নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মোমিন মেহেদী রাজনীতিক-কলামিস্ট-ব্লগার ও শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে বাংলাদেশের তরুণ সমাজের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন ক্রমশ সত্যকে সত্য আর মিথ্যেকে মিথ্যে বলার বলিষ্ঠতা আছে তার। আর একারনেই পদে পদে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে কেউ কেউ। দেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমানের স্নেহধন্য মোমিন মেহেদী বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার আন্দোলন জোটের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত। পাশাপাশি একটি বৃহৎ ছাত্র সংগঠনের শীর্ষস্থানিয় নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি’র চেয়ারম্যান-এর দায়িত্ব পালন করার সাথেসাথে প্রচারিতব্য একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলের নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন। তিনি দৈনিক যুগান্তর, সমাচার, খবরপত্রসহ বিভিন্ন কাগজে কাজ করে অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৮৫ সালের ২৮ আগস্ট ময়মনসিংহে জন্মগ্রহনকারি মোমিন মেহেদীর পৈত্রিকনিবাস বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে। তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে। বর্তমানে তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৪৪। এরমধ্যে ডিভোর্স (২০০৫), শকুনেরা উড়ছে (২০০৬), জীবনজুড়ে যুদ্ধ (২০০৭), কাকতাড়–য়ার দেশে (২০০৭), ভুল করেছি ভালোর আশায় (২০০৯), এই চাকাটা ভালোবাসার (২০০৯), ছন্দ ছড়ায় বঙ্গবন্ধু (২০০৯), সাহসের জোস্নায় শান্তজ সুখ (২০১০), যে শহরে তুমি নেই (২০১০), আমাদের পিতা তিনি আমাদের মিতাও, দেয়ালে টাঙানো রোদ(২০১১), +ভূত –ভয়, সময়কথন, বৃত্ত ত্রিভুজ এবং ভালোবাসা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে নারী, কাগজের ভূত(২০১২) উলে¬খযোগ্য। তিনি ভালোবাসেন তার জীবনসাথী শান্তা ফারজানাকে আর শান্তজ গল্পকে। অনন্ত সাহসের পথে নির্ভিক পথিক মোমিন মেহেদীর মূল লক্ষ্য সাংবাদিকতা, লেখালেখি, গান, গল্প, নাটকের সাথেসাথে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে স্বাধীনতার সুখকে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্মাননা (২০০১), মেহেন্দীগঞ্জ ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক (২০০২), অর্নিবান সম্মাননা (২০০৩), বাংলাভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র সম্মাননা পুরস্কার (২০০৪), বাঁধনহারা সম্মাননা (২০০৬), কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সম্মাননা (২০০৭), বঙ্গবন্ধু সম্মাননা (২০০৮), চন্দ্রিমা সাহিত্য সম্মাননা (২০০৯), আনন্দ আড্ডা সাহিত্য পুরস্কার, ভারত (২০০৯), কবি গুরু সম্মাননা (২০১০), নক্ষত্র সাহিত্য পদক (২০১০) পুন্ড্রবর্ধন সম্মাননা ও কবি আলাওল সম্মাননা(২০১১), শেরে বাংলা সম্মাননা এবং বঙ্গবীর ওসমানী স্বর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন। দেশের প্রথম সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনলাইন পত্রিকা banglareport24.com- এর প্রধান সম্পাদক মোমিন মেহেদী’র আশার আলোর বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের প্রত্যয়দীপ্ত পথ এগিয়ে যাবে আগামীর দিকে... নানাদিকের নানাকথা আর কাজের কথা ভেবে মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ২০১২ সালের ৩০ তারিখে মোমিন মেহেদীর নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করেছে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সাহসী জনতার রাজনৈতিক দল নতুনধারা বাংলাদেশ(এনডিবি) আত্ম প্রকাশের পর এযাবৎ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক ব্যস্ততার পরও লিখে চলেছেন অবিরাম-করছেন নিরন্তর সংগ্রাম... আহমেদ কায়সার
মোমিন মেহেদী
খুবই ভাবনার মধ্যে আছি আমার এক সময়ের প্রিয় একজন নিবেদিত নারীবাদী-মানবতাবাদী-সমাজবাদী ফরহাদ মজহারের একাল- সেকাল নিয়ে। বর্তমানে তিনি “যুদ্ধাপরাধী-জামায়াত-শিবিরের” মুখপাত্র হয়ে মিডিয়ার সামনে অনবরত খই ফোটাচ্ছেন। অথচ মাত্র বিশ বছর আগেও এই ব্যাক্তি দৈনিক ভোরের কাগজে লিখেছিলেন, ভারতে কতিপয় সাম্প্রদায়িক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভাঙার পর, আগে নয়। ভারতের মতাসীন কংগ্রেস ও তার সহযোগী শাসক শ্রেণী বাবরি মসজিদ ভাঙা হোক সেটা চেয়েছিল কিনা বলা মুশকিল, তবে দৃঢ়ভাবে ভাঙন ঠেকিয়ে হিন্দুদের তারা রুষ্ট করতে চায়নি। রুষ্ট করলে আগামী নির্বাচনে হিন্দুদের ভোট তারা হারবে। বাবরি মসজিদ ভাঙা ও মতাসীন কংগ্রেসের ভূমিকার মধ্য দিয়ে একটি দিক স্পষ্ট হচ্ছে: ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতি ‘গণতন্ত্রকেও রা করতে পারে না। ভোটের একটা নিজস্ব গতিপ্রতিক্রিয়া আছে, যাদের হাতে ভোট আছে তারা যতোই অসচেতন, সাম্প্রদায়িক ও গণতন্ত্রবিরোধী হোক তাদের চটানো যাবে না। ‘গণতন্ত্র’ কথাটি আমি এখানে ঊদ্ধৃতি চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করছি এ কারণে যে এই গণতন্ত্র দিয়ে প্রধানত ভোটাভুটিকেই বোঝানো হয়। অর্থাৎ এই ধারণায় প্রক্রিয়াটাই মুখ্য, গণতন্ত্রের আসল মর্মটা নয়। কেন শুধু প্রক্রিয়াটাই ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে মুখ্য হলো, আসলটা নয়? গণতন্ত্রের আসল মর্মশাসটা আমরা ধরি না বা ধলতে পারি না কেন? এর কারণ হলো আমরা ছিলাম দুই শ বছর ব্রিটিশদের গোলাম। আমরা ছিলাম দাস ওরা মনিব। যখন দেশ চালানোর দায় আমাদের ওপর ন্যস্ত হলো তখন আমরা মনিবের বহিরঙ্গ, আচার আচরণ, ওঠাবসা, ইত্যাদি নকল করলাম। আমরা ভাবলাম বাইরের প্রক্রিয়াটাই হলো আসল, ওটাই নকল করতে হবে। ফলে ভোটাভুটি, পার্লামেন্ট, মন্ত্রিসভা, সরকার গঠন, ইত্যাদির ভড়ংটা আমরা নিলাম। কিন্তু গণতন্ত্র তো তড়ং নয়। তার একটা সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও নীতিগত ভিত্তি আছে। ইয়োরোপের নিজস্ব ইতিহাস আছে। সেখানকার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধের প্রবক্তা যে বুর্জোয়া শ্রেণী তার গড়ে ওঠার, তার শিা ব্যবস্থার, আচার আচরণ ও সংস্কৃতির একটা বিবর্তন আছে। তাকে রক্তয়ী ভাবে সামন্ত শ্রেণীর সঙ্গে লড়ে মতায় আসতে হয়েছে। আমাদের শাসক শ্রেণী আর যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী গণতন্ত্র নিয়ে লাফঝাঁপ করে তার সেই ইতিহাস নেই। সে কারণে গণতন্ত্র যেখানে ইউরোপের মর্মের মধ্যে ইতিহাসের প্রক্রিয়ায় স্থান করে নিয়েছে, সেটা আমাদের েেত্র ঘটেনি। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের শাসক ও শোষক শ্রেণী এবং তাদের সমর্থকরা মর্মে মর্মে সাম্প্রদায়িক, পশ্চাৎপদ, গণতন্ত্রবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল থেকে গেছে।’
এত সুন্দর করে তিনি লিখেছিলেন লেখাটি যে, কোথাও ভুল ধরার কোন সুযোগ-ই রাখেন নি। সেই লেখার এক জায়গায় তিনি আরো লিখেছিলেন যে, ‘ অনেকের কাছে মনে হতে পারে যে ঠিকই তো, আল্লাহর বিধানেই তো মানুষ চলবে, মানুষের আবার বিধান কিসের? ঠিক আছে। কোথায় আছে সেই বিধান? সেটা আছে কোরআনে, আল্লাহর কালামে। আর কোথায় আছে? আছে হাদিসে, নবীর কথায়, ‘তাঁর জীবন যাপনে। কিন্তু সেই কালাম, কথা এবং জীবনযাপন ব্যাখ্যা করে আমাদের সময়কালে গ্রহণযোগ্য বিধান কে দেবে? জামায়াতে ইসলামী বলছে সেটা দেবে তারা। কোরআন সম্পর্কে তাদের ব্যাখাই বিধান। তাদের কথা মতো আমাদের চলতে হবে, আমাদের রাষ্ট্রের নীতি, কাঠামো, আইন কি হবে তার ব্যাখ্যা দেবে জামায়াতে ইসলামী। সেটাই আল্লার বিধান আকারে আমাদের মানতে হবে। নবীর কথা এবং জীবনযাপনের ব্যাখ্যাও দেবে তারা। ওদের ব্যাখ্যাই হচ্ছে, আল্লাহর বিধান। দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী নিজেই আসলে আল্লাহর স্থান দখল করে নিতে চাইছে। এখানেই হলো জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক। জামায়াত গণতন্ত্রেরই শুধু শত্রু নয়, জামায়াত ইসলামেরও শত্রু। জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান খোলামেলাভাবে শেরেকী। আল্লাহর কালামকে ব্যাখ্যা করার স্বঘোষিত কর্তৃত্ব যারা গ্রহণ করে তারা আল্লাহর সঙ্গে শেরেকী করে। ইসলামের দৃষ্টিতে তারা আসলে কাফের। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ফান্টামেন্টালিজম বা মৌলবাদের এখানেই হচ্ছে মৌলিক ফারাক। বাংলাদেশে ইরানের বিপ্লবের পর ওকে হেয় করার জন্য পশ্চিমে মৌলবাদী ইসলাম কথাটার ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। কিছুটা আমাদের অজ্ঞতায় এবং কিছুটা পশ্চিমের বর্ণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ইসলাম হচ্ছে ট বর্বর ধর্ম, মূসলমান মানেই একটি পশ্চাৎপদ দাঁড়ি টুপি পাগড়ি পড়া, মধ্যযুগীয় চরিত্র – পশ্চিমের বর্ণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এটাই ক্রমাগত প্রমাণ ও প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। আসলে পশ্চিমের এই বর্ণবাদিতা ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই মৌলবাদের উত্থান ঘটেছে। আয়াতুল্লাহ খোমেনী বা হিযবুল্লাহ ধরনের মৌলবাদ নাকচ করছে পশ্চিমেক আগাগোড়া। তারা আধুনিক বিশ্বের আলোকে ইসলামকে গ্রহণযোগ্যভাবে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করার দায় কাঁধে নেয়নি। তাদের সাধনা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর মতো ইসলামকে আধুনিক করে তোলা নয়, বরং ইসলামকে বিশুদ্ধভাবে আত্মস্থ করা। অর্থাৎ আল্লাহর কালামে বা ছহি হাদিসে ইসলাম যেভাবে আছে সেই মূল ধারাকেই চিহ্নিত করা ও গ্রহণ করা। মৌলবাদ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, পশ্চিমা সভ্যতার সকল ধরন ও অভিপ্রকাশের বিরুদ্ধে তার জেহাদ। সেই সভ্যতার ধ্বংস ছাড়া ইসলামের মুক্তি নেই বলে মৌলবাদী ইসলাম বিশ্বাস করে। মৌলবাদী ইসলামের মূল প্রবণতা ইসলামের ব্যাখ্যা নয়, আল্লাহর ওপর কর্তৃত্ব করা নয়। বরং সেই আদি বাক্য, কালাম বা বিধানে প্রত্যাবর্তন করা যা আল্লাহর কাছ থেকেই এসেছে বলে তারা বিশ্বাস করে। জামায়াতে ইসলামী ও মৌলবাদের এই আকাশ পাতাল তফাৎ খেয়াল রাখলেই আমরা বুঝব কেন জামায়াতে ইসলামী সাম্রাজ্যবাদের সহযোগী আর কেন মৌলবাদ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও বিশুদ্ধ ইসলামের প্রবক্তা। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়বার নৈতিক ও মানসিক শক্তি অর্জনের জন্যই মৌলবাদ বিশুদ্ধ ইসলামের কাছে তার তার্কিক ও মতাদর্শিক ভিত্তি অন্বেষণ করে, কারণ পশ্চিমের কাছ থেকে সে কিছুই গ্রহণ করতে রাজি নয় আর সাম্রাজ্যবাদের দোসর হওয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই ইসলামের বিকৃতি সাধন করে কারণ তার কাজ হচ্ছে ইসলামের ছুতোয় সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য ও আগ্রাসনের প্রসার ঘটানো। মৌলবাদ সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন থেকে রা পাওয়ার জন্য ফিরে যেতে চায় আইয়ামে জাহেলীয়া যুগের অল্প পরের ইসলামী যুগে; নবীর জীবন, শিা ও কথার কালপর্বে। আর জামায়াতে ইসলামী চায় সেই যুগটাকেই আধুনিক লেবাস পরিচয়ে বর্তমান কালের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে যাতে সাম্রাজ্যবাদের খোদ চেহারাটা আমরা আর বুঝতে না পারি। যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামকে কোনো স্থান আমরা না দেই তাহলে কি মৌলবাদকে আমরা স্থান দেব? যদি জামায়াতে ইসলামীকে আমরা নিষিদ্ধ করি তাহলে কি মৌলবাদকেও নিষিদ্ধ করতে হবে না? মৌলবাদের েেত্র নিষিদ্ধ করা না করার প্রশ্ন সবসময় খাটবে না। কারণ ইসলামী মৌলবাদ বিশ্বাস করে এবং বলে যে তথাকথিত ‘গণতন্ত্র’ একটি পশ্চিমা জিনিস। মৌলবাদী ইসলাম কখনোই ব্যক্তিকে সমষ্টির ওপরে স্থান দেয়নি। অর্থাৎ ইসলাম ব্যক্তিতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। যীশু নিজে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে সমস্ত মানবজাতির মুক্তি এনেছেন। খ্রিস্ট ধর্মে ক্রুশে কষ্ট পাওয়া ব্যক্তি যীশুর এই ভাবমূর্তির ওপর গড়ে উঠছে, ব্যক্তিতন্ত্রের নৈতিক ও আদর্শিক ভিত্তি। পুঁজিতন্ত্র এর বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে ও তার প্রসার ঘটিয়েছে। মৌলবাদী ইসলাম খ্রিস্টধর্ম, ব্যক্তিতন্ত্র ও পুঁজিতন্ত্র এই তিনেরই ঘোর বিরোধী। মৌলবাদী ইসলাম ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুর কিন্তু সমষ্টির স্বার্থে অঙ্গীকারবদ্ধ। মৌলবাদী ইসলাম যেহেতু খ্রিস্টধর্মের ঔরসজাত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না সে কারণে তথাকথিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সে অংশগ্রহণও করে না। তার মতা দখলের পথটা হচ্ছে বিপ্লবী পথ। কিন্তু জামায়াতের অবস্থান ভিন্ন। সে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, এবং নিজের একটা স্থান করে নিতে চায়। জামায়াতকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া বা না দেওয়া কিংবা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবহার স্থান দেওয়া বা না-দেওয়ার প্রশ্ন আছে, মৌলবাদী ইসলামের েেত্র সেটা নেই। অনেকে দাবি করতে পারেন যে জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে জামায়াতকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। জামায়াতে ইসলামী যদি কোনো রাজনৈতিক দল না হতো তাহলে সেটা একটা পথ হতে পারত। কারণ সমাজে আরো বহু গণতান্ত্রিক ও প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা, চেতনা, মতাদর্শ ও সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশ আছে। সেগুলোকে যেভাবে মুক্তচিন্তার চর্চা ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আন্দোলন দিয়ে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি আমরা সেভাবে জামায়াতকেও মোকাবিলা করা যেত। কিন্তু জামায়াত মতা চায়; কারণ জামায়াত জানে একমাত্র মতা দিয়েই সে তার অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে সম হবে। জামায়াত যেখানে মতা দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লড়ছে, সেখানে মতা লাভের জন্য জামায়াতকে অবস্থা ও শর্ত তৈরি করে দেওয়াটা হলো স্রেফ আত্মহত্যার সামিল। জনমত সৃষ্টি করে জামায়াতকে প্রতিরোধ করার ধারণা সে কারণে মারাত্মক ভুল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে জামায়াতের বিরুদ্ধে জনমত আমাদের সৃষ্টি করতে হবে না। হবে। কিন্তু কি ধরনের জনমত সৃষ্টি করা হবে? যদি জনগণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে চায় তাহলে সেই রাষ্ট্রগঠনের প্রক্রিয়ায় জামায়াতকে কোনো স্থান দেওয়া যাবে না এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জামায়াতে ইসলামীসহ সকল অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে।’
এখন আসি সত্যময়ী এই মানুষের ব্যাক্তি জীবনের দিকে। তিনি ব্যাক্তিগতভাবে বলে থাকেন, মানবতাবাদী। সহধর্মিনী বলি আর স্ত্রী-ই বলি আর অন্য কিছু যা-ই বলি না কেন, সেই মানুষ ফরিদা আখতারও একই পথের পথিক। ঘরের মধ্যে সরস্বতি থেকে শুরু করে অনেক প্রতিমার-ই রয়েছে যৌন আবেদনময়ী মূর্তি। ইচ্ছে করেই হয়তো তিনি এই প্রতিমাদেরকে অপমানের জন্য একটু উগ্রভাবে বানিয়ে পেছনে সাজিয়ে রেখেছেন সারি দিয়ে। একবার বলেন মানবতাবাদী, একবার বলেন সমাজবাদী, একবার বলেন জীবনবাদী, একবার বলেন লালনবাদী, একবার বলেন নারীবাদী। এই বাদীময় মানুষটি লুঙ্গীকে করেছেন পরিধানের একমাত্র সঙ্গী। বাঙালি জাতীয়তাদের প্রতিক হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় এই পোষাকটিকে তিনি সম্মান করেন বলেও বিভিন্ন সময় আমরা জেনেছি। সেই শ্রদ্ধাজন, সেই বিদগ্ধ পন্ডিত মাঝখানে ‘চিন্তা’ নামে একটি কাগজ প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে আমার পরিচিত একজন তরুন লেখকও সম্পৃক্ত ছিলো। পরে জানতে পারি সেই তরুন লেখকসহ অধিকাংশই ছাত্র শিবিরের উচ্চ পর্যায়ের নেতা। জানতে জানতে আরো জানতে পারি যে, ফরহাদ মজহারের এই ‘চিন্তা’ প্রকাশের জন্য আর্থিক সহায়তা এসেছে যুদ্ধাপরাধী-জামায়াত-শিবিরের ব্যাংক হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ইসলামী ব্যাংক থেকে। শুধু এখানেই শেষ নয়, মানবতাবাদের কথা বলে বলে ‘উবিনিগ’ নামক একটি এনজিওর মাধ্যমে কোটি কোটি লোপাট করার পরও যখন তাঁর স্বস্থি হচ্ছিলো না তখন তিনি এই উবিনিগ কে জামায়াতের কাছেই লিজ দিয়ে দেন। এখন উবিনিগ-এর সাথে অধিকাংশ কর্মকর্তাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। গিরগিটি যেভাবে রঙ বদলায়, ঠিক একইভাবে বেহায়াপনায় নিমজ্জিত ফরহাদ মজহার রঙ বদলিয়ে যুদ্ধাপরাধী-জামায়াত-শিবিরের হয়ে গেলেন। শুধু ফরহাদ মজহার-ই নন, আমাদের দেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবীও সময়ে সময়ে তেমনি খোলস পাল্টান। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুন নূর তুষার, ড. মুহম্মদ সামাদসহ শতাধিক বুদ্ধিজীবি। তাঁরা একবার স্বাধীনতার স্বপক্ষে চিল্লিয়ে গলা ভাঙেন, আরেকবার জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামসহ বিভিন্ন জামায়াত-শিবিরের কাগজে লিখে তৃপ্ত হোন। এখন তাদের অনেকেই হেফাজতী ১৩ দফার যৌক্তিকতা প্রদানের জন্য উঠেপড়ে লাগছেন। পত্রিকায় কলামও লিখে ফেলেছেন। তো হেফাজতীদের ১৩ দফার একটা হচ্ছে, ভাস্কর্যের নামে বাংলাদেশে কোনো মূর্তি থাকতে পারবে না। অথচ তাদের ঘরে তোলা অনেকের ছবিতেই দেখা যাচ্ছে, হেফাজত শিরোমণিদের পেছনে মালা জড়ানো মূর্তি রয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী প্রতিমা।
এরা এতটাই স্বার্থপর এবং চতুর যে, রাতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চেয়ে, ইসলামি ব্যাংক নিষিদ্ধ চেয়ে, স্বাধীনতার স্বপক্ষে কথা বলে আসে প্রজন্ম চত্বরে। আর দিনে বড় বড় করে নিজেদের পত্রিকায় চ্যনেলে ইসলামী ব্যাংকের বিজ্ঞাপনতো ছাপেই, উপরুন্ত ইসলামী ব্যাংকের দাওয়াতে গিয়ে বড় গলায় কথা বলেও আসে। এই যদি হয় আমাদের স্বাীনতার স্বপক্ষ; এই যদি হয় আমাদের প্রিয় জনদের বিক্রির নমুনা; তাহলে নতুন প্রজন্ম কাদের কাছে শিখবে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসার পাঠ?
জানি এই উত্তর কারো জানা নেই। তবে আমার জানা আছে, আমি মনে করি বাংলাদেশকে-বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসার পাঠ, স্বাধীনতার স্বপক্ষে চলার পাঠ আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন থেকে নিতে পারি, নিতে পারি মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সিরাজুল আলম খানসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের জীবন থেকে। যারা জীবনকে নিবেদিত করে রেখেছিলেন দেশের জন্য, মাটির জন্য; টাকার জন্য বা ক্ষমতার জন্য নয়। এই মূহুর্তে কবি সুর্নিমল বসুকে খুব মনে পড়ছে। তিনি এতটাই জ্ঞানি ছিলেন যে, শতবছর আগে লেখা তার কবিতাটি আজো জীবনের জন্য শিক্ষনিয় হয়ে আছে। যেখানে তিনি লিখেছেন, আকাশ আমায় শিক্ষা দিলো উদার হতে ভাইরে/ কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে। সেই শিক্ষা থেকেই নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সচেতন নবীন বন্ধুদের প্রতি আহবান জানাবো বাংলাদেশকে কে কি কিভাবে ঠকালো, বাংলাদেশের মানুষকে ঠকালো, কে কি করলো কিংবা দিলো, তা না ভেবে আসুন নতুন করে তৈরি হই, গড়ে তুলি সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ। থাকবে হাসি-আনন্দ-শান্তি। কেবল থাকবে না খালেদা-হাসিনার চুল ছেড়াছেড়ি, থাকবে না খুন-গুম-সহিংসতা আর হরতালের রাজনীতি, থাকবে না যুদ্ধাপরাধী-জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অস্তিত্ব। আসুন নতুন প্রজন্ম ঐক্যবদ্ধ হই দেশ-মাটি-মানুষের জন্য, নিবেদিত হই স্বাধীনতাকে অক্ষুন্ন রাখার মহান ব্রত নিয়ে…
মোমিন মেহেদী : কলামিস্ট ও আহবায়ক, নতুনধারা বাংলাদেশ(এনডিবি)
২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
মরু বালক বলেছেন:
রাস্তায় হাগু/মুতু এর ব্যাপারে "নতুন ধারার" ..... ইশতেহার কি ???
!!!!
জানতে মুঞ্চায়
৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:০১
কৃষিবিদ আহমদ মুকুল বলেছেন: ফরহাদ মজহার, আপনার ‘চিন্তা’য় জামায়াত-শিবিরের ঘূণ ধরেছে...
agreeeeeeeeee .....
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫৪
মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: দারুন লিখেছেন। ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা।