নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক আমার ভাবনা........

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।"

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু)

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ, তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।" ---ডাব্লিউ এস ল্যান্ডস।

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ই-টেণ্ডারিং ও ই-কনট্রাক্ট ব্যবস্থাপনায় ই-জিপি

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন



অভিনব প্রতারণার শিকার সাড়ে ৫ কোটি টাকার টেণ্ডার! কিংবা রাজশাহীতে টেন্ডারবাজি ৩ প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর। খবরের কাগজে চোখ বোলালে প্রায়সই এ জাতীয় সংবাদ আমাদের চোখে পড়ে। বিশেষ করে সরকারী ক্রয়ের ক্ষেত্রেই এমটা বেশী দেখাযায়। কারণ আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এর প্রায় ৮০% অর্থই ব্যয় হয় ক্রয় কাজে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ক্ষেত্র বিশেষে, ক্রয় কাজে বিলম্ব; টেন্ডার মূল্যায়নে দীর্ঘসূত্রিতা; যথেষ্ট স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থার অনুপস্থিতি; রাজনৈতিক প্রভাব ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়। এ সকল সমস্যা কাটিয়ে উঠে একটি মানসম্পন্ন, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও কার্যকর ক্রয় পদ্ধতি তথা সরকারী কিংবা বেসরকারী পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল এবং এ বাবদ অর্থ ব্যয়ে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ইলেক্ট্রনিক্স টেন্ডার বা ই-টেণ্ডারের আগমন। পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা শর্তে ঠিকাদারগণ এই পদ্ধতিতে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ফলে ক্রয় কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ও গুণগতমান উভয়ই বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনভিপ্রেত বহিঃ প্রভাব তিরোহিত হবে যা আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উপরও অনুকূল প্রভাব রাখতে সক্ষম হবে। অর্থ ব্যয়ে একটি স্বচ্ছ, গতিশীল ও টেকশই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হবে।



পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এর সেণ্ট্রাল প্রকিউরমেণ্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) এর তত্ত্বাবধানে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট-২ (পিপিআরপি-২) এর আওতায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ –এর উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রনিক গভর্ণমেণ্ট প্রকিউরমেণ্ট বা ই-জিপি (http://www.eprocure.gov.bd) ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। ই-জিপি দু’পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যথাঃ ই-টেণ্ডারিং ও ই-কনট্রাক্ট ব্যবস্থাপনা। এ পোর্টাল ব্যবহার করতে হলে দরদাতা, ক্রয়কারী ও ব্যাংকসমূহকে ই-জিপি পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হতে হবে এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।



ই-জিপি সিস্টেম একটি জাতীয় পোর্টাল যার মাধ্যমে ক্রয়কারী সংস্থা এবং ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহ নিরাপদ ওয়েব ড্যাশবোর্ড ব্যবহার করে যাবতীয় ক্রয়কার্য সম্পাদন করতে পারবে। যেমনঃ বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা তৈরি করা; দরপত্র আহ্বান করা; প্রস্তাবের জন্য অনুরোধ করা; কোটেশনের জন্য অনুরোধ করা; দরপত্র/আবেদন/প্রস্তাব তৈরি, জমা, উন্মুক্তকরণ ও মূল্যায়ন করা; চুক্তি সম্পাদন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; চুক্তি ব্যবস্থাপনা, আর্থিক লেনদেন এবং ইনফরমেশন সিস্টেমের প্রধান নির্দেশিকার মাধ্যমে সম্পাদিত কার্যাবলী পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন এবং সংশোধন করা। মোটকথা, ই-জিপি সিস্টেমের মাধ্যমে সরকারি তহবিলের অর্থে পণ্য, কার্য ও সেবা ক্রয়ের যাবতীয় প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করা যাবে। এর সফল ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রয়কার্যক্রম দ্রুততার সাথে নিষ্পন্ন করা যাবে। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) এর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। চলতি অর্থ বছরেও আমাদের এডিপি’র আকার হলো ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য এটা অনস্বীকার্য। ভারতের কয়েকটি রাজ্যে, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেসিয়া ও চীনে ই-জিপি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে সময় ও খরচ বাঁচে। প্রতিযোগিতাও বাড়ে। এতে ক্রয়কৃত পণ্য, কার্য ও সেবার গুণগত মান বাড়ে।



উল্লেখ্য যে, ঠিকাদারগণ ই-জিপি সিস্টেমে রেজিষ্ট্রেশন করার সাথে সাথে অন-লাইনে বিড করার যোগ্যতা অর্জন করবেন এবং সংস্থাসমূহও অন-লাইনে টেন্ডার আহবান করে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পাদন শুরু করতে পারবেন। অর্থাৎ বাস্তবে ই-জিপি প্রয়োগের জন্য রেজিষ্ট্রেশনটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ যার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে অন-লাইন প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু হবে। ই-জিপি সিস্টেমটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।



এই পোর্টালটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যার মাধ্যমে- পুরো সরকারী ক্রয় কার্যক্রমের একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ প্রতিষ্ঠিত হবে; দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ ও আইন/বিধি’র পরিচালন পরিবীক্ষণে একটি জাতীয় প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত হবে; ইলেকট্রনিক পদ্ধতি চালুর ফলে ক্রয় কার্যক্রমে বিভিন্ন ধরনের বিদ্যমান জটিলতা পরিহার করা সম্ভব হবে; অধিক সংখ্যক দরদাতা অবাধে ক্রয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে তথা অধিকতর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত হবে; প্রচলিত পদ্ধতিতে দরপত্র জমাদানের বিদ্যমান সমস্যা দূর হবে; সরকারি ক্রয়ের গুণগত মান অধিকতর বৃদ্ধি পাবে; ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে এবং যেকোন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থা কয়টি টেণ্ডার অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছে এবং টেণ্ডারগুলির সর্বশেষ অবস্থা কি তা অবলোকন করাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এই সুযোগ ব্যবহার করে মনিটরিং কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।



প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ০৫ (পাঁচ) টি প্রতিষ্ঠানে পাইলট ভিত্তিতে ই-টেণ্ডারিং প্রবর্তন করা হয়েছে। সকলের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠাই পারে এ ধরণের একটি শুভ উদ্যোগকে সাফল্য মণ্ডিত করতে। বিশেষত দীর্ঘদিন অভ্যস্থ একটি প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের মানসিক প্রস্তুতি ও সদিচ্ছা একান্ত অপরিহার্য। একটি নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়নে সমস্যা আসতেই পারে। তবে যেকোন সমস্যা সমাধানে সহায়তা দেয়ার জন্য সিপিটিইউ প্রস্তুত রয়েছে। ভবিষ্যতে ই-টেণ্ডারিং ব্যবস্থা সকল মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় ক্রমান্বয়ে বিস্তৃত হবে বলে আশা করছি



[ লেখকঃ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ [email protected] ]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: You Can Read My Today's Article/Column
From: "The Daily Arthoniti Protidin (দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন)"
Date: 27_12_2012.
Subject: ই-টেণ্ডারিং ও ই-কনট্রাক্ট ব্যবস্থাপনায় ই-জিপি।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: Facebook: http://facebook.com/moyazzem24

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.