![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Truth is everybody is going to hurt you: you just gotta find the ones worth suffering for
মেয়েটি বলল, - ক্ষিদে পেয়েছে।
ছেলেটি বলে, - বাতাস খাও। জোরে জোরে শ্বাস নাও।
তারপর এক গ্লাস পানি খেও।
- না, আজ খুব অন্যকিছু খেতে ইচ্ছে করছে।
- যেমন?
- যেমন পটল ভাজি, কিংবা গরুর মাংস ভুনা…
- মাথা খারাপ? এগুলোর দাম আকাশচুম্বি। তাও আবার
সিন্থেটিক! আসলটা তো ধরা-ছোয়ার বাইরে।
তারচেয়ে শুয়ে শুয়ে আকাশের তারা গুনো।
- শুয়েই তো আছি।
- হ্যা তাই কর। আর ক্ষিদে পেলে শুধু জোরে জোরে শ্বাস
নিবে!
মেয়েটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
- মাঝে মাঝে ভাবি আগে মানুষের কত মজা ছিল। তারা কত
বিচিত্র খাবার খেতো।
- এবং শত শত মানুষ না খেয়ে মারা যেত।
- সেটা তো সুষম বন্টন ছিল না বলে।
- এখন তো হচ্ছে।
- হ্যা তা হচ্ছে বৈ কি! শুধু জোরে জোরে শ্বাস নাও…
জহ্বার স্বাদ নেওয়া বলে কিছু নেই?
- শুধু স্বাদটাই দেখলে? সেকালে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার
খেতে হত। পারবে সারাক্ষণ খাবার চিবিয়ে যেতে? এখন
দেখ, আমাদের জীবন ধারণের জন্য দরকারী যত
কার্বোহাইড্রেট, গ্লুকোজ দরকার সব
বাতাসে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ পদ্ধতিতে।
ভবিষ্যতে প্রোটিনও এভাবে মিশিয়ে দেয়া হবে। তখন আর
প্রোটিন ক্যাপস্যুল খেতে হবে না, নিঃশ্বাসের সাথেই…
- তাতে হলটা কি?
- একটা সময় ছিল পৃথিবীর ধনী কলোনিগুলোতে মানুষ পেট
পুরে খেত আর বেশিরভাগই ফেলে দিত। অন্যদিকে গরীব
কলোনীর মানুষেরা না খেয়ে মরত। এখন বাতাসের
মাধ্যমে যদি খাবার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে সবাই
সমানভাবে পায়। বাতাসের মাধ্যমে গ্লুকোজ ডুকে যায়
ফুসফুসের রক্তনালীতে। পক্রিয়াটা ধীর, তবে চব্বিশ ঘন্টার
জন্য যথেষ্ট।
- আমার কাছে এটা প্রকৃতির নিয়মের খেলাফ মনে হয়।
- কিন্তু দেখ, কত ঝক্কি-ঝামেলা কমে যাচ্ছে। আগে মানুষ
খাওয়ার আগে ওগুলো তাপ দিয়ে প্রোসেস করে নিত,
সাথে পানি-মসলা মিশিয়ে। সময়ও লাগত প্রায়
ঘন্টা খানেক।ভুল হলেই স্বাদ চলে যেত। প্রোসেস করার
আগে সেগুলো কাঁটা হত। কাজটা ছিল যথেষ্ট বিপজ্জনক।
অনেকেই হাত কেঁটে ফেলত।
- তবু তো করত?
- কিন্তু আগের মত সময়টা নষ্ট হচ্ছে না।
আমরা আরো কাজ করার সময় পাচ্ছি।
- এত কাজে হবেটা কি শুনি? এখনই বা কি করছি আমরা?
- আমাদের এখন অবসর। তাই আকাশের তারা দেখছি।
- হ্যা আকাশটা বেশ সুন্দর লাগছে।
- জানো, আগে আকাশ আরো সুন্দর ছিল। এখন
বাতাসে কার্বহাইড্রেটের পার্টিক্যালের কারণে আকাশ
কিছুটা ঘোলাটে দেখায়। এটা একটা সমস্যা, তবে কিছু
ক্ষেত্রে তো ছাড় দিতেই হচ্ছে।
- আচ্ছা, একটা কথা…
- কি?
- বাতাসে এই ফুড পার্টিক্যালগুলো কি একটা বিশাল
যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাসে ছড়ানো হয় না?
- হ্যা, প্রতিটি কলোনীতেই এই যন্ত্র আছে। সেখান
থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে পরিমাণমত দেয়া হয়।
- যদি ওটা নষ্ট হয়ে যায়?
- ওসব দেখা-শোনার জন্য লোক আছে।
- কিন্তু ঠিক করতেও তো সময় লাগবে।ততক্ষণ
আমরা খাব কিভাবে?
- বাতাসে তো তখনও কিছু পার্টিক্যাল থাকবেই। আর কিছু
পুষ্টিদ্রব্য এমনিতেই শরীরে জমা থাকে।
মেয়েটি কোন জবাব দেয় না দেখে ছেলেটি আবার জিজ্ঞেস
করে,
- ওত ভাবছ কি?
- আকাশ দেখছি। আজকের আকশটা না সত্যিই অনেক
সুন্দর!
***
মেয়েটি আর ছেলেটি ছাদের উপর শুয়ে আকাশ দেখে। কিন্তু
ওরা জানে না বাতাসে খাবার ছড়ানোর যন্ত্রটা আর কাজ
করছে না ওদের কলোনীতে। বন্ধ করে রাখা হয়েছে ওটা।
আর যে প্রোটিন ক্যাপস্যুল সাপ্লাই দেয়া হচ্ছে, সেটাও
নকল। খুব ধীরে ধীরে হলেও এক সময় এই কলোনীর কেউ
জীবিত থাকবে না, উন্নত কলোনীগুলোর
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রোজেক্টটির প্রথম ধাপ সম্পন্ন
-বাইনারী
হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: এটা কি লিখেছেন? কবিতা? গল্প? ফিচার? প্রবন্ধ?