![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ, তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।" ---ডাব্লিউ এস ল্যান্ডস।
মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন
বর্তমানে কোন তথ্যকে অন্যের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট। আজকের কম্পিউটার ব্যবহারকারী মাত্রই ইন্টারনেট সম্পর্কে অবগত। প্রয়োজনের নীরিখে আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে থাকি। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেকোন তথ্যকে অন্যের সামনে উপস্থাপন বা শেয়ার করা হয়। তথ্যগুলো হতে পারে টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়া (যেমনঃ ছবি, অডিও বা ভিডিও) ফরমেটে। ওয়েবসাইটে সেগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা ওয়েব ডেভেলাপারের কাজ। আর আপনার ওয়েবসাইটটি সকলের দেখার জন্য উপযোগী করাই ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত। আপনার ওয়েবসাইটটিকে যদি তুলনা করা হয় আপনার অফিস ভবনের সাথে, তাহলে তার তথ্য হবে ভবনে ব্যবহৃত আসবাবপত্র। আর ওয়েবসাইট ডেভেলাপ করাকে তুলনা করা যাবে ভবনটি তৈরি করার সাথে। সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইট হোস্টিংকে তুলনা করা যায় আপনার অফিস ভবনের জন্য জায়গা কেনা এবং সে জায়গায় ভবনটি তৈরি করার সাথে। আপনার অফিসে যদি কেউ আসতে চায়, তবে তাকে এর ঠিকানা জানতে হবে। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে এই ঠিকানাটাই হচ্ছে তার নাম, যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম। এই ডোমেইন নেমই আপনার ওয়েবসাইটকে এককভাবে আইডেন্টিফাই বা সনাক্ত করবে। বিশ্বের সবাই ওয়েবসাইটটিকে চিনবে এবং একসেস করবে এ নাম ব্যবহার করে। ইন্টারনেটে ডোমেইন নেম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার নামটি যেভাবে আপনার পরিচয় বহন করে, তেমনি ডোমেইন নেম যেকোন ওয়েবসাইটের নিজস্ব পরিচয় বহন করে।
এই ডোমেইন নেম শুরুতে ছিল রোমান হরফ নির্ভর। যেমন, http://www.google.com কিংবা http://www.stibd.com। সবই হতে হবে রোমান হরফে- অর্থাৎ ইংরেজির মত ভাষাতে। ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা হলেও বিভিন্ন জাতি নিজস্ব ভাষাতেও ডোমেইন নেম দেখতে চায় ইন্টারনেট জগতে। সেই ধারণা থেকেই শুরু হলো বাংলা, হিন্দি কিংবা চীনা ভাষায় ওয়েবসাইটের নিজস্ব পরিচয় দানের প্রক্রিয়া। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাতে ডোমেইন নেম- ‘গুগল ডটকম’ কিংবা ‘এসটিআইবিডি ডটকম’। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা। বর্তমানে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গসহ প্রায় ২৫ কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। তাই, ইন্টারনেটে বাংলায় ডোমেইন লিখা নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষার জন্য বড় সম্মানের বিষয়। মাতৃভাষা বাংলার জন্য একমাত্র জাতি বাঙালীরাই লড়াই করেছে। রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে রক্ষা করার ইতিহাস কেবল বাঙালী জাতিরই রয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা পেলেও বাংলা ভাষা দেশের তথ্য-প্রযুক্তিতে এখনও উপেক্ষিত। ওসিআর (অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন), বাংলা অভিধান, স্পেল চেকার, টেক্সট টু স্পিচ, স্পিচ টু টেক্সট এবং স্ক্রিপ্ট ফন্ট (বাংলায় সনদ লেখার জন্য) নেই। এসব তৈরীর কাজ শেষ করা গেলে তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলার অবস্থান আরও ভালো হবে।
ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেম সংক্রান্ত নীতি-নির্ধারনীমূলক যাবতীয় কাজ করে থাকে- ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন ফর এসাইন্ড নেমস এন্ড নাম্বারস (আইসিএএনএন)। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া অলাভজনক জনসেবা প্রদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি এখনো পর্যন্ত বিশ্বে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিতপত্র আইসিএএনএন বরাবরে পাঠানো হয়েছে। জাতীয় সংসদের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিকে সুপারিশ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অনলাইনে এ সম্পর্কিত একটি আবেদন করেন। আইসিএএনএন বাংলা ভাষার জন্য স্ট্রিং ইভ্যালুয়েশন (বাংলা অক্ষরগুলো চেনার জন্য নির্দিষ্ট কোড) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ইন্টারনেট অ্যাসাইন্ড নাম্বারস অথরিটি (আইএএনএ) বাংলার জন্য কোডটি অনুমোদনও করে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সুনির্দিষ্ট না হওয়ায় ‘ডট বাংলা’ ডোমেইন বরাদ্দ হওয়ার পরও চূড়ান্তভাবে এটি পায়নি বাংলাদেশ। আজও আমরা অনলাইনে স্বাতন্ত্র রক্ষা করতে পারিনি। অথচ এটি চালু হলে বিশ্বের সব বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বাংলায় নিজ নিজ ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেম নিবন্ধন করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করতে পারত।
বিভিন্ন সফ্ওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে বাংলা লেখা যায়। কেউ বিজয়, কেউ অভ্র, কেউবা অন্য কোন সফ্ওয়্যার ব্যবহার করে বাংলা লিখছেন। প্রশ্ন জাগতে পারে, বাংলায় ওয়েব ঠিকানা লিখতে হলেঃ কোন্ সফ্ওয়্যার ব্যবহার করতে হবে? কে কোন্ সফ্ওয়্যার ব্যবহার করবেন তা এখানে বিবেচ্য নয়। ইউনিকোডভিত্তিক যে কোন্ সফ্ওয়্যার হলেই বাংলায় ওয়েব ঠিকানা টাইপ করা সম্ভব। যুক্তাক্ষরযুক্ত বাংলা ওয়েব ঠিকানাও ব্যবহার করা যাবে, ইউনিকোডের যে কোডিং সেখানে যুক্তাক্ষর কোন সমস্যা নয়। তাই, যুক্তাক্ষর দিয়েও ডোমেইন নেম পাওয়া যাবে। আশার কথা এই যে, বাংলাদেশ গত ৩০ জুন ২০১০ তারিখে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ইনস্টিটিউশনাল সদস্য হয়েছে।
তথ্য-প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বাংলা ডোমেইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলা ডোমেইন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার শুরু হলে বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভাষা হিসেবে পরিচিতিও পাবে। এটা হলে বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ব্যাপক প্রচার পাবে। তখন বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণার দাবি আরও জোরদার হবে। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলা ভাষা পরিচিতি পাবে। ইন্টারনেটে বাংলা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যাবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রাইমারী স্ট্রিং হিসেবে ‘ডট বাংলা’ এবং ভ্যারিয়েন্ট স্ট্রিং হিসেবে ‘ডট বাংলাদেশ’, ‘ডট বং’, ‘ডট বঙ্গ’, ‘ডট বিডি’ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটের এড্রেস দেখেই বোঝা যাবে এটি বাংলাদেশী ওয়েবসাইট। ইংরেজী ডোমেইন নামের পাশাপাশি বাংলা ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
[লেখকঃ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ [email protected]]
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: Facebook: http://facebook.com/moyazzem24
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯
মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: You Can Read My Today's Article/Column
From: "The Daily Arthoniti Protidin (দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন)"
Date: 14_02_2013.
Subject: বাংলায় ডোমেইন নাম।