নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক আমার ভাবনা........

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।"

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু)

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ, তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।" ---ডাব্লিউ এস ল্যান্ডস।

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিরবিচ্ছন্ন ইন্টারনেটঃ প্রয়োজন বিকল্প সাবমেরিন ও টেরেস্ট্রিয়াল সংযোগ

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন

সিঙ্গাপুরে সাবমেরিন ক্যাবল্ কাটা পড়ায় সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগের গতি ধীর। স্বাভাবিক গতি পেতে কমপক্ষে তিন থেকে চার দিন লেগে যেতে পারে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার বদৌলতে এমন সংবাদ হরহামেশাই আমাদের চোখে পড়ে। কর্মজীবনে আইসিটি সংশ্লিষ্ট পদে আসীন বলে, হর-হামেশাই এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় বিভিন্ন পক্ষ হতে। যদিও আমি এসংশ্লিষ্ট কাজের সাথে সম্পৃক্ত নই (সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল্ কোম্পানী লিমিটেড-বিএসসিসিএল, দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করে) তথাপী নিজের সীমিত ধারনা বিনিময়ের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝাতে চেষ্টা করি হঠাৎ করে ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে। অনেকে আবার প্রশ্ন করেন সাবমেরিন ক্যাবল্ আবার কী? এটা না হলে কী আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারতাম না? সাবমেরিন ক্যাবল্ যখন ছিলনা তখন কী কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি?



কমিউনিকেশন শব্দটি বোধকরি সকলেরই পরিচিত, যার অর্থ হলো যোগাযোগ। কোন কিছুর সাহায্যে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে (গ্রাহক ও প্রাপকের মধ্যে) তথ্য আদান-প্রদান করাই হলো কমিউনিকেশন। কমিউনিকেশন দুই প্রকার- লোকাল কমিউনিকেশন ও রিমোট কমিউনিকেশন। লোকাল কমিউনিকেশন হয় ফেইস টু ফেইস বা সামনা-সামনি এবং রিমোট কমিউনিকেশন হয় লং ডিস্টেন্সে অর্থাৎ ভিন্ন-ভিন্ন ভৌগলিক অবস্থানে। লং ডিস্টেন্সে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক যোগাযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়াটাই হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট এর সুবাদে সমগ্র বিশ্বের সকল কম্পিউটার ব্যবহারকারীগণ একই বলয়ে আবদ্ধ হতে পেরেছেন। ফলে একের সাথে অন্যের সহযোগিতা, সহমর্মিতা ইত্যাদি বেড়েছে আশাতীত ভাবে। তাই কেউ কেউ ইন্টারনেটকে নেটওয়ার্ক এর নেটওয়ার্ক বলে অভিহিত করেন। ইন্টারনেটের সুবাদে যোগাযোগ ব্যবস্থায় চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খবরা-খবর জেনে নিতে পারছেন। প্রয়োজনীয় তথ্যটি পাঠিয়ে দিতে পারছেন বিশ্বের যে কোন প্রান্তের পরিচিত মানুষটির কাছে মূহুর্তের মধ্যে। ইন্টারনেট গতিময়তার মাইলফলক। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এবং তথ্য আদান-প্রদানে এর ভূমিকা অপরিসীম।



বহির্বিশ্বের সাথে ইন্টারনেটে যুক্ত হবার জন্য দুই ধরনের সংযোগ পদ্ধতি বিদ্যমান। যা ওয়্যারর্ড (Weired) ও ওয়্যারলেস (Weirless) সংযোগ নামে পরিচিত। ক্যাবল্ বা তারের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করা হলে তাকে ওয়্যারর্ড সংযোগ বলা হয়। মাটির উপর দিয়ে ক্যাবলের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করা হলে টেরেস্ট্রিয়াল এবং সাগরের তলদেশ দিয়ে তার টেনে সংযোগ স্থাপন করা হলে তাকে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ বলা হয়। এ ধরনের সংযোগে অপটিক্যাল ফাইবার (উচ্চ গতিতে তথ্য আদান-প্রদানে স্বক্ষম) ক্যাবল্ ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে, ক্যাবল্ বা তার ছাড়া বাতাসকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে সংযোগ স্থাপন করা হলে তাকে ওয়্যারলেস সংযোগ বলা হয়। ভিস্যাটের মাধ্যমে স্যাটেলাইটের সাথে ওয়্যারলেস সংযোগ স্থাপন করা হয়।



ভিস্যাট (VSAT) হলো খুব ছোট আকারের সংযোগযন্ত্র যা স্যাটেলাইটের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দ্বিমুখী ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এ প্রযুক্তি পৃথিবীর সর্বত্র টেলিযোগাযোগ ও ব্রডব্যান্ড (বাংলাদেশের জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা ২০০৯ -এ ন্যূনতম ব্যান্ডউইড্থ ১২৮ কিলো বিট পার সেকেন্ড বা এর অধিক গতির কানেক্টিভিটিকে ব্রডব্যান্ড বলা হয়েছে) ইন্টারনেট সংযোগ দিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। স্বাধীনতার পর বহির্বিশ্বের সঙ্গে কেবলমাত্র স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই টেলিযোগাযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। ইন্টারনেট প্রযুক্তি আসারপরও আমরা স্যাটেলাইটের ওপরেই নির্ভরশীল ছিলাম। মোদ্যাকথা হলো, বহির্বিশ্বের সঙ্গে আমাদের পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাটাই ছিল এই প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে। এ প্রযুক্তিতে ব্যান্ডউইথ অনেক ব্যয়বহুল ও চাইলেই ইচ্ছেমতো ব্যান্ডউইথ নেয়া যেতনা।



ব্যয় কমানো এবং সহজ পদ্ধতিতে বেশীপরিমান ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি (উচ্চগতির যোগাযোগ) পাওয়ার জন্য প্রথমে ইউরোপের উন্নত দেশগুলো ক্যাবলের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপনের কার্যক্রম শুরুকরে। তারই ধারাবাহিকতায়, ১৮৫০ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সাবমেরিন ক্যাবল্ স্থাপন করা হয়। সেটিই প্রথম ব্রিটিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া যান্ত্রিক যোগাযোগ মাধ্যম। ২১ মে ২০০৬ সালে ১৪ দেশের সাবমেরিন ক্যাবল‌ কনসোর্টিয়াম সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-ফোর (সি-মি-উই-ফোর) -এর সথে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। ১৪টি দেশ হচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিসর, ইতালি, তিউনেশিয়া, আলজেরিয়া ও ফ্রান্স। যা ২০ হাজার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১.২৮ টিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিয়ে এই ১৪টি দেশের ১৬টি পয়েন্টের সাথে যুক্ত। বাংলাদেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল্ সংযোগ এটি। মূল ক্যাবল্ হতে বাংলাদেশের ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত ১ হাজার ২৬০ কিলোমিটার ব্রাঞ্চ ক্যাবল্ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে সাবমেরিন কক্সবাজার সংযোগে ১৬৪ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আছে। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে ইন্টারনেটের জন্য শুধুমাত্র একটি সাবমেরিন ক্যাবলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে কখনো ক্যাবল্ কাটা পড়লে সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগের গতি ধীর হয়ে যায়, তখন বিকল্প হিসেবে স্বল্প ব্যান্ডউইথের ভিস্যাটই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। আশারকথা হচ্ছে, দেশে উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দিতে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-ফাইভ (সি-মি-উই-ফাইভ) নামের নতুন সাবমেরিন ক্যাবল্ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে। টেলিযোগাযোগ সেবা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবলে্র উপর না রেখে পাশাপাশি টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল্ (আইটিসি) লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। যা নিরবিচ্ছন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানে সহায়ক হবে বলে আমরা মনেকরি।



[লেখকঃ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ [email protected] ]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৮

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: You Can Read My Today's Article/Column
From: "The Daily Arthoniti Protidin (দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন)"
Date: 07_02_2013.
Subject: চাই নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: Facebook: http://facebook.com/moyazzem24

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.