![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তীব্র কোলাহলের মাঝে একচিলতে নিরবতা , অনেক রঙের মাঝে একটু খানি বিবর্ণতা , অনেক ভিড়ের মাঝে স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়া , চিন্তার ঘূর্ণিপাকের মাঝে বেঁচে থাকা।
ঘটনা একঃ
সদ্য পাশ করে টিচার হিসেবে যোগদান করলেন এহসান
দেশের খারাপ অবস্থা যতই খারাপ হোক নতুন জব তার উপর জুনিয়র তাই তার উপস্থিতি আবশ্যক ,চরম ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে ,গাল ভর্তি নূরানি দাড়ি চেহারায় অনন্য আকর্ষণ
প্যান্ট টাকনুর উপরে ছাড়া নিচে কেউ দেখেনি ,প্রথম দেখায় সবাই একটু ভ্রু কোচকালেও
সামান্য কয়েক মুহূর্তেই ভেতরের রসিক ,জ্ঞান তাপস মানুষটার পরিচয় পেয়ে যান।
আজকে একটু বেশি খুশি এহসান তার আন্ডার গ্রাজুয়েট লেভেলে করা একটা পেপার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ,প্রফেসর গিলবারট তাকে পারসোনাল্লি এনসিউর করেছেন স্কলারশিপ ব্যাপারে
বিশাল ব্যাপার ,নিজেকে খুব সুখি সুখি মনে হচ্ছে,এতদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে । ক্লাসের ফাকে সংবাদ পেয়ে মাকে আর জানানো হয় নি ,সারপ্রাইস দিবে বলে।
ক্লাস শেষে বাসে করে ফিরছে ,ছোট বোনের জন্য নিউমার্কেট থেকে ফুচকা পারসেল করে নিল,বোনটা এত বড় হয়েছে ফুচকার নেশা ছাড়তে পারেনি ,মায়ের জন্য একটা শাড়ি কিনে ফেলল চট করে ,শাড়ি পছন্দ করার সময় চোখে পানি চলে আসছিল এহসানের ,বাবা মারা যাবার পর মার নতুন শাড়ি কবে কেনা হয়েছে মনে করতে পারছেনা। অতচ প্রতি ইদে তাদের নতুন কাপড় বরাদ্দ থাকত,মাকে শাড়ি কেনার কথা বললেই নানা অজুহাতে বাতিল করে দিত ।
ফেরার পথে পচন্ড জ্যাম , মৎসভবনের সামনে নেমে যায় ,ভাবে কাকরাইল পার হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বাসে উঠবে ,কাকরাইল আসতেই সে পরে গেল এক মিছিলের মধ্যে ,সবাই সাদা পাঞ্জাবী পড়া বয়স সবার কুড়ির নিচে ,ভাবতে ভালই লাগ্লো এহসানের ছেলেগুলো এই বয়সে আল্লাহর পথে এত কঠোর । হঠাত মনে সন্দেহে উকি দিল এরা এবার কোন রাজনৈতিক পার্টির ছত্রছায়ায় আটকে পরে নিতো ,হঠাত করেই কোন একপাশ থেকে ছেলে গুলো দোড় শুরু করল
কিছু বুঝে ঊঠার আগে এহসান দেখল পুরো রাস্তা ফাঁকা , এত জ্যাম কিভাবে ফাঁকা হল রিতিমত গবেষনার বিষয়,একদল আর্মড পুলিশ দেখা যাচ্ছে সামনে এগিয়ে আসছে ,নিরবিকার চিত্রে এগিয়ে চলল এহসান তার পকেটে আইডি কার্ড আছে ,স্বনামধন্য এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির টীচার তার আর ভয় কি ।
তাকে অবাক করে দিয়ে দুইজন পুলিশ এগিয়ে আসল ,কারো মতি-গতি ভালো লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা ,একজনের হাত তো লাঠিতে নিশপিস করছে ,আরেকজনের মুখ আমসির মত হয়ে আছে ,যেন কয়েকজনম ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য ।আমসি মুখো এগিয়ে আসল কিছু না বলে চরাত করে এক বাড়ি বসিয়ে দিল হাটুতে ,এহসান এতই অবাক হল , তীব্র ব্যাথা সত্ত্বেও কোন শব্দ করতে পারল না ,পাশের পুলিশ বলে উঠল "মার ,শালারে ,এই হারামিগুলার জন্য দুপুরে ভাত খাইতে পারি নাই ,রুটি খাইছি পানি দিয়া ভিজাইয়া ,"বলতে বলতে আর দুই বাড়ি লাগিয়ে দিল
ঘটনা দুইঃ
শাহিন ,
সেই ছোট বেলা থেকে হুজুরদের কাছেই মানুষ হয়েছে ,বাপ কে জানে না ,মায়ের মুখ ও মনে পরেনা ,এই হুজুর রাই বাপ-মা। এলাকার মানুষের দানে পোশাক-খাওয়া সব চলে । দাখিল পরীক্ষা শেষ , ভালই হয়েছে ,ইনশাল্লাহ পাশ হয়ে যাবে । মনে একটু ফুর্তি-ফুর্তি ভাব এতদিনে হুজুরদের সম্মান কিছুটা হলেও বাড়াতে পারবে বলে তার ধারনা ।
বিকেলে খেলা শেষে রুমে ফিরতেই হুজুর বললেন চল যেতে হবে
হুজুরের সাথে গাড়িতে করে ঢাকায় চলে আস্ল,আজব কারবার বড়-বড় দালান, শো-শো করে গাড়ি চলে ,সে কি তেজ গাড়ী গুলার ,শুধু জ্যামে পড়লেই বোকা হয়ে বসে থাকে ,ধোয়ার গা গুলিয়ে আসে , টক পানি চলে আসে , কষ্ট করে সামলে রেখেছে ।
গাড়ি থেকে নেমে দম ছাড়ল ,নেমে দেখে অবাক কান্ড ,আশে-পাশে সবাই তার মতই পাঞ্জাবী টুপি পড়া, ভাবলো বিরাট কোন হুজুর আসবে ওয়াজ হবে ,বহুদিনের শখ বড় আলেমের কথা শুনবে ।
সন্ধ্যা নামল ,রাত বাড়ল কিন্তু হুজুর এখন এসেনি ,মাঝ রাতে হঠাত করে পুলিশের
টিয়ার গ্যাস আর রাবার বুলেট সবাই দিগ্বিদিক ছোটা শুরু করল । পাশের ছেলেটাকে অজ্ঞান হতে দেখে ভীষন ভয় পেল শাহিন ,তার এই ক্ষুদ্র জীবন কেটেছে মাদারাসার ঘোরটপের মাঝে
হঠাত করে এক বড় ভাই তার হাত টেনে ভিড় থেকে বের করে নিয়ে আসল ,ভোররাতে
দুই-ভাই কিভাবে যেন পৌঁছল, পৌঁছে যা দেখল তাতে তারা শোকে পাথর হয়ে গেল
তাদের একমাত্র আশা-ভরসা,আশ্রয়স্থল কে বা কারা আগুন দিয়ে লাল করে দিয়েছে
বিপ্লবের লাল আগুন , শাহিনের চোখে অশ্রু , তার ভাইয়ের চোখে ঘৃনার আগুন , কাউকে ছাড়বে না সে, কাউকে না ......
>>>
আজ সবার মনে প্রশ্ন একটাই এর দায়ভার কার কিংবা কাদের ??
১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৩
দেহঘড়ির মিস্তিরি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: হুমম