নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজা

রাজা

রাজামশাই

আমি রাজা

রাজামশাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে নারীর অবস্থান

২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:২৬

ইসলামে নারীর মর্যাদা , অবস্থান এবং নারীর অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নিতে হলে ইসলাম পূর্বযুগে নারীর অবস্থা সম্পর্কে কিছু আলোচনা জরুরি।



ইসলাম পূর্বযুগে নারী

আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুওয়্যত লাভের পূর্বে ধরা-পৃষ্ঠ ছিল মূর্খতা ও ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন। প্রতিটি বিষয় ও স্থানে ছিল বিশৃঙ্খলার জয়জয়কার। আকীদা-বিশ্বাস, অভ্যাস-আচরণ, চরিত্র-মাধুর্য সকল ক্ষেত্রেই ছিল অরাজকতা বিরাজমান । তথাকথিত কতিপয় প্রথা, ব্যক্তি স্বার্থ বৈ এমন কোন নীতি-আদর্শ বিদ্যমান ছিল না, যার উপর নির্ভরশীল হতে পারে একটি সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা মানব গোষ্ঠী।

যার কিছু নগ্ন চিত্র, বাস্তব প্রতিচ্ছবি: নারীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণের ভেতরদিয়ে আমাদের গোচরীভূত হয়। দেখতে পাই নারীরা কেমন বেদনাদায়ক পরিবেশে দিনাতিপাত করত। কোন অধিকার নেই, দায়িত্ব নেই, সামর্থ্যরে বাইরে সামান্য প্রাপ্যও নেই। এরই কতিপয় নমুনা আমরা এখানে তুলে ধরছি।

(ক) জন্মের পর থেকেই নারী অপয়া। জন্মের পূর্বে পিতা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত, বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত থাকত, পুত্র সন্তানের আগমনে কীভাবে আনন্দ করবে, কোন ধরনের উৎসবের আয়োজন করবে ইত্যাদি বিষয়ে। হঠাৎ কন্যা সন্তানের সংবাদ শুনলে মাথা নত হয়ে যেত। মন সংকীর্ণ হয়ে আসতো। বিবর্ণ হয়ে যেত চেহারা। অন্ধকার মনে হত সূর্যালোকিত এ পৃথিবী। অপমান আর লজ্জার গ্লানিতে লোকালয় পরিত্যাগ করত।

(খ) কেউ কেউ কন্যাসন্তান জনিত গ্লানি মুছতে জীবিত দাফন করে দিত তাকে। আবার বাঁচিয়ে রাখলেও অপমান আর লাঞ্ছনার সাথে। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা যার উল্লেখ করছেন পবিত্র কুরআনে। এরশাদ হচ্ছে



তাদের কাউকে যখন কন্যা সন্তানের শুভসংবাদ প্রদান করা হয়, তখন সাথে সাথে তার মুখাবয়ব কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। প্রাপ্ত অশুভ সংবাদ শুনে স্বজাতি হতে মাথা লুকিয়ে নেয়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় স্বীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে—কি করবে একে নিয়ে। অপমানসহ বাঁচিয়ে রাখবে, না মাটির নীচে পূতে ফেলবে। জেনে নাও, তারা নেহায়েত নির্মম, নিষ্ঠুর ও অসুন্দর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-



‘স্মরণ কর, যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হল?’

(গ) নারীর অর্থনৈতিক অধিকার ? সেও ছিল তথৈবচ। উত্তরাধিকার বলতে কোন জিনিসই ছিল না তাদের ক্ষেত্রে।ব্যাপারটি এপর্যন্ত সীমিত থাকলে কথা ছিল কিন্তু বাস্তব অবস্থা ছিল আরো অমানবিক আরো করুন ,স্বামীর মৃত্যুর পর তাকেই বরং উত্তরাধিকার ও ভোগ্যপণ্য গণ্য করা হত ।

(ঘ) নারী যখন জায়া তখন সে কি তার দাম্পত্য অধিকার নিয়ে ভাবার প্রয়াস পেত? এ চিন্তা ছিল কল্পনারও অতীত কারণ স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী ছিল উত্তরাধিকার, স্বামীর অন্য পক্ষের সন্তান অথবা কোন নিকট আত্মীয় তাকে উত্তরাধিকার হিসেবে নিয়ে নিত , যার ইচ্ছা বিয়ে করত আবার কেউ এমনিই আবদ্ধ করে রেখে দিত। অন্যত্র বিবাহের কোন কল্পনা করাও ছিল নিষিদ্ধ। বরং বাধার সৃষ্টি করত অন্যত্র বিবাহ করতে। শান্তির ধর্ম ইসলাম এসে তাদের এ অবস্থা হতে মুক্ত করে। আল্লাহ তাআলা বলেন-



হে ঈমানদারগণ! জোরপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। তোমাদের প্রদত্ত কিয়দংশ সম্পদ নিয়ে যাবে বলে, তাদের আবদ্ধ করে রেখো না। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-

যে সকল নারীদের তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে, তোমরা তাদের বিবাহ করো না। তবে অতীত তো অতীতই। এটা অশ্লীল, শাস্তিযোগ্য ও নিকৃষ্ট আচরণ।

(ঙ) শ্রদ্ধা ও সম্মান এবং এ জাতীয় বিষয় নিয়ে নারীরা চিন্তাও করত না।তাদের ক্ষেত্রে এগুলো ছিল কল্পনা বিলাস। নারী সে সময়ে! জীবন্ত প্রোথিত হত শৈশবে, নাহয় -বেচে থাকলে- লাঞ্ছনার জীবন ও পণ্যত্ব বরণ। তার কোন অধিকারই স্বীকৃত ছিল না।তাহলে ঐ নারী কেমন জীবন যাপন করত?!



ইসলামে নারী

নারীর এ হীনতর অবস্থায় ইসলাম জীবন তরী হয়ে আগমন করল। টেনে তুলল ক্লান্ত-হাবুডুবুরত নারীকে বিস্তৃত-গহিন সমুদ্র হতে। উপহার দিল সুখকর স্বাচ্ছন্দ্যময় একটি বর্নীল-কাংখিত জীবন। যেখানে রয়েছে শিশু-কিশোরীদের øেহ-মমতা-আদর আর আদর। সাবালকত্বে রয়েছে পছন্দ-অপছন্দের সব অধিকার। পূর্ণ বয়স্কাদের জন্য আছে বোনের মর্যাদা কিংবা স্ত্রীর সম্মান। অতঃপর পরম শ্রদ্ধার্হ একজন মা।

নারীর ন্যায্য-যোগ্য-প্রাপ্য সব অধিকারই প্রদান করল ইসলাম। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল অধিকার নিশ্চিতও করল।এমনকি মৃত্যুর পরও। নিুে তার সামান্য চিত্র প্রদত্ত হল।

(ক) আল্লাহ তাআলা মানবজাতি সৃষ্টি করেছেন সাথে সাথে তার আনুগত্য-এবাদতের দায়িত্বও অর্পণ করেছেন। বিধান রেখেছেন জবাবদিহিতারও। নারী-পুরুষ সকলেই সমান। শিষ্টের লালন-দুষ্টের দমন, ভালোর প্রতিদান এবং মন্দের শাস্তির বিধানও রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘যে মন্দ কাজ করবে, সে তার শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ ছাড়া সে কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারীরও সন্ধান পাবে না। পুরুষ কিংবা নারী যে কেউ ঈমান এনে সৎকর্ম করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা তিল পরিমাণও প্রাপ্য হতে বঞ্চিত হবে না।’

(খ) আল্লাহ তাআলা স্বীয় সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। সে জ্ঞান ও হিকমতের ভিত্তিতে কতক জিনিসের ভেতর আলাদা বিশেষত্ব প্রদান করেছেন। যা তার দায়িত্ব ও কাজ-কর্মে বিকশিত হয়। তেমনি কতক বিশেষত্বের অধিকারী নারী। যেমন কোমলতা, নমনীয়তা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীলতা। এগুলো তাদের সৃষ্টিগত স্বভাব। এর ভিত্তিতেই তার দায়িত্ব ও কর্তব্য বণ্টন করেছে মানুষিক স্বভাবের ধর্ম ইসলাম। এজন্য আল্লাহ তাআলা তাদের সৃষ্টিগত বৈশিষ্টের সাথে সঙ্গতি রেখেই দায়িত্ব দিয়েছেন, এমন কোন দায়িত্ব দেননি যা তার সাধ্যের বাইরে। আর পুরুষকে নারীর উপর ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দিয়েছেন,তার দায়িত্বের চাহিদা ও ঐ বৈশিষ্টের কারণে যা তাকে আলাদা স্বাতন্ত্র দিয়েছে। আল্লাহই সুউচ্চ কৌশলের মালিক ।

(গ) মেয়েদেরকে ছোট অবস্থায় আদরের সাথে লালন পালন করার প্রতিদান অধিক।

ইমাম মুসলিম র. আনাস রা. থেকে বর্ণনা করেন নবী করিম সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

যে ব্যক্তি দুটি মেয়েকে পূর্ণ বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত ভালভাবে লালনÑপালন করল, কেয়ামতের দিন সে আর আমি একত্রে আসব। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল স. আঙুল একত্রে মিলিয়ে দেখালেন।

(ঘ) ইসলাম নারীদেরকে ছোট অবস্থা থেকেই ধর্মীয় শিক্ষা, উত্তম চরিত্র, পবিত্রতা, সতীত্বরক্ষা... শিক্ষা দেওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার পথ দেখিয়েছে । রাসূলুল্লা¬হ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন―



তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে সাত বছর বয়সে উপনীত হলে নামাযের আদেশ কর আর দশ বছর হয়ে গেলে তার জন্যে শাস্তি প্রয়োগ কর এবং বিছানা আলাদা করে দাও।

(ঙ) নারীকে স্বামীর সাথে জীবন যাপন করতে হবে এদিকের গুরুত্ব বিবেচনা করে ইসলাম আদেশ দিয়েছে যে ইতিপূর্বে যারা তাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে এদের মধ্যে কাকে তার জন্যে নির্বাচন করা যায় এবিষয়ে তার সাথে পরামর্শ করতে হবে।সাথে সাথে কোন কোন গুনের বিবেচনায় পাত্র নির্বাচন করা হবে তারও একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছে। যেমন দ্বীনদারী এবং ভাল চরিত্র। রাসূলুল্লা¬হ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন―



যখন তোমাদের কাছে বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসে এমন লোক যার দ্বীন এবং চরিত্র নিয়ে তোমরা সন্তুষ্ট, তাহলে তার সাথে বিবাহ দিয়ে দাও। এবং ব্যতিক্রম করলে পৃথিবীতে অশান্তি এবং অধিক বিশৃঙ্খলা হবে।

(চ)আল্লাহ তাআলা স্বামীকে স্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তার যতœ নেয়া এবং সুন্দরভাবে দেখা-শোনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন―

তোমাদের সর্বোত্তম সে যে তার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। আর আমি আমার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। আল্লাহর রাসূল আরো বলেন―



তোমরা নারীর ব্যাপারে কল্যাণ কামী হও। কেননা, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বক্র হাড় থেকে।

(ছ) নারী মা, এদিকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ইসলাম তার জন্যে এমন কিছু অধিকার নিশ্চিত করেছে যে সম্পর্কে প্রাচীন বা আধুনিক মানব রচিত কোন বিধানই কখনো চিন্তা করেনি।

তার সম্মানের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা নিজের অধিকারের পর মাতাÑপিতার অধিকারকে স্থান দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন―



আপনার পালনকর্তা আদেশ করছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং মাতাÑপিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মাঝে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের কে উফ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না। এবং বল তাদেরকে শিষ্টচার পূর্ণ কথা। তাদের সামনে নম্রতার সাথে মাথা পেতে দাও। এবং বল হে পালনকর্তা ! তাঁদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবে লালনÑপালন করেছে।

মুসলিম নারীর বৈশিষ্ট্য:

ইসলাম নারীকে মর্যাদা দিয়েছে, দান করেছে তাদের এমন বৈশিষ্ট্য যার মাধ্যমে তাদেরকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করে দিয়েছে এবং তাদেরকে সেগুলো সংরক্ষণের আদেশ দিয়েছে। সে বৈশিষ্টাবলীর কিছু নিম্নে প্রদান করা হল:

ক) নারীকে পর্দার বিধান দেয়া হয়েছে যে, নারীরা তাদের সমস্ত শরীর অপরিচিত পুরুষ হতে ঢেকে রাখবে, যাতে করে তাকে গোপন তীর আঘাত করতে না পারে। এবং তার সতীত্ব ও পবিত্রতা কালিমা যুক্ত না হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন―



হে নবী ! আপনি আপনার পতœী, কন্যা এবং মোমিনদের স্ত্রী-গণ কে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-



এবং ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে।আর সাধারণত: যা প্রকাশমান, তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন না করে। এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ-দেশে ফেলে রাখে।

খ) ইসলাম পুরুষকে রক্তের সম্পর্কবিহীন নারীর সাথে একাকিত্বে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করেছে, যদিও সে নিকট আত্মীয় হয়। যেমন চাচাত ভাই, মামাত ভাই, দেবর ইত্যাদি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন―



মহিলাদের নিকট প্রবেশ করা থেকে সাবধান!

আনসারদের একজন বললেন

হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কি দেবরের কথা বলছেন ? রাসূল¬হ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-



দেবর হল মৃত্যু সমতুল্য।

গ) নারীর স্থান তার ঘরে। ঘরই তার কাজের ময়দান। ঘরই তার দায়বদ্ধতার জায়গা, সেখানে তার দৃষ্টির হেফাজত হবে। সন্তানদেরকে লালনÑপালন করবে। নিজ স্বামীর বিষয়াদি দেখবে।সহীহ হাদীসে এসেছে―



তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল, প্রত্যেককে তার অধিনস্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। ইমাম দায়িত্বশীল এবং তাকে তার অধিনস্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। .......নারী তার স্বামীর ঘরে দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। সেবক তার মালিকের সম্পদের দায়িত্বশীল তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। এবং আল্লাহ বলেন-



তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতার যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।

এর অর্থ এই নয় যে, নারীদের জন্য কোন কর্মই বৈধ নয় বরং তাদের নিজস্ব পরিমন্ডলে সভ্রম বজায় রেখে কাজ করাতে কোন দোষ নেই। যেমন মেয়েদের শিক্ষকতা করা, তাদের চিকিৎসা করা এবং সামাজিকভাবে তাদের দেখাশোনা করা। এবং শরীয়তের নিয়মের ভিতরে থেকে এ জাতীয় যা করা যায়।

ঘ) নিজের ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট আদব রক্ষা করে বের হবে। যেমন পর্দা রক্ষা করা, শরীর ভালভাবে ঢেকে নেয়া, গাম্ভির্য রক্ষা করা ইত্যাদি। প্রয়োজন ছাড়া বের হবে না, সুগন্ধি লাগিয়ে সাজসজ্জা করে বের হবে না।

আবু দাউদ শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-



নারী যখন সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন মজলিশের পাশ দিয়ে যায়, তখন (তার সম্পর্কে বলাবলি হতে থাকে) সে এমন, এমন। অর্থাৎ ব্যভিচারিণী।

আর এই সতর্কতা এই জন্যে যে, শয়তান যেন তার কিংবা পুরুষদের অন্তরে প্রবেশ করতে না পারে।

ঙ) বেগানা পুরুষের সাথে অতি প্রয়োজন ছাড়া কোন কথা না বলা , যদি কিছু বলার প্রয়োজন হয় তাহলে যথাযথ আদব ও সম্মানের সাথে নম্র ও কোমলতা ছাড়া কথা বলবে। আল্লাহ বলেন-



নবী পতœীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পর-পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না। ফলে সেই ব্যক্তি যার অন্তরে ব্যাধি আছে কু-বাসনা করে বসবে,এবং তোমরা সংগত কথা বলবে।



নারী-পুরুষের অবাধে মেলামেশার ক্ষতি

মুসলিম নারীর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ব্যক্তিত্বের ক্ষতি সাধন করার জন্য যতগুলি মাধ্যম আছে, তার মাঝে সবচেয়ে ক্ষতিকর মাধ্যম হল, পর-পুরুষের সাথে অবাধে মেলামেশা করা। বিশেষ করে নির্জনে মেলামেশা করা। বর্তমান যুগে অমুসলিম নারীরা অবাধ মেলামেশার এই ফাসাদে এমন ভাবে পতিত হয়েছে যে মানুষ নামের নেকড়ের সামনে এরা সস্তা পণ্যে পরিণত হয়েছে। মানব জাতীয় সম্মানকে কর্দমাক্ত করে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার মাধ্যম হিসাবে নিজেদের প্রচার করছে। নিজের পবিত্রতাকে শিল্পকারখানার ধুয়া দ্বারা কলুষিত করেছে। এমনকি নিজের সতীত্বকে পয়সার বিনিময়ে বিলিয়ে দিয়েছে।

এই হল অমুসলিম নারীর সংক্ষিপ্ত অবস্থা। এর মূল কারণ হল আল্লাহর নিয়ম পদ্ধতি থেকে দূরে থাকা এবং পর-পুরুষের সাথে কর্মস্থলে, কারখানায়, দোকানে মেলামেশা করা। সংক্ষেপে অবাধে মেলামেশা অপকার এবং ক্ষতি এভাবে নিরূপণ করতে পারি।

ক) আল্লাহ তাআলার বেধে দেয়া পথ ও পন্থা হতে বেন হয়ে আসা। কারণ মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজস্ব প্রজ্ঞানুযায়ী মানুষদের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট দিয়ে নারী ও পুরুষ করে সৃষ্টি করেছেন । পুুরুষ বাহিরে কাজ করবে ও নারী অন্দরে । এখন যদি নারী পুরুষ অবাধে মেলামেশা শুরু করে তাহলে প্রত্যেককে এমন দায়িত্ব মাথায় নিতে হবে যা মূলত তার ক্ষমতার বাইরে। আর এতে করে জীবনের গতি-শৃংখলাই ব্যহত হবে ।

খ) এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নারী পুরুষ অবাধে মেলামেশার দ্বারা যৌবনের তপ্ত বাসনা জাগ্রত হয়। খারাপ কামনার আগুনকে বাড়িয়ে দেয়। একে অন্যকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে, তখন পাশবিকতার লাগাম এমনভাবে বিস্তার লাভ করে যে তার কোন পরিসীমা থাকে না। তখন দুজনই কামনা বাসনা পূরণ করার কাজে বন্দি হয়ে যায়।

গ) মানুষ যখনই অবৈধভাবে যৌন বাসনা পুরা করার পিছনে পড়ে যায়, তখন তার চিন্তাশক্তি এবং বুদ্ধিলোপ পায়। এবং ভাল গুণাবলি ধ্বংস হয়ে যায়। যেমন ধৈর্য, সহনশীলতা ইত্যাদি।

ঘ) অবাধে মেলামেশা নারী-পুরুষকে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে নিয়ে যায়। আর এর থেকে সৃষ্টি হয় কঠিন রোগ এইডস, যার কোন চিকিৎসা নেই।

ঙ) মানুষ তার কামনার পিছনে দৌঁড়ালে যার সৃষ্টি সাধারণত: নারী-পুরুষের অবাধে মেলামেশার দ্বারা হয়, সমাজ তখন আনন্দ-ফুর্তি, খেলাধুলা এবং অহেতুক কাজের সমাজ হয়ে যায়।

চ) স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিরোধ এবং তালাকের প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। কেননা প্রত্যেকে অন্যত্র তার যৌন চাহিদা পূরণ করতে পারে। এতে কারো কোন দু:খ ও মনস্তাপ হয়না কারন প্রত্যেকেরইতো বিকল্প হিসাবে বন্ধু বান্ধবী আছে ।

ছ) অধিক হারে জারজ সন্তান জন্ম নেয়। এবং সমাজে এর খারাপ প্রভাব পড়ে।

জ) পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হয়ে যায়, সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যায়, তাদেরকে সুন্দরভাবে লালন-পালন করা যায় না। তাদের প্রতি কর্তব্যগুলি সঠিকভাবে পালন করা হয় না।

সবশেষে মহান রাব্বুল আলামিনের প্রশংসা করি যিনি মুসলমানদেরকে সুন্দর পথ প্রদর্শন করেছেন, যে পথে মান-সম্মান, ধর্ম, চরিত্র, বংশ মর্যাদা, সমস্ত কিছু রক্ষা হয় এবং জীবনের সকল ক্ষেত্র সহজ-সরল হয়।



লেখক : আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান

تأليف : أختر الزمان محمد سليمان

সম্পাদনা : নুমান বিন আবুল বাশার

مراجعة : نعمان بن أبو البشر

ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ

المكتب التعاوني للدعوة وتوعية الجاليات بالربوة الرياض



মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-৬

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৩২

ধেড়ে হুলো বেড়াল বলেছেন: ১০০০০০০০ টা প্লাস!!!!!

ছিঃ! ছিঃ!

কি যে বলবো, কাকে যে গাল দেব (!) বুঝে উঠতে পারছি না!

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৪

চিকনমিয়া বলেছেন: ক.গু(হুলো বিলাই) ভালা আচো নি:)

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৫

নীল েঢউ বলেছেন: কগু হে হে এবার নতুন বেশে ভালোই :)

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৬

আনিকা বলেছেন: পরস্পর মেলামেশায় খালি যৌন আকাংখাই জন্মায়? এই আজাইরা ফতোয়াবাজগুলার মাথায় এইসব আজাইরা জিনিস ছাড়া কিছু আসেনা কেন আল্লাহই জানে....

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৮

আরিফুর রহমান বলেছেন: কেননা, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বক্র হাড় থেকে।


হাহহাহহাহাহাহা

৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৯

আরিফুর রহমান বলেছেন: আনিকা, কারন 'সেক্স সেলস'.... মোল্লাগুলা জানে এই একটা টপিকে পুংলিঙ্গ বড়ই মনযোগী!

৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:০২

আরিফুর রহমান বলেছেন: عليك اللعنه في المءخره ، انت الأحمق @রাজা(কার)মশাই

৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:০৫

সুজনবাঙালী বলেছেন: ইসলাম তো এখনো আছে , নাকি নাই? আছে। তাহলে 'ইসলামে' কোন কিছুর অবস্থান খুজতে হলে এ সময়ের 'ইসলামি' অথবা 'মুসলমান' দেশ-সমাজেও খুজতে হবে। অতিত কখনো ফিরে আসে না। অতিতের চেয়ে ভালো অথবা খারাপ থাকা যায়। অতিতের মতো নতুন কিছু সম্ভব না। আপনার পোস্টকে স্বাগত জানাই। তবে সেই সাথে আহবান জানাই , এই সময়ে আমাদের সমাজে নারিকে মানুষের অধিকার নিয়ে বেচে থাকতে হলে কি প্রয়োজন সেকথা বলুন। অতিত কে আশ্রয় করে বাচতে চান কেন? অতিত ই আপনাকে আশ্রয় করে বাচবে। যদি আপনি বর্তমানে ভালো বাচার উপায় বাতালে দিতে পারেন।

(বেয়াদবি নেবেন না জাহাপনা!)

৯| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:০৭

খালিদ মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৪

নেমেসিস বলেছেন: অন্ধকার যুগের অন্ধ প্রলাপ

১১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৭

নতুন বলেছেন: ইসলাম পূর্বযুগে নারী
আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুওয়্যত লাভের পূর্বে ধরা-পৃষ্ঠ ছিল মূর্খতা ও ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন। প্রতিটি বিষয় ও স্থানে ছিল বিশৃঙ্খলার জয়জয়কার। আকীদা-বিশ্বাস, অভ্যাস-আচরণ, চরিত্র-মাধুর্য সকল ক্ষেত্রেই ছিল অরাজকতা বিরাজমান । তথাকথিত কতিপয় প্রথা, ব্যক্তি স্বার্থ বৈ এমন কোন নীতি-আদর্শ বিদ্যমান ছিল না, যার উপর নির্ভরশীল হতে পারে একটি সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা মানব গোষ্ঠী।

------------- ইসলাম নারীকে সন্মান দিয়েছে... তা অবশ্যই ঠিক...

সেই যুগ ছিলো... অন্ধকারের যুগ... তখন যদি মোম বা হারিকেনের বাতিও জালিয়ে দেন তা সেই সময়ের জন্য বিশাল একটা কাজ....

কিন্তু এই সময়.. নিয়ন/ফ্লোরোসেন্ট বাতির যুগ... এখানে মোম/হারিকেন এর বাতি দিয়ে মানুষ কে সন্তুস্ত করা যাবেনা...

সকল ধমে`র চেয়ে ইসলামই নারীকে সবচেয়ে বেশি সন্মান ও অধিকার দিয়েছে...

কিন্তু তা অবশ্যই সমান নয়...

আর এই সময়ে এসে যদি বলেন নারীরা শুধু ঘরে বসে থাকবে...ঘর সামাল দেবে...

তাহলে একে কোন ধরনের মূখ`তা তা আমার জানা নাই...

১২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৫:৫০

নতুন বলেছেন: তোমরা নারীর ব্যাপারে কল্যাণ কামী হও। কেননা, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বক্র হাড় থেকে।
(ছ) নারী মা, এদিকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ইসলাম তার জন্যে এমন কিছু অধিকার নিশ্চিত করেছে যে সম্পর্কে প্রাচীন বা আধুনিক মানব রচিত কোন বিধানই কখনো চিন্তা করেনি।


--- বুঝলাম... মানুষের স্ত্রীকে তার পাজরের বক্র হাড় হতে বানানো হয়েছে... কিন্তু যেই লোক ৪ টা ৫টা বা... ১০++ এর বেশি বিবাহ করেছে তার সব গুলি স্ত্রীকেই কি তার পাজরের বক্র হাড় থেকে বানানো হয়েছিলো???

১৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০২

গোস্বামী বলেছেন: এতবড় লেখা পড়েত কষ্ট হয়। ভেঙ্গে ভেঙ্গে দিলে সুবিধা হয়।

১৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৮

গোস্বামী বলেছেন: নারী পুরুষের বাম পার্শ্বের পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি হয়েছে, এটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

নবী (সা.) তাঁর নবুওয়্যাত প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত নারীদের উপর যুলুম হত, এখনো যে হচ্ছে না তা বলছি না তবে তখন এমই যুলুম হত যে তাদেরকে শিশুকালেই জীবন্ত দাফন করা হত। মহা নবী (সা.) হচ্ছেন সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি এ কুসংস্কারের বিরুদ্ধাচারণ করেন এবং তাতের জীবন্ত কবরস্থ করাকে হারাম ঘোষণা দেন। আর ইসলামই হচ্ছে সর্বপ্রথম ধর্ম, যে ধর্ম নারীকে দিয়েছে উপযুক্ত মর্যাদা, সম্মান ও স্থান। তবে বর্তমানে মুসলিম সমাজে এখনো নারীরা বিভিন্নভাবে পুরুষের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে, আর এই নির্যাতিত হবার পেছনে কিছু ভ্রান্ত ধারণা যাতে দ্বীন-মাযহাবের রং দেয়া হয়েছে বিদ্যমান। যা নারীকে পুরুষের থেকে নিচু শ্রেণীর মানুষ হিসেবে পরিচিত করাচ্ছে। আর এমনই একটি বিষয় নিয়ে এ লেখা, যা নারীর অস্তিত্বের সাথে সম্পৃক্ত তা নিয়ে লেখা হেয়েছে লেখাটি গভীর দৃষ্টি নিয়ে পড়ুন, ভাবুন এবং সিন্ধান্ত নিন।

﴿إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْوَ الْحَافِظَاتِوَ الذَّاكِرِينَ اللَّهَكَثِيراً وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّاللَّهُ لَهُممَّغْفِرَةً وَأَجْراًعَظِيماً﴾

“নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, ইবাদতকারী পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ ও নারী, খোদাভীরু পুরুষ ও নারী, ছদকা দানকারী পুরুষ ও নারী, রোযাদার পুরুষ ও নারিগণ এবং যে সকল পুরুষ ও নারী তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং যে সকল পুরুষ ও নারী আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের সকলের জন্যেই আল্লাহ্‌ তা’য়ালার কাছে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার” (আহ্‌যাব : ৩৫)।

এই পবিত্র আয়াতে, পুরুষ ও নারীকে পাশা-পাশি উল্ল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্‌ তা’য়ালা পুরস্কার দান ও ক্ষমা করার ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেন নি।

﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوباً وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ﴾

“হে মানব সকল! আমরা তোমাদের সকলকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি এ কারণে যে, তোমরা যেন একে অপরকে চিনতে পার (এবং বুঝতে পার বংশ ও গোত্র কোন গর্বের বিষয় নয়)। তোমাদের মধ্যে সেই আল্লাহ্‌র কাছে অধিক উত্তম যে অন্যের থেকে বেশী তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ জ্ঞানী এবং মানুষের ভাল ও মন্দ কাজের বিষয়ে সম্যক অবগত আছেন” (হুজুরাত : ১৩)।

এই পবিত্র আয়াতেও আল্লাহ্‌ তা’য়ালা পুরুষ ও নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য তাঁর ও একক, পবিত্র সত্তাকে উত্তমরূপে জানা বলে উল্লেখ করেছেন। আর বংশ, ক্ষমতা, ধন-দৌলত, জ্ঞান, রং, ভাষা ও ভৌগলিকতার (আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ইত্যাদি) ভিত্তিতে আল্ল্লাহ্‌ মানুষের মর্যাদাকে নির্ধারণ করেন নি বরং আল্লাহ্‌র কাছে উত্তম বস্তু হচ্ছে তাকওয়া, আর তাকওয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্‌র আদেশ-নিষেধকে মেনে চলা।

﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحاً مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ﴾

“পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যারাই ঈমান আনবে এবং উত্তম কাজ আঞ্জাম দিবে, তাদেরকে আমরা পবিত্র জীবন দান করবো এবং তাদের কাজের তুলনায় উত্তম পুরস্কার দান করব”(নাহ্‌ল : ৯৭)।

এই আয়াতেও আল্লাহ্‌ তা’য়ালা উত্তম কাজের বিনিময় স্বরূপ পুরস্কার ও সওয়াব দানের অঙ্গীকার করেছেন, আর সৎকর্ম সম্পাদনকারী পুরুষই হোক অথবা নারী হোক কোন পার্থক্য করেন নি বরং যে কোন বান্দাই এই ভাল কাজ আঞ্জাম দিবে আল্লাহ্‌ তা’য়ালা তাকেই এই পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন।

﴿وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجاً لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ﴾

“আল্লাহ্‌ তা’য়ালার নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি হচ্ছে যে, তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সহধর্মিনীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যাতে করে তাদের সান্নিধ্যে প্রশান্তি অনুভব করতে পার, আর তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও রহমতকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ সব কিছুই হচ্ছে নিদর্শন তাদের জন্য যারা চিন্তা করে” (রূম : ২১)।

এই পবিত্র আয়াতেও আল্লাহ্‌ তা’য়ালা নারী সৃষ্টিকে তাঁর অন্যতম নিদর্শন হিসেবে পেশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, নারীরা হচ্ছে ভালবাসা, রহমত ও প্রশান্তির কারণ। বিশিষ্ট মুফাসসির আল্লামা তাবাতাবাই (রহ:) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন, পুরুষ ও নারী এমনই এক সৃষ্টি একে অপরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে যারা উভয়ই পূর্ণতা অর্জন করে এবং এ দু’য়ের মিলনের মাধ্যমে মানব জাতির বংশ বিস্তার ঘটে থাকে, আর তারা একজন অপরজন ছাড়া অসম্পূর্ণ।

আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এই আয়াতের শেষে বলছেন: এই বিষয়টি তাদের জন্য নিদর্শন যারা চিন্তা করে বা যারা বিবেক সম্পন্ন। তারা এর মাধ্যমে বুঝতে পারবে যে, পুরুষ ও নারী একে অপরের পরিপূরক। আর নারীই একটি পরিবারকে সতেজ ও উদ্যমী করে রাখে এবং এর সদস্যদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। যে কারণে পুরুষ ও নারী শুভ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা হচ্ছে আল্ল্লাহ্‌ প্রদত্ত ভালবাসা ও রহমত। শুধুমাত্র দৈহিক চাহিদার কারণেই তারা এ বন্ধনে আবদ্ধ হয় না।

কিন্তু পুরুষ ও নারীর বন্ধনের মধ্যে দু’টি দিক বিদ্যমান। তার একটি হচ্ছে ঐশী ও ভালবাসার দিক অপরটি হচ্ছে পাশবিক দিক। তবে মানুষ তার ঐ ঐশী ও ভালবাসার বোধের মাধ্যমেই পূর্ণতায় পৌঁছে থাকে।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা বিশেষ প্রয়োজন বলে মনে করছি তা হচ্ছে, অনেক মুফাসসির উল্লিখিত আয়াত ও এ ধরনের আরো কিছু আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, নারী পুরুষের শরীরের অংশ। কেননা তাদেরকে পুরুষের শরীরের অংশ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর এই ধরনের তফসিরের ফলে অনেক সুবিধাবাদী পুরুষ, নারীদেরকে তাদের থেকে নিম্ন পর্যায়ের মনে করে থাকেন যা নারীর জন্যে একটি অপমান জনক বিষয়। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত আয়াতসমূহকে তারা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন :

- ﴿يَاأَيُّهَاالنَّاسُ اتَّقُواْرَبَّكُمُالَّذِي خَلَقَكُممِّننَّفْسٍ وَاحِدَةٍوَخَلَقَمِنْهَازَوْجَهَاوَبَثَّمِنْهُمَارِجَالاًكَثِيراًوَنِسَاء﴾

- হে মানব সকল! তোমাদের পরওয়ারদিগারকে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে একক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন। আর তা থেকে তার সহধর্মিণীকেও এবং ঐ দু’জন থেকে অনেক পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করেছেন (নিসা : ১)।

- ﴿هُوَالَّذِيخَلَقَكُم مِّننَّفْسٍوَاحِدَةٍ وَجَعَلَمِنْهَازَوْجَهَا﴾

-তিনিই তোমাদেরকে একক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে তার স্ত্রীকেও (আ’রাফ : ১৮৯)।

- ﴿خَلَقَكُممِّننَّفْسٍ وَاحِدَةٍثُمَّجَعَلَ مِنْهَازَوْجَهَا﴾

- তোমাদেরকে এক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে তার স্ত্রীকেও (যুমার : ৬)।

- ﴿وَمِنْآيَاتِهِأَنْخَلَقَلَكُممِّنْأَنفُسِكُمْ#1571;َزْوَاجاً﴾

- আর এটা তাঁর নিদর্শনমূহের নমুনা স্বরূপ যে, তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সহধর্মিণী সৃষ্টি করেছেন (রূম : ২১)।

- ﴿وَاللّهُجَعَلَلَكُم مِّنْأَنفُسِكُمْأَزْوَاجاً وَجَعَلَلَكُممِّنْأَزْوَاجِكُم بَنِينَوَحَفَدَة﴾

- আর আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রী নির্দিষ্ট করেছেন এবং তোমাদের স্ত্রীদের থেকে সন্তান ও পৌত্রদের সৃষ্টি করেছেন (নাহ্‌ল : ৭২)।

- ﴿جَعَلَلَكُممِّنْ أَنفُسِكُمْأَزْوَاجاً﴾

- তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন (শুরা: ১১)।

বাহ্যিকভাবে দেখা যায় যে, প্রথম তিনটি আয়াতে বলা হয়েছে সমস্ত মানুষ একটি নফস (সত্তা) থেকে সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের স্ত্রীগণও ঐ নফস থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।

কিন্তু পরের তিনটি আয়াতে উক্ত বিষয়টিকে সমস্ত পুরুষের প্রতি ইশারা করে বলা হচ্ছে যে, তোমাদের স্ত্রীগণকে তোমাদের থেকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। যদি আমরা একটুখানি এই বিষয়ের প্রতি গভীর দৃষ্টি দেই তবে এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, এ আয়াতসমূহে আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এটাই বুঝাতে চেয়েছেন যে, তাদের স্ত্রীগণ উৎসের দৃষ্টিতে তাদেরই প্রকৃতির, অন্য প্রকৃতির নয়। এটা নিশ্চয় বুঝাতে চাননি যে, স্ত্রীগণ তাদের দেহের অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। যদি তাই হয়ে থাকে তবে বলতে হয় যে, প্রতিটি স্ত্রীই তার স্বামীর দেহের অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তী তিনটি আয়াত প্রথম তিনটি আয়াতকে ব্যাখ্যা করেছে, যাতে করে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়।

আল্লামা তাবাতাবাই এই আয়াতের তফসিরে বলেছেন : ‘ওয়া খালাকা মিনহা যাওজাহা’ আয়াতের বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে যে, স্ত্রীদের পুরুষের প্রকৃতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাদের উভয়েরই সৃষ্টির উৎস হচ্ছে এক।

এই আয়াতে ‘মিন’ শব্দটি উৎস বর্ণনা অর্থে এসেছে অর্থাৎ এখানে ‘মিন’ কোন কিছু সৃষ্টির উৎসকে বর্ণনা করছে। এই আয়াতটি অন্যান্য আয়াতের মতই পুরুষ ও নারীর সৃষ্টির উৎস বর্ণনা করেছে, যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।

অতএব, এটা আমাদের কাছে পরিস্কার এবং বিভিন্ন তফসির গ্রন্থের ভাষ্য অনুযায়ী যে বলা হয়ে থাকে আল্লাহ্‌ তা’য়ালা নারীকে পুরুষের বাম পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন তা সম্পূর্ণরূপে দলিলহীন উক্তি (আল মিযান ফি তাফসিরুল কুরআন, খণ্ড- ৪, পৃ.-১৩৬)।

উপরোল্লিখিত ভ্রান্ত ধারণাটির পক্ষে রয়েছেন আহলে সুন্নাতের মুফাস্‌সিরগণ যেমন: ওয়াহ্‌বাহ্‌ যুহাইলী এবং ফাখরুদ্দীন রাযি তারা তাদের নিজ নিজ গ্রন্থে তা উল্লেখ করেছেন ও গ্রহণ করেছেন।

সুতরাং কোরআনের আয়াত থেকে আমাদের কাছে যা প্রমাণিত হয়েছে তা হচ্ছে, পবিত্র কোরআন পুরুষ ও নারী সৃষ্টির উৎসগত আলোচনা করেছে এবং তাদের মধ্যকার সাদৃশ্যকে তুলে ধরেছে। এর পক্ষে আমাদের আরো জোরাল যুক্তি রয়েছে যা নিম্নরূপ:

নবী (সা.)-এর ৬ষ্ঠ উত্তরসূরী ইমাম সাদিক (আ.)-এর কাছে প্রশ্ন করা হল যে, ‘একদল লোক বলে হযরত হাওয়াকে হযরত আদমের বাম পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে’ এ ব্যাপারে আপনার মত কি?

তিনি বললেন: আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এমন ধরনের কাজ করা থেকে পবিত্র। এরপর তিনি তাদেরকে পাল্টা প্রশ্ন করে বললেন: আল্লাহ্‌র কি ক্ষমতা ছিল না যে, হযরত আদমের জন্য স্ত্রী সৃষ্টি করবেন যে তার পাজরের হাড় থেকে হবে না? যাতে করে পরবর্তীতে কেউ বলতে না পারে যে, হযরত আদম নিজেই নিজের সাথে বিয়ে করেছেন। আল্লাহ্‌ তাদের ও আমাদের মধ্যে এ বিষয়ে ফায়সালা করুন (ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খণ্ড-২০, পৃ. -৩৫২, বাব- ২৮, হাদীস নং-২৫৮০৪)।

(অর্থাৎ এখানে ইমাম বুঝাতে চেয়েছেন যে, আল্লাহ্‌ যখন হযরত আদমকে মাটি থেকে সৃষ্টি করতে পেরেছেন তবে তার স্ত্রী সৃষ্টির জন্য, তার পাজরের হাড় থেকে করতে হবে কেন? যেহেতু আল্লাহ্‌ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তাই এ কথা বললে তাঁর অক্ষমতাকেই তুলে ধরা হয়, নয় কি? -নাউযুবিল্লাহ্‌)।

অন্য আরেকটি হাদীসে এসেছে যে, ‘আল্লাহ্‌ তা’য়ালা হযরত আদম সৃষ্টির পরে অবশিষ্ট কাদা-মাটি থেকে হযরত হাওয়াকে (হযরত আদমের মতই) স্বতন্ত্রভাবে সৃষ্টি করেছেন (বিহারুল আনোয়ার, খণ্ড-১১, পৃ. -১১৫, হাদীস নং-৪২)।

﴿وَأَوْحَيْنَاإِلَى أُمِّمُوسَىأَنْأَرْضِعِيهِ فَإِذَاخِفْتِعَلَيْهِ فَأَلْقِيهِفِيالْيَمِّ وَلَاتَخَافِيوَلَاتَحْزَنِي إِنَّارَادُّوهُإِلَيْكِ وَجَاعِلُوهُمِنَالْمُرْسَلِينَ﴾

“আমরা মুসার মায়ের প্রতি এরূপ ইলহাম করেছিলাম যে, তাকে দুধ দাও এবং যখনই তার ব্যাপারে ভয় পাবে তখনই তাকে (নিল নদের) পানিতে নিক্ষেপ কর, তুমি ভয় করো না ও দুঃখিত হয়োনা আমরা তাকে পুনরায় তোমার কাছে ফিরিয়ে দিব এবং তাকে রাসূলগণের মধ্যে স্থান দিব”(কাসাস : ৭)।

এই আয়াতে এ বিষয়টি পরিস্কার যে, আল্লাহ্‌ তা’য়ালা হযরত মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি ইলহাম করেছেন, আল্লাহ্‌ একজন নারীকে উদ্দেশ্য করে কথা বলেছেন এটা হচ্ছে নারীদের জন্য একটি মর্যাদার বিষয়।

﴿إِذْقَالَتِالْمَلآئِكَةُ1610;َا مَرْيَمُإِنَّاللّهَيُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةٍمِّنْهُاسْمُهُ الْمَسِيحُعِيسَىابْنُ مَرْيَمَوَجِيهاًفِيالدُّنْيَا وَالآخِرَةِوَمِنَالْمُقَرَّبِينَ﴾

“(ঐ সময়কার কথাকে স্মরণে আন) যখন ফেরেশতাগণ বলেছিলেন : ‘হে মারিয়াম! আল্লাহ্‌ তা’য়ালা তোমাকে তাঁর পক্ষ থেকে এক বাণীর সুসংবাদ দান করছেন যে, তার নাম হচ্ছে মাসিহ্‌ ঈসা ইবনে মারিয়াম, সে এই দুনিয়া ও আখেরাতেও একজন সম্মানিত ব্যক্তি এবং নৈকট্যপ্রাপ্তদের মধ্যে শামিল হবে” (আলে ইমরান: ৪৫)।

তাহলে আমাদের কাছে এটা পরিস্কার যে, একজন নারীর পক্ষে এটা সম্ভব যে, সে পরিপূর্ণতার এমন পর্যায়ে পৌছাবে, যার কারণে আল্লাহ্‌ তা’য়ালা আসমানী কিতাবে তাকে উদ্দেশ্য করে কথা বলবেন। আর আল্লাহ্‌র ফেরেশ্‌তাগণ ও স্বয়ং জিব্রাঈল (আ.) তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে তাঁর সাথে কথা বলবেন। আর এমন নজির পুরুষদের মধ্যেও কম দেখা যায়।

﴿وَضَرَبَاللَّهُ مَثَلاًلِّلَّذِينَ آمَنُوا اِمْرَأَةَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِندَكَ بَيْتاً فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِن فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ﴾

“আল্লাহ্‌ তা’য়ালা মু’মিনদের জন্য ফিরআউনের স্ত্রীকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যখন সে বলেছিল যে, হে আল্লাহ্‌! বেহেশ্‌তে তোমার কাছে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ কর এবং আমাকে ফিরআউনের কু-কর্ম ও তার অত্যাচারী দলবল থেকে রক্ষা কর”(তাহ্‌রিম : ১১)।

১- আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এই আয়াতে সকল পুরুষ ও নারীর সামনে একজন নারীকে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

২- আছিয়া (ফিরআউনের স্ত্রী) সকল নারীকে এটাই শিক্ষা দিল যে, আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করা কোন বাদশাহ্‌র প্রাসাদে জীবন-যাপন করার (সেখানে সব ধরনের সু-ব্যবস্থা থাকা সত্বেও) থেকেও উত্তম। সে আরো প্রমাণ করলো যে, কোন নারীরই উচিৎ নয় এই দুনিয়ার বাহ্যিক রূপের মোহে ভুল করা। কেননা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা ধবংস হয়ে যাবে। আর শুধুমাত্র আল্লাহ্‌ই থাকবেন।

৩- সে আরো শিক্ষা দিল যে, নারীদের স্বাধীনতা থাকবে (যতটুকু আল্লাহ্‌ অনুমতি দিয়েছেন) এবং তারা জুলুম ও জালিমের প্রতি ঘৃণা রাখবে; যদিও ঐ জালিম তার স্বামীও হয়ে থাকে।

﴿إِنَّاأَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَر * فَصَلِّلِرَبِّكَ وَانْحَرْ * إِنَّشَانِئَكَ هُوَالْأَبْتَرُ﴾

“হে রাসূল! আমরা তোমাকে অফুরন্ত নেয়ামত - নবুওয়াত, শাফা’য়াতের ন্যায় উচ্চ মর্যাদাসহ কাউসার (ফাতিমাকে) -দান করেছি। সুতরাং তুমি এই নে’য়ামতসমূহের শুকরিয়া স্বরূপ নামায আদায় এবং কুরবানী কর। আর প্রকৃতপক্ষে তোমার শত্রুরাই হচ্ছে নির্বংশ” (কাউছার : ১, ২, ৩)।”

১৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০০৮ রাত ৮:২৫

কানা বাবা বলেছেন:
মাইনাস...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.