটি নেই, অনেক বড় হয়ে গেছে, অনেক দূরেও সরে গেছে তার কাছ থেকে। রিয়াজ ঘুণে সমাজ বদলানোর জন্য রাজনীতি করছে না, বরং এই সমাজ ব্যবস্থার ভেতরে থেকেই ক্ষমতাবান হবার জন্য এবং রাজনীতিকে পুঁজি করে ধনী হবার জন্য রাজনীতি করছে। রিয়াজের চোখে তখন উচ্চাভিলাসী স্বপ্ন। হ্যাঁ, রিয়াজের স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল, পরের নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে রিয়াজ আর তার কাছ থেকে হাত খরচ নিতো না। বরং বড়বোন, ভগ্নীপতি, ভাগ্নে, ছোটবোন এবং মাকে নানা উপহার দিতো। রিয়াজ একবার একটা পাঞ্জাবী কিনে এনেছিল লিয়াকত হোসেনের জন্য, তিনি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। আর কোনোদিন রিয়াজ তাকে কিছু দেবার সাহস করেনি।

ছাত্র বয়সে অতো টাকা কোথায় পেতো রিয়াজ? তখন থেকেই ছেলের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব এবং এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব শুরু হয় লিয়াকত হোসেনের।

লিয়াকত হোসেন ভাবতেন তার নিজের ছাত্র জীবনের কথা। কোনো কিছু পাবার জন্য তারা রাজনীতি করতেন না। ছাত্রজীবনে কাউকে কিছু উপহার দেওয়া দূরে থাক, বরং বাবা-মা, চাচা-চাচি, বড় বোন-ভগ্নীপতির কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজে চলতেন, দরিদ্র ছাত্রদের সাহায্য করতেন। চাকরি পাবার আগে কাউকে কিছু উপহার দিতে পারেননি। আর চাকরির টাকাও কী পুরোটা ঘরে আসতো! আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যয় করতে হতো, পার্টির দরিদ্র ভাই-বোনদের খরচ চালাতে হতো।

রিয়াজ যেমনি স্বপ্ন দেখেছিল, তেমনি তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। পাস করে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের চাকরি পেয়ে যায় সে। সবই নিজের ক্ষমতায়। তারপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ওর দিন কিছুটা খারাপ গেছে। পোস্টিং হয়েছিল বান্দরবান। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার অর্থাৎ ফকরুদ্দিন সরকারের আমলেও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে কয়েক মাসের মধ্যে রিয়াজ ঢাকায় বদলি হয়ে আসে। সেই থেকে সে এখনো ঢাকাতেই আছে। ঢাকার বাইরে ওর পোস্টিং হয় না। এর নাম ক্ষমতা।

রিয়াজ তার বাবাকে একজন ব্যর্থ মানুষ মনে করে, হয়তো কিছুটা নির্বোধ ভাবলেও ভাবতে পারে। কেননা স্বাধীনতার পর সময়ের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে অনেক বামপন্থী রাজনীতিক আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিল, কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল বামপন্থী রাজনীতির দিন শেষ। এরপর পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গড়লে কিছু বামপন্থী সেই নতুন দলে যোগ দিয়েছিল, পরে এরশাদের দলেও যোগ দিয়েছিল কেউ কেউ। এই যে একের পর এক সুযোগ এসেছে, এর একটা সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি তার বাবা। এর যে কোনো একটি সুযোগ যদি তার বাবা কাজে লাগাতো তাহলে তাদের শৈশবটা অস্বচ্ছলতার মধ্যে না কেটে বিলাসী এবং বর্ণময় হতো।

জীবনে অর্থ-সম্পদ কিছুই করতে পারেননি লিয়াকত হোসেন। সারাজীবন রাজনীতি করে ঢাকায় একটা বাড়ি করা তো দূরের কথা একটা ফ্ল্যাটও কিনতে পারেননি। অথচ তারই ঔরসজাত সন্তান রিয়াজ মাত্র কয়েক বছর ছাত্ররাজনীতি করে পুলিশের চাকরি বাগিয়েছে, বেতন যাই-ই পাক না কেন ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছে, চারটি সিএনজি নামিয়েছে রাস্তায়; পূর্বাচলে প্লট কিনেছে, অচিরেই বাড়ির কাজ শুরু করবে সেখানে। রিয়াজ তো তার বাবাকে ব্যর্থ মানুষ ভাববেই! রিয়াজ পুলিশ হলেও এখনো তাকে আওয়ামী লীগ কর্মীই মনে করেন লিয়াকত হোসেন। কেননা পুলিশের যে আদর্শ, নীতি-নৈতিকতা থাকা দরকার রিয়াজের তা নেই, রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রতি অসীম আনুগত্য। রিয়াজ বা ওর সময়ের ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়ি-গাড়ি করতে তবু একটা চাকরির প্রয়োজন হয়েছে; কিন্তু এখনকার ছাত্রীলীগ নেতাদের তো বাড়ি-গাড়ী করতে চাকরির সময় পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হয় না। এখনকার কোনো কোনো ছাত্রলীগ নেতা কয়েক কোটি টাকার বাড়ির মালিক, দামী গাড়িতে চড়ে, হেলিকপ্টারে চড়ে ঢাকার বাইরে মিটিং করতে যায়, কারো কারো ব্যাংকের শেয়ারও আছে!

জীবনে এইসব দেখতে হবে তা কখনো ভাবেননি লিয়াকত হোসেন। আওয়ামী লীগের সাথে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তিনি, এইসব দেখার জন্য নয়।

এসব দেখে-শুনে এখন লিয়াকত হোসেন হতাশ, তারা সমাজটাকে বদলাতে পারেননি, রিয়াজরা সমাজ বদলের রাস্তা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাহলে সমাজটা বদলাবে কারা? কোনো দিশা খুঁজে পান না তিনি। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। তবু মাঝে মাঝে পার্টির মিটিং বা সভা-সমিতিতে তার ডাক পড়ে, সেখানে তিনি যান, বক্তৃতা করেন, মানুষকে সাম্যের কথা বলেন, সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখান। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে আবর্জনা না সরালে কী করে বোঝা যাবে যে পরিস্কার উঠোনে বাস করে কতো সুখ; কিংবা বলেন, বৃহৎ পাথর ধাক্কা মেরে না সরালে কি করে বোঝা যাবে যে তার নিচে সকলের জন্য সুপেয় জল আছে কী নেই!

এরকম অনেক কথাই বলেন। মানুষকে জাগানোর চেষ্টা করেন। আবার অপরাধবোধে ভোগেন এই ভেবে যে তার নিজের ছেলেকেই তিনি মানুষ করতে পারেননি, সাম্যবাদের মন্ত্রে দীক্ষা দিতে পারেননি; ঘুষখোর, পুঁজিবাদের দাস হয়ে আছে তার নিজের সন্তান; অথচ তিনি মানুষকে এখনো শোনান সমাজতন্ত্রের বাণী!

তিন

শাওন ড্রয়িংরুমে বসে বসে টিভি দেখছে আর বারবার চ্যানেল বদলাচ্ছে। কয়েকটা টিভি চ্যানেলে ছাত্র আন্দোলন লাইভ দেখাচ্ছে। স্লোগানমুখর ছাত্রদের দেখে শাওনের নিজেকে বেঈমান-বিশ্বাসঘাতক মনে হচ্ছে। তার সহপাঠীরা রাস্তায় আন্দোলন করছে, অথচ সে ঘরে বসে আছে।

শাওনের দাদু লিয়াকত হোসেন এসে বসলেন ওর উল্টোদিকের সোফায়। এরই মধ্যে একটা চ্যানেলে দেখাচ্ছে ছাত্রদের ধাওয়া করছে পুলিশ এবং কিছু তরুণ, তরুণদের হাতে বড় বড় লাঠি। অন্যদিকে বালক-কিশোর বয়সী ছাত্ররা নিরস্ত্র। এই তরুণরা কারা? একথা এখন আর অজানা নয়; এরা ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, যুবলীগের ক্যাডার। সরকার এবং পুলিশ এদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন জায়গায় এরা ছাত্রদের ওপর হামলা করছে। লিয়াকত সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। নাতির মুখের দিকে তাকালেন। ওর চৌদ্দ বছরের মুখে যেন আগুনের ফুলকি!

লিয়াকত হোসেনের চোখে ভেসে উঠলো ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি’র দৃশ্য। ১ জানুয়ারি ছিল ‘ভিয়েতনাম সংহতি দিবস’। ভিয়েতনামে তখন আমেরিকার আগ্রাসন চলছিল। আমেরিকা নাপাম বোমার আক্রমণে ভিয়েতনামের গ্রাম-শহর জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে ফসলের ক্ষেত জ্বালিয়ে দিচ্ছিল যাতে খাদ্যাভাবে ভিয়েতনামে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আমেরিকার এই হত্যাযজ্ঞ এবং নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই তৎকালীন ছাত্র সমাজ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ডাকসু সিদ্ধান্ত নেয় ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ‘ভিয়েতনাম সংহতি দিবস’ পালন করার।

এর আগে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী উত্থাপন করা হয় আমেরিকার নৃশংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য। কিন্তু হায়, যে আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল, সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়েছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য, সেই আমেরিকার ভিয়েতনাম আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। অথচ একাত্তরে বাংলাদেশের নিপীড়িত স্বাধীনতাকামী মানুষ স্লোগান দিতো-‘বিশ্বজুড়ে দুটি নাম, বাংলাদেশ আর ভিয়েতনাম।’

মুজিব সরকারের নীতি, ক্রমশ হেলে পড়ছিল সাম্রাজ্যবাদে দিকে!

‘ভিয়েতনাম সংহতি দিবস’ এ বটতলায় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে ‘তোমার নাম আমার নাম, ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম’ স্লোগানে মুখরিত মিছিলটি যাত্রা করে মতিঝিলের আদমজী কোর্টে অবিস্থিত আমেরিকান দূতাবাসের দিকে। প্রেসকাবের উল্টোদিকের ইউএসআইএস ভবনের সামনে পুলিশ আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। মিছিলটি কাছে যেতেই পুলিশ অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে, আতঙ্কিত ছাত্ররা ছুটোছুটি শুরু করে। পুলিশ রাইফেলের বাট দিয়ে ছাত্রদের মারতে থাকে। সেই হামলায় জহুরুল হক হলের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মতিউল ইসলাম এবং ঢাকা কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মির্জা কাদেরুল ইসলাম নিহত হয়। আহত অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। লিয়াকত হোসেন নিজেও সেদিন মিছিলে ছিলেন, হামলার শিকার হয়েছিলেন, পুলিশের রাইফেলের বাটের আঘাতে তার বাঁধ ফুলে গিয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিবের শাসনে সেটাই ছিল প্রথম ছাত্রহত্যা। এরপর শেখ মুজিব গড়েছিল রক্ষীবাহিনী, এই রক্ষীবাহিনীর কর্মকাণ্ডের ভয়াবহতা-বর্বরতা ছিল আইয়ুব খানের এনএসএফ এর মতোই নৃশংস, যে নৃশংসতার ভুত চেপেছে এখন ছাত্রলীগের ঘাড়ে। এতো বছর পর ২০১৮ সালে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার শাসনে একের পর এক ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে; কিছুদিন আগে হয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলন; তখন শেখ হাসিনার পুলিশ এবং ছাত্রলীগ হামলা করেছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর। শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলনের দাবী মেনে নিয়ে পরে আবার অস্বীকার তো করেইছে, উল্টো কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে রিমাণ্ডে নিয়েছে, কারারুদ্ধ করে রেখেছে। এখন আবার নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনরত নিরস্ত্র বালক-কিশোর শিক্ষার্থীদের ওপর শেখ হাসিনার পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ হামলা চালাচ্ছে। বালক-কিশোরদের রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাজপথ। কী বিভৎস দৃশ্য!

টেলিভিশনের পর্দায় এই বালক-কিশোরদেরকে মার খেতে দেখে চোখ ভিজে গেল লিয়াকত হোসেনের। আর ওদের জন্য গর্ব হলো এজন্য যে এই ক্ষুদে বিচ্ছুর দল সরকারের চোখে, প্রশাসনের চোখে, বড়দের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের গলদ। সাধারণ পরিবহনের কথা বাদই দেওয়া যাক; একটা দেশের ডিআইজির গাড়ির ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই, পুলিশের গাড়ির ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই, বিজিবির গাড়ীর ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই, সচিবের গাড়ীর ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই, সেনাবাহিনীর গাড়ির ড্রাইভারের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ; এইভাবে এতো অনিয়মে চলছে একটা দেশ, তা তো এই ক্ষুদে যোদ্ধারাই দেখিয়ে দিলো।

হঠাৎ টিভির পর্দায় ভেসে উঠলো রিয়াজের মুখ, ছাত্রদের মারার নির্দেশ দিচ্ছে, নিজেও লাঠিচার্জ করছে। লিয়াকত হোসেন শাওনের মুখের দিকে তাকালেন। কী আশ্চর্য, একই সময়ে শাওনও তাকালো তার মুখের দিকে। শাওনের জলভরা দুটি চোখ। হঠাৎ-ই শাওনের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, রিমোর্টটা ছুড়ে মারলো টিভির পর্দায়, তারপর চলে গেল নিজের ঘরে, শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। শব্দ শুনে ফারজানা ছুটে এলো ডাইনিংয়ে। লিয়াকত হোসেন উঠে গিয়ে শাওনের ঘরের দরজায় নক করলেন, ‘দাদা ভাই দরজা খোল, দরজা খোল দাদাভাই।’

শাওন দাদুকে খুব মান্য করে। কয়েকবার ডাকার পর দরজা খুলে দিলো। তার চোখের জল গাল বেয়ে নেমেছে। লিয়াকত হোসেন কাছে গিয়ে বললেন, ‘বাবার ওপর রাগ হচ্ছে, ক্ষোভ হচ্ছে, সেটা প্রকাশ করতে নিজেকে ঘরে রুদ্ধ করে রাখবি কেন? বাইরে যা, আন্দোলনে যা?

শাওন দাদুকে জড়িয়ে ধরলো। লিয়াকত হোসেন নিজের বুকে লেপটে থাকা শাওনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘আন্দোলনে যাবি?’

শাওন দাদুর বুক থেকে মাথা তুলে খুব আস্তে ঠোঁট নাড়লো, ‘বাবা!’

লিয়াকত হোসেন শাওনের দুই কাঁধ ধরে দৃঢ় কণ্ঠে বললেন, ‘আমি বাবার বাবা, আমি বলছি, তুই আন্দোলনে যা।’

শাওন আবার লিয়াকত হোসেনকে জড়িয়ে ধরলো। লিয়াকত হোসেন নাতির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। তারপর শাওন স্কুলের ইউনিফর্ম নিয়ে বাথরুমে ঢুকলো। পিছনে দাঁড়ানো ফারজানা বললেন, ‘বাবা, আপনি এটা ঠিক করছেন না। আপনার ছেলে এসে রাগারাগি করবে।’

‘সেটা আমি দেখবো বৌমা। প্রয়োজনে তোমার ছেলে আর শাশুড়িকে নিয়ে এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। সরকার এনএসএফ, রক্ষীবাহিনীর পুণর্জাগরণ করছে, ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা পুনর্মঞ্চায়ন করছে; ছাত্রদেরও ৫২, ৬৯, ৭১, ৯০ এর পুনর্জাগরণ ঘটাতে হবে। ওরা তাই ঘটাচ্ছে, ওরা সাতচল্লিশ বছরের পুরোনো জঞ্জাল পরিষ্কারে হাত লাগিয়েছে, ওরা ইতিহাস সৃষ্টি করছে; আর আমার নাতি এই ইতিহাসের অংশ হবে না, তা হয় না।’

শাওন বাথরুম থেকে বেরিয়ে স্কুল ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে, অশ্রুভেজা অথচ হাসিমুখে দাদুর দিকে তাকিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে গেল।

মিরপুর ১৩ নম্বরের দিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগের ক্যাডার এবং পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হচ্ছে। শাওন এক বন্ধুর কাছ থেকে একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সেদিকেই এগিয়ে গেল। দূর থেকে পুলিশের ভেতরে তার বাবাকে দেখতে পেল সে, বীরদর্পে ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ করছে। শাওন বাবার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে গেল, এক ছাত্র ওর জামা টেনে ধরলো, ‘ওদিকে যাসনে।’

জামা ছাড়িয়ে নিয়ে শাওন দৃঢ়ভাবে হাঁটতে লাগলো সামনের দিকে। ছাত্রলীগের এক ক্যাডার দুটো বাড়ি দিলো ওর পিঠে, সামান্য টলে গেলেও ও একইভাবে হাঁটতে লাগলো। হঠাৎ ছাত্রদের মারতে উদ্যত রিয়াজ দেখতে পেলো নিজের ছেলেকে, তার হাত থেমে গেল। রিয়াজের দৃষ্টি শাওনের মুখের দিকে, তারপর তাকালো শাওনের হাতের প্ল্যাকার্ডের দিকে, সেখানে লেখা-‘আমার ভাই রক্তে লাল, পুলিশ কোন চ্যাটের বাল!’

শাওনের বুকে আগুন, মুখে আগুন, চোখে আগুন! রিয়াজ কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললো! রিয়াজ কী জানে শাওনের মুখের এই আগুন- ৫২’র আগুন, ৬৯’র আগুন, ৭১’র আগুন, ৯০’র আগুন, ২০১৩ সালের আগুন; পুনর্জাগরণের আগুন!


ঢাকা
আগস্ট, ২০১৮।






















মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫

ক্স বলেছেন: আজকে নিউজে দেখলাম সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাবি ছাত্র নামধারী দলের মিছিলের ছাত্রীদের মধ্যে ৯০%ই বোরকা পড়া। এতে কি প্রশ্ন এসে যায়না যে ঢাবি ছাত্রদের আড়ালে এই আন্দোলন আসলে শিবিরেরা করছে?

ঢাবি এলাকায় ঘুরে বেড়ানো ছাত্রীদের ১০%ও তো বোরখা পড়েনা - এখন এত বোরখাধারী কোত্থেকে এল?

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫

লায়নহার্ট বলেছেন: {@ক্স ইন্টেরেসটিং তো! লিংক দিন ভাই}

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৫

ক্স বলেছেন: https://www.youtube.com/watch?v=ZJhmzBQLInQ

আমি কোন পরিসংখ্যান লিখতে বসিনি। ঐ পার্সেন্টেজ আমার অনুমান। বাস্তব একুরেট না হলেও কাছাকাছি হবে বলে আমার ধারণা।

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন গল্প!

ইতিহাস, বর্তমান, আবেগ, আন্দোলন মিলেমিশে একাকার!
হ্যাটস অফ ভায়া :)

++++++++++++++

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২৬

মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
বাচ্চাদের পাশে থাকুন।

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭

জগতারন বলেছেন:
শাজাহান খাঁন একজন পদলোভি, নির্লজ্জ ব্যাক্তি।
সরকারকে এমন বেকায়দায় ফেলার কারনে শাজাহান খাঁনকে আগেই সরাইয়া ফেলা উচিত ছিল।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২৯

মিশু মিলন বলেছেন: বলেছেন: ধন্যবাদ। সহমত, নির্বোধ সরকার আগামীতে বুঝবে যে আজ কী হারালো।

৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:২৯

এটম২০০০ বলেছেন: Chatro League,
Have a look at the “children in movement for stopping murders by the drivers” on Bangladeshi road.

Do not try to commit any hard to them as per advise of your leader. It is a caution for you.

REMEMBER: They are the dearest sons and daughters of Bangladesh Military officials, Bangladesh Police officials, RAB personnel, Intelligence Department personnel, SSF officials, Bureaucrats and so on.

Do something to them, and you will face the consequences.

DEFINITELY THE Bangladesh Military officials, Bangladesh Police officials, RAB personnel, Intelligence Department personnel, SSF officials, Bureaucrats ARE WORRIED FOR THEIR CHILDREN ENGAGED IN JUST MOVEMENT. But they cannot say anything because they cannot breach discipline. But if any of their dear children are lost ....... they would see. .

৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৫২

অপ্রচলিত বলেছেন: চমৎকার লেখনী। বর্তমান প্রেক্ষাপটে লেখা গল্প বেশ লাগল।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫৫

মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: দৃক ও পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহীদুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে,
'আল-জাজিরা'তে বক্তব্য দেওয়ার জন্য!

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭

মিশু মিলন বলেছেন: নিউজে পড়লাম বিষয়টা। তীব্র নিন্দা জানাই, অবিলম্বে আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহীদুল আলমের মুক্তি চাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.