নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলছে চলবে

হাসান কালবৈশাখী

আমি দুর্বার, আমি ভেঙ্গে করি সব চুরমার। আমি কালবৈশাখীর ঝড়! আমার ফেসবুকইডি www.facebook.com/norwstorm

হাসান কালবৈশাখী › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে নূর হোসেনের উত্থান

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯



শিমরাইল টেকপাড়া এলাকার এক গরিব ঘরের সন্তান ছিল নুর হোসেন।
পিতা ট্রাক শ্রমিক হাজী বদর উদ্দিনের ৬ ছেলের মধ্যে নূর তৃতীয়। দাইমুদ্দিন নামে এক ট্রাকচালকের হাত ধরে প্রায় টোকাই কিশোর নূর হোসেন আসেন পরিবহন লাইনে। বছর খানেক পর ট্রাক হেলপার হিসেবে সিদ্ধিরগঞ্জের ইকবাল গ্রুপে শুরু করেন কর্মজীবন। তারপর
হেলপার থেকে এক বছর পর একই গ্রুপে ট্রাকচালক হিসেবে পদোন্নতি পান নুর হোসেন।
১৯৮৭ সালে তারই ওস্তাদ দাইমুদ্দিন এরশাদ সমর্থক বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন শিমরাইল শাখার কার্যক্রম শুরু করেন। পরের বছর দাইমুদ্দিনকে সরিয়ে নিজেই সে শাখার নেতৃত্ব কব্জা করতে বেশি সময় নেয়নি সন্ত্রসে দক্ষ হয়ে ওঠা নুর হোসেন। ১৯৮৮ সালে শিল্পপতি মোহাম্মদ আলীর হাত ধরে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। বিএনপির মন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহম্মেদের গাড়িতে বোমা মেরে এলাকায় আলোচনায় এসেছিল নুর হোসেন।

৯০এ এরশাদের পতনের পর দ্রুতই রং বদলে বিএনপি ক্যাডার নেতা বনে যান নুর হোসেন।
১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজ করেন বিএনপির প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে। গিয়াস উদ্দিনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ১৯৯২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউপি নির্বাচনে বিএনপি নেতা হিসেবে ভোট জালিয়াতি ও সন্ত্রাসি কায়দায় সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে (নিহত নজরুল ইসলাম কমিশনারের শ্বশুর) পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। স্থানীয় বিএনপির ব্যাকিং ও পরিবহন শ্রমিক নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং সন্ত্রাসকে পুঁজি করে বাড়াতে থাকে অপরাধের সাম্রাজ্য।
শুরুটা ছিল পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। শিমরাইল ট্রাক টার্মিনাল থেকে প্রতিটি গাড়ির ট্রিপ বাবদ আদায় করতো টাকা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (বি-৪৯৪)-এর শিমরাইল পূর্বাঞ্চলীয় কমিটির রসিদে চলতো এ চাঁদাবাজি। ১৯৯৫ সালের এপ্রিলে আদমজীতে খালেদা জিয়ার জনসভায় সামনের সারিতে অবস্থানের মাধ্যমে নারায়নগঞ্জ বিএনপিতে নূর হোসের সুসংহত অবস্থান সবার দৃষ্টিগোচর হয়।

১৯৯৬ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে শিমরাইল মোড়ে নূরহোসেন বাহিনীর সাথে শামিমওসমান বাহিনীর সংঘর্ষ হয়, তার গুলিতে এক আওয়ামী পিকেটার নিহত হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। এর পর ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত পরবর্তী ইউপি নির্বাচনেও বিএনপির সমর্থন আদায় করে নুর হোসেন। অন্যদিকে প্রার্থি আওয়ামী লীগ নেতা নিহত সেই নজরুল ইসলাম। দ্বিতীয়বারের মতো সন্ত্রসি কায়দায় বিএনপি নেতা হিসেবে আবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন নূরহোসেন। বিএনপি এম্পি গিয়াস উদ্দিনের সমর্থনে গড়ে তোলে শক্তিশালী আন্ডারওয়ার্ল্ড দল। ১৯৯৭ সালে শিমরাইলের সওজ অফিসে হামলা চালিয়ে দখল করে নির্বাহী প্রকৌশলীর রুম। গুলি করে ও বোমা ফাটিয়ে দখল করে কাসসাফ মার্কেটের জায়গা। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নুর হোসেনের হাতেই ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার অপরাধ জগতের মূল নিয়ন্ত্রণ। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি, পরিষদের তহবিল তছরুপ, বন্যার্তদের অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী আত্মসাতসহ নানা অনিয়মই ছিল তার নিয়ম। ১৯৯৮ সালের বন্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পানিতে ডুবে গেলে কাঁচপুর থেকে পূর্বাঞ্চলে লঞ্চ চালিয়ে ও চাঁদাবাজি এবং পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়িপ্রতি আদায় করতো ২০ টাকা করে। ১৯৯৯ সালে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে সোনালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখা থেকে উত্তোলন করে ১৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

২০০১ এ বিএনপি আবার ক্ষমতায়। নূর হোসেন কে আর রুখে কে! ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের দুপাশে দৈনিক চাঁদার ভিত্তিতে বসিয়ে দেয় হাজারো হকার। কাউন্সিলর অফিসের পিছনে টোকেন দিয়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি করে মাদক। ট্রাক স্ট্যান্ড ও নিরালয় সিএনজি পাম্পের পাশের একটি দোতলা ভবনে শুরু করে হাউজি, জুয়া ও যাত্রার নামে মাইকিং করে লটারি ব্যবসা। এ নিয়ে মামলাও হয়। সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য গার্মেন্ট, হিরাঝিল ও আশপাশের এলাকার শিল্পকারখানা ও ডেভেলপার কোম্পানি ছিল তার চাঁদাবাজির আরেকটি বড় উৎস। এক ভাই নুর সালামের মাধ্যমে ভূমি জালিয়াতি করে নিরীহদের জমি দখল, উচ্ছেদ ও মধ্যস্থতার নামে শুরু করে চাঁদাবাজি। শিমরাইল আন্তঃজেলা ট্রাক টার্মিনালকে পরিণত করে মাদক পরিবহনের নিরাপদ ট্রানজিট পয়েন্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে নুর হোসেন নিজেই স্বীকার করেছে, নিজস্ব বাহিনী দিয়ে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা আদায় করতো সে। এ কাজে সে সাড়ে তিনশ লোক নিয়োজিত করেছিল। এদের জনপ্রতি প্রতিদিন পাঁচশ টাকা বেতন ছাড়াও খাবার জন্য খোলা হয়েছিল একটি হোটেল। এভাবে সহজেই সম্পদের পাহাড় গড়ে নুর হোসেন। রাজধানীর গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিতে চারটি ফ্ল্যাট, শিমরাইলে ১১ শতাংশ জমির ওপর ৫ তলা বাড়ি, ১০ শতাংশ জমির ওপর ৬ তলা ২টি বাড়ি, রসুলবাগে সাড়ে ৮ কাঠা জমির ওপর ৭ তলা ভবনসহ ৫টি বিলাসবহুল বাড়ি ও ৪টি ফ্ল্যাটসহ ৫০ বিঘা জমি ও শিমরাইল টেকপাড়ায় মূল বাড়ির পেছনে ৪০ বিঘার মৎস্য খামারের মালিক, শত কোটিপতি হয়ে ওঠে একদা ট্রাক হেলপার নুর হোসেন।
২০০২ এ ক্লিন হার্ট অপারেশনের সময় ভারতে গা ঢাকা দেয় নুর হোসেন, চাদাবাজি অব্যাহত ছিল। খুন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অবৈধ দখলদারিত্বসহ অনেক অভিযোগ ছিল ২০০৭ সালের ১২ই মার্চ ফক্রুদ্দিন তত্যাবধয়ক সরকার তার বিরুদ্ধে রেড ওয়ারেন্ট জারি করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর শামিম ওসমানের মত ইতি ঘটে তার ফেরারি জীবনের। ২০০৯ সালের ২০শে জুন সিদ্ধিরগঞ্জে ফেরার কিছু দিনের মধ্যেই চাঁদার দাবিতে দখল করে নেয় শিমরাইল মোড়ের এ রহমান সুপার মার্কেটের সামনের জায়গা। ২০০৯ সালের ৯ই জুলাই কাঁচপুরে শীতলক্ষ্যার তীরে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে তাদের ধাওয়া দেয় নুর হোসেন ও তার বাহিনী। ২০১০ সালে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে শীতলক্ষ্যার তীর দখল করে বালু-পাথরের ব্যবসা গড়ে তোলার অপরাধে মামলা করে বিআইডব্লিউটিএ। অভিযোগ আনা হয় নদী তীরের প্রায় ৮০০ শতাংশ জমি দখলের। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১২ সালে পুলিশ ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ। ২০০০ সালের ১লা অক্টোবর থানা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে যুবলীগ নেতা মতিনকে গুলি করে হত্যা করে নুর হোসেনের বাহিনী।

২০১১ সালে প্রথম নাসিক নির্বাচনে উদারতার ফাকে আবার নির্বাচিত হয়ে যায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর শিমরাইল মোড়ে পরিবহন ও ব্যবসা খাতে চাঁদাবাজি, সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডারবাজি, সওজ বিভাগের শিমরাইল অফিসে টেন্ডারবাজির নেতৃত্বে ছিল সে। তার ভাই জজ মিয়াকে দিয়ে যুবলীগ নেতা শহীদুল্লাহকে হটিয়ে দখল নেয় কাঁচপুরের পাথর ও বালু ব্যবসা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে ২০১৩ সালের ২৯শে মে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে বাগিয়ে নেন সিনিয়র সহ-সভাপতির একটি পদ। ২০১৩ সালের শেষদিকে বন্দরের মদনপুর এলাকায় একটি হাউজিং কোম্পানির জমি দখলের জন্য অস্ত্রের মহড়া দেয় নুর হোসেন। পরে ওই হাউজিং প্রকল্পে বালু ভরাটের কাজও পায় সে। হত্যার চার মাস আগে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ও তার সহযোগীদের সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা ছিনিয়ে নেয় নুর হোসেন। সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকতো ১৪টি লাইসেন্সকৃতসহ ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র। মোটা অংকের বিনিময়ে অনেক খুন-গুমের কাজে ভাড়ায় খাটতো নুর হোসেন। গজারিয়া উপজেলা নির্বাচনে খুন হওয়া শামছু চেয়ারম্যানের স্ত্রী গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীর হত্যার পিছনে এক এমপি ও ভাড়াটিয়া ক্যাডার নুর হোসেন দায়ী। যা ওই সময় অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। ২০১৪ সালের ১৯শে মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম গণমাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় সুধাসদনে যাতায়াত করতো নুর হোসেন।

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে শামীম ওসমানের শিষ্য হিসেবে নুর হোসেনকে দেখা যেতে থাকে হত্যাকান্ডের অল্পকিছুদিন আগে। ক্রমেই ভাঙছিলেন ঊর্ধ্বমুখী সিঁড়ি। শামীম ওসমানের গণ্ডির বাইরে উপরের স্তরেও ছিল তার রাজনৈতিক যোগাযোগ। সেটাই প্রমাণ করে বিগত সরকারের আমলে নূর হোসেনকে প্রশাসক বানানোর জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বরাবর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের চিঠি। তবে বেশিরভাগ সময়ে শামীম ওসমানকে এড়িয়েই চলত নুর হোসেন।

১৯৯৭ সালে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্যানেল মেয়র নজরুলের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। নির্বাচনের পর তারা একে অপরকে হত্যার নানা চেষ্টা চালায়। ১৯৯৮ সালে নজরুলের কিলারের গুলিতে আহত হয় নুর হোসেন। ২০০০ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে নজরুলের ওপর নুর হোসেন বাহিনীর হামলায় নিহত হয় মতিন নামে এক যুবক। নুর হোসেন ও নজরুলের বিরোধের শেষ পরিণতি ছিল সাত খুন। ২০১৪ সালের ২৭শে এপ্রিল এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে এলিট ফোর্স র‌্যাব। স্থানীয় এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে এক টেলিফোন সংলাপের প্রকাশ হলে তুঙ্গে ওঠে এ আলোচনা।
সাত খুনের ঘটনা প্রকাশের পর শামীম ওসমান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘নূর হোসেন আমার কর্মী ছিল। কিন্তু সে যে এত বড় অপরাধী, সে যে নজরুলকে খুন করে ফেলতে পারে, এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। এখন আমি সব বুঝতে পারছি। তাই নূর হোসেনের ব্যাপারে আমার অবস্থান বদলেছে।’
দীর্ঘদিন প্রাণের ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি এলাকাবাসী। সেভেন মার্ডারে ফেঁসে যাওয়ার পর বেরিয়ে আসে তার অপরাধ জগতের নানা কাহিনী। অপরাজনীতির ছত্রছায়ায় কথিত বড় ভাইদের আশীর্বাদে সে অপরাধের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল।

২০১৪ সালের ১৪ই জুন দুই সহযোগীসহ কলকাতায় গ্রেপ্তার হয় নুর হোসেন। এতবড় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে ক্ষমতাসিন সরকার হাতপা গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। তারা যত ক্ষমতাবানই হউক যেকোন মুল্যেই এই চক্রের নির্মুল চায় সরকারি হাই কমান্ড। সরকারের উর্ধতনের শক্ত অবস্থানে ভারতে পালিয়েও পার পাননি নুর হোসেন। সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে ২০১৫ সালের ১৩ই নভেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যাবস্থায় তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এক বিএসএফ ক্যাম্পে জেরার সময় নুর হোসেন নিজেই স্বীকার করে, প্যানেল মেয়র নজরুলকে মারার জন্য র‌্যাবের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট করেছিল সে।

গতকাল নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় র‍্যাব ও সেনাবাহিনী সহ পাঁচ বাহিনীর সাবেক ১৬ কর্মকর্তা ও সদস্যসহ ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তাঁর অপরাধজগতের ৯ সহযোগী। এ ছাড়া ওই সব বাহিনীর আরও নয় সাবেক কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ক্ষমতার দাপটে প্রভাবশালীদের অপরাধ বিভিন্ন সময়ে মাফ হয়ে যাওয়ার প্রচলিত ধারনা গতকাল আদালতের রায়ে ভুল প্রমাণিত হলো।

নিজের উত্থান নিয়ে নুর হোসেন বলেন,
‘আমি মূলত বাসের হেলপার ছিলাম, এরপর ড্রাইভার। অনেক কষ্ট কইরা এই জায়গায় আইছিলাম, এখন সবই শেষ।’


মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ‘আমি মূলত বাসের হেলপার ছিলাম, এরপর ড্রাইভার। অনেক কষ্ট কইরা এই জায়গায় আইছিলাম, এখন সবই শেষ।’ - যেভাবে উল্থান, সেভাবেই পতন।
সুলিখিত পোস্ট। তবে এ ধরণের অপরাধী সব বড় দলের প্রশ্রয় পেয়ে ছোট থেকে বড় হয়ে থাকে। শেষ পরিণতি দেখার জন্য জাতি অপেক্ষারত।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এ ধরণের অপরাধী সব বড় দলের প্রশ্রয় পেয়ে ছোট থেকে বড় হয়ে থাকে।
আর বন্ধু বা ফাদার শামীম ওসমান সেও আরেক নূরহোসেন।
সেও প্রথমে এরশাদের নতুনবাংলা ছাত্র সমাজের হয়ে তোলারাম কলেজের ভিপি, পরে বিম্পির চামচা, তার অনেক পরে লীগে ঢুকে এম্পি।

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৬

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: কুকুর ডাষ্টবিনের খাবার খেলেও কুকুর আবার সোনার প্লেটে খাবার খাইলেও কুকুরই থেকে যায়।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন:
ফুল দেখে বুজে নিনি কি বলতে চাই

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বুঝি নাই। একটু ব্যাখ্যা করেন।

৪| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: তাহলে তিনি এইচ টি ইমামের কুটুম্ব লাগেন! সর্ষের ভেতর ভূত ।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
তিনি এইচ টি ইমামের কুটুম্ব লাগেন কি না এখনো জানা যায় নি। তবে -

সন্ত্রসে তার প্রথম হাতেখড়ি জাতীয় পার্টির ছত্রছায়ায়।
জাতীয় পার্টিতে কাটিয়েছে ৩ বছর।
২৩ বছর ছিল বিএনপিতে, তখনও অজস্র খুনখারাপি করে গেছে, কেউ কিছু বলে নাই।
আওয়ামীলীগে ছিল মাত্র ১ বছর। এইসময়েই তাকে শিকের ভেতর ঢুকানো সম্ভব হয়েছে।

৫| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

সাহরাব বলেছেন: "ক্ষমতার দাপটে প্রভাবশালীদের অপরাধ বিভিন্ন সময়ে মাফ হয়ে যাওয়ার প্রচলিত ধারনা গতকাল আদালতের রায়ে ভুল প্রমাণিত হলো।" .....।
এসব লোক দেখানো রায় দিয়ে লাভ নাই। জাতি রায় শুনতে চাইনা.....রায় এর কার্যকারিতা দেখতে চাই .....দ্রুত !!

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২১

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
রায়ে দণ্ডিত আসামিরা খুবই প্রভাবশালী ও নারায়নগঞ্জের বহুলআলচিত গডফাদারের মাধ্যমে সরকারের উচ্চমহলে যাতায়াত ছিল। বিপুল ক্ষমতাবান এক মন্ত্রীর জামাতা সেনা ও র‌্যাব কর্মকর্তারাও ছিলেন। তাঁরা নানাভাবে তদন্ত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলেও সেগুলো কোনো কাজ দেয়নি। শেষ পর্যন্ত আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে।

এই বিচার এটি আবারও স্পষ্ট করল, যে অপরাধিরা যত শক্তিশালীই হোক, অপরাধ করলে আইনের আওতায় আসতেই হবে। কোনোভাবেই পার পাওয়া যাবে না।
সরকারের কোনো পক্ষ থেকে এই বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়নি।
উচ্চ আদালতে এই রায় পরিবর্তন হবেনা বলেই মনে হয়।

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১

প্রািন্ত বলেছেন: লেখাটি ভাল লিখেছেন। তবে পক্ষপাতদুষ্ট। নূর হোসেন আওয়ামীলীগে যোগ দেয়ার পর্বটি কৌশলে এরিয়ে গেছেন। আপনি লিখেছেন- ‘সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে ২০১৩ সালের ২৯শে মে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে বাগিয়ে নেন সিনিয়র সহ-সভাপতির একটি পদ’। সেটা কী আওয়ামীলীগের কোন পদ? আপনার ইচ্ছাকৃত পক্ষপাতমুলক লেখার কারণে ১০০ তে ১০০ পেলেন না।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
‘সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে ২০১৩ সালের ২৯শে মে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে বাগিয়ে নেন সিনিয়র সহ-সভাপতির একটি পদ’।
এটা অবস্যই আওয়ামী লীগেরই।

এইসব এখনো অব্যাহত আছে। টাকা দিয়ে বিএনপি-জামাতের বড় আঞ্চলিক নেতারা এখন দেদারসে ঢুকছে আওয়ামী লীগে।
অধপতন সুরু হয়েছে অনেক আগেই। এখন সুধু ফাইনাল পতনটা বাকি।

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৬

রাজ হাসান বলেছেন: শুধু মাত্র নুর হোসেনদের ফাসী দিলেই চলবে না,সমাজ হতে নুরহোসেন তৈরীর আস কারিগরদেরও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে,তবেই প্রকৃত বিচার হবে।

৮| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: উত্থানের গতি দ্রুত হলে পতনের গতিও দ্রুত হয়।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ধন্যবাদ হেনা ভাই।
তবে উত্থানের গতি তত দ্রুত ছিলনা, দির্ঘ ৩০ বছর।
পতনের সময় ১ বছরেই

৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


ঢাকা ও নারায়নগন্জে শ'খানেক নুর হোসেন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এখনো

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
সুধু ঢাকা ও নারায়নগন্জে না, বাংলাদেশের সব জনবহুল শহরে, শিল্পএলাকায় এধরেন নুর হোসেন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপর্যাপ্ত পুলিশ ও দুর্বল অবকাঠামোর ভেতর এটাই নিয়তি।
পর্যাপ্ত পুলিশ ও শক্ত অবকাঠামোর নিউইয়র্কেও আরো ডেঞ্জারাস নুর হোসেনরা খুনখারাপি ও কাল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
নিউইয়র্কের ব্রংস, হার্লেম ও কিছু চায়নাটাউনে একটু হাটাহাটি করলে সেখানকার নুর হোসেনদের দেখা পাবেন।

১০| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:০৪

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: অাসলে নুর হোসেনের ন্যয় অনেক নুর হোসেন অাজও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের কে ব্যবহার করে অাবার ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলা হয়।

যখনই ছুড়ে ফেলা হয় তখনই অামরা কথাবলি।

কিন্তু কথা বলিনা তাদের নিয়া। যারা নূর হোসেনকে ব্যবহার করে। যারা এই নূর হোসেনকে ব্যবহার করলো তারা ঠিকই বেঁচে গেলো। বেঁচে অাছে। অাবারও তৈরী হবে নতুন কোন নুর হোসেন। লেখা হবে নতুন কোন পোষ্ট।

সমাজের কি কোন পরিবর্তন হবে।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
সমাজের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তনগুলো আপনার চোখে পড়ছে না।
আগে মানুষ ভয়ে এইসব নূরহোসেনদের বিরুদ্ধে টু শব্দ করত না।
সন্ত্রাসি অভির যখন বিচার শুরু হয়, সাক্ষীরা কেউ ভয়ে আদালতে আসেনি, অভি ছাড়া পেয়ে যায়।
আগে বেশির ভাগ হত্যা মামলায় সাক্ষীরা আদালতে না আসায় বিচারকাজে বিলম্ব হত।

এখন দিন বদলেছে। এই মামলায় সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হয়ে ঠিকভাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন, সব ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে। ফলে মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে।

১১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:২৩

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: চাঁদগাজীর ৯নং মন্তব্যের সাথে একমত।

সরকারের উচিত নূরহোসেনদের তৈরির কারখানা বন্ধে সদইচ্ছা দেখানো।

১২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৫০

কেএসরথি বলেছেন: নুর হোসেনদের রুখলে সরকার চলবে কেমনে?
খেয়াল করবেন, 'সরকার' বলছি, কোন বিশেষ দলের কথা বলি নাই।

১৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৭

একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: এর তো এরশাদ শিকদারের সাথে মিল আছে ।ভয়ংকর !

১৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৮

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: যতদিন না দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিক হবে ততদিন এমনি চলবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.