![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ (১৯ জানুয়ারী) বি এন পি সভানেত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ ১৩ দিনের সারা দেশ ব্যাপী অবরোধে ৩১ জন মানুষকে জালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করার পরে সাংবাদিকদেরকে জানালেন যে বি এন পি ধংসাত্মক কার্যকলাপের সাথে জড়িত নয়। যারা ধংসাত্মক কার্য কলাপ করছে তাদের কে কেন সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করছে না?
এই ঘোষণার পরে সরকারের আর নিরব থাকা সমুচিন হনে না। সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে শুধু মুখে গণতন্ত্র রক্ষার অঙ্গীকার না করে কার্যত সরকারী ভূমিকা পালন করতে হবে। গণতন্ত্রের সজ্ঞা শুধু তাত্ত্বিক ভাবে বিশ্লেষণ না করে গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রয়োগ করতে হবে সেটাই জনগণ চায়। যদি শেখ হাসিনা নিজে না পারেন তাহলে তাঁর দলেরই অন্য কাউকে প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব ভার দিতে হবে এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রাকটিস। বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি- টক্ শো গুলিতে নিয়মিত সুধী সমাজের মানুষরাও এই জটিল অবস্থার সমাধানের বিভিন্ন কথা বলে থাকেন। আমরা তো আর টক্ শো এর মানুস না তবে গণতন্ত্রের লালন করা ইউরোপীয় সমাজ ব্যবস্থায় বহুদিন দেখেছি ও তার সুফল ভোগ করেছি বলেই আজ একটি কম্পারাটিভ (তুলনামূলক) আলোচনায় আমার বন্ধুদেরকে জড়াতে চাই। এব্যপারে আমি এখানে পৃথিবীর তিনটি গণতান্ত্রিক দেশের উদাহরণ তুলে ধরতে চাই, কারণ আওয়ামী লিগ একটি গণতান্ত্রিক দল ও ব্রিটিশ গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা কে দারুন ভাবে মূল্যায়ন করে :
১) সময়টা ১৯৪০ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ যখন ঠিক মাঝপথে চলছিল তখন ক্ষমতাসীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেভিল চেম্বারলেন এর পদতাগ একটি ঐতিহাসক ঘটনা। ইতিহাসের কিছু ঘটনা থেকে আমরা জানি ১৯৪০ সনে নরওয়ে তে ব্রিটিশ ও ফরাসী মিত্র আলিয়ান্স যখন জার্মান নাত্সি বাহিনীর হাতে পরাজিত হয়ে ব্রিটেনে ফিরে আসতে বাধ্য হয়, তখন সেই ভুলের জন্যে ব্রিটিশ রক্ষনশীল প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেন নিজের ভুল বলে মেনে নেন ও পদতাগ করেন । এর পরেই ইতিহাসের পট পরিবর্তন হয় ও উইনস্টন চার্চিলের সুযোগ হয় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষ অংশের মহানায়ক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিতে। চেম্বারলেন পদত্যাগ না করলে ব্রিটিশ রাজ্যে চার্চিলের মত নেতার কোনো সুযোগ হত না। আমাদের প্রধান মন্ত্রী যদি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন তাহলেই তিনিও ঐতিহাসিক ভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অবিসরণীয় ঘটনার সাথে যুক্ত হতে পারেন - সেটা হলো যেহেতু তিনি কঠোর হাতে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে কঠোর হাতে দমন করে সক্ষম হচ্ছেন না (হয়ত নারী সুলভ কমনীয়তার দুর্বলতা আছে, যা রাষ্ট্র পরিচালনায় মোটেও কাম্য নয়) তখন তাঁর সহকারী তোফায়েল আহমদ কে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেই হয়, তাহলে পার্টি র নতুন নেতৃত্ব ও রক্ষা হয়। ঐতিহাসিক পট পরিবর্তন অবশ্যই দরকার। এর অর্থ এই নয় যে উনি অকৃতকার্য হলেন, অথবা বি এন পি কে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে অথবা নতুন নির্বাচনের ও কোনো প্রয়োজন নেই। সংবিধানিক ভাবেই এটা সম্ভব যে, নতুন প্রধান মন্ত্রীর অধীনে বাঁকি ৪ বছর নির্বাচন ছাড়াই আওয়ামী লিগ দেশ পরিচালনা করতে পারবে, যেমন তা আমরা ব্রিটেন এর ঘটনায় দেখলাম। এটা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হাসিনা সর্ব মোট ৩ বার প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে ১১ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছেন এখন উনাকে সরে গিয়ে নতুন নেতৃত্বকে ক্ষমায় বসাতে হবে।
২) দুই নম্বর উদাহরণ - দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের নেতৃত্ব দান করি ফরাসী প্রেসিডেন্ট চার্লস দে গোল "কনস্টিটিউশনাল রেফেরেন্ডম" এ ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৬৯ এ পদতাগ করে আধুনিক বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল। তার পূর্ব ঘটনা হলো - ফ্রান্স গণ ভোটের মাধ্যমে "পঞ্চম প্রজাতন্ত্র" এর নেতা চার্লস দ্য গল, জাতীয় পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা দ্বারা সংবিধান অনুযায়ী আধুনিক পঞ্চম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে। তারপর দে গোল আলজেরিয়ান বিপ্লব কে সরাসরি সমর্থন জানায় এবং মার্কিন-আধিপত্য এর কারণে ন্যাটো জোট থেকে বেরিয়ে এসে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রকে বাধ্য করে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্দ করতে। এত কৃত্তিও সত্বেও দে গোল যখন ১৯৬৮ এর ছাত্র বিক্ষোভ এবং শ্রমিকদের ধর্মঘট এর মুখে পরে আর একবার প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বারবার জন্যে "কনস্টিটিউশনাল রেফেরেন্ডম" এর ডাক দেয় ফরাসী জনগণ তা ১৯৮৯ এ প্রত্যাখান করে, তারই ফলশ্রুতি হিসেবে ফরাসী প্রেসিডেন্ট দে গোল পদত্যাগ করে, জর্জ পম্পিদূকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। এটাই সাংবিধানিক নিয়ম
৩) তৃতীয় ঘটনাটি হলো - ১৯৭৪ সনে আধুনিক জার্মানির তৃতীয় ক্ষমতাধর সোশ্যাল ডেমোক্রাট চ্যান্সেলর বিল্লি ব্র্যান্ড এর অফিস এ সোভিএট্ এজেন্ট কে.জি.বি এর লোক ধরা পরে। সেই অপরাধের দায়িত্বভার সয়ং চ্যান্সেলর ব্র্যান্ড এর উপর বর্তায় বলেই ৩ বছরের মাথায় ব্র্যান্ড পদতাগ করে এবং তার সহকারী হেলমুট স্মিথ কে চ্যান্সেলর এর দায়েত্ব অর্পণ করে। এটাও সংবিধানিক প্রক্রিয়া। দায়িত্ব পালনে অবহেলায় পদত্যাগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
কাজেকাজেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন রইলো - আপনাকে নতুন নির্বাচন করার দরকার নেই, ক্ষমতা তোফায়েল আহমেদ অথবা অন্য কোনো দায়িত্ববান নেতার হাতে তুলে দিন তাতে আবার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও ঠিক থাকবে এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই ২০১৯ এ নির্বাচন হতে পারে একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বেরিয়ে আসবে। এভাবেই বাংলাদের গণতন্ত্রে নতুন অধ্যায়ের সংযোজন হবে বলে আমি মনে করি> Click This Link
©somewhere in net ltd.