নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
শেষ পর্ব
নিত্যদিনের মতোই সূর্য উঠেছে অগ্নিচক্ষু মেলে, বিছিয়েছে রৌদ্রজাল, তবে উত্তাপ এখনো বাড়ে নি। পান্থশালার চাতালের পূর্বপাশের বকুলবৃক্ষটি মাতৃস্নেহের মতো ছায়া দিয়ে রেখেছে শ্যাম আর সুকেতুকে। ঘুম ভেঙে গেল শ্যামের, চোখ মেলতেই প্রথম দৃষ্টি পড়লো রৌদ্রজ্জ্বল আকাশে। ধড়মড় করে উঠে বসলো সে। আশপাশের বৃক্ষপত্রে, ঘাসের ডগায়, ভূমিতে, এমনকি নিজের পরিধেয় বস্ত্রে খুঁজলো বৃষ্টির জল। বৃষ্টি! বৃষ্টি কোথায়? বৃষ্টির জল কোথাও নেই, রোজকার মতোই তৃষ্ণার্ত বৃক্ষ-লতা, ঘাস, মৃত্তিকা। বৃষ্টি তবে নামে নি, তুষ্ট হন নি দেবরাজ ইন্দ্র? হঠাৎ কাছে-পিঠে কোথাও সম্মিলিত কোলাহল, আর্তচিৎকার আর কান্নার রোল উঠলো। কেউ মারা গেল না কি? কান পাতলো শ্যাম। না, তেমন টা মনে হচ্ছে না, পুরুষের কণ্ঠও শোনা যাচ্ছে, মনে হচ্ছে কোনো গোলযোগ। কোলাহল, আর্তচিৎকার আর কান্নাররোল ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। সুকেতুর কাঁধে ধাক্কা মেরে ওকে জাগালো শ্যাম। মদ্যপানজনিত বিষাদ নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে উঠে বসলো সুকেতু, তারপর চেতনায় কান্না জড়ানো আর্তচিৎকারের শব্দ প্রবেশ করতেই বললো, ‘ওদিকে কী হয়েছে শ্যামদা?’
রাতে যে বৃষ্টি নামার কথা ছিল তা স্মরণেই নেই সুকেতুর।
শ্যাম বললো, ‘কী জানি, বুঝতে পারছি না। চল তো দেখি।’
দুজনে রাস্তায় উঠে পূর্বদিকের কান্না আর কোলাহলের দিকে এগোতে লাগলো। কিছুদূর এগিয়ে রাস্তার বাঁকটা ঘুরতেই ওদের দৃষ্টিগোচর হলো শবরীদের গণিকালয়ের সামনে দণ্ডায়মান রথ, রাজার সৈন্য আর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু মানুষ। দ্রুত পায়ে হেঁটে মানুষের ভিড়ে গিয়ে দাঁড়ালো ওরা। সদরদ্বার খোলা থাকলেও রথ আর সৈন্যরা দাঁড়িয়ে থাকায় গণিকালয়ের ভেতরটা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না; কিন্তু গণিকাদের সম্মিলিত কান্না আর আর্তনাদ এবং গিরিকার প্রলাপ ভেসে আসছে কানে। শ্যাম ভিড়ের একজন মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করলো, ‘কী হয়েছে ভ্রাতা?’
মাঝবয়সী মানুষটি বললো, ‘মহারাজ ওই নচ্ছার মাগিদের পাঠিয়েছিল মুনিকুমারকে আনার জন্য। মাগিরা মুনিকুমারকে এনেছে ঠিকই, কিন্তু তার দেহ অপবিত্র করেছে। মুনিকুমারের সঙ্গে নাকি সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল, এজন্যই তো রাতে রাজ্যে বৃষ্টি নামে নি। এখন রাজবাড়ীর সৈন্য এসেছে ওই মাগিদের ধরে নিতে, দণ্ড দেওয়া হবে ওদেরকে। মনে হয় ওদের শূলে চড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’
অন্য একজন বললো, ‘শবরী মাগিটাকে আগুনে পুড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত!’
আরো অনেকে অনেক রকম বাজে কথা বললো গণিকাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে, বৃষ্টি না নামায় সকলেই গণিকাদের প্রতি ক্ষুব্ধ, বিশেষত শবরীর প্রতি। শ্যামের কানে যেন কেউ ক্রমাগত চড় মারলো! কী অদ্ভুত মানুষ এরা, কাল গভীর রাত অব্দি নৃত্য করতে করতে শবরীর নামে জয়ধ্বনি দিয়েছে, শবরীকে নিয়ে লেখা গীত গেয়েছে, আর আজকে এরাই আবার শবরীকে শূলে চড়িয়ে কিংবা আগুনে পুড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পক্ষে রায় দিচ্ছে! কাল পর্যন্ত শবরী এদের কাছে প্রায় দেবীতুল্য ছিল, নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ না হওয়ায় আজ এদের কাছেই শবরী যেন ডাইনী! ক্ষুব্ধ শ্যামের দৃষ্টি ঘুরতে লাগলো জনতার মুখশ্রীতে আর সদরদ্বারে। আর তখনই ভেতর থেকে সদরদ্বারের বাইরে এলেন শ্যামের পরিচিত একজন রাজকর্মকর্তা। তার পিছনে একজন কঠোর মুখের সৈন্য শবরীর চুলের মুঠি ধরে টেনে-হেঁচড়ে শবরীকে দ্বারের বাইরে নিয়ে এলো। তাদের পিছন পিছন তিনজন সৈন্য মেষের পালের মতো তাড়িয়ে নিয়ে এলো উমা-সুলোচনাসহ অন্য গণিকাদের, যারা সকলেই আর্তনাদ করছে। গিরিকা এবং উমা কাঁদতে কাঁদতে সৈন্যের হাত থেকে শবরীকে ছাড়াতে গেলে অন্য এক সৈন্য তাদের বাহু ধরে ছুড়ে ফেলে দিলো রথের চাকার কাছে। কঠোর মুখের সৈন্য শবরীকে টেনে-হেঁচড়ে রথে তুলতে উদ্যত হলো, তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো আরো দুজন সৈন্য। ভূপাতিত গিরিকা উঠে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে গিয়ে পুনরায় শবরীকে জড়িয়ে ধরলেন।
একবার সুকেতুর মুখের দিকে তাকালো শ্যাম। তারপর ভিড় ঠেলে মুহূর্তের মধ্যে দৌড়ে রথের কাছে গিয়ে অকস্যাৎ প্রবল বিক্রমে একজন সৈন্যের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিলো, সৈন্যরা কিছু বুঝে উঠার আগেই লাঠির এলোপাথারি আঘাত পড়তে লাগলো সৈন্যদের ওপর। শবরীকে ছেড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল সৈন্যরা, আকস্মিক এবং অপ্রত্যাশিত আঘাতে সৈন্যদের কারো হাতের লাঠি ছিটকে পড়লো ভূমিতে। কেউ পাল্টা আক্রমণে উদ্যত হলো।
সুকেতু কল্পনাও করে নি শ্যাম এমন দুঃসাহসী কাণ্ড করবে বা তার পক্ষে এটা করা সম্ভব! কিন্তু তার প্রিয় শ্যামদা যখন দুঃসাহস করেই ফেলেছে তখন আর তার দাঁড়িয়ে থাকা চলে না। জীবন বিপন্ন হলেও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সে-ও দৌড়ে গিয়ে পড়ে থাকা একটা লাঠি হাতে তুলে নিয়ে চড়াও হলো সৈন্যদের ওপর। ছয়জন সৈন্যের মধ্যে শ্যাম শুরুতেই তিনজনের মাথা ফাটিয়ে ভূপাতিত করেছে। তাদের আর নড়বার শক্তি নেই। একজনের হাত থেকে লাঠি পড়ে যাওয়ায় দৌড়ে পালাতে গিয়ে রাজকর্মকর্তার ধমক খেয়ে পুনরায় ফিরে এসেছে। অন্য দুজন লড়ছে শ্যামের সঙ্গে, শ্যাম নিজেও লাঠির আঘাত পেয়েছে, তবু সে লড়ে যাচ্ছে। ততোক্ষণে সুকেতুও বিক্রম দেখাতে শুরু করেছে, লাঠির আঘাতে রথের সারথিকে ভূপাতিত করেছে, জোর লড়াই করছে সৈন্যদের সঙ্গে। কৌতুহলী মানুষ যারা ভিড় করেছিল, তারা সব দৌড়ে পালাতে শুরু করলো। রাজকর্মকর্তা দূর থেকে চিৎকার করে সৈন্যদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন শ্যাম আর সুকেতুকে ধরাশায়ী করার জন্য। কিন্তু যখন দেখলেন রাজসৈন্যরা কোনোভাবেই শ্যাম আর সুকেতুর সঙ্গে পেরে উঠছে না, ছয়জন সৈন্যের মধ্যে চারজনই ভূপাতিত আর বাকি দুজনের লড়াইও সন্তোষজনক নয়, তখন তিনি রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে দৌড়তে লাগলেন আরো সৈন্য নিয়ে আসবার জন্য।
এদিকে সর্বশেষ দুজন রাজসৈন্যকেও ওরা ভূপাতিত করেছে। সৈন্যরা কেউ জ্ঞান হারিয়েছে, কেউ কাতরাচ্ছে। রাজকর্মকর্তা মাত্র ছয়জন সৈন্য নিয়ে এসেছিলেন, হয়তো ভেবেছিলেন অবলা গণিকাদের তুলে আনতে বেশি সৈন্যের আর কী প্রয়োজন! শ্যাম লফিয়ে রথে উঠে চিৎকার করে বললো, ‘তাড়াতাড়ি রথে উঠুন সবাই।’
পর পর ঘটা ঘটনার আকস্মিতায় ভূপাতিত হতভম্ব শবরী প্রস্তরমূর্তির ন্যায় আধশোয়া হয়েই পড়েছিল ধুলোয়, সুকেতু তার বাহু ধরে তুলে দ্রুত রথের কাছে এনে বললো, ‘জলদি উঠুন।’
শবরীর পর প্রায় দৌড়ে এসে রথে উঠলো উমা আর সুলোচনা। শ্যাম আবার চিৎকার করে বললো, ‘তাড়াতাড়ি উঠুন, রাজসৈন্যরা এলো বলে!’
অন্য গণিকারা পড়িমরি করে রথে উঠতে শুরু করলো। কয়েকজন গণিকা গিরিকাকে টেনে ধরাধরি করে তুললো রথে। চাপাচাপি করে কেউ কারো কোলে বসলো, কেউবা দাঁড়িয়ে রইলো কোনোরকমে। সবশেষে সুকেতু রথে উঠে শ্যামের পাশে বসলে শ্যাম ঘোড়াগুলোর পিঠে চাবুক মারলো, ঘুরতে শুরু করলো রথের চাকা। পিছনে পড়ে রইলো গিরিকার সাধের গণিকালয়, তার নিজের কক্ষে সঞ্চিত অমূল্য রত্ন আর সুবর্ণ অলংকারের পাত্র, এতোদিনের জমানো কড়ির ভাণ্ডার, আরো কতো মূল্যবান দরকারি দ্রব্যসামগ্রী!
শ্যামের হাতের ক্ষিপ্র চাবুক সপাৎ সপাৎ শব্দে পতিত হচ্ছে ঘোড়ার পৃষ্ঠদেশে আর ধুলো উড়িয়ে বিপুল বেগে গঙ্গার ঘাটের দিকে ছুটছে ঘোড়াগুলো। ইন্দ্রদেবের সন্তুষ্টিতে যে বারি বর্ষিত হবার কথা ছিল আকাশ থেকে, রাজরোষে পড়ে এবং নিশ্চিত রাজদণ্ডের হাত থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে রক্ষা পাবার পর এখনও সে-বারি ঝরছে গণিকাদের বেদনাতুর-আতঙ্কিত নয়নাকাশ থেকে!
সমাপ্ত
সহায়ক গ্রন্থ
১. বেদ -অনুবাদ: রমেশ চন্দ্র দত্ত
২. মনুসংহিতা -অনুবাদ: সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
৩. রামায়ণ -মূল: বাল্মীকি; অনুবাদ: রাজশেখর বসু
৪. মহাভারত -মূল: কৃষ্ণদৈপায়ন ব্যাস; অনুবাদ: রাজশেখর বসু
৫. কামসূত্র -বাৎসায়ন
৬. কথা অমৃতসমান (দ্বিতীয় খণ্ড) -নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুরী
৭. দণ্ডনীতি -নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুরী
৮. জীবনীকোষ ভারতীয়-পৌরাণিক -শ্রীশশিভূষণ বিদ্যালঙ্কার
৯. দেবলোকের যৌনজীবন -ডঃ অতুল সুর
১০. ভারতে বিবাহের ইতিহাস -ড: অতুল সুর
১১. প্রাচীন ভারতে শূদ্র -রামশরণ শর্মা
১২. প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস -ডাঃ প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ
১৩. ইতিহাসের আলোকে বৈদিক সাহিত্য -সুকুমারী ভট্টাচার্য
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শুরু থেকে সঙ্গে থাকার জন্য। শব্দ সংখ্যা প্রায় আটান্ন হাজার।
২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:০৫
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
যাক ওরা বেঁচে ফিরেছে, সুন্দর সমাপ্ত।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: নাগরী ভালোই ভালো শেষ হলো এখন বইয়ে ভিতর নাগরী বন্ধ হোক।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩৯
মিশু মিলন বলেছেন: বই হবে আশা করি। ধন্যবাদ।
৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: ৫৮ হাজার!!!!!
বই আকারে কি আগামী বইমেলাতে বের হবে?
৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪১
মিশু মিলন বলেছেন: কোলকাতার এক প্রকাশক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাণ্ডুলিপি দিয়েছি। হয়তো ওখান থেকেই বের হবে।
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৪৩
শুভ_ঢাকা বলেছেন: অকল্পনিয়ভাবে শেষ করলেন। অসাধারণ একটা আখ্যান পড়লাম। আজীবন মনে থাকবে। এটি কি কোন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়েছে।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৩
মিশু মিলন বলেছেন: না, কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়নি। এর আগে ইস্টিশন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ।
৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৫০
আনমোনা বলেছেন: নাগরী যে এইভাবে শেষ হবে ভাবিনি। কি নিষ্ঠুর অবিচার। অথচ এ ছাড়া অন্য সমাপ্তি ভাবতেই পারছিনা।
গত পর্ব পড়ে কিছু প্রশ্ন করব ভেবেছিলাম, কিন্তু এই পর্বে তার জবাব পেয়ে গেলাম। তবে নতুন প্রশ্ন মনে এল।
রামায়ন অনেক আগের পড়া, ঠিকমত মনে নেই। কিন্তু কাকতলীয় হোক আর যেভাবেই হোক,মুনিকে আনানোর পড়ে কি সত্যিই বৃষ্টি হয়নি? তবে রামায়নে এই ঘটনা এত আড়ম্বর করে লেখা কেন, আর ঋষ্যশৃঙ্গ মুনিরই বা পড়ে এত নামডাক হয়েছিল কেন(মুনিকে দিয়ে রাজা দশরথের যঙ্জ করানো!)?
আপনার লেখনীর সার্থকতা কামনা করি।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫৬
মিশু মিলন বলেছেন: পুরাণের আখ্যানে বর্ণিত হয়েছে যে বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে তা সম্ভব নয়। সঙ্গত কারণেই আমি বৃষ্টির ব্যাপারটি বর্জন করেছি। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন ঋষ্যশৃঙ্গ রাজা দশরথের পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করেছিলেন। সে কারণে নিশ্চয় তার নামডাক হয়েছিল। তাছাড়া তিনি নিশ্চয় শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত ছিলেন, পরবর্তীকালে শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যায় এবং যুক্তি-তর্কে নিশ্চয় তিনি তুখোর হয়ে উঠেছিলেন, এ কারণেও হয়তো তার নামডাক হয়েছিল।
অনেক ধন্যবাদ সঙ্গে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন।
৭| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:২৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
উপন্যাসটা ভাল না মন্দ, পরের প্রশ্ন। কিন্তু প্রথমেই যেটা বলার, আপনি এই উপন্যাসে বাঙালির হয়ে
একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। শরবরীর মত একজন গনীকার অসাধারণ দেশপ্রেমের কাহিনী নিয়ে এই
প্রথম বাংলা ভাষায় গড়ে উঠল একটি সুন্দর আখ্যায়িকা।
আলোচ্য বইটি শুধু উপন্যাসই নয় মনে হল উপাখ্যানমঞ্জরী। মানে, অনেক উপাখ্যানের সমাহার।
উপন্যাস তো শুধু পশ্চিমের হাত-ফেরতা সাহিত্য প্রকরণ নয়, ‘ব্রাম্মন্যবাদ’ থেকে ‘কামসুত্র’ সবেতেই
আছে তার প্রাগভাব। সোজা কথায়, আপনি শরবরীকে নিয়ে অনেক আখ্যান ও মিথ একই কাহিনীর
কাঠামোয় বুনে দিয়েছেন ।
মিথ, উপাখ্যান, ধর্মতত্ব , কামসুত্র কি নেই এতে । আপনার এই উপন্যাসে শরবরীর কাছে রতিব্রত
শিখেছেন আরণ্যের তরুণ ঋষি ঋষ্যশৃঙ্গ। সত্যি তিনি তা শিখেছিলেন কি না, সেটা বড় কথা নয়।
কিন্তু এ ধরনের কামসাস্রচর্চা আজও মিথ।
উপন্যাসের ক্লাইম্যাক্সে গনিকালয় রক্তাক্ত। পরে আছে রাজ সেনাদের দেহ। রাজাদেশ একান্ত নিষ্ঠার
সহিত পালন করেও শরবরী ও তার সহচরীদের কপালে নেমে আসে রাজদ্রোহের অপরাধ।বহু প্রতিক্ষিত
বৃষ্টিতো হলই না বরং শরবরীদের কমলনয়নের জলে ভেসে ওঠে ভবিষ্যতের বেদনা বিদুর ছবি।
রাজকুমারী শান্তা আর মনিকুমার ঋষ্যশৃঙ্গের তিনরাত্রী উপরতি বা পরিহার অনুষ্টান পালনের কথা ১৮তম
পর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তারপর পুষ্পসজ্যার রাতের কথোপকথন ও রসালো ঘটনাবলী নিয়ে আরো একটি
একটি পর্ব এই উপন্যাসে সংযোজন করলে লেখাটি আরো উপভোগ্য হতো।
যাহোক, পুরনো নাগরী উপাখ্যান আধুনিক হয়ে উঠল আপনার অসাধারণ লেখনীর গুণে ।
উপন্যাসটিনিয়ে অনেক কথা বলার ছিল । কিন্তু শরীরটা ভাল যাচ্ছেনা বলে বলতে চাওয়া
কথাগুলো এখন তুলে রাখলাম, পরে সময় সযোগ পেলে আসব ফিরে । এখন লেখাটি প্রিয়তে
নিয়ে গেলাম ।
একটি সুখপাঠ্য উপন্যাস সামুতে ধারাবাহিক ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে পরিবেশনের জন্য আপনার প্রতি রইল
প্রাণডালা অভিনন্দন ও প্রনাম । আপনার সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:০৬
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আপনি সাহিত্যের গভীর মনোযোগী পাঠক। আগের পর্বগুলোতেও আপনার বিচক্ষণ পাঠ-প্রতিক্রিয়া আমাকে আপ্লুত করেছে। পুষ্পশয্যার রাতে আরো গল্প সংযুক্ত করার ব্যাপারে আপনি যা বলেছেন তা নিশ্চয় আমি ভেবে দেখবো। আবারো ধন্যবাদ সঙ্গে থাকার জন্য, উৎসাহিত করার জন্য। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: জাস্ট গ্রেট একটা ধারাবাহিক ছিলো।
আমাকে বলবেন, টোটাল কত ওয়ার্ড এই ধারাবাহিকের?